alt

opinion » post-editorial

ব-দ্বীপ মহাপরিকল্পনা

জাহিদুল ইসলাম

: মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১

বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত উপনাম ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ’; যা আমরা ছোটকাল থেকেই জেনে আসছি। কেন নদী মাতা বলা হয় সবাই জানি। এ দেশের তিন ধরনের ভূমি-রূপের মধ্যে নদীবাহিত পলি দিয়ে গঠিত হয়েছে বিশাল ভূমি। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে এই নদী মাতাই মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের বিশাল অঞ্চল প্লাবিত হয় সেই সঙ্গে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে হেক্টরের পর হেক্টর জমি চলে যায় নদী গর্ভে। শত শত পরিবারের জন্য নিয়ে আসে দুঃখ দুর্দশা আর ভোগান্তি।

বঙ্গীয় ব-দ্বীপে হাজার বছর ধরেই নদীভাঙন এক অনিবার্য বাস্তবতা। বাংলাদেশের প্রায় সব নদীর চূড়ান্ত উৎস উজানের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল। ফলে পার্বত্য অঞ্চলে চাপের মধ্যে থাকা স্রোতস্বিণী পলল সমভূমিতে এসে এমনিতেই আড়মোড়া ভাঙতে চায়। স্রোত যখন প্রবল হয়, ভাঙন তখন আরও বাড়ে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ও শেষে বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদ ভাঙনের মুখে পড়ে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানোর উপায় নেই। বিশেষত বাংলাদেশের মানুষ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই টিকে আছে। কিন্তু অন্যান্য দুর্যোগের সঙ্গে নদী ভাঙনের পার্থক্য হচ্ছে, ভাঙনকবলিত মানুষ এক ধাক্কায় পায়ের নিচের মাটিটুকুও হারিয়ে ফেলে। বন্যায় সব ধুয়ে গেলে, ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে গেলেও ভিটেমাটিটুকু থাকে। কিন্তু নদীভাঙনে সেটুকুও থাকে না।

ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসকে ভিত্তি ধরে এবং সেখানকার আদলে তৈরি করা হয় শতবর্ষী ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’। আলোচিত এ প্লানটি ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে অনুমোদন দিয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ছয়টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বন্য নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নৌপথ সচলের পাশাপাশি সারাবছর নদীর নাব্য রক্ষাসহ সেচ সুবিধা ও চাষাবাদ অপেক্ষাকৃত সহজ এবং সম্প্রসারিত হবে নিঃসন্দেহে।

আশার কথা হচ্ছে, পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নয়ন সহযোগী ১২টি দেশের সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশে ডেল্টা প্ল্যান (বিডিপি) ২১০০’ নামে যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত এই পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় আগামী একশ’ বছরে পানির প্রাপ্যতা, এর ব্যবহারসহ প্রতিবেশ ও পরিবেশগত বিষয়সমূহ বিবেচনায় রেখেছে। তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এ মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নে যেনো কোন ধরনের গাফিলাতি করা না হয়। কিংবা কোন ধরনের দুর্নীতির প্রকাশ না ঘটে। তবে কেবল নদী মাতার থেকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কমিয়ে আশীর্বাদ লাভ সম্ভব।

লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জিতিয়া উৎসব

ছবি

অলির পর নেপাল কোন পথে?

রম্যগদ্য: “মরেও বাঁচবি নারে পাগলা...”

অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শ্রীপুর পৌরসভা

ভূরিভোজ, উচ্ছেদ এবং আদিবাসী পাহাড়িয়া

অনলাইন সংস্কৃতিতে হাস্যরসের সমাজবিজ্ঞান

মামলাজট নিরসনে দেওয়ানি কার্যবিধির সংস্কার

বাস্তব মস্কো বনাম বিভ্রান্ত ইউরোপ

ছাত্রসংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ ছাত্ররাজনীতির গতিপ্রকৃতি

সড়ক দুর্ঘটনা: কারও মৃত্যু সাধারণ, কারও মৃত্যু বিশেষ

ঐকমত্য ছাড়াও কিছু সংস্কার সম্ভব

আবার বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম : সংকটে সাধারণ মানুষ

ডায়াবেটিস রোগীর সেবা ও জনসচেতনতা

ভিন্ন ধরনের ডাকসু নির্বাচন

ডাকসু নির্বাচন : পেছনে ফেলে আসি

প্রসঙ্গ : এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ

“কোপা চাটিগাঁ...”

ই-কমার্স হতে পারে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন

ভারত-চীনের নতুন সমীকরণ

সাইবার যুগে মানুষের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

ছবি

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

ভারত-চীন সম্পর্কে কৌশলগত উষ্ণতার সূচনা

একজন নাগরিকের অভিমানী বিদায় ও রাষ্ট্রের নৈতিক সংকট

নিষিদ্ধ জালের অভিশাপে হুমকির মুখে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য

আধিপত্যবাদের শৃঙ্খল এবং পুঁজির লুন্ঠন যাদের রক্তাক্ত করে, তাদের চাই একজোটে

জার্মানি : কৃচ্ছসাধনের বোঝা জনগণের কাঁধে

পাট চাষের সংকট ও সম্ভাবনা

সামাজিক-প্রযুক্তিগত কল্পনা: বাংলাদেশের উন্নয়ন চিন্তার নতুন দিগন্ত

অগ্রক্রয় মোকদ্দমায় উভয় পক্ষের আইনি ডিফেন্স

পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম

এক সাংবাদিকের খোলা চিঠি

বাংলাদেশের দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ

ক্লাউডবার্স্ট: মৃত্যুর বার্তা নিয়ে, আকাশ যখন কান্নায় ভেঙে পড়ে

রম্যগদ্য:“কবি এখন জেলে...”

কারা কর্তৃপক্ষের সীমাবদ্ধতা ও ‘কারেকশন সার্ভিস’-এর বাস্তবতা

ছবি

বাংলাদেশের শহর পরিকল্পনার চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

tab

opinion » post-editorial

ব-দ্বীপ মহাপরিকল্পনা

জাহিদুল ইসলাম

মঙ্গলবার, ০৫ অক্টোবর ২০২১

বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত উপনাম ‘নদীমাতৃক বাংলাদেশ’; যা আমরা ছোটকাল থেকেই জেনে আসছি। কেন নদী মাতা বলা হয় সবাই জানি। এ দেশের তিন ধরনের ভূমি-রূপের মধ্যে নদীবাহিত পলি দিয়ে গঠিত হয়েছে বিশাল ভূমি। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে এই নদী মাতাই মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের বিশাল অঞ্চল প্লাবিত হয় সেই সঙ্গে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে হেক্টরের পর হেক্টর জমি চলে যায় নদী গর্ভে। শত শত পরিবারের জন্য নিয়ে আসে দুঃখ দুর্দশা আর ভোগান্তি।

বঙ্গীয় ব-দ্বীপে হাজার বছর ধরেই নদীভাঙন এক অনিবার্য বাস্তবতা। বাংলাদেশের প্রায় সব নদীর চূড়ান্ত উৎস উজানের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল। ফলে পার্বত্য অঞ্চলে চাপের মধ্যে থাকা স্রোতস্বিণী পলল সমভূমিতে এসে এমনিতেই আড়মোড়া ভাঙতে চায়। স্রোত যখন প্রবল হয়, ভাঙন তখন আরও বাড়ে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে ও শেষে বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদ ভাঙনের মুখে পড়ে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানোর উপায় নেই। বিশেষত বাংলাদেশের মানুষ বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই টিকে আছে। কিন্তু অন্যান্য দুর্যোগের সঙ্গে নদী ভাঙনের পার্থক্য হচ্ছে, ভাঙনকবলিত মানুষ এক ধাক্কায় পায়ের নিচের মাটিটুকুও হারিয়ে ফেলে। বন্যায় সব ধুয়ে গেলে, ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে গেলেও ভিটেমাটিটুকু থাকে। কিন্তু নদীভাঙনে সেটুকুও থাকে না।

ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসকে ভিত্তি ধরে এবং সেখানকার আদলে তৈরি করা হয় শতবর্ষী ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’। আলোচিত এ প্লানটি ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বরে অনুমোদন দিয়েছিল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ছয়টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- বন্যা, নদী ভাঙন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বন্য নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন।

এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নৌপথ সচলের পাশাপাশি সারাবছর নদীর নাব্য রক্ষাসহ সেচ সুবিধা ও চাষাবাদ অপেক্ষাকৃত সহজ এবং সম্প্রসারিত হবে নিঃসন্দেহে।

আশার কথা হচ্ছে, পানি সম্পদের সুষ্ঠু ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য উন্নয়ন সহযোগী ১২টি দেশের সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশে ডেল্টা প্ল্যান (বিডিপি) ২১০০’ নামে যুগান্তকারী একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত এই পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় আগামী একশ’ বছরে পানির প্রাপ্যতা, এর ব্যবহারসহ প্রতিবেশ ও পরিবেশগত বিষয়সমূহ বিবেচনায় রেখেছে। তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এ মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নে যেনো কোন ধরনের গাফিলাতি করা না হয়। কিংবা কোন ধরনের দুর্নীতির প্রকাশ না ঘটে। তবে কেবল নদী মাতার থেকে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কমিয়ে আশীর্বাদ লাভ সম্ভব।

লেখক : শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

back to top