alt

রাজশাহীতে করোনা চিকিৎসায় পিছিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের ভিড় রামেকে

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ০১ আগস্ট ২০২১

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সব পরীক্ষা হাসপাতালে করা হবে। এ জন্য হাসপাতালে পৃথক চারটি প্যাথলজি সেবা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী। রোববার (১ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেছেন, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য করোনা রোগীদের হাসপাতালের বাইরে যেতে হবে না। বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করতে রোগীদের অনেক টাকা খরচ করতে হয়। সেটি আর করতে হবে না। তাই হাসপাতালে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য আউটডোর, ইনডোর, ওয়ান স্টপ সার্ভিস এবং কার্ডিয়াক প্যাথলজি নামে চারটি পৃথক প্যাথলজি সেবা চালু করা হবে। রোগীদের যাতে ছুটোছুটি করতে না হয়, সে জন্য হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে স্থাপন করা হবে কালেকশন পয়েন্ট। যেখান থেকে রোগী বা স্বজনরা সব তথ্য পেতে পারবেন। এমনকি ওয়ার্ডের বেডে শুয়ে থাকা গুরুতর রোগীদের টেস্ট করার ব্যবস্থা করা হবে।

রাজশাহী নগরীর অলিগলিতে ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহী শহরে বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল সংখ্যা ১১০টি এবং জেলায় ২২৫টি। বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে নেই অবকাঠামোগত সুবিধা। এ কারণে করোনায় মুমূর্ষু রেরাগীদের যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রয়োজন, সে ধরনের ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত লোকবলও নেই। গত এপ্রিল মাসে করোনা মহামারির শুরুতে বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চুক্তি অনুযায়ী এসব হাসপাতাল করোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেবে। খরচ বহন করত সরকার। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাজশাহী খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালটির সঙ্গে মাসিক ১২ লাখ টাকা ভাড়ায় চুক্তি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই ভাড়ায় চালিত রাজশাহী খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালটির ডেডিকেটেড হাসপাতাল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেই বন্ধ করে এখন মূল হাসপাতালগুলোতেই চিকিৎসা ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী এ কাজ করা হচ্ছে।

করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহীর সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান বলেন, করোনা রোগীর জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন, আর অবকাঠামোগত সুবিধা লোকবল যেটা বেসরকারি হাসপাতালোগুলোতে পর্র্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সে জন্য বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এ ধরনের রোগীর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না। তবে এর মধ্যে আমরা চেষ্টা করি রোগীর চিকিৎসা দিতে। ব্যাধ্য হয়েই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রায় অর্ধেক বেডই করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার সাধারণ ওয়ার্ডগুলোকে একে একে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে করোনা ইউনিটের বেড সংখ্যা ৫১৩টি। ঈদের আগে এখানে প্রতিদিনই রোগী থাকতেন ৫০০ এর ওপরে। তবে ঈদের পর এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে। শুক্রবার সকালে এখানে রোগী ছিল ৪২৫ জন।

