পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিসান মির্জা ও মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুদকের দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, কমিশনের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদিন আবেদন দুটি করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
জিসান মির্জার বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তিনি ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকার সম্পদের ‘তথ্য গোপন করে’ এবং ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ’ ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে জিসান মির্জার অপরাধে ‘প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা’ করে দ-বিধি’র ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় মামলা করা হয়েছে।
‘এ অবস্থায়, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’ তাহসিন রাইসার বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তিনি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজান ৮৫ টাকার ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত’ সম্পদ ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারার অপরাধ করেছেন এবং তার বাবা বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাবের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ তাহসিন রাইসাকে ‘অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে’ দ-বিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিসান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে গত ১৫ ডিসেম্বর চারটি মামলা করে দুদক। বেনজীরকে চার মামলাতেই আসামি করা হয়।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালের কণ্ঠ। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২২ এপ্রিল দুদক জানায়, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক। বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন। তারা সবাই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিসান মির্জা ও মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। দুদকের দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব বুধবার (৮ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন বলেন, কমিশনের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদিন আবেদন দুটি করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
জিসান মির্জার বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তিনি ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকার সম্পদের ‘তথ্য গোপন করে’ এবং ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকার ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ’ ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের’ মাধ্যমে জিসান মির্জার অপরাধে ‘প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা’ করে দ-বিধি’র ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় মামলা করা হয়েছে।
‘এ অবস্থায়, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’ তাহসিন রাইসার বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, তিনি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজান ৮৫ টাকার ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত’ সম্পদ ভোগ দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারার অপরাধ করেছেন এবং তার বাবা বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাবের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ তাহসিন রাইসাকে ‘অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে’ দ-বিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
‘মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।’ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের’ অভিযোগে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিসান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে গত ১৫ ডিসেম্বর চারটি মামলা করে দুদক। বেনজীরকে চার মামলাতেই আসামি করা হয়।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালের কণ্ঠ। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২২ এপ্রিল দুদক জানায়, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে তারা। সেজন্য তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পরে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন। সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক। বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন। তারা সবাই দেশের বাইরে চলে গেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছে।