জাঁ-নেসার ওসমান
“যা ব্বাবা এ্যতো দিনে লাইনে আইছেন। বেশ বেশ “দুধ, দই, কলা” এইসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেইচ্চা পরবর্তী প্রজন্মের যেমুন স্বাস্থ্য ভালো হোইবো আপনেরও তেমন পকেটের অবস্থা স্বাস্থ্যবান হোইবো। তয় দোকান দিছেন না কি অন লাইনে অর্ডার লয়া হ্যের পর বেঁচতাছেন??”
“ওহে রামগড়–রের ছানা বাপে আছিলো ছাপোষা শিক্ষক। তার ছেলে আমি করব ব্যবসা!! আমাকে পাগলা কুকুর কামড়েছে নাকি!!”
“ক্যা ব্যবসা খারাপ কিয়ের? দেশে এ্যতো বড় বড় গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ গজায়ছে হ্যেরা হাজার হাজার পরিবারের প্রধানরে চাকরি দিয়া দেশের ও দশের উপকার করতাছে এহানে আপনে কি এমন পাপ দেখলেন যে ব্যবসা কোরতে আপনের আঁতে ঘা লাগে!!”
“স্যার আপনি বুঝতে চাচ্ছেন না, ক্যানো, বাংলাদেশে সৎভাবে ব্যবসা করা অসম্ভবের দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকার মতো।”
“আরে ভাই অসম্ভবকে সম্ভব করাই আপনাগো কাম। আপনে দ্যেহেন নাই কত্তো বড় বড় গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ নিজেগো দেশের চাহিদা মিটায়াও বিদেশে আমাগো বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি করতাছে। মিয়া ভাবতে পারেন পাকিস্তান আমলে ভেড়ামারার অজো পাড়াগাঁয়ের কীরমি ভরা প্যেটমোটা পোলাডা অহন হাজার কোটি ট্যাকার দেশীয় পণ্য পিরথিবীর উন্নত দেশগুলাতে রপ্তানি করতাছে। পিরাইভেট হেলিকপ্টারে চইড়া দেশের মইধ্যে ঘুরতাছে!! ভাবা পারেন মিয়া দেশ স্বাধীনের মাজেজা।”
“দেশ স্বাধীনের উপকারিতা তোমায় আর বুঝিয়ে বোলতে হবেনা। বিশ্ব মানের ক্রিকেট, আর্চারি, শুটিং, নারী ফুটবলÑ ক্রিকেট সবই আমাদের জয়গান করছে, আর স্বাধীন না হোলে এসব সোণার পাথর বাটিতে রূপান্তরিত হতো। কিন্তু আমি বলছিলাম তোমরা এ্যতো ইন্ডাস্ট্রিজের জয়গান করছো কিন্তু “দুধ দই কলা’তো সব ফ্রিজ-ট্রিজ কোরে কল-কারখানার বারোটা... না না চব্বিশটা বাজিয়েছে।”
“দুধ দই কলা” দ্যেশের কল-কারখানার ভেঁপু বাজানো থামাইছে!! আচ্ছা কনতো এই “দুধ দই কলা” এইডা ক্যেডা?”
“আরে ভাই এটা কোনো ব্যাক্তি নয় এটা হলো “দুধ দই কলা”। দুধের “দ” দই’এর “দ” আর কলার “ক” এই তিনে মিলে হলো “দুদক” দুর্নীতি দমন কমিশন।”
“আহারে কবি মানুষ কী সুন্দর মজা কইরা দুদক’রে কন “দুধ দই কলা”। হেঁ হেঁ দুদক আপনেগোরে কাঁচকলা দ্যেখারনি?”
“তোকে কী বলবো সব বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানিজের বিগশটরা দেশছেড়ে পগার পার, প্রায় সবের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, কোনো লেনদেন নাই। কর্মচারীরা সব না খেয়ে আধমরা...”
“অন্যায়ভাবে স্বৈরাচারী কায়দায় একলা একলা মাল কামাইবেন তো “দুধ দই কলা” মানে দুদক আপনেরে ধরবোনা তো কি চুমা খাইবো!!”
“আরে অন্যায় করলে তুই অন্যায়কারীকে ধর, পাকড়াও কর, বিচার কর, শাস্তি দে। তা না, পুরো প্রতিষ্ঠানটার বারোটা বাজাচ্ছিস ক্যানো! এতে কার লাভ হোচ্ছে?”
“লাভ হচ্ছে আমাগো প্রতিবেশী দেশ ভারতের। কারণ অহন গার্মেন্টেস’-এর ব্যেবাগ বড় বড় কন্ট্র্যাকট ভারতে চইল্লা যার।”
“তো, ৫ই, আগস্ট কি ভারতের ভালোর জন্য স্বৈরাচার তাড়িয়েছে? আপামর জনসাধারণের মুক্তির জন্য ছিল এ লড়াই, তা না এখন নিজেরা নিজেরা কামড়া কামড়ি করে অন্য দেশের লাভ হোচ্ছে। ধিক ধিক।”
“ধিকি ধিকি আগুন জ্বলে, বাঙালি হয়া বাঙালির গালে জুতা দিয়া পিটাইবেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারে গলায় জুতার মালা দিয়া ঘুরাইবেন আর যেই ব্যাডা জুতা দিয়া মারল হ্যেরে না ধইরা, ছাত্রদলের পোলারে অ্যারেস্ট কোরবেন...এই রহম তোঘলকি কারবার কোরলে আপনেরে ডনাল্ড ট্রাম্পও বাঁচাইতে পারেবোনা। দুদক তো কোন ছার।”
“এই যে ৫ই, আগস্টের পর পাকিস্তান থেকে মালামাল ইম্পোর্ট শুরু করলি ভারত বয়কট। কিন্তু তোরা তোদের “দুধ দই কলা” যা শুরু কোরেছে তাতে তোরা নিজেরাই কট! তোদের ৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনের সুফল পাচ্ছে ভারত। কারণ তোমরা নিজেরা নিজেরা কুস্তিকর মজা মারে থার্ড পার্টি। এই জন্য কি এ্যতোগুলা তাজাপ্রাণ আত্মহুতি দিলো!! এ্যতো মায়ের বুক খালি করলি ভারতের ভালোর জন্য। বলি হচ্ছেটা কি? কোথায় আজ বাংলার জনগণ বাংলার প্রকৃত মালিক।”
“ হেঁঃ হেঁঃ জনগণ দেশের মালিক!! হেঁঃ হেঁঃ মালিকরা মরার পর আখেরাতের জন্য এই নস্বর দুনিয়াদারির চিন্তা করে না ভাই। মরার পরই অনন্ত জীবন। আন্নে খামাখা হ্যেগোরে মানে মালিকগোরে ডাইকেন না। যুদি পারেন আপনের “দুধ দই কলা” মানে দুদকের চেয়ারম্যান স্যারের কাছে আর্জি পাঠান যে স্যার লাগে আপনে প্রতিটি বন্ধ হওয়া কারখানায় একটা কইরা ইন্টেরিম পরিচালনা পর্ষদ কইরা দেন হ্যেরাই ইন্ডাস্ট্রিগুলা চালাইবো বেকার কর্মচারীরা আবার কর্মক্ষেত্রে ফিইরা আইবো। আমাগো বড় বড় বিদেশি কন্ট্র্যাক্টগুলা আবার মায়ের বুকে ফিরবো।”
“ইয়েয়য়য়য় এতো সুন্দর একটা প্রস্তাব! তো এই সামান্য বুদ্ধিটাও কি কারো মাথায় আসেনি। না হ্যাটস অফ। যেভাবে ইন্টেরিম সরকার দেশ চালাচ্ছে ঠিক সেভাবে ইন্টেরিম ম্যানেজমেন্ট কমিটি কলকারখানা চালাবে গ্রেট।”
“তাই আমি কোই কি আকামে নিজেরা নিজেরা কামড়া কামড়ি না কোইরা ব্যেবাগতে মিল মিশ কোইরা চোললে সোনার বাংলা হীরার বাংলা হয়া যাইবো।”
“চল দেশের ভলোর জন্য তোর এই প্রস্তাব আমরা সবাই শাহবাগে যেয়ে রাস্তা বন্ধ করে যানজট পাকিয়ে, “দুধ দই কলা”র, চেয়ারম্যান স্যারকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি।”
“স্মারকলিপির লগে আসল দুধ দই কলা দিতে ভুইলেন না যেন।”
“হেঁঃ হেঁঃ হেঁঃ... ”
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]
জাঁ-নেসার ওসমান
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
“যা ব্বাবা এ্যতো দিনে লাইনে আইছেন। বেশ বেশ “দুধ, দই, কলা” এইসব স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেইচ্চা পরবর্তী প্রজন্মের যেমুন স্বাস্থ্য ভালো হোইবো আপনেরও তেমন পকেটের অবস্থা স্বাস্থ্যবান হোইবো। তয় দোকান দিছেন না কি অন লাইনে অর্ডার লয়া হ্যের পর বেঁচতাছেন??”
