alt

opinion » editorial

‘প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে’ বাঁচাতে হবে

: সোমবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) এক জরিপে দেখা গেছে, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে পরিযায়ীসহ মোট শকুনের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। ২০১২ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৫৫০টিতে এবং ২০১৬ সালে ২৪০টিতে। আইইউসিএন ও বন বিভাগের ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন শকুন আছে মাত্র ২৬০টি। শকুন সংরক্ষণ এবং বংশবৃদ্ধির তাগিদ থেকে গোটা বিশ্বে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। গত শনিবার ছিল সেই দিন।

একসময় শকুনের দেখা মিলত সারাদেশে। এখন বৃহত্তর সিলেট এবং সুন্দরবন অঞ্চল ছাড়া আর কোথাও এর দেখা মেলে না। শকুনের প্রধান খাদ্য হচ্ছে মৃত পশু। এজন্য একে বলা হয়- ‘প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী’। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জোটের মতে শকুন প্রায় ৪০ প্রকার জীবাণু ধ্বংস করতে পারে।

প্রকৃতির এমন উপকারী এক পাখি আজ বিপন্ন প্রায়। অবশ্য শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো ভারতীয় উপমহাদেশেই পাখিটির অস্তিত্ব বিপন্ন। আইইউসিএনের মতে উপমহাদেশে এক সময় ৪০ লাখ শকুন ছিল। সেই সংখ্যা এখন নেমেছে মাত্র ১১ হাজারে!

আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছ, পশু চিকিৎসায় ক্ষতিকর ব্যথানাশক ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন জাতীয় ওষুধের প্রয়োগই শকুন ধ্বংসের মূল কারণ। এ জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর পর পশুর কিডনি বিকল হয়ে মারা যায়। মৃত পশুর মাংস খেলে শকুন মারা যায়। আশার কথা হচ্ছে, সরকার শকুন রক্ষার তাগিদে ইতোমধ্যেই ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন জাতীয় ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

আধুনিকায়ন ও নগরায়নের ফলে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে, বন ধ্বংস হচ্ছে। কীটনাশক-সারের ব্যবহারের ফলে পানি দূষণ, বনাঞ্চল উজাড়, শতবর্ষী ও বড় গাছ কেটে ফেলায় বাসস্থান সংকট, খাদ্য সংকট ও প্রজননের ব্যাঘাত ঘটার ফলে শকুন কমে যাচ্ছে। এখন বসবাস করার মতো গাছ নেই, খাওয়ার মতো খাদ্য নেই। শকুন বিপন্ন হওয়ার দায় মানুষ এড়াতে পারে না।

প্রাণ-প্রকৃতি থেকে একটি প্রাণীও যদি বিলুপ্ত হয়ে যায় এক সময় তার চরম মূল্য দিতে হবে। শকুনের অস্তিত্ব রক্ষায় উন্মুক্ত জলাভূমি ও পর্যাপ্ত খাবারের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। প্রাচীন ও উঁচু গাছপালা সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারি খাল, নালাসহ বিভিন্ন বনাঞ্চলে শকুনের বাসযোগ্য গাছ রোপণ করতে হবে। বিপন্ন শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা করাও জরুরি। বন বিভাগ ও আইইউসিএনের যৌথ উদ্যোগে দিনাজপুরের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে গড়ে তোলা হয়েছে শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র। আমরা চাই, দেশে এ ধরনের আরও উদ্ধার কেন্দ্র গড়ে উঠুক।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

‘প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে’ বাঁচাতে হবে

সোমবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১

বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) এক জরিপে দেখা গেছে, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে পরিযায়ীসহ মোট শকুনের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। ২০১২ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৫৫০টিতে এবং ২০১৬ সালে ২৪০টিতে। আইইউসিএন ও বন বিভাগের ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন শকুন আছে মাত্র ২৬০টি। শকুন সংরক্ষণ এবং বংশবৃদ্ধির তাগিদ থেকে গোটা বিশ্বে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। গত শনিবার ছিল সেই দিন।

একসময় শকুনের দেখা মিলত সারাদেশে। এখন বৃহত্তর সিলেট এবং সুন্দরবন অঞ্চল ছাড়া আর কোথাও এর দেখা মেলে না। শকুনের প্রধান খাদ্য হচ্ছে মৃত পশু। এজন্য একে বলা হয়- ‘প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী’। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জোটের মতে শকুন প্রায় ৪০ প্রকার জীবাণু ধ্বংস করতে পারে।

প্রকৃতির এমন উপকারী এক পাখি আজ বিপন্ন প্রায়। অবশ্য শুধু বাংলাদেশে নয়, পুরো ভারতীয় উপমহাদেশেই পাখিটির অস্তিত্ব বিপন্ন। আইইউসিএনের মতে উপমহাদেশে এক সময় ৪০ লাখ শকুন ছিল। সেই সংখ্যা এখন নেমেছে মাত্র ১১ হাজারে!

আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছ, পশু চিকিৎসায় ক্ষতিকর ব্যথানাশক ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন জাতীয় ওষুধের প্রয়োগই শকুন ধ্বংসের মূল কারণ। এ জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর পর পশুর কিডনি বিকল হয়ে মারা যায়। মৃত পশুর মাংস খেলে শকুন মারা যায়। আশার কথা হচ্ছে, সরকার শকুন রক্ষার তাগিদে ইতোমধ্যেই ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন জাতীয় ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।

আধুনিকায়ন ও নগরায়নের ফলে পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে, বন ধ্বংস হচ্ছে। কীটনাশক-সারের ব্যবহারের ফলে পানি দূষণ, বনাঞ্চল উজাড়, শতবর্ষী ও বড় গাছ কেটে ফেলায় বাসস্থান সংকট, খাদ্য সংকট ও প্রজননের ব্যাঘাত ঘটার ফলে শকুন কমে যাচ্ছে। এখন বসবাস করার মতো গাছ নেই, খাওয়ার মতো খাদ্য নেই। শকুন বিপন্ন হওয়ার দায় মানুষ এড়াতে পারে না।

প্রাণ-প্রকৃতি থেকে একটি প্রাণীও যদি বিলুপ্ত হয়ে যায় এক সময় তার চরম মূল্য দিতে হবে। শকুনের অস্তিত্ব রক্ষায় উন্মুক্ত জলাভূমি ও পর্যাপ্ত খাবারের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। প্রাচীন ও উঁচু গাছপালা সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারি খাল, নালাসহ বিভিন্ন বনাঞ্চলে শকুনের বাসযোগ্য গাছ রোপণ করতে হবে। বিপন্ন শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা করাও জরুরি। বন বিভাগ ও আইইউসিএনের যৌথ উদ্যোগে দিনাজপুরের সিংড়া জাতীয় উদ্যানে গড়ে তোলা হয়েছে শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র। আমরা চাই, দেশে এ ধরনের আরও উদ্ধার কেন্দ্র গড়ে উঠুক।

back to top