রেজাউল করিম খোকন
টেকসই অর্থনীতি, বিশেষ করে টেকসই ব্যাংকিং এখন উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ধস নামার অভিজ্ঞতা যেমন দেখা গেছে লেবানন, শ্রীলঙ্কা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে, তেমনি বাংলাদেশেও এর প্রভাব স্পষ্ট। এই প্রেক্ষাপটে ‘টেকসই ব্যাংকিং’-এর প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে।
২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘টেকসই অর্থায়ন নীতিমালা’ জারি করে, যা ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরপর থেকেই ব্যাংকগুলো পরিবেশবান্ধব শিল্প ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের প্রতি আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। কেউ বেছে নেয় কৃষি খাত, কেউ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ইটিপি, কেউ সরবরাহ শৃঙ্খলা, আবার কেউবা সামাজিক দায়বদ্ধতাকে। মূল লক্ষ্য একটাইÑটেকসই উন্নয়নের ধারাকে শক্তিশালী করা।
বর্তমানে ব্যাংকগুলো তাদের অর্থায়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিবেশ সুরক্ষা, বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি করছে। একই সঙ্গে টেকসই শিল্পে উদ্যোক্তা গড়তে সহজ শর্তে অর্থায়নের সুযোগ বাড়ানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার কার্যক্রমকেও আরও সুসংগঠিত করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ডিজাস্টার’ টেকসই ব্যাংকিং বাস্তবায়নের জন্য নয়টি মূল স্তম্ভ চিহ্নিত করেছেÑ সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও সামাজিক অবদান, মানবাধিকার রক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং, সুশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি, অংশীদারিত্ব এবং স্বচ্ছতা ও রিপোর্টিং। টেকসই ব্যাংকিংকে একটি পরিপূর্ণ আর্থ-সামাজিক কাঠামো হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই এর উদ্দেশ্য।
এখন অনেক ব্যাংক তাদের শাখা ও এটিএমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার বাড়াচ্ছে, এমনকি কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব কারখানায় অর্থায়নের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎসহ অন্যান্য সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে পরিবেশে বাস্তব উপকার হচ্ছে, যদিও সুনির্দিষ্ট পরিমাপের অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দিষ্টভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো এবং আধুনিক ইটভাটায় অর্থায়নের আহ্বান জানানো হচ্ছে। ২০২২ সালে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই প্রকল্পে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা তাদের মোট ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ। ২০২৫ সালের মার্চে এ অর্থায়ন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল রেটিং চালু হওয়ায় ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। রেটিংয়ের ক্ষেত্রে পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়Ñ টেকসই অর্থায়ন, সামাজিক দায়বদ্ধতা, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়ন, কোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের টেকসইতা এবং ব্যাংকিং সেবার প্রসার।
পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ পরিশোধে সুশৃঙ্খলতা দেখা যাচ্ছে। যেমনÑ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারকারী, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকারী এবং বায়োলজিক্যাল ইটিপি ব্যবহারকারী পোশাক কারখানাগুলো ঋণ পরিশোধে সফল। জাহাজভাঙা শিল্পেও পরিবেশবান্ধব রূপান্তর শুরু হয়েছে। ফলে এ খাতে টেকসই অর্থায়ন বাড়ছে এবং বিনিয়োগের ঝুঁকি কমছে।
কোভিড-১৯ আমাদের উন্নয়ন কাঠামোয় যেমন ধাক্কা দিয়েছে, তেমনি পরিবেশ সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে এনেছে। এই বাস্তবতায় পরিবেশবান্ধব স্থাপনার কিছু সূচক বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ: যেমনÑজ্বালানি দক্ষতা, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ পরিবেশগত মান, প্রযুক্তির ব্যবহার, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং কার্যকর বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ। বাংলাদেশে যেসব পোশাক কারখানা আন্তর্জাতিক গ্রিন সার্টিফায়েড, তাদের বেশিরভাগই এই সূচকগুলো মেনে চলে।
বিশ্বের নামী ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো এখন স্বল্প কার্বনফুটপ্রিন্ট সম্পন্ন পোশাক কিনতে আগ্রহী। এর মানে দাঁড়ায়, টেকসই উন্নয়ন আর বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য এখন পরস্পর নির্ভরশীল। শুধু অর্থায়ন নয়, ইএসজি নির্দেশকগুলোর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে।
এক প্রাচীন পোলিশ প্রবাদ বলেÑ ‘প্রকৃতিকে যদি পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়, সে কামান দিয়ে জবাব দেয়।’ ইউরোপের তীব্র তাপপ্রবাহ, দাবানল, অস্বাভাবিক ভূমিকম্প এবং বরফগলন প্রমাণ করে দিয়েছে, আমরা প্রকৃতির প্রতিশোধের মুখে আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তাই এখন দায়িত্বÑঅর্থায়নের প্রতিটি সিদ্ধান্তে টেকসই উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সৌরবিদ্যুৎ, উইন্ডমিল কিংবা বায়োগ্যাসের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি এসব প্রযুক্তি দেশীয়ভাবে উৎপাদনে সহায়তা করতে হবে।
‘পরিবেশানুকূল উদ্যোগ’ নিজেই এখন একটি শিল্প খাতে পরিণত হতে পারে। এজন্য চাই পরিকল্পিত জাতীয় নীতি। শুধু তেল বিক্রি সীমিত করা বা রেশনিং যথেষ্ট নয়; আমাদের উচিত ইতিবাচক ও উদ্ভাবনভিত্তিক কৌশল গ্রহণ। উদ্ভাবনী কর্মকা-ে ব্যাংকগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা বাড়াতে হবে। গবেষণা, আবিষ্কার এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে বিনিয়োগকে ব্যাংকিং কার্যক্রমের অংশ করতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশে জৈববর্জ্য এখন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কাঁচামাল। ফলে দূষণ যেমন কমছে, তেমনি কম খরচে নানা ধরনের উপাদান তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশেও প্যাকেজিং শিল্পসহ নানা খাতে এর চাহিদা বাড়ছে।
অতীতে দেশের ব্যাংকিং খাত এই টেকসই উন্নয়নের মূলস্রোতে সম্পৃক্ত ছিল না; কিন্তু এখন তারা সবুজ পণ্য উৎপাদন ও পরিবেশবান্ধব বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। ব্যাংকগুলো নিজেদের করপোরেট দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে জলবায়ু-শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার কথাও ভাবছে।
বাংলাদেশ যে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। টেকসই ব্যাংকিং শুধু পরিবেশ সুরক্ষার জন্য নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও জনবান্ধব আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য জরুরি। এই কাঠামো সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বার্থান্বিত করবে।
টেকসই ব্যাংকিং একটি নতুন ধারণা হলেও বিশ্ব পরিবেশ এবং জলবায়ুগত বিভ্রাট এবং তজ্জনিত বিপর্যয়ের আলোকে এই নতুন ‘অ্যাপ্রোচটি’ নিয়ে এখন খুব জোরেশোরে কথা চলছে। ইতোমধ্যেই এই নতুন ধারার কিছু প্রকার-প্রকরণ এবং আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংজ্ঞাবদ্ধতাও পরিদৃশ্যমান। সবই পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন সম্পর্কিত। যেমন কোথাও একে বলা হচ্ছে গ্রিন ব্যাংকিং কোথাও বলা হচ্ছে গ্রিন ফাইন্যান্স; আবার বড় দাগের বৈশিষ্ট্যের মধ্যেও বিশেষ সংজ্ঞা উঠে এসেছে। এছাড়া ব্যাংকসমূহের নিজস্ব স্কুল ব্যাংকিংয়ের অঙ্গীকার তো আছেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সারা বিশ্বে।
