শীতের আগাম সবজি রোপণে ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকটের কারণে বিপাকে পরেছে আগাম সবজি চাষীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বাড়িয়েছে সারের দাম। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বীজ ও কীটনাশকের মূল্যও। প্রশাসন বলছে, বাজারে কোন সংকট নেই, অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। কিন্তু চাষীর অভিযোগ করার সময় কোথায়। তাকে সময়মতো বীজ বপন ও উত্তোলন করতে হবে। অফিস অফিসে ধর্ণা দেয়ার চাইতে অধিক মূল্যেই কিনতে হচ্ছে সার, বীজ ও কীটনাশক। ফলে চড়ামূল্যে সার ও বীজ কিনে সবজির ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষী।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরেরবাড়ি গ্রামে চলছে সবজি চাষের ধুম। চাষীরা আগাম ফুলকপি বুনে লাভের আশা করলেও সার ও বীজের লাগামহীন মূল্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংক তাদের। কৃষকরা বলছেন জমির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সার পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও অধিক মূল্য চাওয়া হচ্ছে। এবার এই উপজেলায় ২৯ হেক্টর জমিতে আগাম সবজিচাষ করা হচ্ছে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
মীরের বাড়ি গ্রামের চাষী মকবুল হোসেন জানান, গতবার ফুলকপির বীজ কিনেছি ৭শ’ থেকে ৭৫০ টাকা, এবার সেই বীজ কিনতে হচ্ছে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা। ফলে প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। গতবার ১৩শ’ টাকার সার এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ১৬শ’টাকা। কৃষক যাতে না মরে এজন্য সার, বীজ ও কীটনাশক মূল্যের দিকে সরকারের দৃষ্টি দেয়া দরকার বলে তিনি আহবান জানান।
একই গ্রামের আকতার হোসেন বলেন, আমাদের এখানকার অনেক চাষী এনজিও থেকে ঋণ করে অথবা গরু বা ছাগল বিক্রি করে অনেক আশা নিয়ে আগাম সবজি চাষ করেন। কিন্তু সঠিক সময়ে সার না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। সেই সাথে দ্বিগুণ মূল্যে বীজ ও সার কিনে খরচ ওঠাতে পারবেন কিনা সেই আশংকায় দিন কাটে।
কৃষক আবদার হোসেন জানান, শুধু বীজ ও সার নয়; বিরুপ প্রকৃতির সাথেও লড়াই করে আগাম সবজি চাষ করতে হয় আমাদের। বৃষ্টি বা কড়া রোদ হলে বীজের ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কাটাতে আবার অধিক মূল্যে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। চাষবাস করতে এখন কৃষকদের পদে পদে হয়রাণি ও অধিক অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে হিমসীম অবস্থা আমাদের।
রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুন নাহার সাথী জানান, মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম ফুলকপি সরবরাহ করে অধিক লাভের আশায় ফুলকপি চাষ করছেন কৃষকরা। আমাদের উপজেলায় এবার ২৯ হেক্টর আগাম সবজি চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও এই কর্মকর্তা জানান, বাজারে প্রচুর সারের সরবরাহ আছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছি। কেউ বেশি মূল্য চাইলে আমরা খবর পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এবছর বন্যা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে চরাঞ্চলে রোপা আমনের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫শ’ । ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৪শ’ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় সারের চাহিদা বেড়ে যায়। বর্তমানে সারের কোন সংকট নেই। আমাদের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিটি পয়েন্টে কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে সার বিতরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। তদুপরি বিভিন্ন জায়গায় সারের সংকটের কথা শোনা যায়। যারা খুচরা ব্যবসায়ী তারা একটি কৃত্রিম সংকটের প্রক্রিয়া করতে পারে, সেক্ষেত্রে আমরা সজাগ আছি এবং আমরা অভিযোগ পেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি এবং আইনানুগ যে ব্যবস্থা তা গ্রহন করছি। আমরা আশা করছি সারের কোন সংকট তৈরি হবে না এবং আমাদের যে অনুমোদিত বরাদ্দ আছে, আমরা এই বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে পেলে আমরা কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করবো।
শীতের আগাম সবজি রোপণে ব্যস্ত কৃষক -সংবাদ
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকটের কারণে বিপাকে পরেছে আগাম সবজি চাষীরা। খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বাড়িয়েছে সারের দাম। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বীজ ও কীটনাশকের মূল্যও। প্রশাসন বলছে, বাজারে কোন সংকট নেই, অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। কিন্তু চাষীর অভিযোগ করার সময় কোথায়। তাকে সময়মতো বীজ বপন ও উত্তোলন করতে হবে। অফিস অফিসে ধর্ণা দেয়ার চাইতে অধিক মূল্যেই কিনতে হচ্ছে সার, বীজ ও কীটনাশক। ফলে চড়ামূল্যে সার ও বীজ কিনে সবজির ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষী।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরেরবাড়ি গ্রামে চলছে সবজি চাষের ধুম। চাষীরা আগাম ফুলকপি বুনে লাভের আশা করলেও সার ও বীজের লাগামহীন মূল্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংক তাদের। কৃষকরা বলছেন জমির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সার পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও অধিক মূল্য চাওয়া হচ্ছে। এবার এই উপজেলায় ২৯ হেক্টর জমিতে আগাম সবজিচাষ করা হচ্ছে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।
মীরের বাড়ি গ্রামের চাষী মকবুল হোসেন জানান, গতবার ফুলকপির বীজ কিনেছি ৭শ’ থেকে ৭৫০ টাকা, এবার সেই বীজ কিনতে হচ্ছে ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা। ফলে প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। গতবার ১৩শ’ টাকার সার এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ১৬শ’টাকা। কৃষক যাতে না মরে এজন্য সার, বীজ ও কীটনাশক মূল্যের দিকে সরকারের দৃষ্টি দেয়া দরকার বলে তিনি আহবান জানান।
একই গ্রামের আকতার হোসেন বলেন, আমাদের এখানকার অনেক চাষী এনজিও থেকে ঋণ করে অথবা গরু বা ছাগল বিক্রি করে অনেক আশা নিয়ে আগাম সবজি চাষ করেন। কিন্তু সঠিক সময়ে সার না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। সেই সাথে দ্বিগুণ মূল্যে বীজ ও সার কিনে খরচ ওঠাতে পারবেন কিনা সেই আশংকায় দিন কাটে।
কৃষক আবদার হোসেন জানান, শুধু বীজ ও সার নয়; বিরুপ প্রকৃতির সাথেও লড়াই করে আগাম সবজি চাষ করতে হয় আমাদের। বৃষ্টি বা কড়া রোদ হলে বীজের ক্ষতি হয়। এই ক্ষতি কাটাতে আবার অধিক মূল্যে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। চাষবাস করতে এখন কৃষকদের পদে পদে হয়রাণি ও অধিক অর্থ ব্যয় করতে গিয়ে হিমসীম অবস্থা আমাদের।
রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুন নাহার সাথী জানান, মৌসুমের শুরুতে বাজারে আগাম ফুলকপি সরবরাহ করে অধিক লাভের আশায় ফুলকপি চাষ করছেন কৃষকরা। আমাদের উপজেলায় এবার ২৯ হেক্টর আগাম সবজি চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও এই কর্মকর্তা জানান, বাজারে প্রচুর সারের সরবরাহ আছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছি। কেউ বেশি মূল্য চাইলে আমরা খবর পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এবছর বন্যা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে চরাঞ্চলে রোপা আমনের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫শ’ । ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৪শ’ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। ফলে অনেক জায়গায় সারের চাহিদা বেড়ে যায়। বর্তমানে সারের কোন সংকট নেই। আমাদের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রতিটি পয়েন্টে কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে সার বিতরণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। তদুপরি বিভিন্ন জায়গায় সারের সংকটের কথা শোনা যায়। যারা খুচরা ব্যবসায়ী তারা একটি কৃত্রিম সংকটের প্রক্রিয়া করতে পারে, সেক্ষেত্রে আমরা সজাগ আছি এবং আমরা অভিযোগ পেলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি এবং আইনানুগ যে ব্যবস্থা তা গ্রহন করছি। আমরা আশা করছি সারের কোন সংকট তৈরি হবে না এবং আমাদের যে অনুমোদিত বরাদ্দ আছে, আমরা এই বরাদ্দ সুষ্ঠুভাবে পেলে আমরা কৃষকদের মাঝে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করবো।