image

বিমানে নানা কৌশলে ঢাকায় আসছে ইয়াবা

মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১
বাকী বিল্লাহ

সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীরা নানা কৌশলে বিমানে ঢাকায় মাদক আনছে। ব্যবসায়ী চক্র পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে ইয়াবা ট্যাবলেট কক্সবাজার থেকে বিমানযোগে ঢাকায় আনে। এরপর বিমান বন্দর থেকে যথাযথ স্থান বা ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দেয়।

আগাম তথ্যের ভিত্তিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা আর্মড পুলিশ বিভিন্ন সময় সন্দেহভাজনদের আটক করে ২১টি চালান ইয়াবা উদ্ধার করছে। গত ১৪ জুন সর্বশেষ চালান উদ্ধার করা হয়েছে। ওইসব চালানে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৪ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে। বিমান বন্দরের আর্মড পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে বিমানবন্দরে মাদক শনাক্ত করার জন্য আধুনিক ড্রাগ স্ক্যানার না থাকায় মাদক চোরাচালানি চক্র এ সুযোগ নিচ্ছে। মেশিন থাকলে বিমানযোগে মাদক আনলে সহজেই ধরা পড়ত বলে মাদক বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন।

বিমান বন্দরের আর্মড পুলিশ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত ১৪ জুন রাত ৮টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের কনকর্স হল এলাকায় সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় শহিদুল্লাহ নামে কক্সবাজারের বাহারছড়ার এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে তার পেটে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ইয়াবা থাকার কথা স্বীকার করে দুই হাজার ৬৭০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ইয়াবার আনুমানিক বাজার মূল্য ৮ লাখ টাকা। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ২২ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনাল থেকে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় মো. রাকিব হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আর্মড পুলিশ আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে তার সঙ্গে মাদক থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। পরে তার ব্যাগ তল্লাশি করে আচারের ভিতর স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ৯ হাজার ৮৮৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। যার মূল্য প্রায় ২৪ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ টাকা।

গত ১৩ মার্চ রাত সোয়া ৯টার দিকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের পাবলিক টয়লেটের সামনে সন্দেহজনক ঘোরাফেরার সময় সফিকুল আলম ও শাহজাহান মিয়া নামে টেকনাফের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

পরে পেট থেকে টেপ দিয়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় ৪ হাজার ৫৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। আর শাহজাহান মিয়ার কাছ থেকে ৩৯৩৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করছে।

গত ৩০ জানুয়ারি মো. মোস্তফা নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার প্যান্টের পকেটে তল্লাশি করে পলিথিন ও স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ২ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করছে।

আর্মড পুলিশের শাহজালাল বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পদোন্নতিপ্রাপ্ত এসপি আলমগীর হোসেন সংবাদকে জানান, প্রতিটি ইয়াবার চালান উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন সময় মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মোট ৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরেরর প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ডা. দুলাল কৃষ্ণ সাহা এ সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদককে জানান, শাহজালাল বিমানবন্দরে মাদক শনাক্ত করার আধুনিক ড্রাগ স্ক্যানার মেশিন নেই। এটা খুবই দরকার। দাম ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। এটা থাকলে সহজেই মাদক শনাক্ত করা সম্ভব। এতে বিমানযোগে মাদক আনা বন্ধ হবে। আর মাদক ব্যবসায়ীরা সহজেই ধরা পড়বে। এটা কক্সবাজার বিমান বন্দরেও নেই। দেশে বিমানবন্দরে এ যন্ত্র থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন। ড্রাগ স্ক্যানার মেশিন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তা এখন চলমান।

‘অপরাধ ও দুর্নীতি’ : আরও খবর

সম্প্রতি