alt

মতামত » সম্পাদকীয়

তৈরি পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন প্রসঙ্গে

: রোববার, ১০ অক্টোবর ২০২১

দেশের পোশাক কারখানার মালিকেরা ট্রেড ইউনিয়নকে ‘অ্যালার্জি’ মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জাতিসংঘের নীতিকাঠামোর আলোকে পোশাক খাতে শ্রম ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন মোকাবিলা করতে মালিকরা প্রস্তুত নন। গণমাধ্যম কিংবা সভা-সমাবেশে পোশাক কারখানার অনেক মালিক ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে অবস্থান নিলেও তারা একে ভয় পান।

ট্রেড ইউনিয়ন না থাকার কারণে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অধিকার বা দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলতে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। বেতন-ভাতা বকেয়া পড়া, কাজের মানসম্মত পরিবেশ না থাকা, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়াসহ নানা কারণেই কোন একটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে। যেসব কারখানায় বিধিসিদ্ধ সংগঠন নেই সেসব কারখানায় শ্রমিকরা অধিকার আদায়ের বা ক্ষোভ প্রকাশের নিয়মতান্ত্রিক পথে খুঁজে পান না। অনিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন একদিকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কোন নিশ্চয়তা দেয়, অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট শিল্পকারখানাকে নানা সমস্যায় ফেলে।

বিধিবদ্ধ ট্রেড ইউনিয়ন না থাকায় দুপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হন। ক্ষতি সত্ত্বেও পোশাক কারখানা মালিকরা ট্রেড ইউনিয়নে আগ্রহ দেখান না কেন, এ নিয়ে তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করে কেন সেটা একটা প্রশ্ন। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে ভীতির কথা স্বীকার করেছেন পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। পাশাপাশি তিনি এমন প্রশ্নও তুলেছেন যে, দেশে দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন আছে কিনা।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর তৈরি পোশাকশিল্পের ওপর ট্রেড ইউনিয়ন করার চাপ তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার চাপে অনেক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। তবে এসব শ্রমিক সংগঠনের বেশিরভাগই কাগুজে বলে অভিযোগ রয়েছে। মালিক, স্বার্থান্বেষী শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে যেসব পুতুল ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠেছে সেগুলো শ্রুমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। অনেক ট্রেড ইউনিয়নের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা নিজেদের হীন স্বার্থের কারণে শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেন। তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক স্বার্থ ধ্বংসের পাশাপাশি শিল্পকলকারখানা ধ্বংসেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। স্বার্থান্বেষী শ্রমিক-নেতাদের কারণে সরকারি-বেসরকারি বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মন্দ নজির দেশে রয়েছে।

পোশাকশিল্পসহ যে কোন শিল্পে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করা জরুরি। মনে রাখতে হবে, কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়। বরং একে অপরের পরিপূরক। মালিকদের যেমন শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে, শ্রমিকদেরকেও তেমন শিল্পকলকারখানা রক্ষা করতে হবে। শিল্পকলকারখানা ধ্বংস হলে মালিক-শ্রমিক কারও অস্তিত্বই থাকবে না। উভয়েই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকে, আইনি সীমার মধ্য থেকে কাজ করে তাহলে ট্রেড ইউনিয়ন মঙ্গল বয়ে আনতে পারে। আশা করি দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়নকে মালিকরা স্বাগত জানাবেন। আবার ট্রেড ইউনিয়ন যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করার দায় মালিকদের রয়েছে। এজন্য ইউনিয়নকে হীন স্বার্থে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

সিইপিজেডের আগুন: অবহেলা আর দায়িত্বহীনতার নজির

বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা : ফল বিপর্যয় নাকি বাস্তবতা

কুমারভোগের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিন

বেহাল রাজবাড়ী বিসিক শিল্পনগরী: ব্যবস্থা নিন

শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি: যৌক্তিক পদক্ষেপ নিন

গার্মেন্টস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড: প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ভিডব্লিউবি কর্মসূচিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করুন

টিআরএম প্রকল্পের ক্ষতিপূরণ পেতে আর কত অপেক্ষা

জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ

লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না কেন

টাইফয়েড টিকা: ভালো উদ্যোগ

হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ সফল হোক

বকুলতলায় স্থগিত শরৎ উৎসব!

সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্স টিকাদান কার্যক্রমে জনবল সংকট দূর করুন

বনভূমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

নন্দীগ্রামে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সংকট

জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করুন

কমছেই আলুর দাম, লোকসান বাড়ছে কৃষকের

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি কি পূরণ হলো?

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে

কন্যাশিশু নিপীড়নের উদ্বেগজনক চিত্র

ট্রাম্পের পরিকল্পনা একটি সম্ভাবনাময় সূচনা, কিন্তু পথ এখনও দীর্ঘ

বিজয়া দশমী: সম্প্রীতি রক্ষার অঙ্গীকার

প্লাস্টিক দূষণের শিকার সুন্দরবন: চাই জনসচেতনতা

খাগড়াছড়িতে সহিংসতা কি এড়ানো যেত না

এক প্রবীণের আর্তনাদ: সমাজ কি শুনবে?

সাঁওতালদের বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ রক্ষা করুন

সারের কৃত্রিম সংকট ও কৃষকদের দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে সার ও বীজ সংকট দূর করুন

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল পাচার: প্রশাসনের তৎপরতা ও প্রত্যাশা

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

তৈরি পোশাক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন প্রসঙ্গে

রোববার, ১০ অক্টোবর ২০২১

দেশের পোশাক কারখানার মালিকেরা ট্রেড ইউনিয়নকে ‘অ্যালার্জি’ মনে করেন বলে মন্তব্য করেছেন শ্রমিক নেতা বাবুল আক্তার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জাতিসংঘের নীতিকাঠামোর আলোকে পোশাক খাতে শ্রম ও কর্মপরিবেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন মোকাবিলা করতে মালিকরা প্রস্তুত নন। গণমাধ্যম কিংবা সভা-সমাবেশে পোশাক কারখানার অনেক মালিক ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে অবস্থান নিলেও তারা একে ভয় পান।

ট্রেড ইউনিয়ন না থাকার কারণে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের অধিকার বা দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলতে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। বেতন-ভাতা বকেয়া পড়া, কাজের মানসম্মত পরিবেশ না থাকা, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়াসহ নানা কারণেই কোন একটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হতে পারে। যেসব কারখানায় বিধিসিদ্ধ সংগঠন নেই সেসব কারখানায় শ্রমিকরা অধিকার আদায়ের বা ক্ষোভ প্রকাশের নিয়মতান্ত্রিক পথে খুঁজে পান না। অনিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন একদিকে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কোন নিশ্চয়তা দেয়, অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট শিল্পকারখানাকে নানা সমস্যায় ফেলে।

বিধিবদ্ধ ট্রেড ইউনিয়ন না থাকায় দুপক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হন। ক্ষতি সত্ত্বেও পোশাক কারখানা মালিকরা ট্রেড ইউনিয়নে আগ্রহ দেখান না কেন, এ নিয়ে তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করে কেন সেটা একটা প্রশ্ন। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে ভীতির কথা স্বীকার করেছেন পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। পাশাপাশি তিনি এমন প্রশ্নও তুলেছেন যে, দেশে দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন আছে কিনা।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর তৈরি পোশাকশিল্পের ওপর ট্রেড ইউনিয়ন করার চাপ তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার চাপে অনেক কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে ওঠে। তবে এসব শ্রমিক সংগঠনের বেশিরভাগই কাগুজে বলে অভিযোগ রয়েছে। মালিক, স্বার্থান্বেষী শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে যেসব পুতুল ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে উঠেছে সেগুলো শ্রুমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে কিনা সেই প্রশ্ন রয়েছে। অনেক ট্রেড ইউনিয়নের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তারা নিজেদের হীন স্বার্থের কারণে শ্রমিকদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেন। তাদের বিরুদ্ধে শ্রমিক স্বার্থ ধ্বংসের পাশাপাশি শিল্পকলকারখানা ধ্বংসেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। স্বার্থান্বেষী শ্রমিক-নেতাদের কারণে সরকারি-বেসরকারি বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মন্দ নজির দেশে রয়েছে।

পোশাকশিল্পসহ যে কোন শিল্পে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে আস্থার সম্পর্ক তৈরি করা জরুরি। মনে রাখতে হবে, কেউ কারও প্রতিপক্ষ নয়। বরং একে অপরের পরিপূরক। মালিকদের যেমন শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে, শ্রমিকদেরকেও তেমন শিল্পকলকারখানা রক্ষা করতে হবে। শিল্পকলকারখানা ধ্বংস হলে মালিক-শ্রমিক কারও অস্তিত্বই থাকবে না। উভয়েই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকে, আইনি সীমার মধ্য থেকে কাজ করে তাহলে ট্রেড ইউনিয়ন মঙ্গল বয়ে আনতে পারে। আশা করি দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়নকে মালিকরা স্বাগত জানাবেন। আবার ট্রেড ইউনিয়ন যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করার দায় মালিকদের রয়েছে। এজন্য ইউনিয়নকে হীন স্বার্থে ব্যবহার করা বন্ধ করতে হবে।

back to top