alt

উপ-সম্পাদকীয়

ভূমিকম্পের আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে

সাঈদ চৌধুরী

: মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

দেশে পনের দিনে চারবারের মতো ভূমিকম্প হলো। বড় ভূমিকম্পের আগে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেক গবেষক জানান। এমনিতেই বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পরমুখী গতির কারণেই এ ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়। এখানে প্রচুর শক্তি আছে এবং এগুলো একসময় বের হয়ে আসতে চাইবেই। ২০২৩ সালে প্রকাশিত বিবিসি এর সংবাদের একটি অংশ থেকে জানা যায় ছোট ভূমিকম্প হলে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ে। অনেকে মনে করেন যে, ঘন ঘন ছোট ছোট ভূমিকম্প হলে, ভূ-অভ্যন্তরে জমে থাকা শক্তি ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং এর ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ধারণাটি আসলে সত্য নয়। যে পরিমাণ শক্তি সাবডাকশন জোন বা দুই প্লেটের সংযোগস্থলে জমে থাকে তার পরিমাণ এতই বেশি যে, এটি বের হয়ে আসলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার মতো ভূমিকম্প হতে পারে। এত পরিমাণ শক্তি ছোট ছোট ভূমিকম্পের মাধ্যমে বের হয়ে আসা সম্ভব নয় উল্লেখ করে ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘দৈনিক যদি ছোট থেকে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হয় তাহলেও এত শক্তি বের হয়ে আসতে সময় লাগবে দুই থেকে তিনশ বছর।’

তিনি জানান, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয় রিং অব ফায়ারে অবস্থিত এলাকা বা দেশ যেমন জাপান, চিলি, সান ফ্রান্সিসকোতে দৈনিকই মৃদু ভূমিকম্প হয়। কিন্তু তারপরও হঠাৎ করেই একেকটা বড় ভূমিকম্পের খবর পাওয়া যায়। এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘বড় ভূমিকম্প তৈরি হওয়ার যে ভূ-কাঠামো ওই এলাকায় রয়েছে, সেই একই ভূ-কাঠামো আমাদের এখানেও রয়েছে।’ এখন ভূমিকম্প যদি বড় আকারে হয় তবে ঢাকা শহরের কত শতাংশ বাড়ি, ঘর ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কেউ জানে না। অনেক গবেষণায় বলা হয়েছে হয়তো ৬০ শতাংশ ক্ষতি হবে কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর অবস্থা কী হবে তা অনুমানও করা যায় না। কারণ প্রতিটি বাড়ির উপরে রয়েছে বিল্ডিং ও অন্যান্য স্থাপনা।

ভূমিকম্প যে সংকেত দিচ্ছে তা এড়িয়ে যাওয়ার কারণ নয়। এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীভাবে ঠিক করা যাবে সে বিষয় নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট এখন যদি ঠিক না করা যায় আমরা বড় ধরনের বিপর্যয় সামলাতে পারব না। সুতরাং দ্রুত এ বিষয়ে ভেবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন তাদের প্রতি আবেদন রাখছি। সঙ্গে সঙ্গে মানুষকেও এ ব্যপারে সচেতন হতে হবে। ভূমিকম্প যেহেতু জানান দিচ্ছে সুতরাং এখন থেকেই পরিকল্পনাগুলো হাতে নেয়া প্রয়োজন। হঠাৎ বড় ধরনের বিপর্যয়ে মানুষের কাজ ঠিক থাকবে না তখন তারা দিশাহীন হয়ে পড়বে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যেমন দুর্বল আমাদের তেমনি ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় অনেকটাই দুর্বল। বাড়ি বানানোর জন্য বড় বিল্ডিং তৈরির জন্য অনুমতি চাইতে গেলে যারা গুরুত্ব দেয় না ও ঘুষের বিনিময়ে যেকোনো ডিজাইন পাস করে দেয় তারা ভূমিকম্প নিয়ে ভাববে কী করে! সবকিছু মিলে আমাদের বসে থাকার সময় নেই। এখনই এ বিষয়ে ভেবে যে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার তা নিয়ে ফেলতে হবে।

[লেখক : রসায়নবিদ]

প্রাচীন যৌধেয় জাতি ও তাদের সাম্যবাদী শাসন

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্ন

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

ছবি

বিকাশের পথকে পরিত্যাগ করা যাবে না

বর্ষা ও বৃক্ষরোপণ : সবুজ বিপ্লবের আহ্বান

প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয়

পারমাণবিক ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক ভণ্ডামির প্রতিচ্ছবি

পরিবেশের নীরব রক্ষক : শকুন সংরক্ষণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

ভূমিকম্পের আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে

সাঈদ চৌধুরী

মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

দেশে পনের দিনে চারবারের মতো ভূমিকম্প হলো। বড় ভূমিকম্পের আগে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনেক গবেষক জানান। এমনিতেই বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, বার্মিজ প্লেট ও ইন্ডিয়ান প্লেটের পরস্পরমুখী গতির কারণেই এ ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়। এখানে প্রচুর শক্তি আছে এবং এগুলো একসময় বের হয়ে আসতে চাইবেই। ২০২৩ সালে প্রকাশিত বিবিসি এর সংবাদের একটি অংশ থেকে জানা যায় ছোট ভূমিকম্প হলে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ে। অনেকে মনে করেন যে, ঘন ঘন ছোট ছোট ভূমিকম্প হলে, ভূ-অভ্যন্তরে জমে থাকা শক্তি ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসে এবং এর ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা কমে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এই ধারণাটি আসলে সত্য নয়। যে পরিমাণ শক্তি সাবডাকশন জোন বা দুই প্লেটের সংযোগস্থলে জমে থাকে তার পরিমাণ এতই বেশি যে, এটি বের হয়ে আসলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার মতো ভূমিকম্প হতে পারে। এত পরিমাণ শক্তি ছোট ছোট ভূমিকম্পের মাধ্যমে বের হয়ে আসা সম্ভব নয় উল্লেখ করে ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বিবিসিকে বলেছিলেন, ‘দৈনিক যদি ছোট থেকে মাঝারি আকারের ভূমিকম্প হয় তাহলেও এত শক্তি বের হয়ে আসতে সময় লাগবে দুই থেকে তিনশ বছর।’

তিনি জানান, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প হয় রিং অব ফায়ারে অবস্থিত এলাকা বা দেশ যেমন জাপান, চিলি, সান ফ্রান্সিসকোতে দৈনিকই মৃদু ভূমিকম্প হয়। কিন্তু তারপরও হঠাৎ করেই একেকটা বড় ভূমিকম্পের খবর পাওয়া যায়। এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘বড় ভূমিকম্প তৈরি হওয়ার যে ভূ-কাঠামো ওই এলাকায় রয়েছে, সেই একই ভূ-কাঠামো আমাদের এখানেও রয়েছে।’ এখন ভূমিকম্প যদি বড় আকারে হয় তবে ঢাকা শহরের কত শতাংশ বাড়ি, ঘর ও স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কেউ জানে না। অনেক গবেষণায় বলা হয়েছে হয়তো ৬০ শতাংশ ক্ষতি হবে কিন্তু ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর অবস্থা কী হবে তা অনুমানও করা যায় না। কারণ প্রতিটি বাড়ির উপরে রয়েছে বিল্ডিং ও অন্যান্য স্থাপনা।

ভূমিকম্প যে সংকেত দিচ্ছে তা এড়িয়ে যাওয়ার কারণ নয়। এখন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীভাবে ঠিক করা যাবে সে বিষয় নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট এখন যদি ঠিক না করা যায় আমরা বড় ধরনের বিপর্যয় সামলাতে পারব না। সুতরাং দ্রুত এ বিষয়ে ভেবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছেন তাদের প্রতি আবেদন রাখছি। সঙ্গে সঙ্গে মানুষকেও এ ব্যপারে সচেতন হতে হবে। ভূমিকম্প যেহেতু জানান দিচ্ছে সুতরাং এখন থেকেই পরিকল্পনাগুলো হাতে নেয়া প্রয়োজন। হঠাৎ বড় ধরনের বিপর্যয়ে মানুষের কাজ ঠিক থাকবে না তখন তারা দিশাহীন হয়ে পড়বে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যেমন দুর্বল আমাদের তেমনি ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনায় অনেকটাই দুর্বল। বাড়ি বানানোর জন্য বড় বিল্ডিং তৈরির জন্য অনুমতি চাইতে গেলে যারা গুরুত্ব দেয় না ও ঘুষের বিনিময়ে যেকোনো ডিজাইন পাস করে দেয় তারা ভূমিকম্প নিয়ে ভাববে কী করে! সবকিছু মিলে আমাদের বসে থাকার সময় নেই। এখনই এ বিষয়ে ভেবে যে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার তা নিয়ে ফেলতে হবে।

[লেখক : রসায়নবিদ]

back to top