কার্বন নিঃসরণ কমাতে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে ঝুঁকছে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব কারখানা ২০০টির বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিবেশবান্ধব প্রকল্প ও টেকসই অর্থায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করছে। ফলে এসব খাতে অর্থায়নও বাড়ছে। এখন দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের প্রায় ১৪ শতাংশই টেকসই খাতে। টেকসই অর্থায়নের পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে অনেক ব্যাংক শাখা ও এটিএমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনছে কোনো কোনো ব্যাংক। আবার টেকসই অর্থায়নের আওতায় এমন প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে, যেখানে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে পরিবেশ কতটা সুরক্ষিত হচ্ছে, তার কোনো হিসাব যদিও নেই; তবে অর্থায়নের নীতি ও কৌশলের মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। সারা বিশ্বে পরিবেশের সুরক্ষা এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব স্থাপনা খাতে ঋণের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ইটকারখানাতেও ঋণ দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এতে সরাসরি পরিবেশের ক্ষতি ঠেকানো যাবে। বসবাসের উপযোগী হবে এই ধরণি।
মানুষ যেভাবে প্রকৃতির ভারসমতাকে বিনষ্ট করেছে তারই প্রতিশোধ চলছে ইউরোপে ৪৫ থেকে ৫০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায়; শীত ও বর্ষার মধ্যেও দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে বনভূমি ও জনপদ; অস্বাভাবিক ভূকম্পন হচ্ছে; সমুদ্র উঁচু হয়ে উঠছে; মেরুতে বিশাল বিশাল বরফখ- গলে গলে পড়ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি সংবেদনশীলতার গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাই যেভাবে এগিয়ে আসছে এজন্য প্রশংসা ও অভিনন্দন দুটিই তাদের পাওনা। কোনো কোনো ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি উদ্যোগে টেকসই উন্নয়নকে মূল প্রতিপাদ্য করে নেবার সময় এসেছে। কার্বন নিঃসরণ আমাদের কমাতেই হবে। দাহ্য বর্জ্যরে আগ্রাসন কমাতে বিকল্প ও নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকতেই হবে।
আগে এটা হয়তো মূল্যবোধের ব্যাপার ছিল; কিন্তু এখন এটা অস্তিত্বের প্রশ্ন। প্রকৃতি বাঁচলে আমরা বাঁচব। প্রকৃতি পচলে আমরাও রসাতলে যাব। ব্যাংকগুলো বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত প্ল্যান্ট কিংবা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এই গুরুত্ববোধকে আরো বাড়াতে হবে। উৎপাদন ও সরবরাহ ধারায় অর্থায়ন বা অর্থ-সংস্থানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়। যেসব শিল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য হলেও ব্যবস্থা (ইটিপি) নেই, সেই শিল্পে ব্যাংক অর্থায়নে অপারগ, এটা পরিষ্কার করে বলে দিতে হবে। এ ধরনের পরিবেশানুকূল উদ্যোগে দীর্ঘমেয়াদি এবং সহজ শর্তে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো এই খাতে উৎসাহী হয়। তেমনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা শক্তি খাতেও সহজ শর্তে মেয়াদি বিনিয়োগের কথা ভাবতে হবে, যাতে সৌর বিদ্যুতের আরো প্রসার ঘটে এবং দেশে সৌর বিদ্যুতের প্যানেলসহ অন্য সব যন্ত্র এবং প্রযুক্তি তৈরি করার পথ সুগম করতে হবে, যাতে সৌরবিদ্যুতে মানুষের ঝোঁক এবং নির্ভরশীলতা আরো বাড়ে। ভাবতে হবে ‘উইন্ডমিলের’ কথাও।
[লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার]
রেজাউল করিম খোকন
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
