alt

মতামত » সম্পাদকীয়

ক্ষুধার মহামারী সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে

: রোববার, ১১ জুলাই ২০২১

বিশ্বজুড়ে প্রতি মিনিটে ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে ১১ জন, আর কোভিড-১৯ রোগে মারা যাচ্ছে সাতজন। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে এই তথ্য। সংস্থাটি বলছে, বিশ্বে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে ‘দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে’ যে পরিমাণ মানুষ বসবাস করেছে, ২০২০ সালে সেই সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বেড়েছে।

এক বিবৃতিতে অক্সফাম বলেছে, মহামারীর শুরুতেই বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, ‘করোনার আগেই ক্ষুধা আমাদের মেরে ফেলবে।’ এখন দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯এর চেয়ে দুর্ভিক্ষেই বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। গত বছর ডিসেম্বরে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লি­উএফপি) সতর্ক করে বলেছিল, করোনাভাইরাস মহামারীর চেয়ে ক্ষুধার মহামারী ভয়ংকর হতে পারে।

বর্তমানে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের অবসান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনের নিশ্চয়তা হচ্ছে বিশ্বের মানুষের প্রধান চাওয়া। জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ নিয়ে সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও বৈশ্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসস পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা গেছে এই তথ্য।

বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের প্রধান চাওয়া কী সেটা নিয়ে কোন জরিপ হয়নি। তবে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মুখে অনেকেই জীবিকার সংস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা বেশি।

করোনার প্রভাবে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৮ সালে দেশে দারিদ্র্যে হার ছিল ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপে জানা গেছে, দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ।

একদিকে করোনা মহামারী, অন্যদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা। দেশে খাদ্য সংকট না থাকলেও ‘লকডাউন’, ‘শাটডাউনে’ কাজ হারানো অসংখ্য মানুষ ক্ষুধার মহামারীর কবলে পড়েছে। বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। করোনায় তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ চলতে থাকলে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। আয় নেই, কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। ভাইরাসের চেয়ে ক্ষুধা সামলানোই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জুটানোর জন্য অনেকেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পথে নেমে জেল-জরিমানার শিকার হয়েছে। সরকার যে ত্রাণ বা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে তা যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি বা সবার কাছে পৌঁছেনি।

মহামারী নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষদের কথাও ভাবতে হবে। করোনা তাদের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে যে বড় অভিঘাত সৃষ্টি করেছে, তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কয়েক কেজি চাল বা কিছু টাকা দিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে মহামারী থেকে রক্ষা পেলেও ক্ষুধার হাত থেকে অনেক মানুষকে হয়তো রক্ষা করা যাবে না।

বাল্যবিয়ে: সংকট এখনো গভীর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়: সব প্রশ্নের কি মীমাংসা হলো?

কুষ্টিয়ায় গাছ কাটার ‘গোপন টেন্ডার’ নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক

ধান কেনায় অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

লালমনিরহাটের বিসিক শিল্পনগরীর দুরবস্থা

তৃণমূলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবস্থা নিন

শ্রীপুরের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে ক্লাস, পদক্ষেপ জরুরি

শিশু ধর্ষণচেষ্টা: সালিসের নামে প্রহসন কাম্য নয়

বিশুদ্ধ পানির প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

সুপেয় পানির জন্য মোরেলগঞ্জের মানুষের অপেক্ষার অবসান হবে কবে

কেন একজন নিরপরাধ মানুষকে কিসের আগুনে পুড়ে মরতে হলো

জেলেদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ সুরাহা করুন

রাজধানীতে প্রকাশ্যে হত্যা: আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

নলবিলা খাল খনন করুন

অগ্নি-নিরাপত্তায় উদাসীনতা কাম্য নয়

কারেন্ট পোকা দমনে কৃষককে সহায়তা দিন

আলুর বাজারে নীরব বিপর্যয়

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

ক্ষুধার মহামারী সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে

রোববার, ১১ জুলাই ২০২১

বিশ্বজুড়ে প্রতি মিনিটে ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে ১১ জন, আর কোভিড-১৯ রোগে মারা যাচ্ছে সাতজন। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে এই তথ্য। সংস্থাটি বলছে, বিশ্বে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে ‘দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে’ যে পরিমাণ মানুষ বসবাস করেছে, ২০২০ সালে সেই সংখ্যা ছয় গুণ বেড়েছে। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বেড়েছে।

এক বিবৃতিতে অক্সফাম বলেছে, মহামারীর শুরুতেই বিশ্বজুড়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, ‘করোনার আগেই ক্ষুধা আমাদের মেরে ফেলবে।’ এখন দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯এর চেয়ে দুর্ভিক্ষেই বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। গত বছর ডিসেম্বরে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লি­উএফপি) সতর্ক করে বলেছিল, করোনাভাইরাস মহামারীর চেয়ে ক্ষুধার মহামারী ভয়ংকর হতে পারে।

বর্তমানে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের অবসান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনের নিশ্চয়তা হচ্ছে বিশ্বের মানুষের প্রধান চাওয়া। জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ নিয়ে সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও বৈশ্বিক জরিপ প্রতিষ্ঠান ইপসস পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা গেছে এই তথ্য।

বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের প্রধান চাওয়া কী সেটা নিয়ে কোন জরিপ হয়নি। তবে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের মুখে অনেকেই জীবিকার সংস্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা বেশি।

করোনার প্রভাবে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। ২০১৮ সালে দেশে দারিদ্র্যে হার ছিল ২১ দশমিক ৬ শতাংশ। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) এক জরিপে জানা গেছে, দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ।

একদিকে করোনা মহামারী, অন্যদিকে ক্ষুধার যন্ত্রণা। দেশে খাদ্য সংকট না থাকলেও ‘লকডাউন’, ‘শাটডাউনে’ কাজ হারানো অসংখ্য মানুষ ক্ষুধার মহামারীর কবলে পড়েছে। বাংলাদেশে শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। করোনায় তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ চলতে থাকলে তাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে। আয় নেই, কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। ভাইরাসের চেয়ে ক্ষুধা সামলানোই নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জুটানোর জন্য অনেকেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পথে নেমে জেল-জরিমানার শিকার হয়েছে। সরকার যে ত্রাণ বা অর্থ সহায়তা দিচ্ছে তা যথেষ্ট প্রমাণিত হয়নি বা সবার কাছে পৌঁছেনি।

মহামারী নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ‘দিন আনে দিন খায়’ মানুষদের কথাও ভাবতে হবে। করোনা তাদের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে যে বড় অভিঘাত সৃষ্টি করেছে, তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কয়েক কেজি চাল বা কিছু টাকা দিয়ে তাদের সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে মহামারী থেকে রক্ষা পেলেও ক্ষুধার হাত থেকে অনেক মানুষকে হয়তো রক্ষা করা যাবে না।

back to top