alt

opinion » editorial

করোনাকালের বিষণ্ণতা: চাই সচেতনতা

: রোববার, ১১ জুলাই ২০২১

করোনাকালে দেশের ৬১ শতাংশ তরুণ বিষণ্ণতায় ভুগছে। তাদের মধ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশই আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছে। আঁচল ফাউন্ডেশন নামক একটি সংগঠনের ‘আত্মহত্যা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তরুণদের ভাবনা’ শীর্ষক এক জরিপ প্রতিবেদনের ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের ১ থেকে ১৫ জুন অনলাইনের মাধ্যমে চালানো এ জরিপে ১৮-৩৫ বছর বয়সী দুই হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী অংশ নেয়।

তরুণ-তরুণীদের বিষণ্ণতার জন্য কোন একক কারণ দায়ী নয়। নানা কারণেই তারা বিষণ্ণ হয়ে পড়তে পারে। মহামারীকালে করোনা তাদের বিষণ্ণতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনির্ধারিত সেশনজটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ফলে তাদের অনেকেই ক্যরিয়ার নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে এবং কাজে মনযোগ হারিয়েছে। কোন কাজ না থাকায় বা খন্ডকালীন কাজ হারিয়ে অনেকে পড়েছে আর্থিক সমস্যায়। আবার পরিবার থেকে বিয়ের চাপ দেয়া হচ্ছে কাউকে। তাছাড়া এ সময় মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তিও মানসিক সমস্যার বড় একটি কারণ।

সমস্যা হচ্ছে বিষণ্ণতা থেকে বের হওয়ার পথই জানে না অনেক তরুণ-তরুণী। এমনকি তারা যে বিষণ্ণ এটাও বুঝে উঠতে পারে না অনেক সময়। বিষণ্ণতা এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা, এটার চিকিৎসা না করালে যে কেউ নিজেদের শারীরিক ক্ষতিসহ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে, সে সম্পর্কেও খুব কম মানুষের স্বচ্ছ ধারণা আছে। জরিপের তথ্যানুযায়ী, মানসিক চাপে পড়ে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ-তরুণী শারীরিক বা অন্যান্য উপায়ে নিজেদের ক্ষতি করেছে। মনরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের মাধ্যমে এ ধরনের মানসিক রোগ থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব হলেও মাত্র সাড়ে আট শতাংশ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়।

শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মনেরও সুস্থতার প্রয়োজন আছে। একটু সচেতন হলে বিষণ্ণতার মতো মানসিক রোগকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। তখন চিকিৎসার পথটাও সহজ হয়। মানসিক সুস্থতার জন্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান যে সুপারিশ করছে সেখানেও বিষয়টি উঠে এসেছে। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। পরিবারের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা সবচেয়ে জরুরি। তরুণ-তরুণীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। বিষণ্ণতা যে একটি মানসিক রোগ এবং এই রোগের কারণে তরুণ-তরুণীরা আত্মহত্যার মতো ধ্বংসাত্মক পথও বেছে নিতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন হতে হবে, যেহেতু বিষণ্ণতায় ভোগা তরুণ-তরুণীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। তাই তাদের গঠনমূলক কাজে উৎসাহ ও সুযোগ দিতে হবে।

দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনায় হাসপাতাল ও চিকিৎসক খুবই কম। তাছাড়া হাসপাতালগুলো রাজধানী বা বড় শহরকেন্দ্রিক। মানসিক চিকিৎসা হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সব শহরে বিশেষ করে, সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেকটি হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসার জন্য স্বতন্ত্র বিভাগ চালু করা যায় কিনা সেটা বিবেচনা করে দেখতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার প্রভাব বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ওপর ভিন্ন ভিন্নভাবে পড়ছে। করোনা মহামারী শুধু তরুণদের নয়- চিকিৎসক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, বিচারক, রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহিণী, শিক্ষকসহ সব পেশা-শ্রেণীর মানুষের ওপর গভীর মানসিক চাপ তৈরি করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মতে, মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা, উন্নতি ও যত্নে গোটা সমাজকে যুক্ত করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মানসিক খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

করোনাকালের বিষণ্ণতা: চাই সচেতনতা

রোববার, ১১ জুলাই ২০২১

করোনাকালে দেশের ৬১ শতাংশ তরুণ বিষণ্ণতায় ভুগছে। তাদের মধ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশই আত্মহত্যা করার কথা ভেবেছে। আঁচল ফাউন্ডেশন নামক একটি সংগঠনের ‘আত্মহত্যা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তরুণদের ভাবনা’ শীর্ষক এক জরিপ প্রতিবেদনের ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। চলতি বছরের ১ থেকে ১৫ জুন অনলাইনের মাধ্যমে চালানো এ জরিপে ১৮-৩৫ বছর বয়সী দুই হাজারেরও বেশি তরুণ-তরুণী অংশ নেয়।

তরুণ-তরুণীদের বিষণ্ণতার জন্য কোন একক কারণ দায়ী নয়। নানা কারণেই তারা বিষণ্ণ হয়ে পড়তে পারে। মহামারীকালে করোনা তাদের বিষণ্ণতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনির্ধারিত সেশনজটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ফলে তাদের অনেকেই ক্যরিয়ার নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে এবং কাজে মনযোগ হারিয়েছে। কোন কাজ না থাকায় বা খন্ডকালীন কাজ হারিয়ে অনেকে পড়েছে আর্থিক সমস্যায়। আবার পরিবার থেকে বিয়ের চাপ দেয়া হচ্ছে কাউকে। তাছাড়া এ সময় মোবাইল ফোনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তিও মানসিক সমস্যার বড় একটি কারণ।

সমস্যা হচ্ছে বিষণ্ণতা থেকে বের হওয়ার পথই জানে না অনেক তরুণ-তরুণী। এমনকি তারা যে বিষণ্ণ এটাও বুঝে উঠতে পারে না অনেক সময়। বিষণ্ণতা এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা, এটার চিকিৎসা না করালে যে কেউ নিজেদের শারীরিক ক্ষতিসহ আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে পারে, সে সম্পর্কেও খুব কম মানুষের স্বচ্ছ ধারণা আছে। জরিপের তথ্যানুযায়ী, মানসিক চাপে পড়ে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ-তরুণী শারীরিক বা অন্যান্য উপায়ে নিজেদের ক্ষতি করেছে। মনরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের মাধ্যমে এ ধরনের মানসিক রোগ থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব হলেও মাত্র সাড়ে আট শতাংশ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়।

শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মনেরও সুস্থতার প্রয়োজন আছে। একটু সচেতন হলে বিষণ্ণতার মতো মানসিক রোগকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। তখন চিকিৎসার পথটাও সহজ হয়। মানসিক সুস্থতার জন্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান যে সুপারিশ করছে সেখানেও বিষয়টি উঠে এসেছে। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। পরিবারের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা সবচেয়ে জরুরি। তরুণ-তরুণীর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। বিষণ্ণতা যে একটি মানসিক রোগ এবং এই রোগের কারণে তরুণ-তরুণীরা আত্মহত্যার মতো ধ্বংসাত্মক পথও বেছে নিতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন হতে হবে, যেহেতু বিষণ্ণতায় ভোগা তরুণ-তরুণীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী। তাই তাদের গঠনমূলক কাজে উৎসাহ ও সুযোগ দিতে হবে।

দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনায় হাসপাতাল ও চিকিৎসক খুবই কম। তাছাড়া হাসপাতালগুলো রাজধানী বা বড় শহরকেন্দ্রিক। মানসিক চিকিৎসা হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াতে হবে। সব শহরে বিশেষ করে, সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেকটি হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসার জন্য স্বতন্ত্র বিভাগ চালু করা যায় কিনা সেটা বিবেচনা করে দেখতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার প্রভাব বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের ওপর ভিন্ন ভিন্নভাবে পড়ছে। করোনা মহামারী শুধু তরুণদের নয়- চিকিৎসক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, বিচারক, রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহিণী, শিক্ষকসহ সব পেশা-শ্রেণীর মানুষের ওপর গভীর মানসিক চাপ তৈরি করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মতে, মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষা, উন্নতি ও যত্নে গোটা সমাজকে যুক্ত করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা মানসিক খাতে বরাদ্দ বাড়াতে বলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

back to top