করোনা রোগীর চাপ সামলাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একের পর এক ওয়ার্ড করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। যুক্ত হচ্ছে করোনা ইউনিটের সঙ্গে। এই ইউনিট সম্প্রসারণ হতে হতে এখন হাসপাতালের প্রায় অর্ধেক বেডই করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়ে অথবা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ৪ শতাধিক রোগী সামলাতে এখন হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্স সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আরও ১০০ চিকিৎসক এবং ৩০০ নার্স চেয়েছে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের মে মাসের পর থেকে রামেক হাসপাতালে বাড়তি চাপ তৈরি হয় করোনা রোগীদের। জুনে এই চাপ অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে। প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার সাধারণ ওয়ার্ডগুলোকে একে একে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে এখানে করোনা ইউনিটের বেড সংখ্যা ৫১৩টি। ঈদের আগে এখানে প্রতিদিনই রোগী থাকতেন ৫০০ শতাধিক। তবে ঈদের পর এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে। রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এখন প্রায় ৩০ জন রোগীর জন্য চিকিৎসক থাকছেন একজন করে। ফলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রামেক হাসপাতালে এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), কেবিন এবং সাধারণ ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে করোনা ইউনিট করা হয়েছে। মোট করোনা ডেডিকেটেড শয্যার সংখ্যা ৫১৩টি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত মোট চিকিৎসক ১২৪ জন। নার্স রয়েছেন ৫২৫ জন। এ ছাড়া দৈনিক মজুরিভিত্তিক ৩৭০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা আয়া বা চিকিৎসা সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। চিকিৎসক, নার্স ও আয়াদের সবাই একটানা ১৪ দিন করে কাজ করেন। পরের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন। অর্ধেক যে চিকিৎসক-নার্স দায়িত্ব পালন করেন, তাদের মধ্যে ৩টি শিফট ভাগ করা আছে। তিন শিফটের দুটিতেই প্রতি ওয়ার্ডে থাকেন একজন চিকিৎসক।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, সাধারণ ওয়ার্ডে আমাদের এখানে ১০ জন রোগী দেখভাল করেন একজন ডাক্তার। করোনা ওয়ার্ডে সেটা হচ্ছে না। আমারা ডাক্তার বাড়াচ্ছি। আগে সকালে একজন থাকতেন, এখন সেটি বাড়িয়ে দুইজন করা হয়েছে। কিন্তু বিকাল ও রাতে একজন করেই দায়িত্ব পালন করছেন। সেটিও যেন বাড়ানো যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি। আমরা ডাক্তার-নার্স বাড়ানোর জন্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে বলছি। এখন সব জায়গায় করোনার জন্য তারাও দিতে পারছে না। তবে সরকার সম্প্রতি আমাদের কাছে একটি চাহিদা চেয়েছিল। ১০০ জন ডাক্তার এবং ৩০০ জন নার্স লাগবে বলে আমরা স্বাস্থ্য বিভাগে জানিয়েছি। দুই-আড়াই মাসের মধ্যে এই নিয়োগ হবে। তখন হয়তো পাওয়া যাবে। এখন আমরা মজুরিভিত্তিক জনবলও বাড়াচ্ছি। আইসিউইতে প্রত্যেক করোনা রোগীর জন্য একজন করে নার্স দরকার। রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ১০৫ জন নার্স ডিউটি করেন। এদের অর্ধেক থাকেন কোয়ারেন্টাইনে। বাকি অর্ধেক তিন শিফটে ডিউটি করেন। ২০টি আইসিইউ শয্যার জন্য সেক্ষেত্রে ১৭ জন নার্স পাওয়া যায়। আইসিইউতে আরও নার্স দিতে পারলে ভাল হতো।

ছবি

পটুয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু, আহত ১

ছবি

টাঙ্গাইলের মগড়ায় বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

ভাঙ্গার কুমার নদে কিশোর-তরুণদের অস্ত্র প্রদর্শনের মহড়া

ছবি

জয়পুরহাটে ৭ ছাত্রদল নেতাকে বহিষ্কার

ছবি

কালীগঞ্জে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ছবি

কুড়িগ্রামে কৃষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

ছবি

রংপুর বিভাগের গুণী প্রধান শিক্ষক উলিপুরের মাহবুবার রহমান

ছবি

কোটি টাকার স্বর্ণবারসহ পাচারকারী আটক

ছবি

থানচিতে নির্মাণের দুই বছরেই সড়ক মৃত্যুফাঁদ!

ছবি

খুড়ে রাখা সড়কে হাঁটু পানি ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

ছবি

রুমায় সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

ছবি

রায়গঞ্জে পাখির তাড়াতে ধান খেতে নেট ব্যবহার

ছবি

কুষ্টিয়ায় দুর্গাপূজায় বেড়েছে ২২টি পূজা মন্ডপ

ছবি

যশোরের শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক শার্শার খাদিজা খাতুন

ছবি

রিয়াদ হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ছবি

পার্বতীপুর-রাজশাহী রুটে ২২ মাস ধরে বন্ধ উত্তরা এ´প্রেস ট্রেন

ছবি

সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

ছবি

বরুড়ায় আখের ভাল ফলনে চাষী ও বিক্রেতা উভয়েই খুশি

ছবি

মোল্লাহাটে গৃহবধূর আত্মহত্যা

ছবি

জাল সনদে ১২ বছর চাকরি, বেরোবির ইরিনা নাহার বরখাস্ত

ছবি

৫০ হাজার শিশুরা পাচ্ছেন বিনামূল্যে টাইফয়েড প্রতিরোধ টিকা

ছবি

ধ্বংসের পথে শরৎচন্দ্রের স্মৃতিবিজড়িত কাশিপুর জমিদার বাড়ি

ছবি

দুমকিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো ভোগান্তিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

