alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘নারী মানেই ব্যভিচারী...’

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘কিরে ভাই হঠাৎ প্রেমে ছ্যাকা খাইলেননি? দুনিয়ার ব্যেবাগ মাইয়্যাগো চরিত্রে কালি ল্যেপতাছেন?’ ‘ওই স্বর্ণগর্দভ, জানিস এইটা কার স্বগোক্তি?’

‘কার আবার আপনের। কাহিনী কী, ভাবি কি আইজকাল গভীর রাইত কইরা বাড়ি ফিরতাছে? নাকি পিরাই-ই সেলুলার ফোনের মডেল চেঞ্জ করতাছে?’

‘তোরা আছিস তোদের ওই পরকীয়ার সুড়সুড়ি নিয়ে। কোথায় কার স্ত্রী কার সাথে তার পুরানো প্রেমিক রস সিঞ্চন করছে! আরে বুড়বক আমি বলছিলাম পৃথিবীর সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ-শতকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের কথা।’

‘এইডা কি কন, আমাগো শরৎ চন্দ্রের মতো, মহাকবি শেক্সপীয়ার আবার কবে দুই নাম্বার মাইয়াগো লগে টাইম পাস করলো! না আইজ পর্যন্ত আমি কুনো নাটক নভেল প্রবন্ধে তো হুনি নাই পৃথিবীর সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ শতকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ছেরিগো লগে...’।

‘আসলে ভাই তোর মতো অশিক্ষিত গাড়লদের কিছু বলতে যাওয়া মানে অসীম ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেওয়া। র্ধৈয্যং স্মরণং গচ্ছথামী...’।

‘আমি আবার কখন ধৈর্যচ্যুতি ঘটাইলাম? আপনিই কইলেন ‘মেয়ে মানেই দুই নাম্বর’ আপনে ক্যান এই কথা কোইলেন জানতে গেলেই আমি, গাড়ল, অশিক্ষিত, চাড়াল আরো কোতো কিছু কোইবেন কে জানে?’

‘আরে ভাই এটা পৃথিবীর সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের হ্যামলেট নাটকের প্রথম অঙ্কের দ্বিতীয় দৃশ্যে নায়ক হ্যামলেটের প্রথম স্বগোক্তি, ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ এটার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘নারী মানেই ব্যভিচারী...’।

‘তো হঠাৎ ডেনমার্কের যুবরাজ হ্যামলেট দুনিয়ার ব্যেবাগ মাইয়ারে ব্যভিচারী কোইলো ক্যান? তায়লে তো হ্যের মায়েভী ব্যভিচারী নারীগো দলে নাম লিখাইবো?’

‘জ্বি, তোর কথাই ঠিক, হ্যামলেটের পিতার মৃত্যুর পর হ্যামলেটের মা, যখন চল্লিশার আগেই মাত্র ত্রিশ দিনের মাথায়, হ্যামলেটের আপন চাচা ক্লদীয়াকে বিয়ে করলো, তখন হ্যামলেট বড় বেদনায় কাতর হয়ে বলে উঠলেন, ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ অর্থাৎ‘নারী মানেই ব্যাভিচারী...।’

‘হেঁঃ হেঁঃ আমি অনেক ঘরের বৌরে, দেখছি পোলারে স্কুলে দিয়া চট কইরা একটু ঘুইরা আয়া পড়ে...হিঃ হিঃ হিঃ’।

‘থাক থাক তোমাকে আর বাংলার আদিরসের ফিরিস্তি দিতে হবে না। ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান... বলতে এখানে শ্রদ্ধেয় নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ার তোর ভাষায় শুধু আদিরসের কথা বলেননি, ‘ফ্রেইল’ এই ইংরেজি শব্দটার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে- ভঙ্গুর, দুর্বল, পলকা, নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম। তাই শুধু শুধু নারীদের কেবল দৈহিক চাহিদার কথা ভাবলে হবে না! ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ এই কথার ব্যাপ্তি অনেক সুদূরপ্রসারি।’

‘ওম্মা¹ো এইডা আপনে কি কন! আমি তো আজীবন ভাবতাছি ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ মানে মহাকবি হুদা হুদি ব্যাভিচারের গল্প করতাছে অহন তো দেহি না সারা দুনিয়া এই ‘ফ্রেইলটির’ ভিতর হান্দায়া গেছে গা!’

