দক্ষতা ও মেধাভিত্তিক শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে হবে

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বিদেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হচ্ছে গত চার বছর ধরে। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে বিদেশের শ্রমবাজার ছোট হতে থাকে আরও দ্রুত। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে বিদেশে গেছেন প্রায় ২ লাখ ৭৬ হাজার জন। অথচ ২০১৭ সালে বিদেশে গিয়েছিলেন ১০ লাখের বেশি কর্মী।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে। আর ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুয়ার। যদিও গত বছর বাংলাদেশিদের জন্য আমিরাত আবার সীমিত আকারে দ্বার খুলেছে। আগের মতো সৌদি আরবই এখনো বাংলাদেশি শ্রমিকদের মূল গন্তব্যস্থল। বিএমইটির হিসাব মোতাবেক, ১৯৭৫ সাল থেকে যত কর্মী বিদেশ গেছেন তার মধ্যে ৩৩ শতাংশই গেছেন সৌদি আরব। আর চলতি বছরের প্রথম আট মাসে বিদেশে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৭৮ ভাগই গেছেন সৌদিতে। পুরোনো শ্রমবাজারে মন্দা, একই গন্ডিতে ঘুরপাক খাওয়া এবং কাক্সিক্ষত হারে নতুন শ্রমবাজারে প্রবেশ করতে না পারার কারণে বাংলাদেশি কর্মীদের বিদেশে কাজ করার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের বড় উৎস প্রবাসী শ্রমিক। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করে বলেছিলেন, মহামারীর সময় প্রবাসী আয় কমবে। কিন্তু তাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণিত করে প্রবাসীরা দেশে রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছেন। কিন্তু প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়তে শুরু করেছে। টানা তিন মাস ধরে কমছে প্রবাসী আয়। মহামারীর কারণে অনেক প্রবাসী বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে আসছেন। অনেকে বলছেন, রেমিটেন্সের জাদু এখন আর নেই। বিষয়টি সরকারকে এখনই গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে।

শ্রমবাজার প্রসারিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। বন্ধ হওয়া মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার খুলবে বলে জানা যাচ্ছে। তবে বিদ্যমান শ্রমবাজারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে চলবে না। নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। এ লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশি যেসব শ্রমিক কাজ নিয়ে বিদেশে যান তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ। নির্মাণ খাতে, রেস্তোরাঁ, দোকানপাট আর গৃহকর্মই তাদের মূল ভরসা। সমস্যা হচ্ছে, অদক্ষ জনশক্তির চাহিদা বিশ্ববাজারে দিন দিন কমছে। দক্ষতা ও মেধাভিত্তিক শ্রমবাজারে প্রবেশ করার লক্ষ্য নিয়ে এখন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। এজন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরির বিকল্প নেই। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের প্রয়োজনকে বিবেচনায় রেখে সে অনুযায়ী প্রশিক্ষত জনবল গড়ে তোলা জরুরি। এজন্য দরকার মানসম্মত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও যোগ্য প্রশিক্ষক।

‘সম্পাদকীয়’ : আরও খবর

» গোবিন্দগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগ আমলে নিন

» আত্রাই নদীর বালু লুট বন্ধ করুন

» ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মানুষ হত্যা: কঠোর ব্যবস্থা নিন

» অবৈধ ইটভাটা: প্রশাসনের দুর্বলতা ও পরিবেশের সংকট

» ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নিন

» শেষ না হওয়া সেতু, শেষ না হওয়া ভোগান্তি

» সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হামলা: আদি ও অকৃত্রিম ফ্যাসিবাদের জঘন্য রূপ

» পাহাড় কেটে কেন পানের বরজ?

» মতপ্রকাশের জন্য গ্রেপ্তার: গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়

» সাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনে জনবল সংকট দূর করুন

» চাঁদপুর সেচ প্রকল্প রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি