alt

উপ-সম্পাদকীয়

করোনাকালে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ

মাহবুবুর রহমান ও মতিউর রহমান

: রোববার, ১৮ জুলাই ২০২১

সামাজিকীকরণ সমাজতাত্ত্বিক ও মনোবৈজ্ঞানিক একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় একজন ব্যক্তিকে তার জন্মের পর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে থাকার প্রয়োজনে অনেক কিছু শিখতে হয়। এই শিক্ষণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, খেলার সাথী ও সমবয়সী দল, বন্ধু, প্রতিবেশী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, কর্মস্থান এবং চেনা-অচেনা অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার নিজস্ব ভাষা, পারিবারিক নিয়ম-কানুন, আদব-কায়দা, আচার-আচরণ, সামাজিক রীতিনীতি, সামাজিক শৃঙ্খলা, প্রথা-পদ্ধতি, মূল্যবোধ, ইত্যাদি আয়ত্ত করে সমাজের উপযোগী একজন সদস্য হয়ে ওঠে। জীবনব্যাপী চলতে থাকা এ শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে সামাজিকীকরণ বলে। সামাজিকীকরণ যথাযথ না হলে শিশুর বা ব্যক্তির মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে সে অনেক অসামাজিক আচরণ করতে পারে। ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম ঘটলে তার প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে।

করোনাকালে ব্যক্তির বিশেষ করে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে সামাজিকীকরণের যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে বিগত প্রায় ৯০ বছরের মধ্যে এমনটি ঘটেনি। করোনাভাইরাস পৃথিবীব্যাপী মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এ রোগের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্যগত ও মনস্তাত্ত্বিক অভিঘাত নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক গবেষণা হয়েছে। তবে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ওপর এর অভিঘাত নিয়ে এখনও কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা নেই।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা, প্রকাশিত সংবাদ ও সাধারণ পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায় যে, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, লকডাউন বা শাটডাউন ঘোষণা, অফিস-আদালতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার কারণে অনেকেই ঘরে থাকতে বাধ্য। অনেকের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে, অসংখ্য মানুষ হারিয়েছেন। এসব থেকে সৃষ্ট ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও মানসিক চাপের বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবারে ও ছেলেমেয়েদের ওপর। দেশে শিশু, কিশোর ও ছাত্রছাত্রীদের ওপর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার যে চ্যালেঞ্জসমূহ তৈরি হয়েছে সেগুলো হলো-

প্রথমত : যেসব মাধ্যমে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সাধিত হয় তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম পরিবার। পরিবারেই শিশুর চিন্তা, আবেগ ও কর্মের অভ্যাস গঠিত হয়। একটি শিশুর সুকোমল বৃত্তিগুলো এবং সুপ্ত প্রতিভা পরিবারের মাধ্যমেই বিকাশ লাভ করে। শিশু পরিবার থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও গ্রহণ করে, পরিবার থেকেই একটি শিশু আচার-আচরণ, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে একজন যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে। সুতরাং একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে পরিবারের তিনটি বিষয়ের ওপর- মা-বাবার সম্পর্ক, মা-বাবা ও শিশুর মধ্যে সম্পর্ক, একই পরিবারের একাধিক শিশুদের মধ্যে পরস্পরের সম্পর্ক। উল্লিখিত সম্পর্কসমূহ যদি ইতিবাচক হয় তবে শিশু সৎ, ব্যক্তিত্বপূর্ণ এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠে এবং সমাজে সহজ জীবনযাপন করতে পারে। শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা পূর্ণ বিকাশও হয়ে থাকে।

পরিবার বিশেষ করে বাবা-মা যেহেতু শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম স্থান সেই পরিবারেই যদি উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা, ঝগড়া, দ্বন্দ্ব কাজ করে তাহলে তার প্রভাব শিশুর ওপর পড়তে বাধ্য। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, করোনাকালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিবারে এখন উপরোক্ত সমস্যগুলো বিরাজমান। সুতরাং শিশুর স্বাভাবিক যে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া করোনাকালে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে- এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এছাড়া এ সময়ে যেসব নতুন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে তারাও যথোপযুক্ত সামাজিকীকরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একমাত্র বাবা-মা ছাড়া অন্য কোন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তাদের কোন পরিচয় ঘটছে না এতে তারা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আবেগ-অনুভূতি ও স্নেহ, মমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিক থেকেও বলা যায় যে, নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রেও সামাজিকীকরণ ব্যাহত হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত : শিশু, কিশোর-কিশোরীদের সামাজিকীকরণে তাদের সঙ্গী বা খেলার সাথীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। শিশু, কিশোর-কিশোরীরা তাদের খেলার সঙ্গীদের খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান হয়, শারীরিক দক্ষতা গড়ে ওঠে যা তাদের বলিষ্ঠ মনোবল গঠনে সহায়তা করে এবং নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলী পরিস্ফুট হয়। সে স্বাবলম্বী হতে শেখে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে শিশু বা ছেলে-মেয়েরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা আগের মতো একত্রে খেলাধুলা করা বা অন্য কোন সৃজনশীল কাজে যোগ দিতে পারছে না; যার ফলে তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে ব্যাঘাত ঘটছে।

তৃতীয়ত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো শিশুর সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক ভাব বিনিময়, মিথস্ক্রিয়া হয় ও শিক্ষকদের নিকট থেকে অনেক কিছু শেখে যা তার সামাজিকীকরণে সহায়ক হয়। সমাজের সদস্য হিসেবে যাতে সামাজিক মূল্যবোধ, সামাজিক আদর্শ, সামাজিক অভ্যাসগুলো আয়ত্ত করতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো শিক্ষা দেয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছরকাল ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

চর্তুথত : ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। শৈশবকাল থেকে যে ব্যক্তি যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ব্যক্তি সেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে লালিত হয় এবং সেই ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তীকালে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। ধর্ম মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ তথা সত্যবাদিতা, কর্তব্যপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত হতে শিক্ষা দেয়। এককথায়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু করোনাকালে অধিকাংশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় এবং কোনো কোনো সময় করোনার দ্রুত বিস্তাররোধে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় এর প্রভাব ছেলেমেয়েদের ওপর পড়েছে; যা তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

পঞ্চমত : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যম হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। তবে এগুলো সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যম বিশেষ করে টেলিভিশনে করোনা সংক্রান্ত খবর দেখে ও শুনে ছেলেমেয়েদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ পড়ে; যা তাদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতির মধ্যে রাখে এবং তাদের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণে বাধা দেয়। তবে আশার কথা হলো এ করোনাকালে গণমাধ্যমগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র, কার্টুন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করে ছেলেমেয়েদের মনোবল দৃঢ় ও সতেজ রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।

করোনাকালে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীরা অতিরিক্ত মাত্রায় ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর খেলাধুলার কারণে তাদের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে বিভিন্ন প্রকার গেমস খেলে তাদের মধ্যে গেমিং ডিসঅর্ডারও তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রাম অপেক্ষা শহরাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর ক্রিয়াকলাপ বেশি। তাছাড়া পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর খেলাধুলা বেশি করছে; যার নেতিবাচক প্রভাব অনেক শিশুর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। তারা আক্রমণাত্মক ও ক্ষিপ্ত স্বভাবের হয়ে পড়ছে। এসবই সামাজিকীকরণের চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।

করোনা মহামারি শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীদের সামাজিকীকরণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কতটুকু প্রভাব ফেলছে তার গবেষণাভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত এখনও পর্যন্ত আমাদের জানা নেই। তবে এ কথা সত্য, করোনাকালে একটা প্রজন্মের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া যে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভয়, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, অবিশ্বাস, যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব- ইত্যাদি কারণে করোনা-উত্তর এই প্রজন্মের মানসিক ও সামাজিক ভারসাম্যহীন আচরণ যে মোকাবেলা করতে হবে সে বিষয়ে হয়ত কারো কোনো দ্বিধা নেই।

এমতাবস্থায় করোনাকলে একটা প্রজন্মের যথাযথ সামাজিকীকরণের যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে তা কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সে বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের এখনই মনোযোগ দিতে হবে বলে আমরা মনে করি। বৈরী এ সময়ে বাবা ও মাকে তাদের সন্তানদের বেশি করে সময় দেওয়া, ডিজিটাল ডিভাইস নির্ভরতা কমাতে বাড়ি বা ঘরের মধ্যেই যতটুকু সম্ভব তাদের অন্যান্য খেলাধুলায় নিয়োজিত করা, মজার কোন গল্পের বই পড়া, ছড়া আবৃত্তি করা, ছবি আঁকা শেখানো, শিশুদের সঙ্গে একত্রে বসে শিশুদের উপযোগী কোন চলচ্চিত্র দেখা, সংবাদপত্র পড়ানো, দেশ-বিদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভাব বিনিময় করানো (ভার্চুয়ালি), যাদের বাসায় ছাদ আছে সেখানে ছাদ বাগানে নিয়ে যাওয়া, আকাশের এবং আশপাশের দৃশ্য উপভোগ করা, লুডু, ক্যারম খেলা বা পাজল মেলানো, সম্ভব হলে একই বিল্ডিংয়ে বসবাসরত সব শিশুদের নিয়ে মজার কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন, ইত্যাদির মাধ্যমে শিকুদের মনোবল চাঙ্গা রাখা যাবে- ফলে তাদের মধ্যকার ভয়-ভীতি দূর হবে ও কিছুটা হলেও সামাজিকীকরণ হবে এবং এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।

[লেখক : মাহবুবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, সমাজকর্ম বিভাগ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর। মতিউর রহমান, গবেষণা পরামর্শক, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি), ঢাকা]

ছবি

স্মরণ : কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

দাবদাহে সুস্থ থাকবেন কীভাবে

কত দিন পরে এলে, একটু শোনো

রম্যগদ্য : আনন্দ, দ্বিগুণ আনন্দ...

ছবি

ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় নাম

বৈসাবি : ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব

‘ইন্ডিয়া আউট’ ক্যাম্পেইন

উদার-উদ্দাম বৈশাখ চাই

ঈদ নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি, বিস্তৃত হোক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ

প্রসঙ্গ: বিদেশি ঋণ

ছাত্ররাজনীতি কি খারাপ?

জাকাত : বিশ্বের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস : শুরুর কথা

ছবি

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত

প্রবাসীর ঈদ-ভাবনা

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

ধানের ফলন বাড়াতে ক্লাইমেট স্মার্ট গুটি ইউরিয়া প্রযুক্তি

কমিশন কিংবা ভিজিটে জমি রেজিস্ট্রির আইনি বিধান ও প্রাসঙ্গিকতা

ছবি

ঈদের অর্থনীতি

পশ্চিমবঙ্গে ভোটের রাজনীতিতে ‘পোস্ট পার্টিশন সিনড্রম’

শিক্ষকের বঞ্চনা, শিক্ষকের বেদনা

নিরাপদ সড়ক কেন চাই

রম্যগদ্য : ‘প্রহরীর সাতশ কোটি টাকা...’