‘এ আবার কী, সারা পৃথিবী ‘ফ্রেইলটির’ ভেতরে মানে কী?’ ‘মাইনে তো অক্করে সিম্পেল, হালায় যেই ব্যাডা টাকার প্রতি দুর্বল, মানে ‘ফ্রেইল’। যেমন খামির হুচেন খামু, হুমুন্দির পুত খাটের নিচে বস্তা বস্তা ট্যাকা থুয়া দিছে, মাইনে হালায় ট্যাকার প্রতি ‘ফ্রেইল’ দুর্বল। তারপর দ্যেখেন নাই, ওই যে খাল কাটতে যায়া শুভ্র, লালগালিচা বিছায়া ড্রেজার দিয়া প্যাঁক উঠাইতেছে, মাইনে উপদেষ্টারা লালগালিচার প্রতি দুর্বল মানে, ‘ফ্রেইল’। ‘থাক থাক এ নিয়ে মানে ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান... নিয়ে বেশি কথা বলিস না তোকে না আবার ভুল বুঝে, মহিলা উপদেষ্টারা অ্যারে ম্যারে করে।’

‘আরে না উনারা উচ্চশিক্ষিত উনারা বুঝবেন, যে ‘ফ্রেইল’ মানে তাগোরে ব্যক্তিগতভাবে বলা হয় নাই।’ ‘বলা তো যায় না, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। মহিলা উপদেষ্টারা তোকে অ্যারে’ করতে পারে। অ্যাকসিডেন্ট ইজ অ্যাকসিডেন্ট।’

‘আরে যাউক¹া হ্যেগো কথা ছাড়েন, আমিতো ভাবতাছি অন্যকথা, আপনে যে মিয়া কোইলেন ‘ফ্রেইল’ মানে ভঙ্গুর, দুর্বল, পলকা, ব্যাভিচারী, নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী, অসতী...’।

‘আরে এটা আমি বলবো ক্যেনো, এটা শৈলেন্দ্র বিশ্বাসের সম্পাদনায় ‘সংসদ ইংলিশ বাংলা ডিক্সেনারির’ শব্দার্থ যা আজ থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দী পূর্বে প্রকাশিত!’ ‘আপনে যাই কন ভাই, ডাক্তার সাব যদি বুইজ্ঝালায় যে আপনে হ্যেরে অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী বইল্লা বুলি করতাছেন! তায়লে কোইলাম খবর আছে, ওই হালায় হ্যামলেট কন আর পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ার কন কেউই আপনেরে বাঁচাইতে পারবো না।’

‘ধ্যাৎ তোর যা কথা। উনি নিজে বলেছেন আপনারা বেশি বেশি সমালোচনা করুন আমরা ভুল শোধরাবার সুযোগ পাবো। তাছাড়া উনি এক মহান ব্যক্তিত্ব যিনি গরিবের খুব কাছের লোক। উনি গরিবের দুঃখ বুঝেন, তাই বলেছিলেন পৃথিবীর দারিদ্র যাবে জাদুঘরে। উনি গরিবের খুব আপন রে, গরিবের খুব আপন।’

‘কথাটা ঠিকই কোইছেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে আপন লোকটাই আপনের পেছন থ্যেইক্কা ছুরি মারে। মনে নাই জুলিয়াস সিজাররে যখন তার পালিত পুত্র ব্রুটাস ডেগার দিয়া পাড় দিলো, তখন গ্রেট সিজার কোইছিলো- ‘তুমিও, ব্রুটাস?’।

