সারাদেশের কারাগারগুলোতে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত কারাবন্দি ও কনডেম সেলের সংখ্যা, কারাগারের সংস্কার, ব্যবস্থাপনা, কনডেম সেলের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছে হাই কোর্ট।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তিনি আদালতে এ প্রতিবেদন দেবেন।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের শুনানিতে আজ (২০ সেপ্টেম্বর) সোমবার এ প্রতিশ্রুতি দেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ আগামী ৩১ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত আসামিদের আলাদা রুমে রাখা হয়। সে রুমে ফ্যান থাকে, সবই থাকে। যখন একজনকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়, তখন ধরেই নেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে। মৃত্যুদ- দেওয়ার ক্ষেত্রে আসামির অপরাধের নির্মমতা, ভয়াবহতাকেই বিবেচনা করা হয়। দ-বিধির ৩০২-এ খুন করলেই কিন্তু আদালত ফাঁসি দেয় না, অপরাধের জঘণ্যতা, বর্বরতা বিবেচনা করা হয়।
এসময় বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করার আগে প্রথমে চিন্তা করতে হবে মৃত্যুদ- দেব কি না? মৃত্যুদ- না দিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়াটা হল ব্যতিক্রম।
“ভারতে কিন্তু আইনটা পরিবর্তন করে ফেলেছে। আমরা পরিবর্তন করিনি। আমাদের প্রথমেই বলতে হবে ফাঁসি দিতে হবে। কেন দিলাম না এজন্য জজ সাহেবদের কারণ দেখাতে হয় যে, এই এই কারণে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন দিলাম।”
আমিন উদ্দিন বলেন, “জেলের আগের অবস্থাটা এখন নাই। জেলখানা এখন অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে। এখন প্রিজনাররা টাকা দিয়ে ক্যান্টিনে খেতে পারেন। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন। অনেক কিছু করা যায়।”
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “গত কয়েক বছরে কনডেম সেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাশিমপুর, কেরানীগঞ্জের কারগারে ডেথ সেলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আর অন্য কারাগারগুলোর কী অবস্থা তা যদি আমাদের দিলে রেকর্ড হিসেবে থাকবে।”
রিট আবেদনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বিচারপতি বলেন, “রিট আবেদনকারীদের উদ্বেগ হল, ফাঁসি হয়েছে বলেই যে তাকে আমরা অন্ধকার প্রকোষ্টে দিনের পর দিন রাখব, বিষয়টা যেন সেরকম না হয়। উনাদের বক্তব্য হচ্ছে যতক্ষণ ফাঁসি চূড়ান্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ সবকিছুই যেন আমরা একটু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখি এবং যতটুকু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব, সেটা দেওয়ার যেন চেষ্টা করা হয়। সরকার মনে হয় কতগুলো উদ্যেগ নিয়েছে, সেগুলো রেকর্ডে থাকলে ভালো হয়।”
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আসছে অবকাশ অবধি সময় চেয়ে বলেন, “তাহলে বন্ধের পর আমাদের সময় দেন। আমরা একটা রিপোর্ট নিয়ে আপনাদের দিই।”
এরপর আদালত ৩১ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে আদেশ দেয়।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্ত তিন আসামির পক্ষে গত ২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
গত ১৮ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।
তিন আবেদনকারী হলেন- চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির এবং কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।
বিচারিক আদালতের মৃত্যুদ-াদেশের বিরুদ্ধে তাদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদ-াদেশ অনুমোদনের আবেদন) হাই কোর্টে বিচারাধীন।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন আইনত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।
আদালত এ রুল জরি করলে তা নিষ্পত্তির আগ অবধি আবেদনকারীদের কনডেম সেল থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্থানান্তরের নির্দেশ চাওয়া হয় অবেদনে।
এছাড়া দেশের সব কারাগারে কনডেম সেলের আসামিদের বন্দি রাখার ব্যবস্থাপনা (সুযোগ, সুবিধা) নিয়ে প্রতিবেদন দিতে কারা মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            সোমবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
সারাদেশের কারাগারগুলোতে মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত কারাবন্দি ও কনডেম সেলের সংখ্যা, কারাগারের সংস্কার, ব্যবস্থাপনা, কনডেম সেলের সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত প্রতিবেদন চেয়েছে হাই কোর্ট।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তিনি আদালতে এ প্রতিবেদন দেবেন।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের শুনানিতে আজ (২০ সেপ্টেম্বর) সোমবার এ প্রতিশ্রুতি দেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
পরে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ আগামী ৩১ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে এই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে।
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মৃত্যুদ-াদেশপ্রাপ্ত আসামিদের আলাদা রুমে রাখা হয়। সে রুমে ফ্যান থাকে, সবই থাকে। যখন একজনকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়, তখন ধরেই নেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে। মৃত্যুদ- দেওয়ার ক্ষেত্রে আসামির অপরাধের নির্মমতা, ভয়াবহতাকেই বিবেচনা করা হয়। দ-বিধির ৩০২-এ খুন করলেই কিন্তু আদালত ফাঁসি দেয় না, অপরাধের জঘণ্যতা, বর্বরতা বিবেচনা করা হয়।
এসময় বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম বলেন, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করার আগে প্রথমে চিন্তা করতে হবে মৃত্যুদ- দেব কি না? মৃত্যুদ- না দিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়াটা হল ব্যতিক্রম।
“ভারতে কিন্তু আইনটা পরিবর্তন করে ফেলেছে। আমরা পরিবর্তন করিনি। আমাদের প্রথমেই বলতে হবে ফাঁসি দিতে হবে। কেন দিলাম না এজন্য জজ সাহেবদের কারণ দেখাতে হয় যে, এই এই কারণে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন দিলাম।”
আমিন উদ্দিন বলেন, “জেলের আগের অবস্থাটা এখন নাই। জেলখানা এখন অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে। এখন প্রিজনাররা টাকা দিয়ে ক্যান্টিনে খেতে পারেন। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেন। অনেক কিছু করা যায়।”
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “গত কয়েক বছরে কনডেম সেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কাশিমপুর, কেরানীগঞ্জের কারগারে ডেথ সেলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা আর অন্য কারাগারগুলোর কী অবস্থা তা যদি আমাদের দিলে রেকর্ড হিসেবে থাকবে।”
রিট আবেদনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বিচারপতি বলেন, “রিট আবেদনকারীদের উদ্বেগ হল, ফাঁসি হয়েছে বলেই যে তাকে আমরা অন্ধকার প্রকোষ্টে দিনের পর দিন রাখব, বিষয়টা যেন সেরকম না হয়। উনাদের বক্তব্য হচ্ছে যতক্ষণ ফাঁসি চূড়ান্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ সবকিছুই যেন আমরা একটু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখি এবং যতটুকু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব, সেটা দেওয়ার যেন চেষ্টা করা হয়। সরকার মনে হয় কতগুলো উদ্যেগ নিয়েছে, সেগুলো রেকর্ডে থাকলে ভালো হয়।”
তখন অ্যাটর্নি জেনারেল আসছে অবকাশ অবধি সময় চেয়ে বলেন, “তাহলে বন্ধের পর আমাদের সময় দেন। আমরা একটা রিপোর্ট নিয়ে আপনাদের দিই।”
এরপর আদালত ৩১ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখে আদেশ দেয়।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে মৃত্যুদ-াদেশ প্রাপ্ত তিন আসামির পক্ষে গত ২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
গত ১৮ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।
তিন আবেদনকারী হলেন- চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুল বশির এবং কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।
বিচারিক আদালতের মৃত্যুদ-াদেশের বিরুদ্ধে তাদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদ-াদেশ অনুমোদনের আবেদন) হাই কোর্টে বিচারাধীন।
মৃত্যুদ-াদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন আইনত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে রুল চাওয়া হয়েছে রিটে।
আদালত এ রুল জরি করলে তা নিষ্পত্তির আগ অবধি আবেদনকারীদের কনডেম সেল থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্থানান্তরের নির্দেশ চাওয়া হয় অবেদনে।
এছাড়া দেশের সব কারাগারে কনডেম সেলের আসামিদের বন্দি রাখার ব্যবস্থাপনা (সুযোগ, সুবিধা) নিয়ে প্রতিবেদন দিতে কারা মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
