alt

মতামত » সম্পাদকীয়

ইলিশের অভয়াশ্রমে অর্থনৈতিক অঞ্চল নয়

: মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১

বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত গৌরবদী ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল চরমেঘা। সেখানে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। সমস্যা হচ্ছে, মেঘনার এই অঞ্চলটি ইলিশের অভয়াশ্রম। সেখানকার নদীর পানির গুণাগুণ ও প্রবাহ ইলিশের প্রজননের জন্য অনুকূলে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, চর মেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হবে। এ নিয়ে গতকাল সোমবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চরমেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত ইলিশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। মেঘনার এ অংশটি ইলিশসহ দেশের সব প্রজাতির মৎস্যসম্পদের বড় প্রজননক্ষেত্র। বরিশালের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পর সম্প্রতি তিনি জানতে পেরেছেন এলাকাটি ইলিশসহ অন্যান্য মাছেরও প্রজননক্ষেত্র।

একটি জেলার কোথায় মাছের অভয়াশ্রম বিশেষ করে ইলিশের- সেটা ডিসি জানেন না কেন, সেই প্রশ্ন আমরা করতে চাই। ইলিশসহ অন্য মাছ প্রজননের জন্য নদীর নির্জন এলাকা প্রয়োজন। আর চরমেঘাসংলগ্ন মেঘনা তেমনই একটি নির্জন নদী। এ কারণে শুধু ইলিশ নয়, ক্যাটফিস প্রজাতির পাঙ্গাস, আইড়, বোয়াল মাছেরও বড় প্রজননক্ষেত্র এটি। এমন একটা গুরত্বপূর্ণ অঞ্চল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের না জানার কথা নয়। এর আগে ২০১৭ সালে পরমাণু শক্তি কমিশন এখানে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তরের তীব্র আপত্তির মুখে ইলিশের অভয়াশ্রমের কথা চিন্তা করে সেখান থেকে পিছু হটে তারা। একই জায়গায় আবার কীভাবে এমন একটা পরিকল্পনা নেয়া হলো, যাতে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হয়- সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।

দেশে ইলিশের উৎপাদন একপর্যায়ে উদ্বেগজনক হারে কমে গিয়েছিল। বহু সাধ্য-সাধনার পরে এ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে নাগরিকদেরও অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করতে হয়েছে। বিশেষ করে, জেলে সম্প্রদায়ের ত্যাগের কথা উল্লেখ করার মতো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চরমেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে শুধু ইলিশ নয়, মেঘনার জীববৈচিত্র্যই হুমকির মুখে পড়বে। সেখানে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানার প্রয়োজনে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নৌযান আসা-যাওয়া করবে। এতে ওই অঞ্চলের নীরবতা নষ্ট হবে। কলকারখানার বর্জ্য নদীতে পড়বে, মেঘনার পানি উষ্ণ হবে। দীর্ঘমেয়াদে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে মৎস্যসম্পদের ওপর।

জানা গেছে, স্থানীয় একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আগ্রহে বেজা সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পরিকল্পনা করে। আমরা বলতে চাই, যে কোন পরিকল্পনা নেয়ার আগে সেখানকার প্রাণ-প্রকৃতির কথা বিবেচনা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হবে। চরমেঘায় এমন কিছু করা যাবে না, যার ফলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের প্রজননস্থল ধ্বংস হয়। আমরা আশা করব, মন্ত্রণালয়ে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তাতে সরকার সায় দেবে না।

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

ইলিশের অভয়াশ্রমে অর্থনৈতিক অঞ্চল নয়

মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১

বরিশালের হিজলা উপজেলার মেঘনা নদীবেষ্টিত গৌরবদী ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল চরমেঘা। সেখানে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। সমস্যা হচ্ছে, মেঘনার এই অঞ্চলটি ইলিশের অভয়াশ্রম। সেখানকার নদীর পানির গুণাগুণ ও প্রবাহ ইলিশের প্রজননের জন্য অনুকূলে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, চর মেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হবে। এ নিয়ে গতকাল সোমবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

মৎস্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চরমেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপিত ইলিশের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। মেঘনার এ অংশটি ইলিশসহ দেশের সব প্রজাতির মৎস্যসম্পদের বড় প্রজননক্ষেত্র। বরিশালের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পর সম্প্রতি তিনি জানতে পেরেছেন এলাকাটি ইলিশসহ অন্যান্য মাছেরও প্রজননক্ষেত্র।

একটি জেলার কোথায় মাছের অভয়াশ্রম বিশেষ করে ইলিশের- সেটা ডিসি জানেন না কেন, সেই প্রশ্ন আমরা করতে চাই। ইলিশসহ অন্য মাছ প্রজননের জন্য নদীর নির্জন এলাকা প্রয়োজন। আর চরমেঘাসংলগ্ন মেঘনা তেমনই একটি নির্জন নদী। এ কারণে শুধু ইলিশ নয়, ক্যাটফিস প্রজাতির পাঙ্গাস, আইড়, বোয়াল মাছেরও বড় প্রজননক্ষেত্র এটি। এমন একটা গুরত্বপূর্ণ অঞ্চল সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের না জানার কথা নয়। এর আগে ২০১৭ সালে পরমাণু শক্তি কমিশন এখানে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তরের তীব্র আপত্তির মুখে ইলিশের অভয়াশ্রমের কথা চিন্তা করে সেখান থেকে পিছু হটে তারা। একই জায়গায় আবার কীভাবে এমন একটা পরিকল্পনা নেয়া হলো, যাতে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হয়- সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।

দেশে ইলিশের উৎপাদন একপর্যায়ে উদ্বেগজনক হারে কমে গিয়েছিল। বহু সাধ্য-সাধনার পরে এ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে নাগরিকদেরও অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করতে হয়েছে। বিশেষ করে, জেলে সম্প্রদায়ের ত্যাগের কথা উল্লেখ করার মতো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চরমেঘায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হলে শুধু ইলিশ নয়, মেঘনার জীববৈচিত্র্যই হুমকির মুখে পড়বে। সেখানে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানার প্রয়োজনে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নৌযান আসা-যাওয়া করবে। এতে ওই অঞ্চলের নীরবতা নষ্ট হবে। কলকারখানার বর্জ্য নদীতে পড়বে, মেঘনার পানি উষ্ণ হবে। দীর্ঘমেয়াদে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে মৎস্যসম্পদের ওপর।

জানা গেছে, স্থানীয় একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির আগ্রহে বেজা সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পরিকল্পনা করে। আমরা বলতে চাই, যে কোন পরিকল্পনা নেয়ার আগে সেখানকার প্রাণ-প্রকৃতির কথা বিবেচনা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে হবে। চরমেঘায় এমন কিছু করা যাবে না, যার ফলে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের প্রজননস্থল ধ্বংস হয়। আমরা আশা করব, মন্ত্রণালয়ে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে তাতে সরকার সায় দেবে না।

back to top