alt

প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক : সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

চলমান লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে কারওয়ান বাজারের চিত্র। উপচেপড়া ভিড়, করোনার বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও কোন সচেতনতা নেই, ঝুঁকি নিয়েই বাজারে চলাফেরা-সংবাদ

দেশে ফের মৃত্যুর রেকর্ড। করোনা একদিনেই কেড়ে নিল ১১২ জনের প্রাণ। এ নিয়ে টানা চতুর্থদিন শতাধিক করে করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। তবে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হতে থাকলেও আক্রান্তদের সুস্থতার হার বাড়ছে। সোমবারও (১৯ এপ্রিল) মোট শনাক্তের চেয়ে সুস্থতার সংখ্যা প্রায় দুই হাজার বেশি ছিল। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও কমছে। সম্প্রতি সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেলেও তা লাখের নিচে নেমে এসেছে। সোমবার পর্যন্ত দেশে ৯১ হাজারের বেশি সক্রিয় করোনা রোগী (অ্যাক্টিভ কেস) ছিল। তাদের মধ্যে বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় ৮৫ হাজার রোগী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা সংবাদকে বলেন, ‘যেসব রোগী বাসায় আছেন, তারা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন। এর মধ্যে মাইল্ড সিমট্রম (মৃদু লক্ষণ) রোগীই বেশি। তাদের ঝুঁকি কম, হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই। তবে যাদের বয়স বেশি, নানা রোগে ভুগছেন তাদের আমরা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সোমবার মারা যাওয়া ১১২ জনকে নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৪৯৭ জনের। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৯২৩ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ হিসাবে মোট মৃত্যুর ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশই ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক নাগরিক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, একদিনে চার হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, আর একই দিন সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৬৪ জন করোনা রোগী। নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো সাত লাখ ২৩ হাজার ২২১ জনে। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ছয় লাখ ২১ হাজার ৩০০ জন।

এ হিসাবে এখনও সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ৯১ হাজার ৪২৪ জন। এর মধ্যে সারাদেশে ‘কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে’ ভর্তি আছেন ছয় হাজার ৪৫১ জন। তাদের মধ্যে সাধারণ শয্যায় ভর্তি পাঁচ হাজার ৭১৭ জন এবং আইসিইউতে আছেন ৭৩৪ জন রোগী। বাকি ৮৪ হাজার ৯৭৩ জন বাসাবাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ফোন কলে ‘টেলিমেডিসিন’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় সরকার ঘোষিত তিনটি নম্বরে ফোন করে ১৯ হাজার ৯৫৬ জন নাগরিক ‘কোভিড-১৯’ সংক্রান্ত চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। তিনটি নম্বর হলো- স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩), ৩৩৩ এবং আইইডিসিআর (১০৬৫৫)। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত টেলিমেডিসিন সেবা পেতে ওই তিনটি নম্বরে ‘ফোন কল’ আসে দুই কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৯টি।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্ধারিত নম্বরের বাইরেও নানাভাবে আক্রান্ত লোকজন টেলিমেডিসিন সেবা নিচ্ছেন। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন।’

গত মার্চের শুরুতে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। গত ১ মার্চ ৫৮৫ জনের করোনা শনাক্ত এবং আটজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর নিয়মিত বাড়তে থাকে শনাক্তের সংখ্যা ও মৃত্যু। গত চারদিনই টানা শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ এপ্রিল ১০২ জন, ১৭ ও ১৬ এপ্রিল ১০১ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের ১০ দিন পর একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। পরবর্তীতে ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়।

আর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে দৈনিক মৃত্যু ৫০ এর নিচে নামেনি। এখন দৈনিক মৃত্যু শতকের ওপরে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে করোনা শনাক্তে ৩৩তম এবং মৃত্যুর সংখ্যায় ৩৮তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার কমেছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে চার হাজার ২৭১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত একদিনে সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৬৪ জন।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক ছয় হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২৬০টি পরীক্ষাগারে (ল্যাব) ২৪ হাজার ১৫২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৪ হাজার ২১৯টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর আগে ১৮ এপ্রিল শনাক্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ১৭ এপ্রিল ছিল ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় মোট সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে ৭৫ জন পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী। এর মধ্যে ৯৭ জন হাসপাতালে, তিনজন বাড়িতে এবং একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে নেয়ার পথে।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ৬৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ১০ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৭১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের দশজন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের তিনজন, রংপুর বিভাগের দুইজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।

করোনায় দেশে মোট মারা যাওয়া ১০ হাজার ৪৯৭ জনের মধ্যে পুরুষ সাত হাজার ৭৬৯ জন এবং নারী দুই হাজার ৭২৮ জন।

ছবি

চট্টগ্রামে ট্রেন–ট্রাক সংঘর্ষে নিহত এক, উল্টে গেল কনটেইনার

ছবি

চট্টগ্রামে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদল কর্মী নিহত

ছবি

রংপুরের পীরগাছায় কাকলী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

ছবি

বড়াইগ্রামের গোরস্তানে মাগুরার ইটভাটার ম্যানেজারের লাশ

ছবি

আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি

ছবি

প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের

ছবি

দেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত, বেশিরভাগেরই মৃত্যু সময়মতো চিকিৎসার অভাবে

ছবি

ভিত্তিপ্রস্তরের ২ যুগ: ফুলদী নদীতে সেতু হয়নি আজও

ছবি

চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা: আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

দুবলারচরে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য অপসারণে বনবিভাগের অভিযান শুরু

ছবি

চমেক হাসপাতাল: দিনে গড়ে রেডিওথেরাপি নেন ১৫০ রোগী

ছবি

“তোমার কলিজাদের এতিম করে কোথায় গেলা”—স্বামীর কফিন ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আইরিন

ছবি

ভিত্তিপ্রস্তরের ২ যুগ: ফুলদী নদীতে সেতু হয়নি আজও

ছবি

বেলকুচিতে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে গৃহবধুর ফাঁসি, প্রেমিকের যাবজ্জীবন

ছবি

ডিমলায় পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে নানী-নাতনীর মৃত্যু

ছবি

দোয়ারাবাজারে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

ছবি

লালমাই উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও হয়নি ফায়ারসার্ভিস স্টেশন

ছবি

শেরপুর পৌরসভায় বাস-ট্রাক টার্মিনাল বাস্তবে নেই, তবুও ইজারা বিজ্ঞপ্তি

ছবি

জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

সাতক্ষীরায় সফটশেল কাঁকড়া চাষ বদলে দিয়েছে অর্থনীতি

ছবি

কেশবপুরে রহস্যে ঘেরা খাঞ্জেলি দীঘির মাটির ঢিবিতে ভক্তের মিলন মেলা

ছবি

টাকার অভাবে ছয় উপজাতি শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত

ছবি

উলিপুরে বন্যার পলিতে আমন ধানে চিটা

ছবি

প্লাস্টিক-সিরামিকে দাপটে ধ্বংসের পথে মৃৎশিল্প

ছবি

. জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

জামালপুরে কভার্ড ভ্যান-অটোরিকশা সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু

ছবি

রাণীনগরে কৃষি প্রণোদনার সার বীজ বিতরণ

ছবি

কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি, ড্রেজার জব্দ

ছবি

সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো ছয় কোটি টাকার সেতু

ছবি

চকরিয়ায় আউশের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে খুশির ঝিলিক

পুলিশ কর্মকর্তার ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ : আতঙ্কে ভিটেছাড়া অনেকে

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফার্মেসিগুলোর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, ওষুধ না পেয়ে বিপাকে রোগীরা

ছবি

বোয়ালখালীতে পানি পান করছে তৃষ্ণার্ত এক গোখরো সাপ

ছবি

চাঁদপুর যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

ছবি

সিদ্ধিরগঞ্জে ৬ মাসেও ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

ছবি

বোয়ালখালীতে কাভার্ড ভ্যান থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার

tab

প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু

সংবাদ অনলাইন ডেস্ক

চলমান লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে কারওয়ান বাজারের চিত্র। উপচেপড়া ভিড়, করোনার বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও কোন সচেতনতা নেই, ঝুঁকি নিয়েই বাজারে চলাফেরা-সংবাদ

সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১

দেশে ফের মৃত্যুর রেকর্ড। করোনা একদিনেই কেড়ে নিল ১১২ জনের প্রাণ। এ নিয়ে টানা চতুর্থদিন শতাধিক করে করোনা রোগীর মৃত্যু হলো। তবে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হতে থাকলেও আক্রান্তদের সুস্থতার হার বাড়ছে। সোমবারও (১৯ এপ্রিল) মোট শনাক্তের চেয়ে সুস্থতার সংখ্যা প্রায় দুই হাজার বেশি ছিল। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যাও কমছে। সম্প্রতি সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেলেও তা লাখের নিচে নেমে এসেছে। সোমবার পর্যন্ত দেশে ৯১ হাজারের বেশি সক্রিয় করোনা রোগী (অ্যাক্টিভ কেস) ছিল। তাদের মধ্যে বাসা থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন প্রায় ৮৫ হাজার রোগী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা সংবাদকে বলেন, ‘যেসব রোগী বাসায় আছেন, তারা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন। এর মধ্যে মাইল্ড সিমট্রম (মৃদু লক্ষণ) রোগীই বেশি। তাদের ঝুঁকি কম, হাসপাতালে আসার প্রয়োজন নেই। তবে যাদের বয়স বেশি, নানা রোগে ভুগছেন তাদের আমরা হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছি।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সোমবার মারা যাওয়া ১১২ জনকে নিয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজার ৪৯৭ জনের। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৯২৩ জনেরই বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ হিসাবে মোট মৃত্যুর ৫৬ দশমিক ৪৩ শতাংশই ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক নাগরিক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, একদিনে চার হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, আর একই দিন সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৬৪ জন করোনা রোগী। নতুন শনাক্ত রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট সংখ্যা দাঁড়ালো সাত লাখ ২৩ হাজার ২২১ জনে। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ছয় লাখ ২১ হাজার ৩০০ জন।

এ হিসাবে এখনও সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ৯১ হাজার ৪২৪ জন। এর মধ্যে সারাদেশে ‘কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে’ ভর্তি আছেন ছয় হাজার ৪৫১ জন। তাদের মধ্যে সাধারণ শয্যায় ভর্তি পাঁচ হাজার ৭১৭ জন এবং আইসিইউতে আছেন ৭৩৪ জন রোগী। বাকি ৮৪ হাজার ৯৭৩ জন বাসাবাড়ি থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ফোন কলে ‘টেলিমেডিসিন’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় সরকার ঘোষিত তিনটি নম্বরে ফোন করে ১৯ হাজার ৯৫৬ জন নাগরিক ‘কোভিড-১৯’ সংক্রান্ত চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। তিনটি নম্বর হলো- স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩), ৩৩৩ এবং আইইডিসিআর (১০৬৫৫)। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত টেলিমেডিসিন সেবা পেতে ওই তিনটি নম্বরে ‘ফোন কল’ আসে দুই কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৯টি।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্ধারিত নম্বরের বাইরেও নানাভাবে আক্রান্ত লোকজন টেলিমেডিসিন সেবা নিচ্ছেন। অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা নিচ্ছেন।’

গত মার্চের শুরুতে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। গত ১ মার্চ ৫৮৫ জনের করোনা শনাক্ত এবং আটজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর নিয়মিত বাড়তে থাকে শনাক্তের সংখ্যা ও মৃত্যু। গত চারদিনই টানা শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ এপ্রিল ১০২ জন, ১৭ ও ১৬ এপ্রিল ১০১ জন করে করোনা রোগীর মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের ১০ দিন পর একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। পরবর্তীতে ৩০ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়।

আর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে দৈনিক মৃত্যু ৫০ এর নিচে নামেনি। এখন দৈনিক মৃত্যু শতকের ওপরে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে করোনা শনাক্তে ৩৩তম এবং মৃত্যুর সংখ্যায় ৩৮তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার কমেছে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার বিকেলে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে চার হাজার ২৭১ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। গত একদিনে সুস্থ হয়েছেন ছয় হাজার ৩৬৪ জন।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরে দৈনিক ছয় হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ২৬০টি পরীক্ষাগারে (ল্যাব) ২৪ হাজার ১৫২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫১ লাখ ৯৪ হাজার ২১৯টি।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর আগে ১৮ এপ্রিল শনাক্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং ১৭ এপ্রিল ছিল ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনায় মোট সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যাওয়া লোকজনের মধ্যে ৭৫ জন পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী। এর মধ্যে ৯৭ জন হাসপাতালে, তিনজন বাড়িতে এবং একজনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে নেয়ার পথে।

গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ৬৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ১০ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৭১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগের পাঁচজন, খুলনা বিভাগের দশজন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের তিনজন, রংপুর বিভাগের দুইজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।

করোনায় দেশে মোট মারা যাওয়া ১০ হাজার ৪৯৭ জনের মধ্যে পুরুষ সাত হাজার ৭৬৯ জন এবং নারী দুই হাজার ৭২৮ জন।

back to top