আবদুল্লাহ আল মামুন
ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ পুরান ঢাকা। এখানের মানুষ খুবই সংস্কৃতি প্রিয়। প্রতি বছর যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খুব ধুমধাম করে পালন করেন তাঁরা। আর সাকরাইন উৎসব তার মধ্যে অন্যতম। এটি প্রায় ২শ’ বছরের প্রাচীন উৎসব। আর এ সাকরাইন উৎসব শুধু পুরান ঢাকাতে পালন করা হয়। উৎসবটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত।
সংস্কৃত শব্দ ‘সংক্রান্তি’ ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পৌষ ও মাঘ মাসের সন্ধিক্ষণে বা পৌষ মাসের শেষদিন সারা ভারতবর্ষে সংক্রান্তি উৎসব উদযাপিত হয়। তবে পুরান ঢাকায় পৌষ সংক্রান্তি বা সাকরাইন সার্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবের রূপ নিয়েছে। বর্তমানে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী শহরের আকাশ।
এক কথায় বলা যায়, সাকরাইন হচ্ছে এক ধরনের ঘুড়ি উৎসব। বাংলা বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজিত হয়, যা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিকার হিসেবে জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে পড়ে। বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।
কিন্তু জনবহুল ঢাকা শহরে এই প্রাচীন সাকরাইন উৎসব ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আতশবাজির শব্দ মাত্রারিক্ত বেড়ে যায়। এ সময় মানুষের ঘুমের তীব্র ব্যাঘাত ঘটায়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা আতশবাজির শব্দে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। তাছাড়া শিশুরা ভয় পেয়ে যায়। নতুন বছর উদযাপন করার সময় রাতে অনেক পাখি মারা যায়। তারা আতশবাজির আওয়াজে এখানে-ওখানে উড়তে থাকে। গত বছর, হাসপাতালে ভর্তি ৯ মাসের একটা শিশু মারা যায়; যা কখনো কাম্য ছিল না। ফানুস আকাশে উড়ার সময় অনেক দালানকোঠায় আগুন লেগে যায়।
যেখানে উৎসব পালন করা হয় আনন্দ-উল্লাসের জন্য, সেখানে উৎসব পরিবেশ দূষণে রূপ নিয়েছে। সুতরাং আমাদের সবার উচিত সাকরাইন উৎসব যেন অন্যের সমস্যার সৃষ্টি না করে সেদিকে নজর দেয়া।
[লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]
আবদুল্লাহ আল মামুন
শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩
ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ পুরান ঢাকা। এখানের মানুষ খুবই সংস্কৃতি প্রিয়। প্রতি বছর যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খুব ধুমধাম করে পালন করেন তাঁরা। আর সাকরাইন উৎসব তার মধ্যে অন্যতম। এটি প্রায় ২শ’ বছরের প্রাচীন উৎসব। আর এ সাকরাইন উৎসব শুধু পুরান ঢাকাতে পালন করা হয়। উৎসবটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ঘুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত।
সংস্কৃত শব্দ ‘সংক্রান্তি’ ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। পৌষ ও মাঘ মাসের সন্ধিক্ষণে বা পৌষ মাসের শেষদিন সারা ভারতবর্ষে সংক্রান্তি উৎসব উদযাপিত হয়। তবে পুরান ঢাকায় পৌষ সংক্রান্তি বা সাকরাইন সার্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবের রূপ নিয়েছে। বর্তমানে দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গার তীরবর্তী শহরের আকাশ।
এক কথায় বলা যায়, সাকরাইন হচ্ছে এক ধরনের ঘুড়ি উৎসব। বাংলা বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস পৌষ মাসের শেষ দিনে আয়োজিত হয়, যা গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিকার হিসেবে জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখে পড়ে। বাংলায় দিনটি পৌষ সংক্রান্তি এবং ভারতীয় উপমহাদেশে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত।
কিন্তু জনবহুল ঢাকা শহরে এই প্রাচীন সাকরাইন উৎসব ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আতশবাজির শব্দ মাত্রারিক্ত বেড়ে যায়। এ সময় মানুষের ঘুমের তীব্র ব্যাঘাত ঘটায়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা আতশবাজির শব্দে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায়। তাছাড়া শিশুরা ভয় পেয়ে যায়। নতুন বছর উদযাপন করার সময় রাতে অনেক পাখি মারা যায়। তারা আতশবাজির আওয়াজে এখানে-ওখানে উড়তে থাকে। গত বছর, হাসপাতালে ভর্তি ৯ মাসের একটা শিশু মারা যায়; যা কখনো কাম্য ছিল না। ফানুস আকাশে উড়ার সময় অনেক দালানকোঠায় আগুন লেগে যায়।
যেখানে উৎসব পালন করা হয় আনন্দ-উল্লাসের জন্য, সেখানে উৎসব পরিবেশ দূষণে রূপ নিয়েছে। সুতরাং আমাদের সবার উচিত সাকরাইন উৎসব যেন অন্যের সমস্যার সৃষ্টি না করে সেদিকে নজর দেয়া।
[লেখক : শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়]