টেকসই অর্থনীতি, বিশেষ করে টেকসই ব্যাংকিং এখন উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ধস নামার অভিজ্ঞতা যেমন দেখা গেছে লেবানন, শ্রীলঙ্কা কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশে, তেমনি বাংলাদেশেও এর প্রভাব স্পষ্ট। এই প্রেক্ষাপটে ‘টেকসই ব্যাংকিং’-এর প্রয়োজনীয়তা জোরালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে।
২০২০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘টেকসই অর্থায়ন নীতিমালা’ জারি করে, যা ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এরপর থেকেই ব্যাংকগুলো পরিবেশবান্ধব শিল্প ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের প্রতি আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। কেউ বেছে নেয় কৃষি খাত, কেউ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ইটিপি, কেউ সরবরাহ শৃঙ্খলা, আবার কেউবা সামাজিক দায়বদ্ধতাকে। মূল লক্ষ্য একটাইÑটেকসই উন্নয়নের ধারাকে শক্তিশালী করা।
বর্তমানে ব্যাংকগুলো তাদের অর্থায়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিবেশ সুরক্ষা, বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও নবায়নযোগ্য শক্তির মতো বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি করছে। একই সঙ্গে টেকসই শিল্পে উদ্যোক্তা গড়তে সহজ শর্তে অর্থায়নের সুযোগ বাড়ানো হচ্ছে। এর পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার কার্যক্রমকেও আরও সুসংগঠিত করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ডিজাস্টার’ টেকসই ব্যাংকিং বাস্তবায়নের জন্য নয়টি মূল স্তম্ভ চিহ্নিত করেছেÑ সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও সামাজিক অবদান, মানবাধিকার রক্ষা, নারী ক্ষমতায়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং, সুশাসন, দক্ষতা বৃদ্ধি, অংশীদারিত্ব এবং স্বচ্ছতা ও রিপোর্টিং। টেকসই ব্যাংকিংকে একটি পরিপূর্ণ আর্থ-সামাজিক কাঠামো হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই এর উদ্দেশ্য।
এখন অনেক ব্যাংক তাদের শাখা ও এটিএমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করছে, প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার বাড়াচ্ছে, এমনকি কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান পরিবেশবান্ধব কারখানায় অর্থায়নের মাধ্যমে সৌরবিদ্যুৎসহ অন্যান্য সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে পরিবেশে বাস্তব উপকার হচ্ছে, যদিও সুনির্দিষ্ট পরিমাপের অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দিষ্টভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো এবং আধুনিক ইটভাটায় অর্থায়নের আহ্বান জানানো হচ্ছে। ২০২২ সালে দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো টেকসই প্রকল্পে প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা অর্থায়ন করেছে, যা তাদের মোট ঋণের প্রায় ১০ শতাংশ। ২০২৫ সালের মার্চে এ অর্থায়ন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল রেটিং চালু হওয়ায় ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। রেটিংয়ের ক্ষেত্রে পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়Ñ টেকসই অর্থায়ন, সামাজিক দায়বদ্ধতা, পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়ন, কোর ব্যাংকিং কার্যক্রমের টেকসইতা এবং ব্যাংকিং সেবার প্রসার।
পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ পরিশোধে সুশৃঙ্খলতা দেখা যাচ্ছে। যেমনÑ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারকারী, কার্বন নিঃসরণ হ্রাসকারী এবং বায়োলজিক্যাল ইটিপি ব্যবহারকারী পোশাক কারখানাগুলো ঋণ পরিশোধে সফল। জাহাজভাঙা শিল্পেও পরিবেশবান্ধব রূপান্তর শুরু হয়েছে। ফলে এ খাতে টেকসই অর্থায়ন বাড়ছে এবং বিনিয়োগের ঝুঁকি কমছে।
কোভিড-১৯ আমাদের উন্নয়ন কাঠামোয় যেমন ধাক্কা দিয়েছে, তেমনি পরিবেশ সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা নতুন করে সামনে এনেছে। এই বাস্তবতায় পরিবেশবান্ধব স্থাপনার কিছু সূচক বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ: যেমনÑজ্বালানি দক্ষতা, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ পরিবেশগত মান, প্রযুক্তির ব্যবহার, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং কার্যকর বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ। বাংলাদেশে যেসব পোশাক কারখানা আন্তর্জাতিক গ্রিন সার্টিফায়েড, তাদের বেশিরভাগই এই সূচকগুলো মেনে চলে।
বিশ্বের নামী ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো এখন স্বল্প কার্বনফুটপ্রিন্ট সম্পন্ন পোশাক কিনতে আগ্রহী। এর মানে দাঁড়ায়, টেকসই উন্নয়ন আর বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য এখন পরস্পর নির্ভরশীল। শুধু অর্থায়ন নয়, ইএসজি নির্দেশকগুলোর বাস্তবায়নেও গুরুত্ব দিতে হবে।
এক প্রাচীন পোলিশ প্রবাদ বলেÑ ‘প্রকৃতিকে যদি পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়, সে কামান দিয়ে জবাব দেয়।’ ইউরোপের তীব্র তাপপ্রবাহ, দাবানল, অস্বাভাবিক ভূমিকম্প এবং বরফগলন প্রমাণ করে দিয়েছে, আমরা প্রকৃতির প্রতিশোধের মুখে আছি। বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তাই এখন দায়িত্বÑঅর্থায়নের প্রতিটি সিদ্ধান্তে টেকসই উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সৌরবিদ্যুৎ, উইন্ডমিল কিংবা বায়োগ্যাসের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি এসব প্রযুক্তি দেশীয়ভাবে উৎপাদনে সহায়তা করতে হবে।
‘পরিবেশানুকূল উদ্যোগ’ নিজেই এখন একটি শিল্প খাতে পরিণত হতে পারে। এজন্য চাই পরিকল্পিত জাতীয় নীতি। শুধু তেল বিক্রি সীমিত করা বা রেশনিং যথেষ্ট নয়; আমাদের উচিত ইতিবাচক ও উদ্ভাবনভিত্তিক কৌশল গ্রহণ। উদ্ভাবনী কর্মকা-ে ব্যাংকগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা বাড়াতে হবে। গবেষণা, আবিষ্কার এবং প্রযুক্তি উন্নয়নে বিনিয়োগকে ব্যাংকিং কার্যক্রমের অংশ করতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশে জৈববর্জ্য এখন গুরুত্বপূর্ণ শিল্প কাঁচামাল। ফলে দূষণ যেমন কমছে, তেমনি কম খরচে নানা ধরনের উপাদান তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশেও প্যাকেজিং শিল্পসহ নানা খাতে এর চাহিদা বাড়ছে।
অতীতে দেশের ব্যাংকিং খাত এই টেকসই উন্নয়নের মূলস্রোতে সম্পৃক্ত ছিল না; কিন্তু এখন তারা সবুজ পণ্য উৎপাদন ও পরিবেশবান্ধব বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। ব্যাংকগুলো নিজেদের করপোরেট দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে জলবায়ু-শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার কথাও ভাবছে।
বাংলাদেশ যে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। টেকসই ব্যাংকিং শুধু পরিবেশ সুরক্ষার জন্য নয়, বরং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও জনবান্ধব আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য জরুরি। এই কাঠামো সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বার্থান্বিত করবে।
টেকসই ব্যাংকিং একটি নতুন ধারণা হলেও বিশ্ব পরিবেশ এবং জলবায়ুগত বিভ্রাট এবং তজ্জনিত বিপর্যয়ের আলোকে এই নতুন ‘অ্যাপ্রোচটি’ নিয়ে এখন খুব জোরেশোরে কথা চলছে। ইতোমধ্যেই এই নতুন ধারার কিছু প্রকার-প্রকরণ এবং আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক সংজ্ঞাবদ্ধতাও পরিদৃশ্যমান। সবই পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন সম্পর্কিত। যেমন কোথাও একে বলা হচ্ছে গ্রিন ব্যাংকিং কোথাও বলা হচ্ছে গ্রিন ফাইন্যান্স; আবার বড় দাগের বৈশিষ্ট্যের মধ্যেও বিশেষ সংজ্ঞা উঠে এসেছে। এছাড়া ব্যাংকসমূহের নিজস্ব স্কুল ব্যাংকিংয়ের অঙ্গীকার তো আছেই। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সারা বিশ্বে।
