alt

opinion » editorial

আয়হীন প্রান্তিক নারীদের আয়কর পরিশোধের নোটিশ

: বুধবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবারগুলো দিন এনে দিন খায়। পরিবারের নারী সদস্যদের আয় নেই। কাজেই করের প্রশ্নই আসে না। আর আয়কর কী সেটাও তারা জানেন না। কোনদিন টিআইএন নেননি, নেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। অথচ তাদের নামেই এলো আয়কর পরিশোধের নোটিশ!

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের দিন আনে দিন খায় এমন চারটি পরিবারের চার নারী সদস্যের নামে আয়কর পরিশোধের নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনকে আয়কর পরিশোধ না করার জন্য কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে এবং একজনকে জরিমানা করা হয়েছে। অথচ তাদের নিজস্ব আয় বলতে কিছুই নেই। সবাই স্বামীর উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল। বরিশাল উপ-কর কমিশনারের কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রীয় খামে এসব চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ গতকাল মঙ্গলবার বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, যেসব গৃহিণীর নামে নোটিশ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে দুজনের স্বামীর নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির রেশন কার্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্য দুজন গৃহিণীর স্বামী দিনমজুর, তাদেরও সরকারি- বেসরকারি সহযোগিতা নিয়ে চলতে হয়।

বরিশাল কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার জানিয়েছেন, কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ব্যবহার করে ই-টিআইএন গ্রহণ করলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে আয়করের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এক্ষেত্রে ওই চারজনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে কেউ হয়তো আয়করের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। ফলে তাদের কর রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করলে আইনত ন্যূনতম জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা।

যাদের আয়কর পরিশোধ না করার কারণ দর্শানো এবং জরিমানা করা হয়েছে তারা আয়কর কী সেটাও জানেন না, অফিস কোথায় তাও চেনেন না। তাদের নামে কে বা কারা ভুয়া ই-টিআইএন খুলেছে, অথচ সেই দায় বহন করতে হবে তাদের। এখন কাগজপত্র নিয়ে তাদের আয়কর অফিস খুঁজে বের করতে হবে, কর-কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হবে। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে চা-নাস্তা খেতে খেতে এসব কাগজপত্র দেখবেন। হয়তো দয়াপরবশ হয়ে ভুয়া ই-টিআইএন বাতিলেরও ব্যবস্থা করবেন। প্রশ্ন হচ্ছে- এর মাধ্যমেই কি তারা তাদের দায়-দায়িত্ব শেষ করবেন। নাকি কারা এই ভুয়া ই-টিআইএন খুলল, তাদের উদ্দেশ্য কী, কাদের কারণে প্রান্তিক এই নারীদের এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে- সেটা খুঁজে দেখা হবে।

ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই অনলাইনে ই-টিআইএন খোলা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে- এ সুযোগের অপব্যবহার করে কেউ ভুয়া ই-টিআইএন তৈরি করছে কিনা সেটা কি খতিয়ে দেখা হয়।

বরিশালে ভুয়া টিআইএন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। ভুয়া টিআইএনের কারণে যাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের ভোগান্তি অবিলম্বে দূর করতে হবে। এ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদেরই নিতে হবে। আমরা এমনটা দেখতে চাই না যে, ভুয়া টিআইএনের কারণে পাওয়া আয়কর পরিশোধের নোটিশ নিয়ে প্রান্তিক মানুষ গাঁটের পয়সা খরচ করে আয়কর অফিসের টেবিলে টেবিলে ঘুরে গলদঘর্ম হচ্ছেন।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

আয়হীন প্রান্তিক নারীদের আয়কর পরিশোধের নোটিশ

বুধবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবারগুলো দিন এনে দিন খায়। পরিবারের নারী সদস্যদের আয় নেই। কাজেই করের প্রশ্নই আসে না। আর আয়কর কী সেটাও তারা জানেন না। কোনদিন টিআইএন নেননি, নেয়ার প্রয়োজন পড়েনি। অথচ তাদের নামেই এলো আয়কর পরিশোধের নোটিশ!

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের দিন আনে দিন খায় এমন চারটি পরিবারের চার নারী সদস্যের নামে আয়কর পরিশোধের নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনকে আয়কর পরিশোধ না করার জন্য কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে এবং একজনকে জরিমানা করা হয়েছে। অথচ তাদের নিজস্ব আয় বলতে কিছুই নেই। সবাই স্বামীর উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল। বরিশাল উপ-কর কমিশনারের কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রীয় খামে এসব চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ-এ গতকাল মঙ্গলবার বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, যেসব গৃহিণীর নামে নোটিশ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে দুজনের স্বামীর নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির রেশন কার্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও অন্য দুজন গৃহিণীর স্বামী দিনমজুর, তাদেরও সরকারি- বেসরকারি সহযোগিতা নিয়ে চলতে হয়।

বরিশাল কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার জানিয়েছেন, কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ব্যবহার করে ই-টিআইএন গ্রহণ করলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে আয়করের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এক্ষেত্রে ওই চারজনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে কেউ হয়তো আয়করের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। ফলে তাদের কর রিটার্ন দাখিলের জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করলে আইনত ন্যূনতম জরিমানা পাঁচ হাজার টাকা।

যাদের আয়কর পরিশোধ না করার কারণ দর্শানো এবং জরিমানা করা হয়েছে তারা আয়কর কী সেটাও জানেন না, অফিস কোথায় তাও চেনেন না। তাদের নামে কে বা কারা ভুয়া ই-টিআইএন খুলেছে, অথচ সেই দায় বহন করতে হবে তাদের। এখন কাগজপত্র নিয়ে তাদের আয়কর অফিস খুঁজে বের করতে হবে, কর-কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হবে। আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে চা-নাস্তা খেতে খেতে এসব কাগজপত্র দেখবেন। হয়তো দয়াপরবশ হয়ে ভুয়া ই-টিআইএন বাতিলেরও ব্যবস্থা করবেন। প্রশ্ন হচ্ছে- এর মাধ্যমেই কি তারা তাদের দায়-দায়িত্ব শেষ করবেন। নাকি কারা এই ভুয়া ই-টিআইএন খুলল, তাদের উদ্দেশ্য কী, কাদের কারণে প্রান্তিক এই নারীদের এমন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে- সেটা খুঁজে দেখা হবে।

ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে ঝামেলাহীনভাবে ঘরে বসেই অনলাইনে ই-টিআইএন খোলা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে- এ সুযোগের অপব্যবহার করে কেউ ভুয়া ই-টিআইএন তৈরি করছে কিনা সেটা কি খতিয়ে দেখা হয়।

বরিশালে ভুয়া টিআইএন তৈরির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। ভুয়া টিআইএনের কারণে যাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাদের ভোগান্তি অবিলম্বে দূর করতে হবে। এ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদেরই নিতে হবে। আমরা এমনটা দেখতে চাই না যে, ভুয়া টিআইএনের কারণে পাওয়া আয়কর পরিশোধের নোটিশ নিয়ে প্রান্তিক মানুষ গাঁটের পয়সা খরচ করে আয়কর অফিসের টেবিলে টেবিলে ঘুরে গলদঘর্ম হচ্ছেন।

back to top