alt

মতামত » সম্পাদকীয়

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করুন

: বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১

যশোরের ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার কারণে ২০০ গ্রামের ১০ লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এসব এলাকার স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে। প্রায় দেড় বছর পর স্কুল খোলার আনন্দ তাদের ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভবদহ অঞ্চলের মণিরামপুর অংশে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে আছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষার্থীরা কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীদের বাঁশের সাঁকো এবং নৌকাই হচ্ছে একমাত্র ভরসা।

সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর অধিকাংশ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট নিত্যদিনের। সেখানকার কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার শত শত কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে বাদ দেয়া হয়েছে, কিছু চলছে। কিন্তু কোন সুফল মিলছে না। স্থানীয়রা হতাশ। প্রকল্পের হতশ্রী দশা দেখে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চায় না যে, সেখানকার মানুষ আদৌ টিকে থাকুক।

এতোগুলো গ্রামের লাখ লাখ লোকের সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না কেন- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে কোন গলদ আছে কিনা বা যেসব প্রকল্প নেয়া হচ্ছে সেসব প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

বর্তমানে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচের কাজ চলছে। তাছাড়া স্লুইস গেটের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে শ্রী ও টেকা নদীতে এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে ৩ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার পাইলট চ্যানেল কাটার কাজ চলছে বলে জানা গেছে। তবে এতে সমাধান মিলবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করে বলছেন, সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি সেচলে সংশ্লিষ্ট একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের পকেট ভারী হবে, কিন্তু জলাবদ্ধতা কমবে না। আর এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে নদী খনন করলে আবার পলি পড়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে।

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনের চলমান কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয়রা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তারা বলছে, নদী শাসন নয়, নদীকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের কার্যকর উপায় হচ্ছে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্টের (টিআরএম) মাধ্যমে নদীগুলো দিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে জোয়ার-ভাটা চালু করা। এতে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি নির্দিষ্ট বিলে পড়ে বিল উঁচু হয়ে যাবে। পাশাপাশি ভাটায় স্বচ্ছ পানির স্রোতে নদীগুলো নাব্য ফিরে পাবে। সরকার ২০১৭ সালে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। ২০১৮ সালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সেটি বাতিল করে। এর পর ৮০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), যা স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে স্থগিত রয়েছে।

আমরা চাই, ভবদহ অঞ্চলের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতার নরক যন্ত্রণা থেকে স্থায়ী মুক্তি পাক। তাদের জীবনে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে আসুক। স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থায় নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করতে হবে। জলাবদ্ধতা সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারে এমন প্রকল্প নিতে হবে।

বিদ্যালয়ের মাঠ দখলমুক্ত করুন

টিলায় পাথর লুট : কার্যকর ব্যবস্থা নিন

ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বহীনতা আর নয়

সার সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ দরকার

নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা যেন অবহেলার শিকার না হয়

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল : একটি ভুল বার্তা

ঘিওর ভেটেরিনারি হাসপাতালের সংকট দূর করুন

ভূমি অফিসে সেবাপ্রার্থীদের দুর্ভোগ

একটি পাকা সেতুর জন্য অপেক্ষা

নদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করুন

ইছামতী নদীকে রক্ষা করুন

সন্দেহবশত পিটিয়ে হত্যা: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

জয়দেবপুর রেলক্রসিংয়ে দুর্ভোগের অবসান হোক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন থামছে না?

সারের সংকট আর কত

সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ করুন

কক্সবাজার সৈকত রক্ষা করুন

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য কী?

সড়ক দখলমুক্ত করা জরুরি

কৃষকদের পাশে থাকুন

প্রাথমিক শিক্ষায় সংকট

অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে ধীরগতি: ঝুঁকিতে মানুষ ও গবাদিপশু

রাজধানীর যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ফিরেছে সিগন্যাল বাতি: বাস্তবায়ন জরুরি

দুস্থদের জন্য নিম্নমানের চাল: দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

নিরাপদ সড়কের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতা

কটিয়াদীতে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগ আমলে নিন

ধানখেতে পোকার আক্রমণ: কৃষকের পাশে দাঁড়ান

কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস: লাভ সাময়িক, ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদী

খুলনা বিভাগীয় শিশু হাসপাতাল চালু হতে আর কত অপেক্ষা

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ব্যবস্থা নিন

সরকারি জমি দখল: ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে

রংপুর সিটি করপোরেশনে অটোরিকশার লাইসেন্স প্রসঙ্গে

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড প্রশ্ন অনেক, উত্তর মিলবে কি

দেবীদ্বার কলেজ মাঠ: অবহেলায় হারাতে বসেছে ঐতিহ্য

tab

মতামত » সম্পাদকীয়

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসন করুন

বুধবার, ১৩ অক্টোবর ২০২১

যশোরের ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার কারণে ২০০ গ্রামের ১০ লক্ষাধিক মানুষ বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এসব এলাকার স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও পড়েছে বিপাকে। প্রায় দেড় বছর পর স্কুল খোলার আনন্দ তাদের ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভবদহ অঞ্চলের মণিরামপুর অংশে ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিবন্দী হয়ে আছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষার্থীরা কাদা-পানি মাড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীদের বাঁশের সাঁকো এবং নৌকাই হচ্ছে একমাত্র ভরসা।

সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর অধিকাংশ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট নিত্যদিনের। সেখানকার কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার শত শত কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে বাদ দেয়া হয়েছে, কিছু চলছে। কিন্তু কোন সুফল মিলছে না। স্থানীয়রা হতাশ। প্রকল্পের হতশ্রী দশা দেখে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চায় না যে, সেখানকার মানুষ আদৌ টিকে থাকুক।

এতোগুলো গ্রামের লাখ লাখ লোকের সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না কেন- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রকল্পগুলোর মধ্যে কোন গলদ আছে কিনা বা যেসব প্রকল্প নেয়া হচ্ছে সেসব প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।

বর্তমানে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচের কাজ চলছে। তাছাড়া স্লুইস গেটের পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে শ্রী ও টেকা নদীতে এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে ৩ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার পাইলট চ্যানেল কাটার কাজ চলছে বলে জানা গেছে। তবে এতে সমাধান মিলবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কেউ কেউ অভিযোগ করে বলছেন, সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি সেচলে সংশ্লিষ্ট একশ্রেণীর কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের পকেট ভারী হবে, কিন্তু জলাবদ্ধতা কমবে না। আর এক্সক্যাভেটর মেশিন দিয়ে নদী খনন করলে আবার পলি পড়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে।

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসনের চলমান কার্যক্রম নিয়ে স্থানীয়রা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তারা বলছে, নদী শাসন নয়, নদীকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনের কার্যকর উপায় হচ্ছে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্টের (টিআরএম) মাধ্যমে নদীগুলো দিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে জোয়ার-ভাটা চালু করা। এতে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি নির্দিষ্ট বিলে পড়ে বিল উঁচু হয়ে যাবে। পাশাপাশি ভাটায় স্বচ্ছ পানির স্রোতে নদীগুলো নাব্য ফিরে পাবে। সরকার ২০১৭ সালে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। ২০১৮ সালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সেটি বাতিল করে। এর পর ৮০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), যা স্থানীয়দের আন্দোলনের মুখে স্থগিত রয়েছে।

আমরা চাই, ভবদহ অঞ্চলের বাসিন্দারা জলাবদ্ধতার নরক যন্ত্রণা থেকে স্থায়ী মুক্তি পাক। তাদের জীবনে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে আসুক। স্থানীয় বাসিন্দাদের আস্থায় নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করতে হবে। জলাবদ্ধতা সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারে এমন প্রকল্প নিতে হবে।

back to top