ছবি

অবন্তিকাদের আত্মহনন

শিক্ষাবিষয়ক ভাবনা

অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান নয়

পণ্য রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে

আত্মহত্যা রোধে নৈতিক শিক্ষা

আউশ ধান : পরিবেশ ও কৃষকবান্ধব ফসল

ছবি

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আতুড়ঘর

চেক ডিজঅনার মামলার অধিক্ষেত্র ও প্রাসঙ্গিকতা

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও বাংলাদেশের কৃষি

ছবি

‘হৃৎ কলমের’ পাখি এবং আমাদের জেগে ওঠা

ছবি

ভূগর্ভস্থ পানি সুরক্ষায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ

tab

উপ-সম্পাদকীয়

করোনাকালে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ

মাহবুবুর রহমান ও মতিউর রহমান

রোববার, ১৮ জুলাই ২০২১

সামাজিকীকরণ সমাজতাত্ত্বিক ও মনোবৈজ্ঞানিক একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় একজন ব্যক্তিকে তার জন্মের পর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে টিকে থাকার প্রয়োজনে অনেক কিছু শিখতে হয়। এই শিক্ষণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে বাবা-মা, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, খেলার সাথী ও সমবয়সী দল, বন্ধু, প্রতিবেশী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম, কর্মস্থান এবং চেনা-অচেনা অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তি তার নিজস্ব ভাষা, পারিবারিক নিয়ম-কানুন, আদব-কায়দা, আচার-আচরণ, সামাজিক রীতিনীতি, সামাজিক শৃঙ্খলা, প্রথা-পদ্ধতি, মূল্যবোধ, ইত্যাদি আয়ত্ত করে সমাজের উপযোগী একজন সদস্য হয়ে ওঠে। জীবনব্যাপী চলতে থাকা এ শিক্ষণ প্রক্রিয়াকে সামাজিকীকরণ বলে। সামাজিকীকরণ যথাযথ না হলে শিশুর বা ব্যক্তির মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে সে অনেক অসামাজিক আচরণ করতে পারে। ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম ঘটলে তার প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে।

করোনাকালে ব্যক্তির বিশেষ করে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে সামাজিকীকরণের যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে বিগত প্রায় ৯০ বছরের মধ্যে এমনটি ঘটেনি। করোনাভাইরাস পৃথিবীব্যাপী মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এ রোগের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্যগত ও মনস্তাত্ত্বিক অভিঘাত নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক গবেষণা হয়েছে। তবে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ওপর এর অভিঘাত নিয়ে এখনও কোনো গবেষণা হয়েছে বলে জানা নেই।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা, প্রকাশিত সংবাদ ও সাধারণ পর্যবেক্ষণ থেকে বলা যায় যে, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, লকডাউন বা শাটডাউন ঘোষণা, অফিস-আদালতসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার কারণে অনেকেই ঘরে থাকতে বাধ্য। অনেকের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে, অসংখ্য মানুষ হারিয়েছেন। এসব থেকে সৃষ্ট ভয়, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও মানসিক চাপের বিরূপ প্রভাব পড়েছে পরিবারে ও ছেলেমেয়েদের ওপর। দেশে শিশু, কিশোর ও ছাত্রছাত্রীদের ওপর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার যে চ্যালেঞ্জসমূহ তৈরি হয়েছে সেগুলো হলো-

প্রথমত : যেসব মাধ্যমে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সাধিত হয় তার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম পরিবার। পরিবারেই শিশুর চিন্তা, আবেগ ও কর্মের অভ্যাস গঠিত হয়। একটি শিশুর সুকোমল বৃত্তিগুলো এবং সুপ্ত প্রতিভা পরিবারের মাধ্যমেই বিকাশ লাভ করে। শিশু পরিবার থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও গ্রহণ করে, পরিবার থেকেই একটি শিশু আচার-আচরণ, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে সমাজে একজন যোগ্য ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে ওঠে। সুতরাং একটি শিশুর ব্যক্তিত্ব নির্ভর করে পরিবারের তিনটি বিষয়ের ওপর- মা-বাবার সম্পর্ক, মা-বাবা ও শিশুর মধ্যে সম্পর্ক, একই পরিবারের একাধিক শিশুদের মধ্যে পরস্পরের সম্পর্ক। উল্লিখিত সম্পর্কসমূহ যদি ইতিবাচক হয় তবে শিশু সৎ, ব্যক্তিত্বপূর্ণ এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে গড়ে ওঠে এবং সমাজে সহজ জীবনযাপন করতে পারে। শিশুর সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার দ্বারা পূর্ণ বিকাশও হয়ে থাকে।

পরিবার বিশেষ করে বাবা-মা যেহেতু শিশুর সামাজিকীকরণের প্রথম স্থান সেই পরিবারেই যদি উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অনিশ্চয়তা, ঝগড়া, দ্বন্দ্ব কাজ করে তাহলে তার প্রভাব শিশুর ওপর পড়তে বাধ্য। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, করোনাকালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিবারে এখন উপরোক্ত সমস্যগুলো বিরাজমান। সুতরাং শিশুর স্বাভাবিক যে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া করোনাকালে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে- এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এছাড়া এ সময়ে যেসব নতুন শিশু জন্মগ্রহণ করেছে তারাও যথোপযুক্ত সামাজিকীকরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একমাত্র বাবা-মা ছাড়া অন্য কোন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে তাদের কোন পরিচয় ঘটছে না এতে তারা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আবেগ-অনুভূতি ও স্নেহ, মমতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদিক থেকেও বলা যায় যে, নবজাতক শিশুর ক্ষেত্রেও সামাজিকীকরণ ব্যাহত হচ্ছে।

দ্বিতীয়ত : শিশু, কিশোর-কিশোরীদের সামাজিকীকরণে তাদের সঙ্গী বা খেলার সাথীরা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। শিশু, কিশোর-কিশোরীরা তাদের খেলার সঙ্গীদের খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান হয়, শারীরিক দক্ষতা গড়ে ওঠে যা তাদের বলিষ্ঠ মনোবল গঠনে সহায়তা করে এবং নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলী পরিস্ফুট হয়। সে স্বাবলম্বী হতে শেখে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে শিশু বা ছেলে-মেয়েরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তারা আগের মতো একত্রে খেলাধুলা করা বা অন্য কোন সৃজনশীল কাজে যোগ দিতে পারছে না; যার ফলে তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে ব্যাঘাত ঘটছে।

তৃতীয়ত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো শিশুর সামাজিকীকরণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক ভাব বিনিময়, মিথস্ক্রিয়া হয় ও শিক্ষকদের নিকট থেকে অনেক কিছু শেখে যা তার সামাজিকীকরণে সহায়ক হয়। সমাজের সদস্য হিসেবে যাতে সামাজিক মূল্যবোধ, সামাজিক আদর্শ, সামাজিক অভ্যাসগুলো আয়ত্ত করতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো শিক্ষা দেয়। কিন্তু প্রায় দেড় বছরকাল ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের মানসিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

চর্তুথত : ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। শৈশবকাল থেকে যে ব্যক্তি যে ধর্মে বিশ্বাসী সে ব্যক্তি সেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মাধ্যমে লালিত হয় এবং সেই ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যগুলো পরবর্তীকালে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে প্রতিফলিত হয়। ধর্ম মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ তথা সত্যবাদিতা, কর্তব্যপরায়ণতা, ন্যায়পরায়ণতা, সহমর্মিতা প্রভৃতি গুণে গুণান্বিত হতে শিক্ষা দেয়। এককথায়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ব্যক্তির সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু করোনাকালে অধিকাংশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় এবং কোনো কোনো সময় করোনার দ্রুত বিস্তাররোধে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় এর প্রভাব ছেলেমেয়েদের ওপর পড়েছে; যা তাদের যথাযথ সামাজিকীকরণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

পঞ্চমত : সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যম হলো সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, বেতার, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। তবে এগুলো সামাজিকীকরণের ক্ষেত্রে গৌণ ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যম বিশেষ করে টেলিভিশনে করোনা সংক্রান্ত খবর দেখে ও শুনে ছেলেমেয়েদের ওপর এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক চাপ পড়ে; যা তাদের প্রতিনিয়ত ভয়-ভীতির মধ্যে রাখে এবং তাদের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণে বাধা দেয়। তবে আশার কথা হলো এ করোনাকালে গণমাধ্যমগুলো বিভিন্ন সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান, চলচ্চিত্র, কার্টুন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করে ছেলেমেয়েদের মনোবল দৃঢ় ও সতেজ রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে।

করোনাকালে শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীরা অতিরিক্ত মাত্রায় ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর খেলাধুলার কারণে তাদের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হচ্ছে। মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারে বিভিন্ন প্রকার গেমস খেলে তাদের মধ্যে গেমিং ডিসঅর্ডারও তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রাম অপেক্ষা শহরাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর ক্রিয়াকলাপ বেশি। তাছাড়া পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় ডিজিটাল ডিভাইসনির্ভর খেলাধুলা বেশি করছে; যার নেতিবাচক প্রভাব অনেক শিশুর মধ্যে দেখা যাচ্ছে। তারা আক্রমণাত্মক ও ক্ষিপ্ত স্বভাবের হয়ে পড়ছে। এসবই সামাজিকীকরণের চ্যালেঞ্জ হিসেবে ধরে নেওয়া যায়।

করোনা মহামারি শিশু, কিশোর-কিশোরী ও ছাত্রছাত্রীদের সামাজিকীকরণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কতটুকু প্রভাব ফেলছে তার গবেষণাভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত এখনও পর্যন্ত আমাদের জানা নেই। তবে এ কথা সত্য, করোনাকালে একটা প্রজন্মের স্বাভাবিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া যে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ভয়, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, অবিশ্বাস, যথাযথ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব- ইত্যাদি কারণে করোনা-উত্তর এই প্রজন্মের মানসিক ও সামাজিক ভারসাম্যহীন আচরণ যে মোকাবেলা করতে হবে সে বিষয়ে হয়ত কারো কোনো দ্বিধা নেই।

এমতাবস্থায় করোনাকলে একটা প্রজন্মের যথাযথ সামাজিকীকরণের যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে তা কীভাবে মোকাবিলা করা যাবে সে বিষয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের এখনই মনোযোগ দিতে হবে বলে আমরা মনে করি। বৈরী এ সময়ে বাবা ও মাকে তাদের সন্তানদের বেশি করে সময় দেওয়া, ডিজিটাল ডিভাইস নির্ভরতা কমাতে বাড়ি বা ঘরের মধ্যেই যতটুকু সম্ভব তাদের অন্যান্য খেলাধুলায় নিয়োজিত করা, মজার কোন গল্পের বই পড়া, ছড়া আবৃত্তি করা, ছবি আঁকা শেখানো, শিশুদের সঙ্গে একত্রে বসে শিশুদের উপযোগী কোন চলচ্চিত্র দেখা, সংবাদপত্র পড়ানো, দেশ-বিদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভাব বিনিময় করানো (ভার্চুয়ালি), যাদের বাসায় ছাদ আছে সেখানে ছাদ বাগানে নিয়ে যাওয়া, আকাশের এবং আশপাশের দৃশ্য উপভোগ করা, লুডু, ক্যারম খেলা বা পাজল মেলানো, সম্ভব হলে একই বিল্ডিংয়ে বসবাসরত সব শিশুদের নিয়ে মজার কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন, ইত্যাদির মাধ্যমে শিকুদের মনোবল চাঙ্গা রাখা যাবে- ফলে তাদের মধ্যকার ভয়-ভীতি দূর হবে ও কিছুটা হলেও সামাজিকীকরণ হবে এবং এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।

[লেখক : মাহবুবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, সমাজকর্ম বিভাগ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর। মতিউর রহমান, গবেষণা পরামর্শক, হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (এইচডিআরসি), ঢাকা]

back to top