কার্বন নিঃসরণ কমাতে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে ঝুঁকছে বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব কারখানা ২০০টির বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিবেশবান্ধব প্রকল্প ও টেকসই অর্থায়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎসাহিত করছে। ফলে এসব খাতে অর্থায়নও বাড়ছে। এখন দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের প্রায় ১৪ শতাংশই টেকসই খাতে। টেকসই অর্থায়নের পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে অনেক ব্যাংক শাখা ও এটিএমে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনছে কোনো কোনো ব্যাংক। আবার টেকসই অর্থায়নের আওতায় এমন প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে, যেখানে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে পরিবেশ কতটা সুরক্ষিত হচ্ছে, তার কোনো হিসাব যদিও নেই; তবে অর্থায়নের নীতি ও কৌশলের মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। সারা বিশ্বে পরিবেশের সুরক্ষা এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এজন্য দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেকসই অর্থায়নের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশবান্ধব স্থাপনা খাতে ঋণের লক্ষ্য বেঁধে দেওয়ার। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ইটকারখানাতেও ঋণ দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। এতে সরাসরি পরিবেশের ক্ষতি ঠেকানো যাবে। বসবাসের উপযোগী হবে এই ধরণি।
মানুষ যেভাবে প্রকৃতির ভারসমতাকে বিনষ্ট করেছে তারই প্রতিশোধ চলছে ইউরোপে ৪৫ থেকে ৫০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায়; শীত ও বর্ষার মধ্যেও দাবানলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে বনভূমি ও জনপদ; অস্বাভাবিক ভূকম্পন হচ্ছে; সমুদ্র উঁচু হয়ে উঠছে; মেরুতে বিশাল বিশাল বরফখ- গলে গলে পড়ছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি সংবেদনশীলতার গুরুত্ব অনুধাবন করে ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাই যেভাবে এগিয়ে আসছে এজন্য প্রশংসা ও অভিনন্দন দুটিই তাদের পাওনা। কোনো কোনো ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি উদ্যোগে টেকসই উন্নয়নকে মূল প্রতিপাদ্য করে নেবার সময় এসেছে। কার্বন নিঃসরণ আমাদের কমাতেই হবে। দাহ্য বর্জ্যরে আগ্রাসন কমাতে বিকল্প ও নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ঝুঁকতেই হবে।
আগে এটা হয়তো মূল্যবোধের ব্যাপার ছিল; কিন্তু এখন এটা অস্তিত্বের প্রশ্ন। প্রকৃতি বাঁচলে আমরা বাঁচব। প্রকৃতি পচলে আমরাও রসাতলে যাব। ব্যাংকগুলো বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত প্ল্যান্ট কিংবা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে অর্থায়নের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এই গুরুত্ববোধকে আরো বাড়াতে হবে। উৎপাদন ও সরবরাহ ধারায় অর্থায়ন বা অর্থ-সংস্থানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়। যেসব শিল্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য হলেও ব্যবস্থা (ইটিপি) নেই, সেই শিল্পে ব্যাংক অর্থায়নে অপারগ, এটা পরিষ্কার করে বলে দিতে হবে। এ ধরনের পরিবেশানুকূল উদ্যোগে দীর্ঘমেয়াদি এবং সহজ শর্তে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো এই খাতে উৎসাহী হয়। তেমনি নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা শক্তি খাতেও সহজ শর্তে মেয়াদি বিনিয়োগের কথা ভাবতে হবে, যাতে সৌর বিদ্যুতের আরো প্রসার ঘটে এবং দেশে সৌর বিদ্যুতের প্যানেলসহ অন্য সব যন্ত্র এবং প্রযুক্তি তৈরি করার পথ সুগম করতে হবে, যাতে সৌরবিদ্যুতে মানুষের ঝোঁক এবং নির্ভরশীলতা আরো বাড়ে। ভাবতে হবে ‘উইন্ডমিলের’ কথাও।
[লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার]