স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, আগে ভুয়া মামলা করতো পুলিশ। এখন করছে পাবলিক (জনগণ)।
এ বিষয়ে পৃথকভাবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বশত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতেও অনেককে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলায় ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি করা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
গত কিছুদিন ধরেই সারাদেশে অগনিত ভুয়া মামলা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত আসামির সঙ্গে অসংখ্য ভুয়া লোকের নাম আসামির তালিকা দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী জানেনা তার দায়ের করা মামলায় কাদের নাম দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনও হচ্ছে যে, যার নামে মামলা দায়ের অনেক করা হচ্ছে তিনি অনেক আগে মারা গেছেন বা বিদেশে অবস্থান করছেন।
এভাবে ভুয়া মামলা দায়ের এবং অচেনা লোকের নাম মামলার আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়ার বিষয় নিয়ে সারাদেশের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এভাবে ঢালাও মামলা দায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ-ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে।
এমন অবস্থায় ভুয়া এবং ঢালাও মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দুই উপদেষ্টা- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সম্প্রতি হওয়া মামলাগুলো সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বেশির ভাগ মামলা ভুয়া। আগে ভুয়া মামলা করত পুলিশ। তারা ১০টা নাম আর ৫০টা বেনামি আসামি দিত। এখন পাবলিক (জনগণ) দিচ্ছে ১০টা নাম, ৫০টা ভুয়া নাম। মামলাগুলো পুলিশ, র?্যাব কিংবা আনসার দেয়নি। জনগণই দিচ্ছে। তদন্তে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।’
ভুয়া মামলায় কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সরকার সে বিষয়ে সজাগ বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। মামলার আসামি হওয়া এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমরা টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছি বিভিন্ন মিডিয়ায়। সত্যিকারের মামলা হলে আপনাকে (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) ধরার কথা।’
এ সময় পাল্টা প্রশ্ন করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এরকম (মামলা) যাদের আছে তাদের কারো কি ধরা হইছে? একচুয়্যাল মামলা হলে আপনারেতো ধরার কথা, আপনাকেতো ধরে নাই। এই কেইসতো আমার পুলিশ, র্যাব, আর্মি, আনসার দেয় নাই। এটাতো আপনাদের ভেতর থেকে কেউ শত্রুতা করে দিচ্ছে।’
হয়রানিমূলক মামলা ঠেকাতে আইন উপদেষ্টার নতুন চিন্তা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় হয়রানিমূলক মামলার প্রতিকারে নতুন চিন্তার কথা জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার দপ্তরের সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ডিসি, এসপি, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কিনা, সেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই কমিটি মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) করার আগে যাচাই করে দেবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, হয়রানিমূলক মামলা নিয়ে তারাও বিব্রত। এ নিয়ে নানা রকম প্রতিকার ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা হয়েছে। একবার সিদ্ধান্ত হলো ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে পুলিশকে একটি ক্ষমতা দেয়া হোক যে তারা এফআইআর করার আগে একটি প্রাথমিক তদন্ত করবেন। তখন বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা দেয়া হলে পুলিশকে দ্বিগুণ স্বেচ্ছাচারিতা করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এখন যেটা চিন্তা করা হচ্ছে, সেটা হলো পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা তাদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কিনা। এ ধরনের একটা রূপরেখা তৈরি করা যায় কিনা যে মামলার এফআইআর করার আগে এই কমিটি যাচাই করে দেবে।
এটা কেবল চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই নিয়ে দু-একজন আইনবিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটা দিক।
আসিফ নজরুল বলেন, আজ যাঁরা হয়রানিমূলক, মিথ্যা ও বাণিজ্যমূলক মামলা করছেন, কাউকে কাউকে নাকি হুমকিও দেয়া হচ্ছে যে টাকা না দিলে মামলা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আপনারা (হয়রানিমূলক মামলাকারী) মনে রাখেন, আমি যদি এই মন্ত্রণালয়ে থাকি, আপনাদের কীভাবে শাস্তি দেয়া যায়, সেটির আইন খুঁজে বের করব।’
এ ধরনের মামলা নিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি মামলা করেন, তাহলে তাকে মানা করা যায় না উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেছিলেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, দ্রুত তদন্ত করে তাদের নাম বাদ দিতে বলা হয়েছে। পুলিশকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, আগে ভুয়া মামলা করতো পুলিশ। এখন করছে পাবলিক (জনগণ)।
এ বিষয়ে পৃথকভাবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বশত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতেও অনেককে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলায় ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি করা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
গত কিছুদিন ধরেই সারাদেশে অগনিত ভুয়া মামলা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত আসামির সঙ্গে অসংখ্য ভুয়া লোকের নাম আসামির তালিকা দেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী জানেনা তার দায়ের করা মামলায় কাদের নাম দিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনও হচ্ছে যে, যার নামে মামলা দায়ের অনেক করা হচ্ছে তিনি অনেক আগে মারা গেছেন বা বিদেশে অবস্থান করছেন।
এভাবে ভুয়া মামলা দায়ের এবং অচেনা লোকের নাম মামলার আসামির তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়ার বিষয় নিয়ে সারাদেশের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এভাবে ঢালাও মামলা দায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ-ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে।
এমন অবস্থায় ভুয়া এবং ঢালাও মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দুই উপদেষ্টা- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামে পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সম্প্রতি হওয়া মামলাগুলো সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বেশির ভাগ মামলা ভুয়া। আগে ভুয়া মামলা করত পুলিশ। তারা ১০টা নাম আর ৫০টা বেনামি আসামি দিত। এখন পাবলিক (জনগণ) দিচ্ছে ১০টা নাম, ৫০টা ভুয়া নাম। মামলাগুলো পুলিশ, র?্যাব কিংবা আনসার দেয়নি। জনগণই দিচ্ছে। তদন্তে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।’
ভুয়া মামলায় কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সরকার সে বিষয়ে সজাগ বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। মামলার আসামি হওয়া এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্কে আমরা টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছি বিভিন্ন মিডিয়ায়। সত্যিকারের মামলা হলে আপনাকে (প্রশ্নকারী সাংবাদিক) ধরার কথা।’
এ সময় পাল্টা প্রশ্ন করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এরকম (মামলা) যাদের আছে তাদের কারো কি ধরা হইছে? একচুয়্যাল মামলা হলে আপনারেতো ধরার কথা, আপনাকেতো ধরে নাই। এই কেইসতো আমার পুলিশ, র্যাব, আর্মি, আনসার দেয় নাই। এটাতো আপনাদের ভেতর থেকে কেউ শত্রুতা করে দিচ্ছে।’
হয়রানিমূলক মামলা ঠেকাতে আইন উপদেষ্টার নতুন চিন্তা
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় হয়রানিমূলক মামলার প্রতিকারে নতুন চিন্তার কথা জানালেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার দপ্তরের সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ডিসি, এসপি, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কিনা, সেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই কমিটি মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) করার আগে যাচাই করে দেবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, হয়রানিমূলক মামলা নিয়ে তারাও বিব্রত। এ নিয়ে নানা রকম প্রতিকার ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা হয়েছে। একবার সিদ্ধান্ত হলো ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে পুলিশকে একটি ক্ষমতা দেয়া হোক যে তারা এফআইআর করার আগে একটি প্রাথমিক তদন্ত করবেন। তখন বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা দেয়া হলে পুলিশকে দ্বিগুণ স্বেচ্ছাচারিতা করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এখন যেটা চিন্তা করা হচ্ছে, সেটা হলো পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা তাদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কিনা। এ ধরনের একটা রূপরেখা তৈরি করা যায় কিনা যে মামলার এফআইআর করার আগে এই কমিটি যাচাই করে দেবে।
এটা কেবল চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই নিয়ে দু-একজন আইনবিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটা দিক।
আসিফ নজরুল বলেন, আজ যাঁরা হয়রানিমূলক, মিথ্যা ও বাণিজ্যমূলক মামলা করছেন, কাউকে কাউকে নাকি হুমকিও দেয়া হচ্ছে যে টাকা না দিলে মামলা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আপনারা (হয়রানিমূলক মামলাকারী) মনে রাখেন, আমি যদি এই মন্ত্রণালয়ে থাকি, আপনাদের কীভাবে শাস্তি দেয়া যায়, সেটির আইন খুঁজে বের করব।’
এ ধরনের মামলা নিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি মামলা করেন, তাহলে তাকে মানা করা যায় না উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেছিলেন, যাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, দ্রুত তদন্ত করে তাদের নাম বাদ দিতে বলা হয়েছে। পুলিশকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছে।