alt

২৩ শতাংশ নারী শ্রমিক বিদেশ থেকে ফিরেছেন বছর পূর্ণ না হতেই

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশ গিয়ে ২৩ শতাংশ নারী শ্রমিক এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেশে ফিরেছেন, এক বছরের সামান্য বেশি সময় থেকেছেন ১৮ শতাংশ আর ৫৫ শতাংশ দেশে ফেরত আসা ছিল জবরদস্তিমূলক। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর ‘দেশে ফিরে আসা অভিবাসী নারী শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিলস সেমিনার হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিলস গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিলস্ নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিল আখতার চৌধুরী, মো. আবদুল ওয়াহেদ এবং পূলক রঞ্জন ধর, বিলস পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, উপপরিচালক এম এ মজিদ প্রমুখ।

বিলস দেশের তিনটি জেলার (চট্টগ্রাম, যশোর এবং ফরিদপুর) ৩২৩ জন প্রত্যাবাসী অভিবাসী নারী শ্রমিকের ওপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ ছাড়া গুণগত গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রাথমিক উৎস্যসমূহ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশে ফেরত আসা প্রতি ৩ জন নারী শ্রমিকের মধ্যে ১ জনের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের থেকে অবনতি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে সিংহভাগই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ৮৫ শতাংশ তাদের বর্তমান কাজ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত এবং ৫৭ শতাংশ তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তিত। গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২ শতাংশ বিদেশে জবরদস্তিমূলক শ্রমের শিকার হয়েছেন, ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাবে ভুগেছেন, ৭ শতাংশ যৌন এবং ৩৮ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিদেশ ফেরত ৬০ শতাংশ নারী শ্রমিক বেকার, ৬৫ শতাংশ শ্রমিকের নিয়মিত মাসিক কোন আয় নেই, ৬১ শতাংশ শ্রমিক এখনও ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন, ৭৫ শতাংশ শ্রমিকের কোন সঞ্চয় নেই এবং ৭৩ শতাংশ শ্রমিক তাদের পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের অবস্থা নাজুক। ৫৫ শতাংশ শ্রমিক শারীরিকভাবে অসুস্থ, ২৯ শতাংশের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে এবং ৮৭ শতাংশ শ্রমিক মানসিক অসুস্থতার কোন চিকিৎসা পায়নি। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকরা সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। পরিবার ও সমাজ তাদের সঙ্গে বৈরি এবং অমানবিক আচরণ করে। ৩৮ শতাংশ নারী শ্রমিক বলছেন সমাজে তাদের নিম্ন শ্রেণীর চরিত্রহীন নারী বলে গণ্য করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকরা তাদের পরিবার ও সমাজের কাছে অবহেলিত। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলোর মধ্যে তারা নিজেদের অভিবাসনের সিদ্ধান্তÍ নিজেরাই নিয়েছিলেন। বর্তমানে বেশির ভাগেরই পরিবার বা সমাজে মতামতের কোন মূল্য নেই। তাদের কেউ গ্রাহ্য করে না। তাদের কেউ বিশ^াস করে না। বিদেশ থেকে ফেরার সময় পরিবারের সদস্য দ্বারা বিমানবন্দরেই অযাচিত আচরণের শিকার হয়েছেন ১৭ শতাংশ শ্রমিক। ১৫ শতাংশ বিদেশ থেকে ফিরে আসা নারী তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১১ শতাংশ নারী শ্রমিকের স্বামী তাদের ছেড়ে চলে গেছে এবং ২৮ শতাংশ নারী শ্রমিক তাদের দাম্পত্য জীবনে বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হয়েছেন।

তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। কিছু কিছু বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিক তাদের অবস্থা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা ভালো পরিবেশে কাজ করে, ভালো রেমিট্যান্স আয় করেছেন এবং তাদের ভালো সঞ্চয় রয়েছে। তাদের নিয়মিত আয়ের উৎস রয়েছে। তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবেও সুস্থ।

সংবাদ সম্মেলনে বিলস নেতারা বলেন, ‘প্রত্যাবাসী অসহায় নারী শ্রমিকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের বিষয়ে গুরুত্ব নিয়ে কাজ করা দরকার। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ এবং এর ধারাবাহিক পর্যালোচনা করা দরকার। এই গবেষণা তার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। গবেষণায় বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের আর্থসামাজিক অবস্থা, তাদের প্রতি বিদ্যমান সামাজিক মনোভাব, তাদের পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুর্নবাসনে প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে আনা হয়।’

বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের উন্নয়নে বিলস-এর গবেষণায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়- প্রত্যাবাসী নারী শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত সামজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করা, উপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া, সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি উপযুক্ত বাণিজ্যিক পরামর্শ দেয়া, মনো-সামাজিক পরামর্শসহ উপযুক্ত স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান, পদ্ধতিগত নিবন্ধন এবং তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দেয়া, উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রবর্তন, যা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে, সংগঠন, নিবন্ধন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় ট্রেড ইউনিয়নকে সম্পৃক্ত করা এবং ক্রমান্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতি-কাঠামো প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া। তাছাড়া নীতি ও আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

ছবি

চট্টগ্রামে থানা ব্যারাকের বাথরুম থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ছবি

হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৫৯ জন

ছবি

মানিকগঞ্জে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

জীবিকার সন্ধানে ব্রহ্মপুত্র চরে নারীদের ছুটে চলা

ছবি

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের হীরক জয়ন্তী আনন্দোৎসব

ছবি

আটলান্টিক সিটি স্কুল বোর্ড নির্বাচনে সুব্রত চৌধুরীর হ্যাট্রিক বিজয়

ছবি

লালমনিরহাটে দামে ভালো পেয়ে খুশি ধনিয়া পাতা চাষিরা

ছবি

হবিগঞ্জের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী চাঁন মিয়ার মানবেতর জীবন

ছবি

চকবাজার থানা ব্যারাকের বাথরুম থেকে এএসআইয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ছবি

সিলেটে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন অপসারণের নির্দেশ

ছবি

দোয়ারাবাজারে মাদক, অনলাইন জুয়া ও কিশোর গ্যাং বিরোধী সচেতনতামূলক সভা

ছবি

আদমদীঘিতে চাল কলে লাখ টাকার মালামাল চুরি

ছবি

সমাজ পরিবর্তনে সাংবাদিকরা বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারেন

ছবি

শাহজাদপুরে দিনব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

ছবি

লালপুরে হাজারো ভক্তবৃন্দ ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় নবান্ন উৎসব

ছবি

সৈয়দপুরে সড়ক নির্মাণ কাজে প্রধান বাধা ৫টি বৈদ্যুতিক খুঁটি

ছবি

শিবপুরে ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা, অসহায় স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে

ছবি

অবৈধভাবে রাস্তা আটকানোর প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

ছবি

চরাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা নাজুক, স্কুল ভাড়া হয় লেবারের আবাসিক হোটেল হিসাবে

ছবি

কলারোয়া সীমান্তে দুই লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় মালামাল জব্দ

পিরোজপুরে ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে একজন নিহত, একজন আহত

ছবি

গোয়ালন্দে মানবাধিকার রক্ষায় সাংবাদিকতা বিষয়ে কর্মশালা

ছবি

গুজবে নির্ঘুম রাত কাটাল ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শতাধিক মানুষ

ছবি

গৌরনদীতে প্রসূতির মৃত্যু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পলাতক

ছবি

নামছে পানিস্তর, শূন্য হচ্ছে মাটি, ঝুঁকিতে বরেন্দ্রভূমি

ছবি

আজ বামনা নবম সাব-সেক্টর পাকহানাদার মুক্ত দিবস

ছবি

ভালো দামের আশায় নন্দীগ্রামে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকরা

ছবি

গৌরীপুরে মেকানিক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

মুন্সীগঞ্জে ধানের শীষের পক্ষে উঠান বৈঠক মহিলাদের মাঝে উপহার বিতরণ

ছবি

ভূমিকম্পে ঘোড়াশালের পুরাতন রেলসেতুর দুই পিলারে ফাটল

ছবি

দুর্গাপুরে খুলে দেওয়া হলো অস্থায়ী বাঁশের সেতু

ছবি

কলমাকান্দায় ভারতীয় প্রসাধনী জব্দ পিকআপসহ যুবক আটক

ছবি

আদমদীঘিতে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

নবীনগর প্রেসক্লাবে ৪০ বছর পদার্পণ অনুষ্ঠিত

ছবি

বাগেরহাটের ফকিরহাটে বিক্রি হচ্ছে শিকার নিষিদ্ধ অতিথি পাখি

ছবি

চকরিয়ায় সরকারি জায়গায় বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ

tab

২৩ শতাংশ নারী শ্রমিক বিদেশ থেকে ফিরেছেন বছর পূর্ণ না হতেই

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশ গিয়ে ২৩ শতাংশ নারী শ্রমিক এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেশে ফিরেছেন, এক বছরের সামান্য বেশি সময় থেকেছেন ১৮ শতাংশ আর ৫৫ শতাংশ দেশে ফেরত আসা ছিল জবরদস্তিমূলক। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)-এর ‘দেশে ফিরে আসা অভিবাসী নারী শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিলস সেমিনার হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিলস গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিলস্ নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিল আখতার চৌধুরী, মো. আবদুল ওয়াহেদ এবং পূলক রঞ্জন ধর, বিলস পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, উপপরিচালক এম এ মজিদ প্রমুখ।

বিলস দেশের তিনটি জেলার (চট্টগ্রাম, যশোর এবং ফরিদপুর) ৩২৩ জন প্রত্যাবাসী অভিবাসী নারী শ্রমিকের ওপর জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ ছাড়া গুণগত গবেষণা পদ্ধতি প্রয়োগ করে প্রাথমিক উৎস্যসমূহ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশে ফেরত আসা প্রতি ৩ জন নারী শ্রমিকের মধ্যে ১ জনের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের থেকে অবনতি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে সিংহভাগই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ৮৫ শতাংশ তাদের বর্তমান কাজ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত এবং ৫৭ শতাংশ তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তিত। গবেষণায় দেখা গেছে, ৫২ শতাংশ বিদেশে জবরদস্তিমূলক শ্রমের শিকার হয়েছেন, ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাবে ভুগেছেন, ৭ শতাংশ যৌন এবং ৩৮ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিদেশ ফেরত ৬০ শতাংশ নারী শ্রমিক বেকার, ৬৫ শতাংশ শ্রমিকের নিয়মিত মাসিক কোন আয় নেই, ৬১ শতাংশ শ্রমিক এখনও ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন, ৭৫ শতাংশ শ্রমিকের কোন সঞ্চয় নেই এবং ৭৩ শতাংশ শ্রমিক তাদের পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের শারীরিক স্বাস্থ্যের অবস্থা নাজুক। ৫৫ শতাংশ শ্রমিক শারীরিকভাবে অসুস্থ, ২৯ শতাংশের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে এবং ৮৭ শতাংশ শ্রমিক মানসিক অসুস্থতার কোন চিকিৎসা পায়নি। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকরা সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন। পরিবার ও সমাজ তাদের সঙ্গে বৈরি এবং অমানবিক আচরণ করে। ৩৮ শতাংশ নারী শ্রমিক বলছেন সমাজে তাদের নিম্ন শ্রেণীর চরিত্রহীন নারী বলে গণ্য করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকরা তাদের পরিবার ও সমাজের কাছে অবহেলিত। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলোর মধ্যে তারা নিজেদের অভিবাসনের সিদ্ধান্তÍ নিজেরাই নিয়েছিলেন। বর্তমানে বেশির ভাগেরই পরিবার বা সমাজে মতামতের কোন মূল্য নেই। তাদের কেউ গ্রাহ্য করে না। তাদের কেউ বিশ^াস করে না। বিদেশ থেকে ফেরার সময় পরিবারের সদস্য দ্বারা বিমানবন্দরেই অযাচিত আচরণের শিকার হয়েছেন ১৭ শতাংশ শ্রমিক। ১৫ শতাংশ বিদেশ থেকে ফিরে আসা নারী তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন। ১১ শতাংশ নারী শ্রমিকের স্বামী তাদের ছেড়ে চলে গেছে এবং ২৮ শতাংশ নারী শ্রমিক তাদের দাম্পত্য জীবনে বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হয়েছেন।

তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। কিছু কিছু বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিক তাদের অবস্থা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। তারা ভালো পরিবেশে কাজ করে, ভালো রেমিট্যান্স আয় করেছেন এবং তাদের ভালো সঞ্চয় রয়েছে। তাদের নিয়মিত আয়ের উৎস রয়েছে। তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবেও সুস্থ।

সংবাদ সম্মেলনে বিলস নেতারা বলেন, ‘প্রত্যাবাসী অসহায় নারী শ্রমিকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের বিষয়ে গুরুত্ব নিয়ে কাজ করা দরকার। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ এবং এর ধারাবাহিক পর্যালোচনা করা দরকার। এই গবেষণা তার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। গবেষণায় বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের আর্থসামাজিক অবস্থা, তাদের প্রতি বিদ্যমান সামাজিক মনোভাব, তাদের পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুর্নবাসনে প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে আনা হয়।’

বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের উন্নয়নে বিলস-এর গবেষণায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়- প্রত্যাবাসী নারী শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত সামজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করা, উপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া, সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি উপযুক্ত বাণিজ্যিক পরামর্শ দেয়া, মনো-সামাজিক পরামর্শসহ উপযুক্ত স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদান, পদ্ধতিগত নিবন্ধন এবং তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দেয়া, উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রবর্তন, যা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে, সংগঠন, নিবন্ধন, সচেতনতা বৃদ্ধি ও পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় ট্রেড ইউনিয়নকে সম্পৃক্ত করা এবং ক্রমান্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ নীতি-কাঠামো প্রণয়নে উদ্যোগী হওয়া। তাছাড়া নীতি ও আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

back to top