alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

সাঈদ চৌধুরী

: শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১

সরকার তথ্য ছড়িয়ে দিতে অনেক কাজ করছে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। উপজেলাগুলোতে একজন করে তথ্য অফিসারও রয়েছেন। মানুষ তথ্য জানার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন। কিন্তু হিসাবটা যখন পুরো জনগোষ্ঠীকে আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় তখন এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জর।

তথ্য জানতে এবং জানাতে পারলে দুর্নীতি কমে যাবে। মানুষ তাদের অধিকারগুলো সঠিকভাবে পাবে। কিন্তু এরপরও গ্রামে অনেক বিধবা, প্রতিবন্ধী মানুষ ও বৃদ্ধ মানুষ কখনও কারও নজরেই আসে না এমন উদাহরণ অনেক।

এর কারণ অনেক থাকলেও আরেকটি বড় কারণ হলো তথ্য প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা। একজন গ্রামের সাধারণ পোশাক পড়া কৃষক যখন কোনো বড় কর্মকর্তার রুমে ঢোকেন তখন কি তিনি কর্মকর্তার কাছে থেকে স্বাভাবিক ব্যবহার পান? থানায় গিয়েই যদি কেউ বিভিন্ন সেবা ও তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তবে কি সেটা তিনি নির্ভয়েই পেয়ে যান?

অনেক সময়ই বিভিন্ন থানায় কোনো তথ্য জানার ক্ষেত্রে বা ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে ভয় ও অনীহা দেখা যায়। যে বা যিনি সেবা পেতে আসেন তাদের প্রথম বিষয়টিই থাকে আমি কি সঠিকভাবে সমস্যার কথা বোঝাতে পারবো? তার মধ্যে রুমে যাওয়ার পর যদি সামান্য ভালো ব্যবহারও না পায় কেউ তবে তথ্য জানার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে।

তথ্য প্রদান ও তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি কমপ্লায়েন্স হওয়া প্রয়োজন। সরকারি দপ্তরের কত সুযোগ সুবিধা মানুষ জানে না। বড় ধরনের রোগ হলে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থনৈতিক সুবিধা দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়টি জানেনা অনেকেই। এখন এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যে তথ্যকে পৌঁছানো দরকার সবার কাছে সমান হারে। সরকারি সেবার তথ্যগুলো মানুষের মধ্যে পৌঁছানোর জন্য ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। মানুষকে আইন স¤পর্কে জানাতে হবে এবং কেউ তথ্য দিতে না চাইলে বা খারাপ ব্যবহার করলে শাস্তি নিশ্চিতে সরকার যে বদ্ধপরিকর সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।

সব প্রতিবন্ধকতার পরও বলতে হয় ডিজিটালাইজেশন একটি আলোর দিন শুরু হয়ে গিয়েছে আমাদের। এখন এ সুবিধা প্রান্তিক পর্যায়ে তো পৌঁছাতে হবেই; সাথে সাথে প্রয়োজন কিভাবে এগুলো সহজ পদ্ধতিতে আনা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা। যারা তথ্য দেয়ার সাথে জড়িত তাদের আন্তরিকতার ব্যপারে কমপ্লায়েন্স ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সেবাগুলো মানুষের মধ্যে জানাতে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সকল নাগরিকদের নিয়ে বৈঠকও করা যেতে পারে।

মানুষ সব কিছু সম্পর্কে জানলে, তথ্য পরিষ্কার হলে কাউকে টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলবে না আমার এ কাজটা একটু করে দেন! কেউ কোনো অফিসার বা কর্তব্যরত ব্যক্তির মুখবয়ব দেখে তথ্য না জেনেই বের হয়ে আসবে না। তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ও সামাজিকভাবে সে অধিকারগুলো ভোগের ক্ষেত্রে আরও গতিশীল হতে হবে। এ বিষয়গুলোর ওপরই নির্ভর করবে পরবর্তী বাংলাদেশ কতটা সমৃদ্ধ হবে সবার সমান অধিকারে। দুর্নীতি কমিয়ে আনাও বড় চ্যালেঞ্জ। তথ্য বিস্তারে ও অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানার যে দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তাকে টেকসই করতে হলে তথ্যগুলোকে মানুষের কাছে ঘরের ভেতর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারলেই আমাদের পুরো সার্থকতা আসবে। সেবা মানুষ সহজে পাবে এবং দুর্নীতিও কমে যাবে। আশা করি তথ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আরও যুগোপযোগী ভাবনা ভাববে।

[লেখক : সদস্য,

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি]

আছদগঞ্জের শুটকি : অতীতের গৌরব, বর্তমানের দুঃসময়

নবান্নের আনন্দ ও আমনের ফলন

‘প্রশ্ন কোরো না, প্রশ্ন সর্বনাশী’

ভূমিকম্প, অর্থনৈতিক চাপ এবং অনিশ্চয়তা: মানসিকতার নতুন অর্থনীতি

নবম পে স্কেল ও এর আর্থসামাজিক প্রভাব

মৃত্যুদণ্ড, তারপর...

জমির ভুয়া দলিল কীভাবে বাতিল করবেন?

জুলাই সনদ আদিবাসীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি

ব্যাংকের দুরবস্থা থামানো যাচ্ছে না কেন

আমন ধানে ব্রাউন প্ল্যান্টহপারের প্রাদুর্ভাব

বৈষম্য, অপচয় ও খাদ্যনিরাপত্তার সংকট

“বাঙালি আমরা, নহিতো...”

নারী নির্যাতন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমাজের দায়

কাঁপছে ডলারের সিংহাসন

ত্রিশতম জলবায়ু সম্মেলন : প্রতীকী প্রদর্শনী, নাকি বৈশ্বিক জলবায়ু রাজনীতির বাঁক নেওয়ার মুহূর্ত?

অপরিণত নবজাতক : ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও যত্নের জরুরি বাস্তবতা

বাংলাদেশী উত্তরাধিকার: প্রবাস-জীবন ও আমাদের সংস্কৃতি

রাজনীতিতে ভাষার সহনীয় প্রয়োগ

ভারত : এসআইআর এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজন

মনে কী দ্বিধা নিয়ে...

নিরাপদ সড়ক ভাবনা

অপরিকল্পিত বাঁধ-শিল্পায়নে বিপর্যস্ত বরেন্দ্র কৃষি

ছবি

মামদানি দেখালেন নেতৃত্বের মূল পরিচয় কী

চেকের মামলায় বৈধ বিনিময়, লেনদেন, দেনা-পাওনা প্রমাণ ছাড়া আর জেল নয়

নবাগত শিক্ষকদের পেশাগত ভাবনা

মাদকাসক্তি: শুধু নিরাময় নয়, চাই সমাজ ব্যবস্থার সংস্কার

আমেরিকার “নো কিংস” আন্দোলন

ঘি তো আমাদের লাগবেই, নো হাংকি পাংকি!

“মামদানি না জামদানি...”

ভাষার বৈচিত্র্য রক্ষায় নীরব বিপ্লব

উপাত্ত সুরক্ষা আইন : গোপনীয়তা রক্ষা নাকি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ?

সমতা কি ন্যায্যতা নিশ্চিত করে?

ডেঙ্গু সংকট দূরদৃষ্টির ব্যর্থতা

ষাটের দশকে বামপন্থী ভাবনার উত্থান ও বিবর্তন

দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে!

বায়ুর অপর নাম জীবন

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

সাঈদ চৌধুরী

শনিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২১

সরকার তথ্য ছড়িয়ে দিতে অনেক কাজ করছে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। উপজেলাগুলোতে একজন করে তথ্য অফিসারও রয়েছেন। মানুষ তথ্য জানার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন। কিন্তু হিসাবটা যখন পুরো জনগোষ্ঠীকে আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় তখন এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জর।

তথ্য জানতে এবং জানাতে পারলে দুর্নীতি কমে যাবে। মানুষ তাদের অধিকারগুলো সঠিকভাবে পাবে। কিন্তু এরপরও গ্রামে অনেক বিধবা, প্রতিবন্ধী মানুষ ও বৃদ্ধ মানুষ কখনও কারও নজরেই আসে না এমন উদাহরণ অনেক।

এর কারণ অনেক থাকলেও আরেকটি বড় কারণ হলো তথ্য প্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা। একজন গ্রামের সাধারণ পোশাক পড়া কৃষক যখন কোনো বড় কর্মকর্তার রুমে ঢোকেন তখন কি তিনি কর্মকর্তার কাছে থেকে স্বাভাবিক ব্যবহার পান? থানায় গিয়েই যদি কেউ বিভিন্ন সেবা ও তথ্য সম্পর্কে জানতে চান তবে কি সেটা তিনি নির্ভয়েই পেয়ে যান?

অনেক সময়ই বিভিন্ন থানায় কোনো তথ্য জানার ক্ষেত্রে বা ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যে ভয় ও অনীহা দেখা যায়। যে বা যিনি সেবা পেতে আসেন তাদের প্রথম বিষয়টিই থাকে আমি কি সঠিকভাবে সমস্যার কথা বোঝাতে পারবো? তার মধ্যে রুমে যাওয়ার পর যদি সামান্য ভালো ব্যবহারও না পায় কেউ তবে তথ্য জানার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে।

তথ্য প্রদান ও তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি কমপ্লায়েন্স হওয়া প্রয়োজন। সরকারি দপ্তরের কত সুযোগ সুবিধা মানুষ জানে না। বড় ধরনের রোগ হলে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থনৈতিক সুবিধা দেয়া হয়। কিন্তু এ বিষয়টি জানেনা অনেকেই। এখন এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ যে তথ্যকে পৌঁছানো দরকার সবার কাছে সমান হারে। সরকারি সেবার তথ্যগুলো মানুষের মধ্যে পৌঁছানোর জন্য ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কাজ শুরু করতে হবে। মানুষকে আইন স¤পর্কে জানাতে হবে এবং কেউ তথ্য দিতে না চাইলে বা খারাপ ব্যবহার করলে শাস্তি নিশ্চিতে সরকার যে বদ্ধপরিকর সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।

সব প্রতিবন্ধকতার পরও বলতে হয় ডিজিটালাইজেশন একটি আলোর দিন শুরু হয়ে গিয়েছে আমাদের। এখন এ সুবিধা প্রান্তিক পর্যায়ে তো পৌঁছাতে হবেই; সাথে সাথে প্রয়োজন কিভাবে এগুলো সহজ পদ্ধতিতে আনা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা। যারা তথ্য দেয়ার সাথে জড়িত তাদের আন্তরিকতার ব্যপারে কমপ্লায়েন্স ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সেবাগুলো মানুষের মধ্যে জানাতে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সকল নাগরিকদের নিয়ে বৈঠকও করা যেতে পারে।

মানুষ সব কিছু সম্পর্কে জানলে, তথ্য পরিষ্কার হলে কাউকে টাকা ধরিয়ে দিয়ে বলবে না আমার এ কাজটা একটু করে দেন! কেউ কোনো অফিসার বা কর্তব্যরত ব্যক্তির মুখবয়ব দেখে তথ্য না জেনেই বের হয়ে আসবে না। তথ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ও সামাজিকভাবে সে অধিকারগুলো ভোগের ক্ষেত্রে আরও গতিশীল হতে হবে। এ বিষয়গুলোর ওপরই নির্ভর করবে পরবর্তী বাংলাদেশ কতটা সমৃদ্ধ হবে সবার সমান অধিকারে। দুর্নীতি কমিয়ে আনাও বড় চ্যালেঞ্জ। তথ্য বিস্তারে ও অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানার যে দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তাকে টেকসই করতে হলে তথ্যগুলোকে মানুষের কাছে ঘরের ভেতর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারলেই আমাদের পুরো সার্থকতা আসবে। সেবা মানুষ সহজে পাবে এবং দুর্নীতিও কমে যাবে। আশা করি তথ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আরও যুগোপযোগী ভাবনা ভাববে।

[লেখক : সদস্য,

উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি]

back to top