ছবি

দশমিনায় মাচায় লাউ আবাদ বাড়ছে

ছবি

মোরেলগঞ্জে সরকারি ভাতা বঞ্চিত হানিফের সংসার চলে বিলের শাপলায়

ছবি

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা

ছবি

মহাদেবপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে চারা বিতরণ

ছবি

আলোচনা সভায় বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত

ছবি

চুয়াডাঙ্গায় ছাদ থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি

চাঁদপুর শহরের খেলার মাঠসমূহ খেলাধুলার উপযোগী করার দাবি

ছবি

সস কারখানার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা

ছবি

পূর্বাচল এলাকায় পরিবহনে হিজড়াদের চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ১২

ছবি

আমার জীবন আমার স্বপ্ন উদযাপন

ছবি

১০ টাকা কেজি ইলিশ বিক্রি, জনতার চাপে পালালেন সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী

ছবি

লড়াই ষাঁড়ের আঘাতে প্রাণ গেল যুবকের

ছবি

নৈতিকতার ভিত্তিতেই হতে হবে আদর্শ মানুষ: মেয়র

tab

রাজশাহীতে করোনা চিকিৎসায় পিছিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল রোগীদের ভিড় রামেকে

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

রোববার, ০১ আগস্ট ২০২১

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সব পরীক্ষা হাসপাতালে করা হবে। এ জন্য হাসপাতালে পৃথক চারটি প্যাথলজি সেবা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী। রোববার (১ আগস্ট) এ তথ্য নিশ্চিত করে তিনি বলেছেন, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য করোনা রোগীদের হাসপাতালের বাইরে যেতে হবে না। বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করতে রোগীদের অনেক টাকা খরচ করতে হয়। সেটি আর করতে হবে না। তাই হাসপাতালে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য আউটডোর, ইনডোর, ওয়ান স্টপ সার্ভিস এবং কার্ডিয়াক প্যাথলজি নামে চারটি পৃথক প্যাথলজি সেবা চালু করা হবে। রোগীদের যাতে ছুটোছুটি করতে না হয়, সে জন্য হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে স্থাপন করা হবে কালেকশন পয়েন্ট। যেখান থেকে রোগী বা স্বজনরা সব তথ্য পেতে পারবেন। এমনকি ওয়ার্ডের বেডে শুয়ে থাকা গুরুতর রোগীদের টেস্ট করার ব্যবস্থা করা হবে।

রাজশাহী নগরীর অলিগলিতে ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, রাজশাহী শহরে বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল সংখ্যা ১১০টি এবং জেলায় ২২৫টি। বেশির ভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে নেই অবকাঠামোগত সুবিধা। এ কারণে করোনায় মুমূর্ষু রেরাগীদের যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রয়োজন, সে ধরনের ব্যবস্থা নেই। পর্যাপ্ত লোকবলও নেই। গত এপ্রিল মাসে করোনা মহামারির শুরুতে বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চুক্তি অনুযায়ী এসব হাসপাতাল করোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসা দেবে। খরচ বহন করত সরকার। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাজশাহী খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালটির সঙ্গে মাসিক ১২ লাখ টাকা ভাড়ায় চুক্তি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই ভাড়ায় চালিত রাজশাহী খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালটির ডেডিকেটেড হাসপাতাল গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেই বন্ধ করে এখন মূল হাসপাতালগুলোতেই চিকিৎসা ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী এ কাজ করা হচ্ছে।

করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহীর সভাপতি ডা. আবদুল মান্নান বলেন, করোনা রোগীর জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন অক্সিজেন, আর অবকাঠামোগত সুবিধা লোকবল যেটা বেসরকারি হাসপাতালোগুলোতে পর্র্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সে জন্য বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে এ ধরনের রোগীর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না। তবে এর মধ্যে আমরা চেষ্টা করি রোগীর চিকিৎসা দিতে। ব্যাধ্য হয়েই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রায় অর্ধেক বেডই করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার সাধারণ ওয়ার্ডগুলোকে একে একে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে করোনা ইউনিটের বেড সংখ্যা ৫১৩টি। ঈদের আগে এখানে প্রতিদিনই রোগী থাকতেন ৫০০ এর ওপরে। তবে ঈদের পর এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে। শুক্রবার সকালে এখানে রোগী ছিল ৪২৫ জন।

করোনা রোগীর চাপ সামলাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একের পর এক ওয়ার্ড করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। যুক্ত হচ্ছে করোনা ইউনিটের সঙ্গে। এই ইউনিট সম্প্রসারণ হতে হতে এখন হাসপাতালের প্রায় অর্ধেক বেডই করোনা রোগীদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়ে অথবা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ৪ শতাধিক রোগী সামলাতে এখন হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্স সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আরও ১০০ চিকিৎসক এবং ৩০০ নার্স চেয়েছে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের মে মাসের পর থেকে রামেক হাসপাতালে বাড়তি চাপ তৈরি হয় করোনা রোগীদের। জুনে এই চাপ অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে। প্রতিদিনই রোগীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার সাধারণ ওয়ার্ডগুলোকে একে একে করোনা ওয়ার্ডে রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে এখানে করোনা ইউনিটের বেড সংখ্যা ৫১৩টি। ঈদের আগে এখানে প্রতিদিনই রোগী থাকতেন ৫০০ শতাধিক। তবে ঈদের পর এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে। রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এখন প্রায় ৩০ জন রোগীর জন্য চিকিৎসক থাকছেন একজন করে। ফলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রামেক হাসপাতালে এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), কেবিন এবং সাধারণ ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে করোনা ইউনিট করা হয়েছে। মোট করোনা ডেডিকেটেড শয্যার সংখ্যা ৫১৩টি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত মোট চিকিৎসক ১২৪ জন। নার্স রয়েছেন ৫২৫ জন। এ ছাড়া দৈনিক মজুরিভিত্তিক ৩৭০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা আয়া বা চিকিৎসা সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। চিকিৎসক, নার্স ও আয়াদের সবাই একটানা ১৪ দিন করে কাজ করেন। পরের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকেন। অর্ধেক যে চিকিৎসক-নার্স দায়িত্ব পালন করেন, তাদের মধ্যে ৩টি শিফট ভাগ করা আছে। তিন শিফটের দুটিতেই প্রতি ওয়ার্ডে থাকেন একজন চিকিৎসক।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, সাধারণ ওয়ার্ডে আমাদের এখানে ১০ জন রোগী দেখভাল করেন একজন ডাক্তার। করোনা ওয়ার্ডে সেটা হচ্ছে না। আমারা ডাক্তার বাড়াচ্ছি। আগে সকালে একজন থাকতেন, এখন সেটি বাড়িয়ে দুইজন করা হয়েছে। কিন্তু বিকাল ও রাতে একজন করেই দায়িত্ব পালন করছেন। সেটিও যেন বাড়ানো যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি। আমরা ডাক্তার-নার্স বাড়ানোর জন্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালককে বলছি। এখন সব জায়গায় করোনার জন্য তারাও দিতে পারছে না। তবে সরকার সম্প্রতি আমাদের কাছে একটি চাহিদা চেয়েছিল। ১০০ জন ডাক্তার এবং ৩০০ জন নার্স লাগবে বলে আমরা স্বাস্থ্য বিভাগে জানিয়েছি। দুই-আড়াই মাসের মধ্যে এই নিয়োগ হবে। তখন হয়তো পাওয়া যাবে। এখন আমরা মজুরিভিত্তিক জনবলও বাড়াচ্ছি। আইসিউইতে প্রত্যেক করোনা রোগীর জন্য একজন করে নার্স দরকার। রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে ১০৫ জন নার্স ডিউটি করেন। এদের অর্ধেক থাকেন কোয়ারেন্টাইনে। বাকি অর্ধেক তিন শিফটে ডিউটি করেন। ২০টি আইসিইউ শয্যার জন্য সেক্ষেত্রে ১৭ জন নার্স পাওয়া যায়। আইসিইউতে আরও নার্স দিতে পারলে ভাল হতো।

back to top