alt

মতামত » সম্পাদকীয়

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রসঙ্গে

: মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

বাংলাদেশে পানিতে ডুবে প্রতিবছর বহু শিশু মারা যায়। গত এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পানিতে ডুবে মৃত্যুকে নীরব মহামারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, দেশে এখন শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এটা।

সম্প্রতি গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর নামে একটি এনজিওর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে গত ১৯ মাসে ১ হাজার ৫১২ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৩৩২ জন পানিতে পড়ে আর বাকিদের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন নৌদুর্ঘটনায়। পানিতে পড়ে মৃত্যুর ৭০ শতাংশই শিশু। তবে এটা সম্পূর্ণ চিত্র নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে তারা এই তথ্য দিয়েছে।

দ্য সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশে (সিআইপিআরবি) এবং আইসিডিডিআরবি- এর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন শিশু পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে পানিতে ডুবে আহত হয় অন্তত এক লাখ শিশু, যাদের মধ্যে ১৩ হাজার পঙ্গুত্ববরণ করে।

বাংলাদেশ হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভের সর্বশেষ প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, বাংলাদেশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তিন নম্বর কারণ এই পানিতে ডুবে মৃত্যু।

পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুহার এবং পঙ্গুত্ববরণ করার এ পরিসংখ্যান আমাদের উদ্বিগ্ন করে। দেশে মৃত্যুহার কমাতে সরকার বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকে এসডিজির অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু সেখানে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চার বছর আগে একটি জাতীয় কৌশলের খসড়া করলেও তা চূড়ান্ত হয়ে আলোর মুখ দেখেনি।

তবে আশার কথা হলো, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৬টি দুর্যোগপ্রবণ জেলা চিহ্নিত করে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের ডে-কেয়ার সেন্টারে রাখা হবে। আর ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের সাঁতার শেখানো হবে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি অনুমোদন হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শিশুদের সঠিক তত্ত্বাবধানে রাখা এবং সাঁতার প্রশিক্ষণের কথা আমরা আগেও বলেছি। বিশেষজ্ঞদের মতে সাঁতার শেখানো গেলে ৯৬ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিলম্ব হলেও সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ করার উদ্যোগ কতটা বাস্তবসম্মত? পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর অধিকাংশই ঘটে গ্রামাঞ্চলে বা প্রত্যন্ত এলাকায়। সেই এলাকাগুলতে কী এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ করা হবে? আর করা হলেও তার ব্যবস্থাপনা কী হবে? আর অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টারে’ দিনের একটা সময় রাখবার জন্য কীভাবে উদ্বুদ্ধ করা হবে?

আমরা আশা করবো, এই প্রশ্নগুলোর নিরসন করেই ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ করা হবে। আর ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো প্রকৃত অর্থে যেখানে করা দরকার সেখানেই যেন করা হয়। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করার কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, কোন অঞ্চলপ্রীতি যেন না হয়।

স্কুল, ওয়ার্ড বা এলাকাভিত্তিক সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয়া সবচেয়ে জরুরি। এই কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষকদের দিয়ে শিশুদের সাঁতার শেখানোর চিন্তা করা যেতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাছাড়া অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। অভিভাবকরা সচেতন হলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কাজ সহজ হবে।

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রসঙ্গে

মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই ২০২১

বাংলাদেশে পানিতে ডুবে প্রতিবছর বহু শিশু মারা যায়। গত এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ পানিতে ডুবে মৃত্যুকে নীরব মহামারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, দেশে এখন শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এটা।

সম্প্রতি গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর নামে একটি এনজিওর এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশে গত ১৯ মাসে ১ হাজার ৫১২ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৩৩২ জন পানিতে পড়ে আর বাকিদের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন নৌদুর্ঘটনায়। পানিতে পড়ে মৃত্যুর ৭০ শতাংশই শিশু। তবে এটা সম্পূর্ণ চিত্র নয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনের উপর নির্ভর করে তারা এই তথ্য দিয়েছে।

দ্য সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশে (সিআইপিআরবি) এবং আইসিডিডিআরবি- এর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। সে হিসাবে প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন শিশু পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে পানিতে ডুবে আহত হয় অন্তত এক লাখ শিশু, যাদের মধ্যে ১৩ হাজার পঙ্গুত্ববরণ করে।

বাংলাদেশ হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভের সর্বশেষ প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, বাংলাদেশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তিন নম্বর কারণ এই পানিতে ডুবে মৃত্যু।

পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুহার এবং পঙ্গুত্ববরণ করার এ পরিসংখ্যান আমাদের উদ্বিগ্ন করে। দেশে মৃত্যুহার কমাতে সরকার বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকে এসডিজির অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিন্তু সেখানে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ করার বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চার বছর আগে একটি জাতীয় কৌশলের খসড়া করলেও তা চূড়ান্ত হয়ে আলোর মুখ দেখেনি।

তবে আশার কথা হলো, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১৬টি দুর্যোগপ্রবণ জেলা চিহ্নিত করে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের ডে-কেয়ার সেন্টারে রাখা হবে। আর ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের সাঁতার শেখানো হবে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে প্রকল্পটি অনুমোদন হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শিশুদের সঠিক তত্ত্বাবধানে রাখা এবং সাঁতার প্রশিক্ষণের কথা আমরা আগেও বলেছি। বিশেষজ্ঞদের মতে সাঁতার শেখানো গেলে ৯৬ শতাংশ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিলম্ব হলেও সরকার এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ করার উদ্যোগ কতটা বাস্তবসম্মত? পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর অধিকাংশই ঘটে গ্রামাঞ্চলে বা প্রত্যন্ত এলাকায়। সেই এলাকাগুলতে কী এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ করা হবে? আর করা হলেও তার ব্যবস্থাপনা কী হবে? আর অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের এই ‘ডে-কেয়ার সেন্টারে’ দিনের একটা সময় রাখবার জন্য কীভাবে উদ্বুদ্ধ করা হবে?

আমরা আশা করবো, এই প্রশ্নগুলোর নিরসন করেই ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ করা হবে। আর ডে-কেয়ার সেন্টারগুলো প্রকৃত অর্থে যেখানে করা দরকার সেখানেই যেন করা হয়। দুর্যোগপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করার কাজ যেন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, কোন অঞ্চলপ্রীতি যেন না হয়।

স্কুল, ওয়ার্ড বা এলাকাভিত্তিক সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয়া সবচেয়ে জরুরি। এই কার্যক্রমে স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষকদের দিয়ে শিশুদের সাঁতার শেখানোর চিন্তা করা যেতে পারে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এতে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারেন। তাছাড়া অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। অভিভাবকরা সচেতন হলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কাজ সহজ হবে।

back to top