alt

opinion » editorial

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা

: বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১

ডেঙ্গু নিয়ে এতদিন যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের ১৬ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৮ জন। এরপর মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৮৭ জন। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৮৯ জন। গতকাল ২৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৪৫ জন। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত তিনজন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটা সরকারি হিসাব, বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালে পরিস্থিতির সঙ্গে এ বছরের ডেঙ্গু সংক্রমণের মিল রয়েছে। সে বছর মে মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৯৩ জন, পরের মাসে হয়েছিল ৮৮৪ জন। এরপর জুলাইতে আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন। সেবার মোট এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছিল, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। আর মারা গিয়েছিল ১৭৯ জন।

ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে এবার যদি সেরকম পরিস্থিতি হয়, তাহলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর নজিরবিহীন চাপ পড়বে। মহামারী করোনা সংক্রমণের প্রভাবে দেশের স্বাস্থ্য খাত এমনিতেই চাপে পড়েছে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর এখন এটি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।

করোনার সঙ্গে সঙ্গে যদি ডেঙ্গুও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে। দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ সেই চাপ সামলাতে পারবে কিনা তা নিয়ে গভীর সংশয় আছে। চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গ আছে যেগুলো শুরুর দিকে ডেঙ্গুজ্বর এবং কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে একই রকম। তাই একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে এই দুটো রোগেই আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎকদের এই আশঙ্কা যদি সত্যি হয় তাহলে দেশে জটিল রোগীর সংখ্যা বাড়বে। তখন আইসিইউর মতো জরুরি স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন আরও বেশি অনুভূত হবে। সেই প্রয়োজন মেটানো না গেলে আরও বেশি মানুষ প্রাণ সংশয়ের মধ্যে পড়বে।

ডেঙ্গুজ্বর রোধ করার একমাত্র উপায় এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) দশ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। এ অভিযানে মশক নিধনসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে। উভয় সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত মশা নিধন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। লোক দেখানো নিধন বা অভিযান চালালেই শুধু হবে না। কারণ মশা নিধন কার্যক্রম ঠিকমতো না চললে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

তবে এডিস মশার বংশবিস্তারের যে ধরন তাতে সিটি করপোরেশনের চেয়ে নগরের বাসিন্দাদের দায়িত্ব বেশি। বৃষ্টিপাতের কারণে ঘরের ভেতরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই এ মশা জন্মাতে পারে। ঘরের ভেতরে খালি পাত্রে জমে থাকা পানি এবং ঘরের বাইরে ডাবের খোসা, নির্মাণাধীন ভবনে তিন থেকে পাঁচ দিনের জমা পানিতে এ মশা বংশবিস্তার করে। এজন্য নগরবাসীর দায়িত্ব অনেক। তাদের সতর্কতা ও সচেতনা জরুরি। এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংসে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করব, সিটি করপোরেশন ও নগরবাসী সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

tab

opinion » editorial

ডেঙ্গু প্রতিরোধে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা

বুধবার, ২৮ জুলাই ২০২১

ডেঙ্গু নিয়ে এতদিন যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, সেটা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের ১৬ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৮ জন। এরপর মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৮৮৭ জন। সে হিসাবে গড়ে প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৮৯ জন। গতকাল ২৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৯৪৫ জন। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত তিনজন মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটা সরকারি হিসাব, বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৯ সালে পরিস্থিতির সঙ্গে এ বছরের ডেঙ্গু সংক্রমণের মিল রয়েছে। সে বছর মে মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৯৩ জন, পরের মাসে হয়েছিল ৮৮৪ জন। এরপর জুলাইতে আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৫৩ জন। সেবার মোট এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছিল, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। আর মারা গিয়েছিল ১৭৯ জন।

ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে এবার যদি সেরকম পরিস্থিতি হয়, তাহলে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর নজিরবিহীন চাপ পড়বে। মহামারী করোনা সংক্রমণের প্রভাবে দেশের স্বাস্থ্য খাত এমনিতেই চাপে পড়েছে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর এখন এটি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।

করোনার সঙ্গে সঙ্গে যদি ডেঙ্গুও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে। দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ সেই চাপ সামলাতে পারবে কিনা তা নিয়ে গভীর সংশয় আছে। চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গ আছে যেগুলো শুরুর দিকে ডেঙ্গুজ্বর এবং কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে একই রকম। তাই একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে এই দুটো রোগেই আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎকদের এই আশঙ্কা যদি সত্যি হয় তাহলে দেশে জটিল রোগীর সংখ্যা বাড়বে। তখন আইসিইউর মতো জরুরি স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজন আরও বেশি অনুভূত হবে। সেই প্রয়োজন মেটানো না গেলে আরও বেশি মানুষ প্রাণ সংশয়ের মধ্যে পড়বে।

ডেঙ্গুজ্বর রোধ করার একমাত্র উপায় এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। সম্প্রতি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) দশ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু করেছে। এ অভিযানে মশক নিধনসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে। উভয় সিটি করপোরেশনকে নিয়মিত মশা নিধন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। লোক দেখানো নিধন বা অভিযান চালালেই শুধু হবে না। কারণ মশা নিধন কার্যক্রম ঠিকমতো না চললে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

তবে এডিস মশার বংশবিস্তারের যে ধরন তাতে সিটি করপোরেশনের চেয়ে নগরের বাসিন্দাদের দায়িত্ব বেশি। বৃষ্টিপাতের কারণে ঘরের ভেতরে ও বাইরে দুই জায়গায়ই এ মশা জন্মাতে পারে। ঘরের ভেতরে খালি পাত্রে জমে থাকা পানি এবং ঘরের বাইরে ডাবের খোসা, নির্মাণাধীন ভবনে তিন থেকে পাঁচ দিনের জমা পানিতে এ মশা বংশবিস্তার করে। এজন্য নগরবাসীর দায়িত্ব অনেক। তাদের সতর্কতা ও সচেতনা জরুরি। এডিস মশার আবাসস্থল ধ্বংসে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করব, সিটি করপোরেশন ও নগরবাসী সম্মিলিতভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

back to top