alt

মতামত » সম্পাদকীয়

বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ইউনিসেফের আহ্বান

: মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পার হয়েছে। মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে অসংখ্য শিশুর পড়াশোনা। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশের বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক। গতকাল সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।

দেশে করোনা সংক্রমণ এখন চরম পর্যায়ে। প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবা যায় না। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি যখন কম ভয়াবহ ছিল, এমন কি করোনা যখন নিয়ন্ত্রণে ছিল তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কার্যত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে প্রায় দুই মাস করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল এবং প্রায় সব দেশের বিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুযায়ী পরপর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরে নেয়া হয়। অথচ তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবই খোলা ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেত। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে তখনও করোনা ছড়ায়নি।

গত এক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কার্যকর কোন আলোচনাই হয়নি। করোনার অজুহাতে পুরো সময় নীরব থেকেছে সরকার। এদিকে দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আছে। প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘিœত হচ্ছে। তাদের একটা অংশের পড়াশোনা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের পর বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার কারণে প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার বা শিক্ষণঘাটতির ঝুঁকিতে আছে। ইউনিসেফের মতে, শিশুদের পড়াশোনা ও সার্বিক সুস্থতার ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ রাখার পরিণতি ধ্বংসাত্মক। সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা এবং যারা দূরশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় না, তারা আর কখনও ক্লাসরুমে ফিরতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি বাল্যবিয়ে বা শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে এসব শিশু। যার বাইরে বাংলাদেশের শিশুরাও নয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আদতে সরকারের পরিকল্পনা কী সেটা একটা প্রশ্ন। এ নিয়ে কখনই ধোঁয়াশা কাটেনি। টানা প্রায় দুই মাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকার সময়ও স্কুল-কলেজ খোলা হয়নি। তাহলে কি করোনা শূন্যের কোটায় নামার পর সেগুলো খোলা হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বহু আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পৃথিবী থেকে করোনা সহসাই বিদায় নিচ্ছে না। বরং এই ভাইরাসের সঙ্গেই আগামীতে বিশ্ববাসীকে বসবাস করতে হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে টিকার আওতায় এনে তারপর স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা কতটা বাস্তবসম্মত সেই প্রশ্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে এখনও বিশ্বের বিজ্ঞানীরা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।

দেশে করোনা সংক্রমণ যে পর্যায়ে আছে তাতে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবা যায় না। তবে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যায় যে, করোনার সংক্রমণের গতি এক সময় ধীর হবে, করোনা শনাক্তের হার নিয়ন্ত্রণে আসবে। তাছাড়া টিকাও আসছে। শুরু হয়েছে গণটিকাদান। কাজেই আগামীতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে কিনা সে বিষয়ে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই না, বাংলাদেশ বিশ্বের সেইসব গুটিকয়েক দেশের একটি হয়ে থাকুক যেসব দেশ মহামারীকালে বছরাধিককাল জুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে।

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে ইউনিসেফের আহ্বান

মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১

বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পার হয়েছে। মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে অসংখ্য শিশুর পড়াশোনা। এ অবস্থায় বিভিন্ন দেশের বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক। গতকাল সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।

দেশে করোনা সংক্রমণ এখন চরম পর্যায়ে। প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবা যায় না। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি যখন কম ভয়াবহ ছিল, এমন কি করোনা যখন নিয়ন্ত্রণে ছিল তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে কার্যত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এ বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে প্রায় দুই মাস করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে ছিল। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল এবং প্রায় সব দেশের বিজ্ঞানীদের পরামর্শ অনুযায়ী পরপর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে করোনা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরে নেয়া হয়। অথচ তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সবই খোলা ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যেত। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে তখনও করোনা ছড়ায়নি।

গত এক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কার্যকর কোন আলোচনাই হয়নি। করোনার অজুহাতে পুরো সময় নীরব থেকেছে সরকার। এদিকে দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে আছে। প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘিœত হচ্ছে। তাদের একটা অংশের পড়াশোনা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা সংক্রমণের পর বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার কারণে প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার বা শিক্ষণঘাটতির ঝুঁকিতে আছে। ইউনিসেফের মতে, শিশুদের পড়াশোনা ও সার্বিক সুস্থতার ক্ষেত্রে স্কুল বন্ধ রাখার পরিণতি ধ্বংসাত্মক। সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা এবং যারা দূরশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায় না, তারা আর কখনও ক্লাসরুমে ফিরতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনকি বাল্যবিয়ে বা শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত হওয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে রয়েছে এসব শিশু। যার বাইরে বাংলাদেশের শিশুরাও নয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আদতে সরকারের পরিকল্পনা কী সেটা একটা প্রশ্ন। এ নিয়ে কখনই ধোঁয়াশা কাটেনি। টানা প্রায় দুই মাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে থাকার সময়ও স্কুল-কলেজ খোলা হয়নি। তাহলে কি করোনা শূন্যের কোটায় নামার পর সেগুলো খোলা হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বহু আগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পৃথিবী থেকে করোনা সহসাই বিদায় নিচ্ছে না। বরং এই ভাইরাসের সঙ্গেই আগামীতে বিশ্ববাসীকে বসবাস করতে হতে পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে টিকার আওতায় এনে তারপর স্কুল-কলেজ খোলার চিন্তা কতটা বাস্তবসম্মত সেই প্রশ্ন রয়েছে। এক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার বিষয়ে এখনও বিশ্বের বিজ্ঞানীরা কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি।

দেশে করোনা সংক্রমণ যে পর্যায়ে আছে তাতে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ভাবা যায় না। তবে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে ধারণা করা যায় যে, করোনার সংক্রমণের গতি এক সময় ধীর হবে, করোনা শনাক্তের হার নিয়ন্ত্রণে আসবে। তাছাড়া টিকাও আসছে। শুরু হয়েছে গণটিকাদান। কাজেই আগামীতে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে কিনা সে বিষয়ে বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। আমরা চাই না, বাংলাদেশ বিশ্বের সেইসব গুটিকয়েক দেশের একটি হয়ে থাকুক যেসব দেশ মহামারীকালে বছরাধিককাল জুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে।

back to top