alt

opinion » editorial

নকল ও ভেজাল ওষুধ : আইনের কঠোর প্রয়োগই কাম্য

: মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

একশ্রেণীর ওষুধ ব্যবসায়ীরা জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন নকল ওষুধ উৎপাদন করে পাইকারি ও খুচরা দোকানে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ গোডাউনে এসব ওষুধ মজুদ করে গোপনে বিক্রি করছে। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার পাইকারি ওষুধ মার্কেট থেকে গত শনিবার নকল ও ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় নকল পণ্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহায়তায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

উক্ত অভিযানের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হলো যে, দেশে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন চলছেই। নকল-ভেজাল ওষুধবিরোধী অভিযান আগেও হয়েছে, দেশে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের বেশ কয়েকটি কারখানারও সন্ধান মিলেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরেও নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হয়নি। তাহলে গলদটা কোথায়। দুর্বলতা কি আইনে, না এর প্রয়োগে- এমন প্রশ্ন উঠেছে।

নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের সাজা নিশ্চিত করা হয় কিনা-সেটা একটা প্রশ্ন। বিচার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে শুধু বিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে দু’একজন গ্রেপ্তার করে ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করা যাবে না।

দেশে নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার বিধান আছে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদন্ড। তবে এই আইনে মামলা হয় খুবই কম। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ক্ষতিকর প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কয়েকটি কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ পরীক্ষা করে তাতে ক্ষতিকারক ড্রাই-ইথিলিন গ্লাইকল নামের বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পায়। এ কারণে উক্ত সিরাপ সেবনে কিডনি অকেজো হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটে।

ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে ৭৬ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ এনে ১৯৯২ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পাঁচটি মামলা করে। এসব মামালায় রায় হতে সময় লাগে প্রায় ২২ থেকে ২৭ বছর। মামলাভেদে আসামিদের সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে শিশু মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে করা কোন কোন মামলায় একজনেরও সাজা হয়নি-এমন নজিরও আছে।

সাধারণত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাই নকল ও ভেজাল ওষুধ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা গণহত্যার মতো অপরাধ করছে। আমরা বলতে চাই, এই গণহত্যা এখনই থামাতে হবে। আমরা দেখতে চাই, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত সব ঘটনার বিচার হচ্ছে, অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে এবং সাজা ভোগ করছে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা যেন বের হয়ে না আসতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি বদলাবে না।

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

বয়স্ক ভাতা পেতে আর কত অপেক্ষা

ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

tab

opinion » editorial

নকল ও ভেজাল ওষুধ : আইনের কঠোর প্রয়োগই কাম্য

মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

একশ্রেণীর ওষুধ ব্যবসায়ীরা জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন নকল ওষুধ উৎপাদন করে পাইকারি ও খুচরা দোকানে বিক্রি করছে। আবার কেউ কেউ গোডাউনে এসব ওষুধ মজুদ করে গোপনে বিক্রি করছে। রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার পাইকারি ওষুধ মার্কেট থেকে গত শনিবার নকল ও ভেজাল ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় নকল পণ্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহায়তায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

উক্ত অভিযানের মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হলো যে, দেশে নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন চলছেই। নকল-ভেজাল ওষুধবিরোধী অভিযান আগেও হয়েছে, দেশে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের বেশ কয়েকটি কারখানারও সন্ধান মিলেছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরেও নকল-ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হয়নি। তাহলে গলদটা কোথায়। দুর্বলতা কি আইনে, না এর প্রয়োগে- এমন প্রশ্ন উঠেছে।

নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের অভিযোগে যাদের গ্রেপ্তার করা হয় তাদের সাজা নিশ্চিত করা হয় কিনা-সেটা একটা প্রশ্ন। বিচার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে শুধু বিচ্ছিন্ন অভিযান চালিয়ে দু’একজন গ্রেপ্তার করে ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করা যাবে না।

দেশে নকল বা ভেজাল ওষুধের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার বিধান আছে। এই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদন্ড। তবে এই আইনে মামলা হয় খুবই কম। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ক্ষতিকর প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কয়েকটি কোম্পানির প্যারাসিটামল সিরাপ পরীক্ষা করে তাতে ক্ষতিকারক ড্রাই-ইথিলিন গ্লাইকল নামের বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পায়। এ কারণে উক্ত সিরাপ সেবনে কিডনি অকেজো হয়ে শিশুদের মৃত্যু ঘটে।

ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে ৭৬ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ এনে ১৯৯২ সালে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পাঁচটি মামলা করে। এসব মামালায় রায় হতে সময় লাগে প্রায় ২২ থেকে ২৭ বছর। মামলাভেদে আসামিদের সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর কারাদন্ড দেয়া হয়। ভেজাল প্যারাসিটামল খেয়ে শিশু মৃত্যু হওয়ার অভিযোগে করা কোন কোন মামলায় একজনেরও সাজা হয়নি-এমন নজিরও আছে।

সাধারণত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাই নকল ও ভেজাল ওষুধ অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এই বিষয়ে যথাযথ নজরদারি করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িতরা গণহত্যার মতো অপরাধ করছে। আমরা বলতে চাই, এই গণহত্যা এখনই থামাতে হবে। আমরা দেখতে চাই, নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত সব ঘটনার বিচার হচ্ছে, অপরাধীরা সাজা পাচ্ছে এবং সাজা ভোগ করছে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তারা যেন বের হয়ে না আসতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক হুমকির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি বদলাবে না।

back to top