alt

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা

যশোর অফিস : মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

বেনাপোল কাস্টমস হাউসে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) আমদানি পণ্য থেকে ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের গ্রোথ অন্য সময়ের চাইতে বেশি হলেও ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ তে ঘাটতি ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

চলতি বছরে এত বড় অঙ্কের লক্ষ্যমাত্রা আদায় নিয়ে সংশয় রয়েছে। তারা বলছেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাস্টমস ও বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। তা না হলে কখনও এত বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দুই দেশের ব্যবসায়ীদের এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় ব্যবসায়ী চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করতে পারেন না। এতেই বার বার রাজস্ব আয়ে ধস নামছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে এত বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ একদিকে করোনা পরিস্থিতি ও অন্য দিকে সুষ্ঠভাবে বাণিজ্য সম্পাদনে অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। তবে উন্নয়ন হলে এবন্দর থেকে লক্ষ্য মাত্রার দ্বিগুণ রাজস্ব আয় কাস্টমসের পক্ষ্যে সম্ভব।’

আমদানিকারক রেজোয়ান আহমদ মুরাদ বলেন, ‘বেনাপোল বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক না। আমদানিকারকদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বন্দরে পণ্য পাহারা দিতে হয়। বন্দর থেকে পণ্য চুরি, বারবার রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছেন। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে বৈধ পথে মাদক দ্রব্য প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ভদ্র ব্যবসায়ীরা অনেকে অন্য বন্দরে চলে গেছেন। এসব কারণে পর পর ৮ থেকে ৯ বছর ধরে এ বন্দর থেকে আমদানি পণ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চাহিদা মতো রাজস্ব আহরণ করতে পারছেন না।’

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, ‘বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় অনিশ্চিত। কারণ কাস্টমস ও বন্দরের নানান অব্যবস্থাপনায় আমদানি কমেছে এ বন্দর দিয়ে। বেনাপোল কাস্টমসে আমদানি পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেই। এতে খুলনা ও ঢাকা থেকে পরীক্ষা করাতে মাসের অধিক সময় লেগে যায়। ফলে দীর্ঘ সময় পণ্য চালান আটকা পড়ে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে বিএসটিআই ও বিএসআইআরের শাখা স্থাপনের দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়েছেন। বন্দরে চাহিদা মতো জায়গা না থাকায় পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আয় কমার ক্ষেত্রে এটিও একটি বড় কারণ মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী।’

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, ‘ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সে পথে আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রহী হবেন এটাই স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান তাই ব্যবসায়ী দিন দিন সে পথে আমদানিতে ঝুঁকছেন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস ও বন্দরে বৈধ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা এ পথে আবার ফিরবেন।’

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বন্দরে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে কয়েক বছর ধরে রাজস্বের লক্ষমাত্রা পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। আমদানির চাহিদা বাড়লেও ৫ বছর আগে প্রতিদিন যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হতো এখনও তার পরিমাণ সে জায়গাতে রয়েছে। আমদানি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে বন্দরে রাস্তার সংকীর্ণতা রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করতে পাছেন না। বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে বলা হলেও নজরদারি কম। যদি চাহিদা মতো সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় তবে আমদানি বাড়বে রাজস্বও বাড়বে।’

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল বলেন, ‘বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পণ্যাগারের জন্য জমি অধিগ্রহণ, নতুন পণ্যগার নির্মাণ ও বন্দর এলাকায় রাস্তাঘাটের অনেকটা উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরে আরও জমি অধিগ্রহণ ও পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। যে সব পণ্যে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে সেসব পণ্য আলাদা নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদার কথা ভেবে আরও কিছু উন্নয়নমূলক কাজের চিন্তা-ভাবনা চলছে।’

ছবি

ডিসি-ইউএনও পাঠিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ কঠিন, প্রয়োজন রাজনৈতিক সরকার: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

পুঁজিবাজারে বড় উত্থান, লেনদেনও বেড়েছে

ছবি

ব্যাংক বন্ধ হলে তাৎক্ষণিক ২ লাখ টাকা পাবেন আমানতকারী

ছবি

কুড়িগ্রাম-গেলেফু করিডোরে আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা

ছবি

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঘুরে দাঁড়াতে পারে অর্থনীতি: এমসিসিআই

ছবি

বাংলাদেশে কানাডার বিনিয়োগ প্রায় ১৩৩ মিলিয়ন ডলার : ডিসিসিআই

রিটার্ন জমার সময় বাড়লো আরও একমাস

ছবি

ব্যক্তিশ্রেণির আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়াল এনবিআর

ছবি

মাস্টারকার্ডের সম্মাননা পেল ১৮ প্রতিষ্ঠান

ছবি

সারা দেশে উদ্যোক্তাদের ৮৭১ শিল্পপ্লট দিচ্ছে বিসিক

ছবি

৪ মাসে ১ শতাংশ টাকা খরচ করতে পারেনি ৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ

ছবি

সূচকের উত্থান হলেও কমেছে লেনদেন

ছবি

সিটি ব্যাংকের এমডি পেলেন ‘সিইও অব দ্য ইয়ার ২০২৫’ পুরস্কার

ছবি

ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনের ‘সিরামিক এক্সপো’

ছবি

স্বল্পোন্নত দেশের খোলস থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান রেহমান সোবহানের

ছবি

বন্দর: ‘তাড়াহুড়ায়’ কেন ‘গোপনীয়’ চুক্তি, বুধবার সড়ক অবরোধের ঘোষণা

ছবি

শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা

ছবি

উন্নয়নের বয়ানে লাভবান হয়েছে রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

ছবি

রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ছে, অনলাইনে জমা দেবেন যেভাবে

ছবি

সাউথইস্ট ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে সেকান্দার-ই-আজমের যোগদান

ছবি

২০২৬ সালে ব্যাংক বন্ধ থাকবে ২৮ দিন

ছবি

ট্রাম্পের শুল্কের চাপে রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়েছে ভারত

ছবি

মাসের প্রথম ১৮ দিনে রেমিট্যান্স আসা বেড়েছে ৩১ শতাংশ

ছবি

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

ছবি

লালদিয়া-পানগাঁওয়ে ‘১০ বছর করমুক্ত সুবিধা পাবে’ ২ বিদেশি কোম্পানি

ছবি

১৯ দিনে এলো ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রেমিট্যান্স

ছবি

জুলাই-অক্টোবর মাসে রাজস্ব আহরণে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

চার মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৮ শতাংশ

ছবি

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে দক্ষতা উন্নয়ন অপরিহার্য : বিজিএমইএ সভাপতি

ছবি

এলসি জটিলতায় মেঘনা সিমেন্ট, বেড়েছে লোকসান

ছবি

দেশের জাহাজনির্মাণ শিল্পের বড় রপ্তানি, আমিরাত যাচ্ছে তিন ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট

ছবি

ই-সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারের উদ্বোধন

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কাজ করবে বিএফটিআই

ছবি

কম সুদে ছোট অঙ্কের ঋণ দেবে ইউসিবি

ছবি

নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে সরকার

ছবি

স্বর্ণের দাম বেড়ে ভরি ২ লাখ ৯ হাজার ৫২০ টাকা

tab

বেনাপোল কাস্টমসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা

যশোর অফিস

মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

বেনাপোল কাস্টমস হাউসে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) আমদানি পণ্য থেকে ৬ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের গ্রোথ অন্য সময়ের চাইতে বেশি হলেও ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি ছিল ৩ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি ১১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ তে ঘাটতি ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

চলতি বছরে এত বড় অঙ্কের লক্ষ্যমাত্রা আদায় নিয়ে সংশয় রয়েছে। তারা বলছেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাস্টমস ও বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। তা না হলে কখনও এত বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দুই দেশের ব্যবসায়ীদের এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় ব্যবসায়ী চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করতে পারেন না। এতেই বার বার রাজস্ব আয়ে ধস নামছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে এত বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ একদিকে করোনা পরিস্থিতি ও অন্য দিকে সুষ্ঠভাবে বাণিজ্য সম্পাদনে অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। তবে উন্নয়ন হলে এবন্দর থেকে লক্ষ্য মাত্রার দ্বিগুণ রাজস্ব আয় কাস্টমসের পক্ষ্যে সম্ভব।’

আমদানিকারক রেজোয়ান আহমদ মুরাদ বলেন, ‘বেনাপোল বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক না। আমদানিকারকদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বন্দরে পণ্য পাহারা দিতে হয়। বন্দর থেকে পণ্য চুরি, বারবার রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছেন। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে বৈধ পথে মাদক দ্রব্য প্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় ঝামেলা এড়াতে ভদ্র ব্যবসায়ীরা অনেকে অন্য বন্দরে চলে গেছেন। এসব কারণে পর পর ৮ থেকে ৯ বছর ধরে এ বন্দর থেকে আমদানি পণ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চাহিদা মতো রাজস্ব আহরণ করতে পারছেন না।’

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, ‘বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায় অনিশ্চিত। কারণ কাস্টমস ও বন্দরের নানান অব্যবস্থাপনায় আমদানি কমেছে এ বন্দর দিয়ে। বেনাপোল কাস্টমসে আমদানি পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেই। এতে খুলনা ও ঢাকা থেকে পরীক্ষা করাতে মাসের অধিক সময় লেগে যায়। ফলে দীর্ঘ সময় পণ্য চালান আটকা পড়ে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেনাপোল কাস্টমস হাউসে বিএসটিআই ও বিএসআইআরের শাখা স্থাপনের দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে অনেক ব্যবসায়ী এ বন্দর ছেড়েছেন। বন্দরে চাহিদা মতো জায়গা না থাকায় পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আয় কমার ক্ষেত্রে এটিও একটি বড় কারণ মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী।’

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, ‘ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সে পথে আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রহী হবেন এটাই স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান তাই ব্যবসায়ী দিন দিন সে পথে আমদানিতে ঝুঁকছেন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস ও বন্দরে বৈধ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা এ পথে আবার ফিরবেন।’

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বন্দরে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে কয়েক বছর ধরে রাজস্বের লক্ষমাত্রা পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। আমদানির চাহিদা বাড়লেও ৫ বছর আগে প্রতিদিন যে পরিমাণ পণ্য আমদানি হতো এখনও তার পরিমাণ সে জায়গাতে রয়েছে। আমদানি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে বন্দরে রাস্তার সংকীর্ণতা রয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করতে পাছেন না। বার বার বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে বলা হলেও নজরদারি কম। যদি চাহিদা মতো সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয় তবে আমদানি বাড়বে রাজস্বও বাড়বে।’

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আবদুল জলিল বলেন, ‘বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পণ্যাগারের জন্য জমি অধিগ্রহণ, নতুন পণ্যগার নির্মাণ ও বন্দর এলাকায় রাস্তাঘাটের অনেকটা উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরে আরও জমি অধিগ্রহণ ও পণ্যের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। যে সব পণ্যে বেশি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে সেসব পণ্য আলাদা নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদার কথা ভেবে আরও কিছু উন্নয়নমূলক কাজের চিন্তা-ভাবনা চলছে।’

back to top