“ওহে রামগড়–রের ছানা বাপে আছিলো ছাপোষা শিক্ষক। তার ছেলে আমি করব ব্যবসা!! আমাকে পাগলা কুকুর কামড়েছে নাকি!!”
“ক্যা ব্যবসা খারাপ কিয়ের? দেশে এ্যতো বড় বড় গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ গজায়ছে হ্যেরা হাজার হাজার পরিবারের প্রধানরে চাকরি দিয়া দেশের ও দশের উপকার করতাছে এহানে আপনে কি এমন পাপ দেখলেন যে ব্যবসা কোরতে আপনের আঁতে ঘা লাগে!!”
“স্যার আপনি বুঝতে চাচ্ছেন না, ক্যানো, বাংলাদেশে সৎভাবে ব্যবসা করা অসম্ভবের দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকার মতো।”
“আরে ভাই অসম্ভবকে সম্ভব করাই আপনাগো কাম। আপনে দ্যেহেন নাই কত্তো বড় বড় গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ নিজেগো দেশের চাহিদা মিটায়াও বিদেশে আমাগো বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি করতাছে। মিয়া ভাবতে পারেন পাকিস্তান আমলে ভেড়ামারার অজো পাড়াগাঁয়ের কীরমি ভরা প্যেটমোটা পোলাডা অহন হাজার কোটি ট্যাকার দেশীয় পণ্য পিরথিবীর উন্নত দেশগুলাতে রপ্তানি করতাছে। পিরাইভেট হেলিকপ্টারে চইড়া দেশের মইধ্যে ঘুরতাছে!! ভাবা পারেন মিয়া দেশ স্বাধীনের মাজেজা।”
“দেশ স্বাধীনের উপকারিতা তোমায় আর বুঝিয়ে বোলতে হবেনা। বিশ্ব মানের ক্রিকেট, আর্চারি, শুটিং, নারী ফুটবলÑ ক্রিকেট সবই আমাদের জয়গান করছে, আর স্বাধীন না হোলে এসব সোণার পাথর বাটিতে রূপান্তরিত হতো। কিন্তু আমি বলছিলাম তোমরা এ্যতো ইন্ডাস্ট্রিজের জয়গান করছো কিন্তু “দুধ দই কলা’তো সব ফ্রিজ-ট্রিজ কোরে কল-কারখানার বারোটা... না না চব্বিশটা বাজিয়েছে।”
“দুধ দই কলা” দ্যেশের কল-কারখানার ভেঁপু বাজানো থামাইছে!! আচ্ছা কনতো এই “দুধ দই কলা” এইডা ক্যেডা?”
“আরে ভাই এটা কোনো ব্যাক্তি নয় এটা হলো “দুধ দই কলা”। দুধের “দ” দই’এর “দ” আর কলার “ক” এই তিনে মিলে হলো “দুদক” দুর্নীতি দমন কমিশন।”
“আহারে কবি মানুষ কী সুন্দর মজা কইরা দুদক’রে কন “দুধ দই কলা”। হেঁ হেঁ দুদক আপনেগোরে কাঁচকলা দ্যেখারনি?”
“তোকে কী বলবো সব বড় বড় গ্রুপ অব কোম্পানিজের বিগশটরা দেশছেড়ে পগার পার, প্রায় সবের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, কোনো লেনদেন নাই। কর্মচারীরা সব না খেয়ে আধমরা...”
“অন্যায়ভাবে স্বৈরাচারী কায়দায় একলা একলা মাল কামাইবেন তো “দুধ দই কলা” মানে দুদক আপনেরে ধরবোনা তো কি চুমা খাইবো!!”
“আরে অন্যায় করলে তুই অন্যায়কারীকে ধর, পাকড়াও কর, বিচার কর, শাস্তি দে। তা না, পুরো প্রতিষ্ঠানটার বারোটা বাজাচ্ছিস ক্যানো! এতে কার লাভ হোচ্ছে?”
“লাভ হচ্ছে আমাগো প্রতিবেশী দেশ ভারতের। কারণ অহন গার্মেন্টেস’-এর ব্যেবাগ বড় বড় কন্ট্র্যাকট ভারতে চইল্লা যার।”
“তো, ৫ই, আগস্ট কি ভারতের ভালোর জন্য স্বৈরাচার তাড়িয়েছে? আপামর জনসাধারণের মুক্তির জন্য ছিল এ লড়াই, তা না এখন নিজেরা নিজেরা কামড়া কামড়ি করে অন্য দেশের লাভ হোচ্ছে। ধিক ধিক।”
“ধিকি ধিকি আগুন জ্বলে, বাঙালি হয়া বাঙালির গালে জুতা দিয়া পিটাইবেন, বীর মুক্তিযোদ্ধারে গলায় জুতার মালা দিয়া ঘুরাইবেন আর যেই ব্যাডা জুতা দিয়া মারল হ্যেরে না ধইরা, ছাত্রদলের পোলারে অ্যারেস্ট কোরবেন...এই রহম তোঘলকি কারবার কোরলে আপনেরে ডনাল্ড ট্রাম্পও বাঁচাইতে পারেবোনা। দুদক তো কোন ছার।”
“এই যে ৫ই, আগস্টের পর পাকিস্তান থেকে মালামাল ইম্পোর্ট শুরু করলি ভারত বয়কট। কিন্তু তোরা তোদের “দুধ দই কলা” যা শুরু কোরেছে তাতে তোরা নিজেরাই কট! তোদের ৫ই আগস্টের পটপরিবর্তনের সুফল পাচ্ছে ভারত। কারণ তোমরা নিজেরা নিজেরা কুস্তিকর মজা মারে থার্ড পার্টি। এই জন্য কি এ্যতোগুলা তাজাপ্রাণ আত্মহুতি দিলো!! এ্যতো মায়ের বুক খালি করলি ভারতের ভালোর জন্য। বলি হচ্ছেটা কি? কোথায় আজ বাংলার জনগণ বাংলার প্রকৃত মালিক।”
“ হেঁঃ হেঁঃ জনগণ দেশের মালিক!! হেঁঃ হেঁঃ মালিকরা মরার পর আখেরাতের জন্য এই নস্বর দুনিয়াদারির চিন্তা করে না ভাই। মরার পরই অনন্ত জীবন। আন্নে খামাখা হ্যেগোরে মানে মালিকগোরে ডাইকেন না। যুদি পারেন আপনের “দুধ দই কলা” মানে দুদকের চেয়ারম্যান স্যারের কাছে আর্জি পাঠান যে স্যার লাগে আপনে প্রতিটি বন্ধ হওয়া কারখানায় একটা কইরা ইন্টেরিম পরিচালনা পর্ষদ কইরা দেন হ্যেরাই ইন্ডাস্ট্রিগুলা চালাইবো বেকার কর্মচারীরা আবার কর্মক্ষেত্রে ফিইরা আইবো। আমাগো বড় বড় বিদেশি কন্ট্র্যাক্টগুলা আবার মায়ের বুকে ফিরবো।”
“ইয়েয়য়য়য় এতো সুন্দর একটা প্রস্তাব! তো এই সামান্য বুদ্ধিটাও কি কারো মাথায় আসেনি। না হ্যাটস অফ। যেভাবে ইন্টেরিম সরকার দেশ চালাচ্ছে ঠিক সেভাবে ইন্টেরিম ম্যানেজমেন্ট কমিটি কলকারখানা চালাবে গ্রেট।”
“তাই আমি কোই কি আকামে নিজেরা নিজেরা কামড়া কামড়ি না কোইরা ব্যেবাগতে মিল মিশ কোইরা চোললে সোনার বাংলা হীরার বাংলা হয়া যাইবো।”
“চল দেশের ভলোর জন্য তোর এই প্রস্তাব আমরা সবাই শাহবাগে যেয়ে রাস্তা বন্ধ করে যানজট পাকিয়ে, “দুধ দই কলা”র, চেয়ারম্যান স্যারকে স্মারকলিপি দিয়ে আসি।”
“স্মারকলিপির লগে আসল দুধ দই কলা দিতে ভুইলেন না যেন।”
“হেঁঃ হেঁঃ হেঁঃ... ”
[লেখক : চলচ্চিত্রকার]