alt

উপ-সম্পাদকীয়

রঙ্গব্যঙ্গ : ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি, প্রতিধ্বনি শুনি...’

জাঁ-নেসার ওসমান

: শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

কিরে ভাই বেইন্না ফজরত ভূপেন হাজারিকা লয়া পড়লেন- ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি, প্রতিধ্বনি শুনি...’

‘আরে বেটা এটা গান নয় এটা প্রতিধ্বনি...’। ‘জানি জানি কুনো পাহাড়ের কাছে যায়া আউউউ আওয়াজ করলে আবার ওই আউউউ শব্দ ফেরৎ আসে, হ্যেরে কয় প্রতিধ্বনি। হি হি হি।’ ‘তাহলে প্রতিধ্বনি হচ্ছে অরিজিনাল শব্দের হুবহু, ফেরৎ আসাকেই প্রতিধ্বনি বলে, ঠিক কি না?’ ‘হোই মিয়া খামখা অতো প্যেচান ক্যা! কি কোইতে চান সোজাসাপ্টা কয়া ফ্যালান।’ ‘না বোলছিলাম যে প্রায় ৫৪ (চুয়ান্ন) বছর পর হাসনাতের কন্ঠে শুনলাম ‘আপনারা দেশ রক্ষা করেন গিয়া, রাজনীতিতে আইসেন না। এ যেন ‘তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারেকে ফেরৎ যাও’এর প্রতিধ্বনি, শুনলাম।’ ‘কথাতো ঠিকই কোইছে, দেশ মাতৃকা রক্ষা করার লাই¹া কম দামে রেশন খাইবা, আবার এর লগে রাজনীতির ফায়দা লুটবা। বাহবা আলুবোখারার দুই মজা শাঁশও খাইবা আবার আঁটির ভেতরের বাদাম ভি পাইবা। ওরে আমার আল্লাদ রে!’

‘বুঝলাম তোর কথা ঠিক, কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছিস আর্মি কিভাবে, কখন, ক্যেনো তোদের রাজনীতিতে দখল নিলো!’ ‘হুনলাম সাত্তার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘুমাইলো, আর সকালে ঘুম থেইক্কা উইট্টা দ্যেখে হালায় পথের ভিখারি। সকাল বেলা রাজা আর ফকির সন্ধ্যা বেলা। আর্মি ক্যু কইরালচে।’

‘আরে ক্যুদেতা, তো রাজনৈতিক সরকার এলেই শেষ। কিন্তু তোর দেশের রাজনৈতিক নেতারা দুই নাম্বারী শুরু কোরলো বলেই না আর্মি দেশের অভ্যন্তরীণ গ-গোল শোধরাতে পথে নামলো। না হলে তুই বল যারা দেশ মাতৃকা রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে, তারা কি চাইবে ভেড়ামারার রাস্তায় রাস্তায় ট্র্যাফিকিং করা, গরুরগাড়ির হেডলাইট চেক করা!! এটা কি ওদের মানায়?’

‘তো হ্যেগো বিরুদ্ধে পাবলিক চ্যেতলো ক্যা?’

‘আচ্ছা বল একাত্তরর স্বাধীনতার পর কোনো আর্মি কি তোদের আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে নাক গলিয়েছিলো? না। কিন্তু তখনকার তোদের নেতারা কি শুরু করলো, অবাঙালিদের ঘরবাড়ি দখল করা, তাদের দোকানপাট নিজের নামে গুছিয়ে নেয়া। এসব করতে যেয়ে, যেই শোষণের বিরুদ্ধে তোরা যুদ্ধ করলি, সুযোগ পেয়ে নিজেরাই আবার শোষণ শুরু করলো! শুরু হলো, স্পেশাল বাহিনী, রক্ষী বাহিনী, বাঘছাল কতো কিছু। ফলে তোদের ওই রাজনৈতিক নেতাদের অর্থের প্রতি লোভের কারণে ধীরে ধীরে সেনাবাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে পড়লো।’ ‘একটা যুদ্ধের পরে ওলোট পালোট তো হোইতেই পারে! কেউ কেউতো মাল কামাইতেই পারে।’ ‘তোদের ওই বহাত্তোর তিয়াত্তোর সালের হোম সেক্রেটারি মরহুম শামসুদ্দিন আহমেদ স্যার, তার বাড়ি বানাবার জন্য ঢাকার রাজারবাগে তিন কাঠা জমি বিক্রি করলেন। অথচ তখন উনাকে ভিকারুননেসা নূন স্কুলের পাশের নওরতন কলোনির অবাঙালিদের ফেলে যাওয়া ফ্ল্যাট মাত্র পঁয়ষট্টি (৬৫,০০০) হাজার টাকায় কিনতে বলেছিলো। উনি জবাবে বললেন ‘জ্বি না। অবাঙালির দীর্ঘশ্বাস মিশ্রিত বাড়ি আমি কিনবো না।’

এই ছিলো বাংলাদেশের প্রথমদিককার প্রশাসক। আর শুনলে অবাক হবি উনি রাজারবাগ থেকে সচিবালয় হেঁটে অফিস যেতেন। আর এখন তোর প্রধানমন্ত্রীর গৃহভৃত্য চারশ কোটি টাকার মালিক!’

‘ঠিক আছে মানলাম, কিছু কিছু রাজনীতিবিদ মাল কামাইছে ক্যেলা হেইডাবি জানে না। খাটের নিচে বস্তা বস্তা ট্যাকা। আপনে সেনাবাহিনী আইলেন দেশের গন্ডোগোল মিটাইলেন। ভালো কথা এবার যান ব্যারেকে ফিইরা যান!’

‘ভাইরে তোরা তো প্রতিদিনই নিজেরা খুনো-খুনি কোরছিস। দেশে শান্তি কোইরে? গন্ডগোল তো লেগেই আছে। রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে মিল নেই। অথচ পাশের দেশে ভারতে দ্যেখ, আর্মি মানে পাবলিক সার্ভেন্ট। বর্ডারে যাও, কারণ ওদের রা’্রনায়করা দরকার হলে নিজের মুত্র মানে নিজের মুত পান করে কিন্তু ঘুষ খায় না। তোর দেশে মোরারজি দেশাইয়ের মতো এমনি রা’্র নায়ক দে, আর্মি ক্যান্টনমেন্টে ফেরৎ যাবে।’ ‘এ্যাতোই যদি আর্মি ভালা তো মঈনুদ্দিন ফকরুদ্দিন ফেইল করলো ক্যান?’ ‘ঘুরেফিরে ওই মাল। যখন ওয়ান ইলেভেনের পরে রাস্তায় রাস্তায় বস্তা বস্তা টাকা পড়ে থাকতে দেখলো ব্যাস জিহ্বা দিয়ে জল ঝরলো আর টাকার লোভে মঈনুদ্দি ফকরুদ্দিন ফেইল। ভাই, টাকার লোভ করেছো কি মরেছো।

সে যাই হোক জাতীয় নেতা হতে হলে তোমাকে নারী, অর্থ, ক্ষমতার অপব্যবহার এসব ছাড়তে হবে। নেতা হতে গেলে, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা লাগে। আসলে কষ্ট লাগে কি জানিস?’ ‘কি কন?’ ‘এই যে পাঁচই আগস্টের পর তরুণরা হাল ধরলো, কত আশায় বুক বাঁধলাম ওদের তো টাকার প্রতি লোভ থাকার কথা নয়। ছাত্র মানুষ জীবন শুরুই করেনি। কিন্তু কিসের কি? আজ পাজেরো, কাল হেলিকপ্টার, পরশু হবে ফ্ল্যাট, তারপর বিদেশে বেগমপাড়ায় বাড়ি! থোড়-বড়ি-খাড়া/ খাড়া-বড়ি-থোড়।’

‘কি কোইবেন কন। পোলাপান মানুষ একটু স্বাদ-আহ্লাদ পুরা করবো না। কি কন।’ ‘মুখে বোলছিস সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্ট ফিরে যান। আর কাজ কোরছিস ‘সেনাবাহিনী সারা জীবন সমাজে থেকে যান’। একটু ভেবে দেখিস খালি খালি মুখে মুখে প্রতিধ্বনি করলেই হবে না। সত্যিকারের মানুষ হতে হবে, না হলে মইনুদ্দিন ফকরুদ্দিনের মতো শত ভাগ পাবলিক সাপোর্ট সাথে আর্মি তারপরেও ফেইল। লজ্জা লজ্জা।’

‘আমগো দেশের মানুষের তো লাজ লজ্জার বালাই নাই নাইলে, শিশুর উপর অত্যাচার করে, মেট্রোরেলে মহিলা কম্পার্টমেন্টে পুরুষ যাত্রী ট্র্যাভেল করে!’ ‘তাহলে ভাই যতদিন না তোদের লজ্জাশরম ফেরৎ আসে, যতদিন না তোরা মানুষের মতো মানুষ হোস, ততদিন আর সেনাবাহিনীকে ব্যারেকে ফেরৎ যেতে বলিস না!’ ‘তায়লে থাউ¹া ক্যাচাল বাদ দিয়া হাসনাতরে লয়া ভূপন হাজারিকার গানটাই শুনিÑ মোর গাঁয়েরও সীমানার পাহাড়ের ওপারে নতুন দিনের যেন পদধ্বনি শুনি আমি পদধ্বনি শুনি...।’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

টেকসই উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে উপগ্রহ চিত্রই চাবিকাঠি

রাবার শিল্প : সংকট, করণীয় ও উত্তরণের দিশা

রম্যগদ্য : দুধ, দই, কলা...

ছবি

কোপার্নিকাস : আলো হয়ে জন্ম নেওয়া বৈপ্লবিক মতবাদের প্রবর্তক

জলবায়ু সংকটে মানবসভ্যতা

টেকসই অর্থনীতির জন্য চাই টেকসই ব্যাংকিং

ডিজিটাল দাসত্ব : মনোযোগ অর্থনীতি ও জ্ঞান পুঁজিবাদে তরুণ প্রজন্মের মননশীলতার অবক্ষয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার : আস্থা ভঙ্গ ও জবাবদিহিতার সংকট

আসামি এখন নির্বাচন কমিশন

কোথায় হারাল একান্নবর্তী পরিবার?

এই শান্তি কি মহাঝড়ের পূর্বলক্ষণ?

মেগাসিটি : দারিদ্র্য যখন ‘অবাঞ্ছিত বর্জ্য’

ফলের রাজ্য পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছবি

তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি : বামপন্থীরা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারে না

জমি আপনার, দখল অন্যের?

সিধু-কানু : ধ্বংসস্তূপের নিচেও জেগে আছে সাহস

ছবি

বাংলার অনন্য লোকসংস্কৃতি ও গণতান্ত্রিক চেতনা

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান

তিন দিক থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি : করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া

দেশের অর্থ পাচারের বাস্তবতা

খাদ্য নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত

আবারও কি রোহিঙ্গাদের ত্যাগ করবে বিশ্ব?

প্লান্ট ক্লিনিক বদলে দিচ্ছে কৃষির ভবিষ্যৎ

ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী করতে করণীয়

রম্যগদ্য : ‘ডন ডনা ডন ডন...’

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব : কে সন্ত্রাসী, কে শিকার?

সুস্থ ও শক্তিশালী জাতি গঠনে শারীরিক শিক্ষার গুরুত্ব

প্রতিরোধই উত্তম : মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়ার ডাক

ছবি

বিকাশের পথকে পরিত্যাগ করা যাবে না

বর্ষা ও বৃক্ষরোপণ : সবুজ বিপ্লবের আহ্বান

প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়া রোধে শিক্ষকের করণীয়

পারমাণবিক ন্যায়বিচার ও বৈশ্বিক ভণ্ডামির প্রতিচ্ছবি

পরিবেশের নীরব রক্ষক : শকুন সংরক্ষণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন

মশার উপদ্রব : জনস্বাস্থ্য ও নগর ব্যবস্থাপনার চরম ব্যর্থতা

ভুল স্বীকারে গ্লানি নেই

ভাঙনের বুকে টিকে থাকা স্বপ্ন

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রঙ্গব্যঙ্গ : ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি, প্রতিধ্বনি শুনি...’

জাঁ-নেসার ওসমান

শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫

কিরে ভাই বেইন্না ফজরত ভূপেন হাজারিকা লয়া পড়লেন- ‘প্রতিধ্বনি শুনি আমি, প্রতিধ্বনি শুনি...’

‘আরে বেটা এটা গান নয় এটা প্রতিধ্বনি...’। ‘জানি জানি কুনো পাহাড়ের কাছে যায়া আউউউ আওয়াজ করলে আবার ওই আউউউ শব্দ ফেরৎ আসে, হ্যেরে কয় প্রতিধ্বনি। হি হি হি।’ ‘তাহলে প্রতিধ্বনি হচ্ছে অরিজিনাল শব্দের হুবহু, ফেরৎ আসাকেই প্রতিধ্বনি বলে, ঠিক কি না?’ ‘হোই মিয়া খামখা অতো প্যেচান ক্যা! কি কোইতে চান সোজাসাপ্টা কয়া ফ্যালান।’ ‘না বোলছিলাম যে প্রায় ৫৪ (চুয়ান্ন) বছর পর হাসনাতের কন্ঠে শুনলাম ‘আপনারা দেশ রক্ষা করেন গিয়া, রাজনীতিতে আইসেন না। এ যেন ‘তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারেকে ফেরৎ যাও’এর প্রতিধ্বনি, শুনলাম।’ ‘কথাতো ঠিকই কোইছে, দেশ মাতৃকা রক্ষা করার লাই¹া কম দামে রেশন খাইবা, আবার এর লগে রাজনীতির ফায়দা লুটবা। বাহবা আলুবোখারার দুই মজা শাঁশও খাইবা আবার আঁটির ভেতরের বাদাম ভি পাইবা। ওরে আমার আল্লাদ রে!’

‘বুঝলাম তোর কথা ঠিক, কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছিস আর্মি কিভাবে, কখন, ক্যেনো তোদের রাজনীতিতে দখল নিলো!’ ‘হুনলাম সাত্তার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘুমাইলো, আর সকালে ঘুম থেইক্কা উইট্টা দ্যেখে হালায় পথের ভিখারি। সকাল বেলা রাজা আর ফকির সন্ধ্যা বেলা। আর্মি ক্যু কইরালচে।’

‘আরে ক্যুদেতা, তো রাজনৈতিক সরকার এলেই শেষ। কিন্তু তোর দেশের রাজনৈতিক নেতারা দুই নাম্বারী শুরু কোরলো বলেই না আর্মি দেশের অভ্যন্তরীণ গ-গোল শোধরাতে পথে নামলো। না হলে তুই বল যারা দেশ মাতৃকা রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গ করে, তারা কি চাইবে ভেড়ামারার রাস্তায় রাস্তায় ট্র্যাফিকিং করা, গরুরগাড়ির হেডলাইট চেক করা!! এটা কি ওদের মানায়?’

‘তো হ্যেগো বিরুদ্ধে পাবলিক চ্যেতলো ক্যা?’

‘আচ্ছা বল একাত্তরর স্বাধীনতার পর কোনো আর্মি কি তোদের আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে নাক গলিয়েছিলো? না। কিন্তু তখনকার তোদের নেতারা কি শুরু করলো, অবাঙালিদের ঘরবাড়ি দখল করা, তাদের দোকানপাট নিজের নামে গুছিয়ে নেয়া। এসব করতে যেয়ে, যেই শোষণের বিরুদ্ধে তোরা যুদ্ধ করলি, সুযোগ পেয়ে নিজেরাই আবার শোষণ শুরু করলো! শুরু হলো, স্পেশাল বাহিনী, রক্ষী বাহিনী, বাঘছাল কতো কিছু। ফলে তোদের ওই রাজনৈতিক নেতাদের অর্থের প্রতি লোভের কারণে ধীরে ধীরে সেনাবাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জড়িয়ে পড়লো।’ ‘একটা যুদ্ধের পরে ওলোট পালোট তো হোইতেই পারে! কেউ কেউতো মাল কামাইতেই পারে।’ ‘তোদের ওই বহাত্তোর তিয়াত্তোর সালের হোম সেক্রেটারি মরহুম শামসুদ্দিন আহমেদ স্যার, তার বাড়ি বানাবার জন্য ঢাকার রাজারবাগে তিন কাঠা জমি বিক্রি করলেন। অথচ তখন উনাকে ভিকারুননেসা নূন স্কুলের পাশের নওরতন কলোনির অবাঙালিদের ফেলে যাওয়া ফ্ল্যাট মাত্র পঁয়ষট্টি (৬৫,০০০) হাজার টাকায় কিনতে বলেছিলো। উনি জবাবে বললেন ‘জ্বি না। অবাঙালির দীর্ঘশ্বাস মিশ্রিত বাড়ি আমি কিনবো না।’

এই ছিলো বাংলাদেশের প্রথমদিককার প্রশাসক। আর শুনলে অবাক হবি উনি রাজারবাগ থেকে সচিবালয় হেঁটে অফিস যেতেন। আর এখন তোর প্রধানমন্ত্রীর গৃহভৃত্য চারশ কোটি টাকার মালিক!’

‘ঠিক আছে মানলাম, কিছু কিছু রাজনীতিবিদ মাল কামাইছে ক্যেলা হেইডাবি জানে না। খাটের নিচে বস্তা বস্তা ট্যাকা। আপনে সেনাবাহিনী আইলেন দেশের গন্ডোগোল মিটাইলেন। ভালো কথা এবার যান ব্যারেকে ফিইরা যান!’

‘ভাইরে তোরা তো প্রতিদিনই নিজেরা খুনো-খুনি কোরছিস। দেশে শান্তি কোইরে? গন্ডগোল তো লেগেই আছে। রাজনৈতিক নেতাদের মাঝে মিল নেই। অথচ পাশের দেশে ভারতে দ্যেখ, আর্মি মানে পাবলিক সার্ভেন্ট। বর্ডারে যাও, কারণ ওদের রা’্রনায়করা দরকার হলে নিজের মুত্র মানে নিজের মুত পান করে কিন্তু ঘুষ খায় না। তোর দেশে মোরারজি দেশাইয়ের মতো এমনি রা’্র নায়ক দে, আর্মি ক্যান্টনমেন্টে ফেরৎ যাবে।’ ‘এ্যাতোই যদি আর্মি ভালা তো মঈনুদ্দিন ফকরুদ্দিন ফেইল করলো ক্যান?’ ‘ঘুরেফিরে ওই মাল। যখন ওয়ান ইলেভেনের পরে রাস্তায় রাস্তায় বস্তা বস্তা টাকা পড়ে থাকতে দেখলো ব্যাস জিহ্বা দিয়ে জল ঝরলো আর টাকার লোভে মঈনুদ্দি ফকরুদ্দিন ফেইল। ভাই, টাকার লোভ করেছো কি মরেছো।

সে যাই হোক জাতীয় নেতা হতে হলে তোমাকে নারী, অর্থ, ক্ষমতার অপব্যবহার এসব ছাড়তে হবে। নেতা হতে গেলে, অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা লাগে। আসলে কষ্ট লাগে কি জানিস?’ ‘কি কন?’ ‘এই যে পাঁচই আগস্টের পর তরুণরা হাল ধরলো, কত আশায় বুক বাঁধলাম ওদের তো টাকার প্রতি লোভ থাকার কথা নয়। ছাত্র মানুষ জীবন শুরুই করেনি। কিন্তু কিসের কি? আজ পাজেরো, কাল হেলিকপ্টার, পরশু হবে ফ্ল্যাট, তারপর বিদেশে বেগমপাড়ায় বাড়ি! থোড়-বড়ি-খাড়া/ খাড়া-বড়ি-থোড়।’

‘কি কোইবেন কন। পোলাপান মানুষ একটু স্বাদ-আহ্লাদ পুরা করবো না। কি কন।’ ‘মুখে বোলছিস সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্ট ফিরে যান। আর কাজ কোরছিস ‘সেনাবাহিনী সারা জীবন সমাজে থেকে যান’। একটু ভেবে দেখিস খালি খালি মুখে মুখে প্রতিধ্বনি করলেই হবে না। সত্যিকারের মানুষ হতে হবে, না হলে মইনুদ্দিন ফকরুদ্দিনের মতো শত ভাগ পাবলিক সাপোর্ট সাথে আর্মি তারপরেও ফেইল। লজ্জা লজ্জা।’

‘আমগো দেশের মানুষের তো লাজ লজ্জার বালাই নাই নাইলে, শিশুর উপর অত্যাচার করে, মেট্রোরেলে মহিলা কম্পার্টমেন্টে পুরুষ যাত্রী ট্র্যাভেল করে!’ ‘তাহলে ভাই যতদিন না তোদের লজ্জাশরম ফেরৎ আসে, যতদিন না তোরা মানুষের মতো মানুষ হোস, ততদিন আর সেনাবাহিনীকে ব্যারেকে ফেরৎ যেতে বলিস না!’ ‘তায়লে থাউ¹া ক্যাচাল বাদ দিয়া হাসনাতরে লয়া ভূপন হাজারিকার গানটাই শুনিÑ মোর গাঁয়েরও সীমানার পাহাড়ের ওপারে নতুন দিনের যেন পদধ্বনি শুনি আমি পদধ্বনি শুনি...।’

[লেখক : চলচ্চিত্রকার]

back to top