alt

opinion » editorial

চাঁদাবাজির দুষ্টচক্র থেকে পরিবহন খাতকে মুক্তি দিন

: বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি নতুন কোন বিষয় নয়। এটা ওপেনসিক্রেট যে, সড়ক-মহাসড়কে পরিবহন নামাতে ও চালাতে হলে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদাবাজির মূলে আছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নামে রীতিমতো রশিদ কেটে চাঁদা আদায় করা হয়। বিভিন্ন পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতি, রাজনৈতিক দল বা সংগঠন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে স্থায়ী রূপ দিয়েছে।

পরিবহন খাতের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সংগঠন চাঁদাবাজির তথ্য জানায়। সম্প্র্রতি যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে, পরিবহন খাত থেকে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার বেশি চাঁদাবাজি হয়। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিবহন খাতে বছরে হাজার কোটি টাকার বেশি চাঁদাবাজি হয়। আর হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে, শুধু মহাসড়কে চলাচলকারী ৫৮ হাজার ৭১৯টি যানবাহন থেকে বছরে ৮৭ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে।

পরিবহনখাতে চাঁদাবাজির শুরু হয় সড়কে গাড়ি নামানোর আগেই। জানা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বাস নামানোর আগেই মালিক সমিতির সদস্য পদ নিতে হয়। এর জন্য দুই থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। এরপর দৈনিক মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নামে এবং বাস-মিনিবাস নির্দিষ্ট পথে নামানোর জন্য মালিক সমিতিকে চাঁদা দিতে হয়। তাছাড়া রাজধানী ও এর আশপাশে কোম্পানির অধীনে বাস চালাতে দৈনিক ওয়েবিল বা গেট পাস (জিপি) হিসেবেও চাঁদা দিতে হয়। আর পণ্যবাহী পরিবহনের বিভিন্ন স্তরে এবং জায়গায় চাঁদা তো রয়েছেই।

সড়কে বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। আর সড়কে প্রাণহানির জন্য দায়ী চালকের বেপরোয়া গতি। যারা চাঁদা দেয় তারা সড়কের আইনকানুন কিছুই মানে না, যারা চাঁদা নেয় তারা আইন বাস্তবায়ন হতে দেয় না। বরং আইনকে কীভাবে দুর্বল করা যায় সেই ফন্দিফিকির করে।

শেষ পর্যন্ত এই চাঁদাবাজির মাশুল দিতে হয় যাত্রী সাধারণকেই। তবে এর বিনিময়ে যাত্রীসাধারণ ন্যূনতম সেবা পায় না। বরং পদে পদে মালিক-শ্রমিকের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হতে হয় তাদের। সারা দেশে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণে বাসের ভাড়া ও পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখিও হয় বিস্তর, কিন্তু সরকারের চাঁদাবাজি বন্ধ করার কার্যকর কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বরং সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব করা হয় বলে অভিযোগ মেলে।

পরিবহন খাতে শতকোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়, বিভিন্ন সংগঠনের রশিদ দিয়ে এসব টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে কখনো কোন শ্রমিকের কল্যাণ করা হয়েছে বলে জানা যায় না। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় কয়েক দফায় পরিবহন বন্ধ থাকায় চরম বিপর্যয়ে পড়ে শ্রমিকরা। পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, একদিকে যেমন তাদের কোন আয় ছিল না তেমনি মালিক বা প্রশাসনও তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। চাঁদা আদায়ের টাকা দিয়ে চালক ও শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কিছু করা হলেও বোঝা যেত। বাস্তবতা হচ্ছে এই চাঁদাবাজির মাধ্যমে একটি শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কারা চাঁদাবাজি করে সেটা প্রশাসনের অজানা নয়। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে এর বিরুদ্ধে কার্যকার কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। বরং খোদ প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। চাঁদাবাজির এই দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে। এছাড়া পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: প্রত্যাশায় কী প্রাপ্তি

tab

opinion » editorial

চাঁদাবাজির দুষ্টচক্র থেকে পরিবহন খাতকে মুক্তি দিন

বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি নতুন কোন বিষয় নয়। এটা ওপেনসিক্রেট যে, সড়ক-মহাসড়কে পরিবহন নামাতে ও চালাতে হলে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদাবাজির মূলে আছে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। তাদের বিভিন্ন সংগঠনের নামে রীতিমতো রশিদ কেটে চাঁদা আদায় করা হয়। বিভিন্ন পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতি, রাজনৈতিক দল বা সংগঠন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পরিবহন খাতে চাঁদাবাজিকে স্থায়ী রূপ দিয়েছে।

পরিবহন খাতের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন সংগঠন চাঁদাবাজির তথ্য জানায়। সম্প্র্রতি যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠন জানিয়েছে, পরিবহন খাত থেকে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার বেশি চাঁদাবাজি হয়। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিবহন খাতে বছরে হাজার কোটি টাকার বেশি চাঁদাবাজি হয়। আর হাইওয়ে পুলিশের তথ্যমতে, শুধু মহাসড়কে চলাচলকারী ৫৮ হাজার ৭১৯টি যানবাহন থেকে বছরে ৮৭ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হচ্ছে।

পরিবহনখাতে চাঁদাবাজির শুরু হয় সড়কে গাড়ি নামানোর আগেই। জানা গেছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বাস নামানোর আগেই মালিক সমিতির সদস্য পদ নিতে হয়। এর জন্য দুই থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিতে হয়। এরপর দৈনিক মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নামে এবং বাস-মিনিবাস নির্দিষ্ট পথে নামানোর জন্য মালিক সমিতিকে চাঁদা দিতে হয়। তাছাড়া রাজধানী ও এর আশপাশে কোম্পানির অধীনে বাস চালাতে দৈনিক ওয়েবিল বা গেট পাস (জিপি) হিসেবেও চাঁদা দিতে হয়। আর পণ্যবাহী পরিবহনের বিভিন্ন স্তরে এবং জায়গায় চাঁদা তো রয়েছেই।

সড়কে বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি। আর সড়কে প্রাণহানির জন্য দায়ী চালকের বেপরোয়া গতি। যারা চাঁদা দেয় তারা সড়কের আইনকানুন কিছুই মানে না, যারা চাঁদা নেয় তারা আইন বাস্তবায়ন হতে দেয় না। বরং আইনকে কীভাবে দুর্বল করা যায় সেই ফন্দিফিকির করে।

শেষ পর্যন্ত এই চাঁদাবাজির মাশুল দিতে হয় যাত্রী সাধারণকেই। তবে এর বিনিময়ে যাত্রীসাধারণ ন্যূনতম সেবা পায় না। বরং পদে পদে মালিক-শ্রমিকের স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হতে হয় তাদের। সারা দেশে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির কারণে বাসের ভাড়া ও পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখিও হয় বিস্তর, কিন্তু সরকারের চাঁদাবাজি বন্ধ করার কার্যকর কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বরং সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব করা হয় বলে অভিযোগ মেলে।

পরিবহন খাতে শতকোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়, বিভিন্ন সংগঠনের রশিদ দিয়ে এসব টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে কখনো কোন শ্রমিকের কল্যাণ করা হয়েছে বলে জানা যায় না। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় কয়েক দফায় পরিবহন বন্ধ থাকায় চরম বিপর্যয়ে পড়ে শ্রমিকরা। পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছেন, একদিকে যেমন তাদের কোন আয় ছিল না তেমনি মালিক বা প্রশাসনও তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। চাঁদা আদায়ের টাকা দিয়ে চালক ও শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কিছু করা হলেও বোঝা যেত। বাস্তবতা হচ্ছে এই চাঁদাবাজির মাধ্যমে একটি শ্রেণি তাদের নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। কারা চাঁদাবাজি করে সেটা প্রশাসনের অজানা নয়। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে এর বিরুদ্ধে কার্যকার কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। বরং খোদ প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। চাঁদাবাজির এই দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে। এছাড়া পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।

back to top