‘আরে না বর্তমান সরকার বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম খুন কিছুই করছে না। কান চাপাতিতে থাপ্পড় মেরে কার্টুনি মারছে না। তাই তোরা মনের আনন্দে সরকারের বাকস্বাধীনতা এনজয় কর...’।

‘ঠিক আছে ঠিক আছে, আপনে আপনের বাকস্বাধীনতা এনজয় করেন, আমি যাই লালগালিচা নদীর পাড় থ্যেইক্কা সুবাতাস সেবন কইরা আসি, যাই... বাই...’।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

শীতকালীন জীবন: সংগ্রাম, সংস্কৃতি ও সহমর্মিতা

অ্যালগরিদমের রাজনীতি

চারদিকে আতঙ্ক আর শঙ্কা

অধ্যবসায়ের বিকল্প নেই

দিপু দাস হত্যাকাণ্ড ও মব সন্ত্রাস

ভোগের দৃশ্যপট: ঢাকায় আধুনিকতা কেন কেবল অল্প কিছু মানুষের জন্য?

স্বর্ণের মোহ ও মানবিক দ্বন্দ্ব

ভালোবাসার দেহধারণ: বড়দিনের তাৎপর্য

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট

বিনা-ভাড়ার ট্রেনযাত্রা

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে এশিয়া

ছবি

নামে ইসলামী, কাজে আবু জাহেল!

জলবায়ু পরিবর্তন: স্বাস্থ্যঝুঁকি

ছবি

অস্থির পেঁয়াজের বাজার: আমদানি কি সত্যিই সমাধান?

মূল্যবৃদ্ধির ঘেরাটোপ: সংকটাক্রান্ত পরিবার ও সামাজিক রূপান্তর

বায়দূষণে অকালমৃত্যু

লাশের বদলে লাশই যদি চুড়ান্ত হয়, তবে রাষ্ট্রের দরকার কী?

ভিক্ষাবৃত্তি যেখানে অন্যতম পেশা

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

আদিবাসীদের ভূমি অধিকার ও নিরাপত্তা সংকট

“মুনীর চৌধুরীর কবর...”

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

জলবায়ু সংকট ও খাদ্য নিরাপত্তা

স্বাধীন তদন্ত কমিশন দাবির নেপথ্যে কি দায়মুক্তি?

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

প্রহর গুনি কোন আশাতে!

বিজয়ের রক্তাক্ত সূর্য ও আমাদের ঋণের হিসাব

বিজয় দিবস: নতুন প্রজন্মের রাষ্ট্রচিন্তার দিকদর্শন

ছবি

আমাদের বিজয়ের অন্তর্নিহিত বার্তা

প্রাণিসম্পদ: দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি

জমির জরিপ: ন্যায়বিচার প্রসঙ্গ

বুদ্ধিজীবী হত্যা ও এর স্বরূপ সন্ধানে

উন্নয়নের আড়ালে রোগীর ভোগান্তি: আস্থা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা

ছবি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: অমিত শক্তির উৎস

ছবি

বেগম রোকেয়া এখনো জাগ্রত

পশ্চিমবঙ্গ: বামপন্থীদের ‘বাংলা বাঁচাও’-এর ডাক

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

রম্যগদ্য : ‘নারী মানেই ব্যভিচারী...’

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

‘কিরে ভাই হঠাৎ প্রেমে ছ্যাকা খাইলেননি? দুনিয়ার ব্যেবাগ মাইয়্যাগো চরিত্রে কালি ল্যেপতাছেন?’ ‘ওই স্বর্ণগর্দভ, জানিস এইটা কার স্বগোক্তি?’

‘কার আবার আপনের। কাহিনী কী, ভাবি কি আইজকাল গভীর রাইত কইরা বাড়ি ফিরতাছে? নাকি পিরাই-ই সেলুলার ফোনের মডেল চেঞ্জ করতাছে?’

‘তোরা আছিস তোদের ওই পরকীয়ার সুড়সুড়ি নিয়ে। কোথায় কার স্ত্রী কার সাথে তার পুরানো প্রেমিক রস সিঞ্চন করছে! আরে বুড়বক আমি বলছিলাম পৃথিবীর সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ-শতকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের কথা।’

‘এইডা কি কন, আমাগো শরৎ চন্দ্রের মতো, মহাকবি শেক্সপীয়ার আবার কবে দুই নাম্বার মাইয়াগো লগে টাইম পাস করলো! না আইজ পর্যন্ত আমি কুনো নাটক নভেল প্রবন্ধে তো হুনি নাই পৃথিবীর সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার ষোড়শ শতকের মহান লেখক, উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ছেরিগো লগে...’।

‘আসলে ভাই তোর মতো অশিক্ষিত গাড়লদের কিছু বলতে যাওয়া মানে অসীম ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেওয়া। র্ধৈয্যং স্মরণং গচ্ছথামী...’।

‘আমি আবার কখন ধৈর্যচ্যুতি ঘটাইলাম? আপনিই কইলেন ‘মেয়ে মানেই দুই নাম্বর’ আপনে ক্যান এই কথা কোইলেন জানতে গেলেই আমি, গাড়ল, অশিক্ষিত, চাড়াল আরো কোতো কিছু কোইবেন কে জানে?’

‘আরে ভাই এটা পৃথিবীর সর্ব কালের সর্ব শ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার লেখক, উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের হ্যামলেট নাটকের প্রথম অঙ্কের দ্বিতীয় দৃশ্যে নায়ক হ্যামলেটের প্রথম স্বগোক্তি, ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ এটার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘নারী মানেই ব্যভিচারী...’।

‘তো হঠাৎ ডেনমার্কের যুবরাজ হ্যামলেট দুনিয়ার ব্যেবাগ মাইয়ারে ব্যভিচারী কোইলো ক্যান? তায়লে তো হ্যের মায়েভী ব্যভিচারী নারীগো দলে নাম লিখাইবো?’

‘জ্বি, তোর কথাই ঠিক, হ্যামলেটের পিতার মৃত্যুর পর হ্যামলেটের মা, যখন চল্লিশার আগেই মাত্র ত্রিশ দিনের মাথায়, হ্যামলেটের আপন চাচা ক্লদীয়াকে বিয়ে করলো, তখন হ্যামলেট বড় বেদনায় কাতর হয়ে বলে উঠলেন, ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ অর্থাৎ‘নারী মানেই ব্যাভিচারী...।’

‘হেঁঃ হেঁঃ আমি অনেক ঘরের বৌরে, দেখছি পোলারে স্কুলে দিয়া চট কইরা একটু ঘুইরা আয়া পড়ে...হিঃ হিঃ হিঃ’।

‘থাক থাক তোমাকে আর বাংলার আদিরসের ফিরিস্তি দিতে হবে না। ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান... বলতে এখানে শ্রদ্ধেয় নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ার তোর ভাষায় শুধু আদিরসের কথা বলেননি, ‘ফ্রেইল’ এই ইংরেজি শব্দটার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে- ভঙ্গুর, দুর্বল, পলকা, নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম। তাই শুধু শুধু নারীদের কেবল দৈহিক চাহিদার কথা ভাবলে হবে না! ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ এই কথার ব্যাপ্তি অনেক সুদূরপ্রসারি।’

‘ওম্মা¹ো এইডা আপনে কি কন! আমি তো আজীবন ভাবতাছি ‘ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান...’ মানে মহাকবি হুদা হুদি ব্যাভিচারের গল্প করতাছে অহন তো দেহি না সারা দুনিয়া এই ‘ফ্রেইলটির’ ভিতর হান্দায়া গেছে গা!’

‘এ আবার কী, সারা পৃথিবী ‘ফ্রেইলটির’ ভেতরে মানে কী?’ ‘মাইনে তো অক্করে সিম্পেল, হালায় যেই ব্যাডা টাকার প্রতি দুর্বল, মানে ‘ফ্রেইল’। যেমন খামির হুচেন খামু, হুমুন্দির পুত খাটের নিচে বস্তা বস্তা ট্যাকা থুয়া দিছে, মাইনে হালায় ট্যাকার প্রতি ‘ফ্রেইল’ দুর্বল। তারপর দ্যেখেন নাই, ওই যে খাল কাটতে যায়া শুভ্র, লালগালিচা বিছায়া ড্রেজার দিয়া প্যাঁক উঠাইতেছে, মাইনে উপদেষ্টারা লালগালিচার প্রতি দুর্বল মানে, ‘ফ্রেইল’। ‘থাক থাক এ নিয়ে মানে ফ্রেইলটি দাই নেম ইজ ওম্যান... নিয়ে বেশি কথা বলিস না তোকে না আবার ভুল বুঝে, মহিলা উপদেষ্টারা অ্যারে ম্যারে করে।’

‘আরে না উনারা উচ্চশিক্ষিত উনারা বুঝবেন, যে ‘ফ্রেইল’ মানে তাগোরে ব্যক্তিগতভাবে বলা হয় নাই।’ ‘বলা তো যায় না, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। মহিলা উপদেষ্টারা তোকে অ্যারে’ করতে পারে। অ্যাকসিডেন্ট ইজ অ্যাকসিডেন্ট।’

‘আরে যাউক¹া হ্যেগো কথা ছাড়েন, আমিতো ভাবতাছি অন্যকথা, আপনে যে মিয়া কোইলেন ‘ফ্রেইল’ মানে ভঙ্গুর, দুর্বল, পলকা, ব্যাভিচারী, নৈতিক দুর্বলতাগ্রস্ত, অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী, অসতী...’।

‘আরে এটা আমি বলবো ক্যেনো, এটা শৈলেন্দ্র বিশ্বাসের সম্পাদনায় ‘সংসদ ইংলিশ বাংলা ডিক্সেনারির’ শব্দার্থ যা আজ থেকে প্রায় অর্ধশতাব্দী পূর্বে প্রকাশিত!’ ‘আপনে যাই কন ভাই, ডাক্তার সাব যদি বুইজ্ঝালায় যে আপনে হ্যেরে অথর্ব, অক্ষম, জরাগ্রস্ত, ক্ষণস্থায়ী বইল্লা বুলি করতাছেন! তায়লে কোইলাম খবর আছে, ওই হালায় হ্যামলেট কন আর পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কবি নাট্যকার উইলিয়াম শেক্সপিয়ার কন কেউই আপনেরে বাঁচাইতে পারবো না।’

‘ধ্যাৎ তোর যা কথা। উনি নিজে বলেছেন আপনারা বেশি বেশি সমালোচনা করুন আমরা ভুল শোধরাবার সুযোগ পাবো। তাছাড়া উনি এক মহান ব্যক্তিত্ব যিনি গরিবের খুব কাছের লোক। উনি গরিবের দুঃখ বুঝেন, তাই বলেছিলেন পৃথিবীর দারিদ্র যাবে জাদুঘরে। উনি গরিবের খুব আপন রে, গরিবের খুব আপন।’

‘কথাটা ঠিকই কোইছেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে আপন লোকটাই আপনের পেছন থ্যেইক্কা ছুরি মারে। মনে নাই জুলিয়াস সিজাররে যখন তার পালিত পুত্র ব্রুটাস ডেগার দিয়া পাড় দিলো, তখন গ্রেট সিজার কোইছিলো- ‘তুমিও, ব্রুটাস?’।

‘আরে না বর্তমান সরকার বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মতো বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম খুন কিছুই করছে না। কান চাপাতিতে থাপ্পড় মেরে কার্টুনি মারছে না। তাই তোরা মনের আনন্দে সরকারের বাকস্বাধীনতা এনজয় কর...’।

‘ঠিক আছে ঠিক আছে, আপনে আপনের বাকস্বাধীনতা এনজয় করেন, আমি যাই লালগালিচা নদীর পাড় থ্যেইক্কা সুবাতাস সেবন কইরা আসি, যাই... বাই...’।

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top