এস ডি সুব্রত
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের জীবন-মরণের যুদ্ধ, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ, অস্তিত্বের যুদ্ধ। এ যুদ্ধে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছিল অস্তিত্বের প্রয়োজনে। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন আমাদের নারীরা।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নারীরা কখনো সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করেছে, কখনো দেশের ভেতরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, রক্ষা করেছেন, সেবা-যত্ন করেছেন। রণাঙ্গনে দাঁড়িয়েও বিপুল বিক্রমে লড়েছেন নারীরা। নানা কারণে মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। এখানেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। যেকোন অমানবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ অথবা স্বাধীনতাযুদ্ধে নারীর অবদান কোন অংশেই কম নয়।
নারীরা পুরুষের পাশে থেকেছে যোদ্ধা হিসেবে, সহযোদ্ধা হিসেবে, প্রেরণাদায়ী হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এদেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি। যে কারণে একজন বিথীকা বিশ্বাস বা শিশির কণা একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্যদের গানবোট গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিলেও যুদ্ধপরবর্তীকালে তারা যথাযোগ্য বীরের মহিমায় অভিষিক্ত হতে পারেন না। উপরন্তু তাদের ললাটে জোটে সামাজিক লাঞ্ছনা। যুদ্ধ শেষে এই বিথীকা বিশ্বাস ও শিশির কণাকে তাদের পরিবার ও সমাজ গ্রহণ করেনি।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে অংশ নিয়েছেন অনেক নারী শিল্পী। পথে-প্রান্তরে অলিগলিতে গান গেয়ে তারা অর্থ সংগ্রহ করে সেই অর্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ব্যয় করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা নিপীড়িত হয়েছিলেন লেখক চট্টগ্রামের রমা চৌধুরী। একাত্তরে নির্যাতনের শিকার অনেক নারীর মতো এ নারীর জীবনেরও ট্র্যাজেডি হলো- যুদ্ধের পর স্বামীগৃহে তার ঠাঁই মেলেনি।
যুদ্ধকালে যেসব নারী ধর্ষিত হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন ছিল, স্বামীহারা বিধবাদের দরকার ছিল আশ্রয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের নারীসমাজকে মূল্যায়ন করা দরকার আন্তরিকভাবে বৈষম্যের খোলস থেকে মুক্ত হয়ে। যুদ্ধের সময় দেশের সর্বত্র যে বিপুল নারী নিগৃহীত হয়েছেন, তা কেবল তারা নারী বলেই এ সত্য অনুধাবন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধার মতোই নারী আত্মোৎসর্গ করেছেন, সেটা বুঝতেও অনেক সময় পার হয়েছে।
একাত্তরের উত্তাল মার্চের ৭ তারিখে তৎকালীন রেসকোর্স, বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঘোষণা দিলেন, ‘...আর যদি একটা গুলি চলে... প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো’, সেই সময়েও ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা’র কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন নারীরা। তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। ৯ মার্চ বাড়িতে বাড়িতে কালোপতাকা উড়তে দেখা যায়। এই কাজে নারীসমাজ ও ছাত্রসমাজ প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব ধর্মের নারীই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কেবল বাঙালি নয়, সর্বাত্মকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল আদিবাসী নারীরাও।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে গীতা মজুমদার, গীতা কর, শিরিন বানু মিতিল, ডা. লাইলী পারভীন অস্ত্রচালনা শেখার পরও তাদের সম্মুখসমরে যেতে দেয়া হয়নি। সেখানেও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল নারীদের। প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রশ্নে সেই সময় যুদ্ধকালীন সরকারের ভেতরেই দ্বিধা ছিল। অন্যদিকে বিভিন্ন যুবশিবিরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্রসংকটে অপেক্ষায় ছিলেন বিপুলসংখ্যক তরুণ। সব বাধা-বৈষম্য উপেক্ষা করেও আলমতাজ বেগম ছবি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বরিশালের করুণা বেগম ছিলেন অকুতোভয় মুক্তিসেনা। পুরুষের পোশাকে এ যুদ্ধে পাকিস্তনিদের প্রতিরোধ করেছিলেন শিরিন বানু মিতিল, আলেয়া বেগম।
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে অদম্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। তারা ক্যাম্পে ক্যাম্পে কাজ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন যারা, তারা অস্ত্র শিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খানসেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সময়। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেয়া অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাদের জন্য ওষুধ, খাবার এবং কাপড় সংগ্রহ করা, রক্ত ঝরা একাত্তরে নারীদের এই সক্রিয় কর্মকা-ই ছিল তাদের মুক্তিযুদ্ধ। কবি সুফিয়া কামাল পাকিস্তানি বাহিনীর নজরদারিতে যুদ্ধের ৯ মাস ঢাকায় তার বাড়িতেই ছিলেন। সে অবস্থায়ও তিনি নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে ইতিহাস বদলাতে শুরু করেছে। নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীরপ্রতীক খেতাব পেয়েছেন তিনজন। ১৯৭২ ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা সুশীল সমাজের কাছে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গৃহীত হতে সময় লেগেছে তিন দশক। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন এমন নারীর সংখ্যাও অসংখ্য। অজানা-অচেনা আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা-শুশ্রূষা করেছেন বহু নারী নিজের শ্রম দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা সুশীল সমাজের কাছে ইতিহাসের উপাদান গৃহীত হতে সময় লেগেছে তিন দশক। নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আজও আমরা পিছিয়ে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকার সঠিক মূল্যায়ন করা সময়ের দাবি।
[লেখক : প্রাবন্ধিক]
এস ডি সুব্রত
বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল এ দেশের মানুষের জীবন-মরণের যুদ্ধ, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ, অস্তিত্বের যুদ্ধ। এ যুদ্ধে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিয়েছিল অস্তিত্বের প্রয়োজনে। সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন আমাদের নারীরা।
মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নারীরা কখনো সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করেছে, কখনো দেশের ভেতরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন, রক্ষা করেছেন, সেবা-যত্ন করেছেন। রণাঙ্গনে দাঁড়িয়েও বিপুল বিক্রমে লড়েছেন নারীরা। নানা কারণে মুক্তিযুদ্ধে নারীর অবদানের সঠিক মূল্যায়ন হয়নি। এখানেও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। যেকোন অমানবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ অথবা স্বাধীনতাযুদ্ধে নারীর অবদান কোন অংশেই কম নয়।
নারীরা পুরুষের পাশে থেকেছে যোদ্ধা হিসেবে, সহযোদ্ধা হিসেবে, প্রেরণাদায়ী হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। ১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়ে প্রায় দুই দশকজুড়ে এদেশে নারী মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় তেমনভাবে আলোচিত হয়নি। যে কারণে একজন বিথীকা বিশ্বাস বা শিশির কণা একাত্তরে পাকিস্তানি সৈন্যদের গানবোট গ্রেনেড মেরে উড়িয়ে দিলেও যুদ্ধপরবর্তীকালে তারা যথাযোগ্য বীরের মহিমায় অভিষিক্ত হতে পারেন না। উপরন্তু তাদের ললাটে জোটে সামাজিক লাঞ্ছনা। যুদ্ধ শেষে এই বিথীকা বিশ্বাস ও শিশির কণাকে তাদের পরিবার ও সমাজ গ্রহণ করেনি।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে অংশ নিয়েছেন অনেক নারী শিল্পী। পথে-প্রান্তরে অলিগলিতে গান গেয়ে তারা অর্থ সংগ্রহ করে সেই অর্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় ব্যয় করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা নিপীড়িত হয়েছিলেন লেখক চট্টগ্রামের রমা চৌধুরী। একাত্তরে নির্যাতনের শিকার অনেক নারীর মতো এ নারীর জীবনেরও ট্র্যাজেডি হলো- যুদ্ধের পর স্বামীগৃহে তার ঠাঁই মেলেনি।
যুদ্ধকালে যেসব নারী ধর্ষিত হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসনের প্রয়োজন ছিল, স্বামীহারা বিধবাদের দরকার ছিল আশ্রয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের নারীসমাজকে মূল্যায়ন করা দরকার আন্তরিকভাবে বৈষম্যের খোলস থেকে মুক্ত হয়ে। যুদ্ধের সময় দেশের সর্বত্র যে বিপুল নারী নিগৃহীত হয়েছেন, তা কেবল তারা নারী বলেই এ সত্য অনুধাবন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধার মতোই নারী আত্মোৎসর্গ করেছেন, সেটা বুঝতেও অনেক সময় পার হয়েছে।
একাত্তরের উত্তাল মার্চের ৭ তারিখে তৎকালীন রেসকোর্স, বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন ঘোষণা দিলেন, ‘...আর যদি একটা গুলি চলে... প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো’, সেই সময়েও ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা’র কাজে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন নারীরা। তখন ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ঈশ্বরদী, পাবনা, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহসহ সব জেলায় নারীসমাজের প্রতিবাদী সভা ও মিছিল হয়েছে। ৯ মার্চ বাড়িতে বাড়িতে কালোপতাকা উড়তে দেখা যায়। এই কাজে নারীসমাজ ও ছাত্রসমাজ প্রধান ভূমিকা নিয়েছিল। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব ধর্মের নারীই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। কেবল বাঙালি নয়, সর্বাত্মকভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল আদিবাসী নারীরাও।
মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের প্রতিনিধি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পরিচালনায় গোবরা ক্যাম্পের ৩০০ তরুণীকে গোবরা ও ‘বিএলএফ’ ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে গীতা মজুমদার, গীতা কর, শিরিন বানু মিতিল, ডা. লাইলী পারভীন অস্ত্রচালনা শেখার পরও তাদের সম্মুখসমরে যেতে দেয়া হয়নি। সেখানেও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছিল নারীদের। প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রশ্নে সেই সময় যুদ্ধকালীন সরকারের ভেতরেই দ্বিধা ছিল। অন্যদিকে বিভিন্ন যুবশিবিরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণের জন্য অস্ত্রসংকটে অপেক্ষায় ছিলেন বিপুলসংখ্যক তরুণ। সব বাধা-বৈষম্য উপেক্ষা করেও আলমতাজ বেগম ছবি গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বরিশালের করুণা বেগম ছিলেন অকুতোভয় মুক্তিসেনা। পুরুষের পোশাকে এ যুদ্ধে পাকিস্তনিদের প্রতিরোধ করেছিলেন শিরিন বানু মিতিল, আলেয়া বেগম।
নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও নারীরা বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে অদম্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। তারা ক্যাম্পে ক্যাম্পে কাজ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ক্যাম্পে রান্নার কাজ করেছেন যারা, তারা অস্ত্র শিক্ষা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রহরী হিসেবেও কাজ করেছেন। আবার শত্রুদের বিষয়ে, খানসেনা ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে খবরও দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সময়। বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের লুকিয়ে রাখা, অস্ত্র এগিয়ে দেয়া অথবা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও চিকিৎসা করা, তাদের জন্য ওষুধ, খাবার এবং কাপড় সংগ্রহ করা, রক্ত ঝরা একাত্তরে নারীদের এই সক্রিয় কর্মকা-ই ছিল তাদের মুক্তিযুদ্ধ। কবি সুফিয়া কামাল পাকিস্তানি বাহিনীর নজরদারিতে যুদ্ধের ৯ মাস ঢাকায় তার বাড়িতেই ছিলেন। সে অবস্থায়ও তিনি নানা কৌশলে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে ইতিহাস বদলাতে শুরু করেছে। নারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বীরপ্রতীক খেতাব পেয়েছেন তিনজন। ১৯৭২ ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা সুশীল সমাজের কাছে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গৃহীত হতে সময় লেগেছে তিন দশক। নারীরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছেন, প্রেরণা দিয়েছেন এমন নারীর সংখ্যাও অসংখ্য। অজানা-অচেনা আহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা-শুশ্রূষা করেছেন বহু নারী নিজের শ্রম দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা সুশীল সমাজের কাছে ইতিহাসের উপাদান গৃহীত হতে সময় লেগেছে তিন দশক। নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আজও আমরা পিছিয়ে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকার সঠিক মূল্যায়ন করা সময়ের দাবি।
[লেখক : প্রাবন্ধিক]