alt

opinion » editorial

নিত্যপণ্যের দাম কি নিয়ন্ত্রণহীনই থাকবে

: মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ নেয় তা জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সাধারণ মানুষ। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ এবং মূল্য সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠক’। বৈঠক থেকে কোন সুখবর মেলেনি। বরং দুঃসংবাদ শুনিয়েছেন বাণিজ্য সচিব। বলেছেন, আগামী নভেম্বরের শেষে বাজারে নতুন পেঁয়াজ ওঠার আগ পর্যন্ত এর দাম কমবে না।

সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এর দাম কি এখন এমন নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থাতেই থাকবে সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পেঁয়াজ নিয়ে সুখবর নেই। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে উক্ত বৈঠকে আলোচনাই হয়নি। তাহলে বৈঠক করে লাভ হলো কী। মিটিংয়ের নামে ইটিং আর সিটিংই সার।

মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত আছে। আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে রাজস্ব বোর্ডকে। পেঁয়াজ যা মজুত আছে তা দিয়ে মাস তিনেকের চাহিদা মেটানো সম্ভব। কমবেশি আমদানিও হচ্ছে। তাহলে এর দাম কমবে না কেন সেটা একটা প্রশ্ন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের আতঙ্ক কমবে কীভাবে। পেঁয়াজের ৫ শতাংশ শুল্ক তুলে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়া হয়েছে- এই খবরে কি আতঙ্ক কমবে। এনবিআর শুল্ক কমাবে কিনা তার নিশ্চয়তা কী? অতীতে রাজস্ব বোর্ড শুল্ক কমানোর অনেক অনুরোধেই সাড়া দেয়নি। আবার কর কমলেই যে পেঁয়াজের দাম কমবে সেই আশাও করা যাচ্ছে না। মজুদদারির বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। টিসিবির তৎপরতা বাড়ানো নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে নাভিশ্বাস ওঠা মানুষ তাহলে কিসের ভিত্তিতে আশ্বস্ত হবে!

দাম বাড়ার চাপে জেরবার সাধারণ মানুষের জন্য আরও দুঃসংবাদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা কোন কোন পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টাতদবির করছেন। জানা গেছে, বিশ্ববাজারে গত এক বছরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম যথাক্রমে ৭০ ও ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। আর বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৪৩ ও ৫৪ শতাংশ। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ, দেশে বেড়েছে ২৭ শতাংশ। দেশের ব্যবসায়ীরা ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে (বিটিটিসি) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি আরও ১১ টাকা ও চিনির দাম ৯ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। এ নিয়ে দ্রুতই বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।

নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। ঘরে-বাইরে খাবারের খরচ জোগাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষের ব্যয় বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু তাদের আয় কি বেড়েছে। বরং মহামারীকালে মানুষের আয় কমেছে। অনেক লোক কাজ হারিয়েছে। নতুন করে দরিদ্র হয়েছে অনেক মানুষ। এই অবস্থায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে মানুষ টিকবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে একটি দূরদর্শী কর্তৃপক্ষ কর কমানো, আমদানি বাড়ানো, টিসিবির বিক্রি বাড়ানো, বাজার মনিটর করার আগাম ব্যবস্থা নেবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো আগাম ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এর খেসারত বেশি দিতে হচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষকে।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দাম কমানোর দায়িত্ব নিতে হবে। নইলে মানুষের আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার কোন কাজটা করবে এবং তা কিভাবে করা হবে সেটা তাদেরকেই ভেবে বের করতে হবে।

অ্যান্টিভেনম সংকট দূর করুন

বিলাসবহুল গাড়ি কেনার ‘অতিআগ্রহ’ নিয়ে প্রশ্ন, উত্তর কি মিলবে?

তাপমাত্রা বাড়ার মূল্য

গাছে পেরক ঠোকার নিষ্ঠুরতার অবসান হোক

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি : দায় চাপানোর সংস্কৃতি নয়, ব্যবস্থা নিন

কবর থেকে লাশ তুলে আগুন: কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অচলাবস্থা ও নাগরিক দুর্ভোগ

ঈদে মিলাদুন্নবী : মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি

নীলফামারীতে শ্রমিকের প্রাণহানি: এই মৃত্যু কি এড়ানো যেত না

বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন: নারী সহপাঠীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, নারী প্রার্থীদের সাইবার হয়রানি

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর কেন এই নৈরাজ্য

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিন

নারী ও শিশু নির্যাতনের উদ্বেগজনক চিত্র

ভবদহের জলাবদ্ধতা: শিক্ষা ও জীবনযাত্রার উপর অব্যাহত সংকট

সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দুর্দশা

জমি রেজিস্ট্রিতে ঘুষের বোঝা: সাধারণ মানুষের ভোগান্তি

মবের নামে মানুষ হত্যা : সমাজ কোথায় যাচ্ছে?

‘জুলাই জাতীয় সনদ’ : কেন প্রশ্ন তোলা যাবে না

সুন্দরবন রক্ষায় টেকসই ব্যবস্থা নিন

মামলা, গ্রেপ্তার, জামিন : প্রশ্নবিদ্ধ আইনের শাসন

শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ : ঐক্য ও উদ্যমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বন্যা ও ভাঙন : দ্রুত ব্যবস্থা নিন

অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করুন

ভূমি অফিসে ঘুষ বন্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জন্ম নিবন্ধনে জটিলতা দূর করা জরুরি

‘সাদা পাথর’ লুটের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিন

সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

তরুণদের জন্য আলাদা বুথ! সিদ্ধান্ত কার? কেন?

চিকিৎসক সংকটে জীবননগরের স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

গণপিটুনির সংস্কৃতি রুখতে হবে এখনই

সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক সেবায় ভোগান্তির অবসান ঘটান

সড়কে মৃত্যু : দুর্ঘটনা নাকি অব্যবস্থাপনার ফল?

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর

নির্বাচনের ঘোষণায় স্বস্তি, তবে আছে অনেক চ্যালেঞ্জ

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’: কিছু জিজ্ঞাসা

tab

opinion » editorial

নিত্যপণ্যের দাম কি নিয়ন্ত্রণহীনই থাকবে

মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১

পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কী পদক্ষেপ নেয় তা জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সাধারণ মানুষ। সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ এবং মূল্য সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠক’। বৈঠক থেকে কোন সুখবর মেলেনি। বরং দুঃসংবাদ শুনিয়েছেন বাণিজ্য সচিব। বলেছেন, আগামী নভেম্বরের শেষে বাজারে নতুন পেঁয়াজ ওঠার আগ পর্যন্ত এর দাম কমবে না।

সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এর দাম কি এখন এমন নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থাতেই থাকবে সেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পেঁয়াজ নিয়ে সুখবর নেই। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে উক্ত বৈঠকে আলোচনাই হয়নি। তাহলে বৈঠক করে লাভ হলো কী। মিটিংয়ের নামে ইটিং আর সিটিংই সার।

মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে পাঁচ লাখ টন পেঁয়াজ মজুত আছে। আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে রাজস্ব বোর্ডকে। পেঁয়াজ যা মজুত আছে তা দিয়ে মাস তিনেকের চাহিদা মেটানো সম্ভব। কমবেশি আমদানিও হচ্ছে। তাহলে এর দাম কমবে না কেন সেটা একটা প্রশ্ন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের আতঙ্ক কমবে কীভাবে। পেঁয়াজের ৫ শতাংশ শুল্ক তুলে নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়া হয়েছে- এই খবরে কি আতঙ্ক কমবে। এনবিআর শুল্ক কমাবে কিনা তার নিশ্চয়তা কী? অতীতে রাজস্ব বোর্ড শুল্ক কমানোর অনেক অনুরোধেই সাড়া দেয়নি। আবার কর কমলেই যে পেঁয়াজের দাম কমবে সেই আশাও করা যাচ্ছে না। মজুদদারির বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। টিসিবির তৎপরতা বাড়ানো নিয়ে কোন কথা বলা হয়নি। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে নাভিশ্বাস ওঠা মানুষ তাহলে কিসের ভিত্তিতে আশ্বস্ত হবে!

দাম বাড়ার চাপে জেরবার সাধারণ মানুষের জন্য আরও দুঃসংবাদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা কোন কোন পণ্যের দাম বাড়ানোর চেষ্টাতদবির করছেন। জানা গেছে, বিশ্ববাজারে গত এক বছরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম যথাক্রমে ৭০ ও ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। আর বাংলাদেশে এর দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৪৩ ও ৫৪ শতাংশ। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ, দেশে বেড়েছে ২৭ শতাংশ। দেশের ব্যবসায়ীরা ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে (বিটিটিসি) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি আরও ১১ টাকা ও চিনির দাম ৯ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। এ নিয়ে দ্রুতই বৈঠক হবে বলে জানা গেছে।

নিত্যপণ্যের দাম কমছে না। ঘরে-বাইরে খাবারের খরচ জোগাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। মানুষের ব্যয় বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু তাদের আয় কি বেড়েছে। বরং মহামারীকালে মানুষের আয় কমেছে। অনেক লোক কাজ হারিয়েছে। নতুন করে দরিদ্র হয়েছে অনেক মানুষ। এই অবস্থায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়লে মানুষ টিকবে কী করে সেটা একটা প্রশ্ন।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে একটি দূরদর্শী কর্তৃপক্ষ কর কমানো, আমদানি বাড়ানো, টিসিবির বিক্রি বাড়ানো, বাজার মনিটর করার আগাম ব্যবস্থা নেবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো আগাম ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এর খেসারত বেশি দিতে হচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষকে।

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় ছেড়ে দেয়া যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দাম কমানোর দায়িত্ব নিতে হবে। নইলে মানুষের আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার কোন কাজটা করবে এবং তা কিভাবে করা হবে সেটা তাদেরকেই ভেবে বের করতে হবে।

back to top