জীবন বীমার এমডির নিয়োগ বাণিজ্যসহ সারাদেশে ১০ অভিযোগের তদন্তে দুদক

সোমবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

জীবন বীমা করপোরেশনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে খোদ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জহরুল হকের বিরুদ্ধে। পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে ‘বড় অঙ্কের অর্থ নিয়ে’ এমডি জহরুল হক এ অনৈতিক কাজটি করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর নেতৃত্বে তদন্ত চালানো হয় প্রতিষ্ঠানটিতে।

দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, জীবন বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদে নিয়োগে পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা-১-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজীর নেতৃতে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে দুদক টিম সরজমিনে উক্ত অফিস পরিদর্শন করে পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্রসহ-সংক্রান্ত বেশ কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, আগামী শনিবার আরও একটি পরীক্ষা রয়েছে। মূলত, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে এ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। আর এসব নিয়োগে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসে দুদকের হটলাইনে।

এ বিষয়ে এমডি, পরিচালকসহ (প্রশাসন) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা দাবি করেছেন, তারা প্রশ্ন ফাঁস করেননি। একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াতে এ ধরনের অভিযোগ তুলছে। তাদের বক্তব্যের সত্যতা উদঘাটনের জন্য এ-সংক্রান্ত আরও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহপূর্বক বিস্তারিত পর্যালোচনা করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম।

এদিকে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য এবং ভুয়া বিল-ভাউচার দিয়ে কলেজ ফান্ডের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মো. জাকারিয়ার নেতৃত্বে অন্য একটি অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদক টিম সরজমিনে ওই কলেজ পরিদর্শন করে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে। কিছু অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিট চলমান রয়েছে, যা বর্তমানে আদাতলের এখতিয়ারভুক্ত। কলেজের দোকান বরাদ্দ ও নতুন ভবন নির্মাণে যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে, যা বিশ্লেষণপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম।

দুদক জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দালালদের সঙ্গে যোগসাজশে বহির্বিভাগের টিকিট বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহপরিচালকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এলজিইডি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীছড়ি থেকে সিন্দুকছড়ি পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।

এ ছাড়া এলজিইডির বরগুনা জেলার ফোরম্যান জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাজের বিল ছাড়করণে ঘুষ নেয়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কর্মস্থলে মাদক সেবনের অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাসপাতালের দুই একর জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসা করার অভিযোগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের জমির খাজনা আদায়ে হয়ারানির বিষয়ে অভিযান চালানো হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সরকারি রাস্তায় রিং কালভার্ট তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া এলজিইডি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুরাতন ফেরীঘাট-মহিষেরচর ও বাহেরচর কাতলা গ্রাম পর্যন্ত কোটি টাকার রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক ভোলা, কুমিল্লা, নির্বাহী প্রকৌশলী ময়মনসিংহ এবং মাদারীপুরকেও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে।

‘অপরাধ ও দুর্নীতি’ : আরও খবর

সম্প্রতি