সন্দেহ
আশরাফ আহমদ
সন্দেহের গোপন উই
কাটল ধৈর্যের দাঁতে
ভেতর-বাড়ির বুড়ো কাঠের করোটি।
আমাদের উভয়ের নিজস্ব গোয়েন্দাদ্বয়
নিবিড় নৈকট্যে এতকাল,
এত ভালোবাসাবাসি!
পথ প্রায় শেষ, তাও
অনুসরণের ছায়া পিছুই ছাড়ল না।
প্রশ্ন জাগে- এই যে সমান্তরালে
গেল আধেক জীবন
তোমার ছায়ার সাথে
আমার ছায়ার কোনো সখ্য হলো না!
তার মানে, আমরাও বাসলাম?
বাঁচলাম- দুজনে একাকী?
বন্ধুর ছদ্মবেশে চিরশত্রু দুই!
আমি জীবনানন্দবোধ রক্ত
ঢেলে-ঢেলে হাঁটিতেছি একা
হাফিজ রশিদ খান
আমি গভীর জীবনানন্দবোধ
অন্তরে দূরের শিখা হয়ে জেগে থাকে ধ্রুপদী অতীতশোভা
ভবিষ্যতের বিরাট বৃক্ষ শাখায়-শাখায় দোয়েলের মনোহর গান শুনি
অতীন্দ্রিয় অভিলাষে
পূর্বপুরুষের কীর্তিময় ভূর্জপত্রকথা পাঠ করি জলাঙ্গীর
ধারের জারুল ছায়াবনে বসে
আর এখনের এই আরশিতে দেখি শুধু জোটবদ্ধ
গণমুক্তির প্রখর কর্মসূচি
স্বৈরতন্ত্র আর লুটতরাজের সমূল উচ্ছেদে
অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় করে আসা অবসরপ্রাপ্ত জীবনগুলোর
ঝুড়িতে হতাশা কেবল হতাশা
ভারালো পাথর হয়ে নামে জলধির তলে হেলেদুলে
আর দেখি কর্ণফুলি নদীর ওপর নয়া সেতুটার পাশে কংক্রিট-নির্মিত
প্রমোদের কুঁড়েঘরে বসে
চাঁদের শরাব পান করে বেতমিজ রাজনীতিকের ভয়াল উদর
দেখি দিঘল সংযুক্ত সড়কের আঁকাবাঁকা নামে
বিপুল-ব্যাপক মেমোতে নগদ
নারায়ণের দাঁতখিঁচোনো প্রাগৈতিহাসিক জন্তু
হাসতে-হাসতে চলে উর্দিওলার কর্ডনে
ওই সুমন্ত অতীতভরা পূর্ববাংলার পরানকথা ভেবে-ভেবে
শ্রী ও কল্যাণনিষিদ্ধ এ বাংলাদেশের পথে রক্ত ঢেলে-ঢেলে
হাঁটিতেছি আমি একা...
তুমি বহু দামি
সাইফুল্লাহ আল মামুন
পূর্ণিমা রাতে রজনীগন্ধা হাতে
যদি দেখা হয়
প্রিয় মানুষটির সাথে
কী আনন্দ! ভাবতে
মনে প্রেমের রোশনাই
আবেগে তারেই ছুঁয়ে যাই।
চুকে গেল ঘুমের নীরবতা
বসন্ত বাতাসে ভিন্ন সজীবতা
রাখি বন্ধনে ভাবের অষ্টমী
তোমার ঠোঁটে মিষ্টি হাসি
আমার জাগে আদিম দুষ্টুমি।
আমার চোখে তুমি
প্রেমের পবিত্র ভূমি
বিনিময়ে নয়
আপন দামে
তুমি বহু দামি।
অসমাপিকা বাক্য
সোহেল মাজহার
শুধু সৌরভ নয়, শরীর মেঘপুঞ্জ আস্ত বরফ পাহাড়
তার ভিতর লুকিয়ে আছে জলকণা, জলের পরমাণু
শান্ত বিড়াল, আদতে সে ডোরাকাটা এক বাঘের হুংকার
প্ররোচনা দেয়, প্ররোচিত করে প্রলুব্ধ তার দেহ তনু।
তাকে নাম ধরে না ডাকি- না করি আহ্বান
অন্ধ অনুগামীর মতো দূর দেশ থেকে বয়ে আসি মেঘ
তবু নির্লিপ্ত সে... ইশারায় ছলাকলা জমাট অভিমান
লিখে যাই সংকেত ভাষা, রাগ ও সুর, গোপন আবেগ।
কখনো সে ক্লাসে লাজুক স্রোতা- মুগ্ধ অধ্যাপিকা
স্নিগ্ধ ঠোঁটে মেঘের ঘাম, চোখে বাক্য অসমাপিকা
ফিঙে নাচে, দোয়েল নাচে- নাচে ভাবঘর, অদৃশ্য তারা
সমুদ্র ¯্রােত ভাসিয়ে নেয়, ¯্রােতে আমি দিশেহারা...
কথা
রহমান মুজিব
শালিকের কিচিমিচির কলিংবেলে ভোর বাজে
ভাঙে ঘুম, শুরু হয় কথার সাথে কথা
সেইসব কথা অজন্তা-ইলোরায় গ্রন্থিত করে
সময়ের ডায়েরি
সময় নাই
যেতে হবে গল্পের বনে, কথার হাটে
কত যে কথা, কথার কি শেষ আছে
গাছ-পাতার চিঠিতে কথা, নদী জলে কথা
চোখে চোখে কথা, কথায় কথায় পরিচয়
কথায় হোক না বৈরী দুপুর শুধুই ছায়াময়
কথা মানে প্রেম, কথা মানে গান
কথায় কথায় হোক ভোর মোরগের আজান
পুনর্জীবন
শারমিন সুলতানা রীনা
সমস্ত প্রত্যাশাকে উপরে ফেলে
নিজেকে গুটিয়ে নিলাম শামুকের মতো
প্রজ¦লিত আলো নিভিয়ে আঁধারের বেড়িবাঁধে আটকে ফেললাম নিজেকে
বুকের মধ্যে সমুদ্র তবু দহনে দহনে পুড়েছি অবিরাম
হঠাৎ সপ্তর্ষীম-লে থাকা নক্ষত্রপুঞ্জের মাঝে
জ্বলজ্বলে এক নক্ষত্র তোমাকে আবিষ্কার করলাম
আমার সত্তা জুড়ে তুমি বিরাজমান
এখন ঝরনার মতো আমি বয়ে যাই
তোমার বুকের গভীর সমুদ্রে
খুঁজে পেলাম যে ঠিকানা
সেখানে আমার পুনর্জীবন হোক।
শরত এসেছে বায়েজিদ
লিঙ্ক রোডে
রেহেনা মাহমুদ
সমস্ত হাহাকার নিয়ে শারদীয় আকাশ সেজে আছে।
এতটাই সুনীল যে বিচ্ছেদও উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
বায়েজীদ লিংক রোড জুড়ে শাদা কাশফুল লাশফুল হয়ে
ফুটে আছে কারো বিরহ নিয়ে। রোডের পাহাড়-চূড়ায়
চোখ ধাঁধানো আলোয় কারো মুরতি চোখ ছুঁয়ে গেল!
অসহনীয় এসব দৈবপ্রেম। স্পর্শ-অস্পর্শের খেলা।
বায়েজিদ লিংক রোড জুড়ে শরতের সম্ভার, হাওয়াদের
লুটোপুটি। হাওয়ারা কানে কানে কার নাম গায়?
শিশির ধোয়া শিউলির বৈধব্য যন্ত্রণা নিয়ে পুজোর থালা সাজাই।
কাকে রাঙাই অবশিষ্ট রঙটুকু নিয়ে?
শঙ্খে সুর বেজে ওঠে। তোমার নামে?
দেয়ালের ওপাশে
ডালিয়া চৌধুরী
দেয়ালের ওপাশে শূন্যতা পেরিয়ে
পড়ন্ত সূর্যে অন্ধকার দানা বাঁধে
একটি দীর্ঘ রাত প্রতিফলিত হয়
গোধূলির লাল চিত্রাঙ্কনে।
রোমন্থিত বিষাদ পাতার বিউগলে
বৃক্ষটির স্তব্ধতা পেরিয়ে ইন্দ্রজালে।
খোদিত নগর এক সারি পাথরে
ব্যথিত বৃত্তের শিল্প গড়ে
রয়েছে ভৌতিক অবগাহনে।
একদা জীবন ছিলো বলে
স্মৃতিরা ঘুরে কালের অবক্ষয়ে।
দেয়ালের ওপাশে জড়োসড়ো পাখি,
খরকুটোর গাঁথুনি খুঁজে না পেয়ে
ভ্রূর ভাঁজে মেঘ রেখে
বুজে থাকে চোখ অন্ধত্বের ভানে।
দেয়ালের ওপাশে দুঃখ
উড়তে না পারার ব্যথিত ডানা
ভারি হয়ে আছে পালকের ভারে।
আমার বিশ্বাস।
কষ্ট
চরু হক
কষ্টেরও আছে নিজস্ব রঙ, নিজস্ব গন্ধ।
কষ্ট হলো একটি ফুল
যার পাপড়িগুলো অপরূপ!
তোমার, আমার এবং সমগ্রের মাঝখানে ব্রিজটা
ঈশ্বর নীল রঙ দিয়ে বানিয়েছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে আমি বিষ খাবো
ক্ষমা কর ঈশ্বর,
তোমাকে আহত করতে চাইনি
কিন্তু এই আশ্চর্য ফুলটির মায়াবী সৌন্দর্য
আমাকে পাগল করে তুলেছে!
ঘাসফড়িং তুমি ঘুমচ্ছো?
এত গভীর মগ্ন তোমার ঘুম?
এই পাপড়িটা নাও
একে চুম্বন কর
এর ভেতরে জারিত এক আশ্চর্য জীবন।
দেয়াল
রজব বকশী
এইসব অনিচ্ছার দেয়াল ফুঁড়ে ফোটে না
অধিকারের সুগন্ধি কুসুম
সম্মতির সম্মোহনী চুমু ও আলিঙ্গনে
দুজনের মধ্যে নদী থেকে সমুদ্রের দিকে
বাজে না একলা বাঁশি
বাদকের ফুঁয়ে প্রাণবন্ত সুরের মূর্ছনা
জোরজুলুমে হৃদয় বাগান খাঁখাঁ করে
ভাঙা ব্রিজের মতো পড়ে থাকে দীর্ঘশ্বাস
স্মৃতি ও স্বপ্নের জিরো পয়েন্টে
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সন্দেহ
আশরাফ আহমদ
সন্দেহের গোপন উই
কাটল ধৈর্যের দাঁতে
ভেতর-বাড়ির বুড়ো কাঠের করোটি।
আমাদের উভয়ের নিজস্ব গোয়েন্দাদ্বয়
নিবিড় নৈকট্যে এতকাল,
এত ভালোবাসাবাসি!
পথ প্রায় শেষ, তাও
অনুসরণের ছায়া পিছুই ছাড়ল না।
প্রশ্ন জাগে- এই যে সমান্তরালে
গেল আধেক জীবন
তোমার ছায়ার সাথে
আমার ছায়ার কোনো সখ্য হলো না!
তার মানে, আমরাও বাসলাম?
বাঁচলাম- দুজনে একাকী?
বন্ধুর ছদ্মবেশে চিরশত্রু দুই!
আমি জীবনানন্দবোধ রক্ত
ঢেলে-ঢেলে হাঁটিতেছি একা
হাফিজ রশিদ খান
আমি গভীর জীবনানন্দবোধ
অন্তরে দূরের শিখা হয়ে জেগে থাকে ধ্রুপদী অতীতশোভা
ভবিষ্যতের বিরাট বৃক্ষ শাখায়-শাখায় দোয়েলের মনোহর গান শুনি
অতীন্দ্রিয় অভিলাষে
পূর্বপুরুষের কীর্তিময় ভূর্জপত্রকথা পাঠ করি জলাঙ্গীর
ধারের জারুল ছায়াবনে বসে
আর এখনের এই আরশিতে দেখি শুধু জোটবদ্ধ
গণমুক্তির প্রখর কর্মসূচি
স্বৈরতন্ত্র আর লুটতরাজের সমূল উচ্ছেদে
অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় করে আসা অবসরপ্রাপ্ত জীবনগুলোর
ঝুড়িতে হতাশা কেবল হতাশা
ভারালো পাথর হয়ে নামে জলধির তলে হেলেদুলে
আর দেখি কর্ণফুলি নদীর ওপর নয়া সেতুটার পাশে কংক্রিট-নির্মিত
প্রমোদের কুঁড়েঘরে বসে
চাঁদের শরাব পান করে বেতমিজ রাজনীতিকের ভয়াল উদর
দেখি দিঘল সংযুক্ত সড়কের আঁকাবাঁকা নামে
বিপুল-ব্যাপক মেমোতে নগদ
নারায়ণের দাঁতখিঁচোনো প্রাগৈতিহাসিক জন্তু
হাসতে-হাসতে চলে উর্দিওলার কর্ডনে
ওই সুমন্ত অতীতভরা পূর্ববাংলার পরানকথা ভেবে-ভেবে
শ্রী ও কল্যাণনিষিদ্ধ এ বাংলাদেশের পথে রক্ত ঢেলে-ঢেলে
হাঁটিতেছি আমি একা...
তুমি বহু দামি
সাইফুল্লাহ আল মামুন
পূর্ণিমা রাতে রজনীগন্ধা হাতে
যদি দেখা হয়
প্রিয় মানুষটির সাথে
কী আনন্দ! ভাবতে
মনে প্রেমের রোশনাই
আবেগে তারেই ছুঁয়ে যাই।
চুকে গেল ঘুমের নীরবতা
বসন্ত বাতাসে ভিন্ন সজীবতা
রাখি বন্ধনে ভাবের অষ্টমী
তোমার ঠোঁটে মিষ্টি হাসি
আমার জাগে আদিম দুষ্টুমি।
আমার চোখে তুমি
প্রেমের পবিত্র ভূমি
বিনিময়ে নয়
আপন দামে
তুমি বহু দামি।
অসমাপিকা বাক্য
সোহেল মাজহার
শুধু সৌরভ নয়, শরীর মেঘপুঞ্জ আস্ত বরফ পাহাড়
তার ভিতর লুকিয়ে আছে জলকণা, জলের পরমাণু
শান্ত বিড়াল, আদতে সে ডোরাকাটা এক বাঘের হুংকার
প্ররোচনা দেয়, প্ররোচিত করে প্রলুব্ধ তার দেহ তনু।
তাকে নাম ধরে না ডাকি- না করি আহ্বান
অন্ধ অনুগামীর মতো দূর দেশ থেকে বয়ে আসি মেঘ
তবু নির্লিপ্ত সে... ইশারায় ছলাকলা জমাট অভিমান
লিখে যাই সংকেত ভাষা, রাগ ও সুর, গোপন আবেগ।
কখনো সে ক্লাসে লাজুক স্রোতা- মুগ্ধ অধ্যাপিকা
স্নিগ্ধ ঠোঁটে মেঘের ঘাম, চোখে বাক্য অসমাপিকা
ফিঙে নাচে, দোয়েল নাচে- নাচে ভাবঘর, অদৃশ্য তারা
সমুদ্র ¯্রােত ভাসিয়ে নেয়, ¯্রােতে আমি দিশেহারা...
কথা
রহমান মুজিব
শালিকের কিচিমিচির কলিংবেলে ভোর বাজে
ভাঙে ঘুম, শুরু হয় কথার সাথে কথা
সেইসব কথা অজন্তা-ইলোরায় গ্রন্থিত করে
সময়ের ডায়েরি
সময় নাই
যেতে হবে গল্পের বনে, কথার হাটে
কত যে কথা, কথার কি শেষ আছে
গাছ-পাতার চিঠিতে কথা, নদী জলে কথা
চোখে চোখে কথা, কথায় কথায় পরিচয়
কথায় হোক না বৈরী দুপুর শুধুই ছায়াময়
কথা মানে প্রেম, কথা মানে গান
কথায় কথায় হোক ভোর মোরগের আজান
পুনর্জীবন
শারমিন সুলতানা রীনা
সমস্ত প্রত্যাশাকে উপরে ফেলে
নিজেকে গুটিয়ে নিলাম শামুকের মতো
প্রজ¦লিত আলো নিভিয়ে আঁধারের বেড়িবাঁধে আটকে ফেললাম নিজেকে
বুকের মধ্যে সমুদ্র তবু দহনে দহনে পুড়েছি অবিরাম
হঠাৎ সপ্তর্ষীম-লে থাকা নক্ষত্রপুঞ্জের মাঝে
জ্বলজ্বলে এক নক্ষত্র তোমাকে আবিষ্কার করলাম
আমার সত্তা জুড়ে তুমি বিরাজমান
এখন ঝরনার মতো আমি বয়ে যাই
তোমার বুকের গভীর সমুদ্রে
খুঁজে পেলাম যে ঠিকানা
সেখানে আমার পুনর্জীবন হোক।
শরত এসেছে বায়েজিদ
লিঙ্ক রোডে
রেহেনা মাহমুদ
সমস্ত হাহাকার নিয়ে শারদীয় আকাশ সেজে আছে।
এতটাই সুনীল যে বিচ্ছেদও উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
বায়েজীদ লিংক রোড জুড়ে শাদা কাশফুল লাশফুল হয়ে
ফুটে আছে কারো বিরহ নিয়ে। রোডের পাহাড়-চূড়ায়
চোখ ধাঁধানো আলোয় কারো মুরতি চোখ ছুঁয়ে গেল!
অসহনীয় এসব দৈবপ্রেম। স্পর্শ-অস্পর্শের খেলা।
বায়েজিদ লিংক রোড জুড়ে শরতের সম্ভার, হাওয়াদের
লুটোপুটি। হাওয়ারা কানে কানে কার নাম গায়?
শিশির ধোয়া শিউলির বৈধব্য যন্ত্রণা নিয়ে পুজোর থালা সাজাই।
কাকে রাঙাই অবশিষ্ট রঙটুকু নিয়ে?
শঙ্খে সুর বেজে ওঠে। তোমার নামে?
দেয়ালের ওপাশে
ডালিয়া চৌধুরী
দেয়ালের ওপাশে শূন্যতা পেরিয়ে
পড়ন্ত সূর্যে অন্ধকার দানা বাঁধে
একটি দীর্ঘ রাত প্রতিফলিত হয়
গোধূলির লাল চিত্রাঙ্কনে।
রোমন্থিত বিষাদ পাতার বিউগলে
বৃক্ষটির স্তব্ধতা পেরিয়ে ইন্দ্রজালে।
খোদিত নগর এক সারি পাথরে
ব্যথিত বৃত্তের শিল্প গড়ে
রয়েছে ভৌতিক অবগাহনে।
একদা জীবন ছিলো বলে
স্মৃতিরা ঘুরে কালের অবক্ষয়ে।
দেয়ালের ওপাশে জড়োসড়ো পাখি,
খরকুটোর গাঁথুনি খুঁজে না পেয়ে
ভ্রূর ভাঁজে মেঘ রেখে
বুজে থাকে চোখ অন্ধত্বের ভানে।
দেয়ালের ওপাশে দুঃখ
উড়তে না পারার ব্যথিত ডানা
ভারি হয়ে আছে পালকের ভারে।
আমার বিশ্বাস।
কষ্ট
চরু হক
কষ্টেরও আছে নিজস্ব রঙ, নিজস্ব গন্ধ।
কষ্ট হলো একটি ফুল
যার পাপড়িগুলো অপরূপ!
তোমার, আমার এবং সমগ্রের মাঝখানে ব্রিজটা
ঈশ্বর নীল রঙ দিয়ে বানিয়েছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে আমি বিষ খাবো
ক্ষমা কর ঈশ্বর,
তোমাকে আহত করতে চাইনি
কিন্তু এই আশ্চর্য ফুলটির মায়াবী সৌন্দর্য
আমাকে পাগল করে তুলেছে!
ঘাসফড়িং তুমি ঘুমচ্ছো?
এত গভীর মগ্ন তোমার ঘুম?
এই পাপড়িটা নাও
একে চুম্বন কর
এর ভেতরে জারিত এক আশ্চর্য জীবন।
দেয়াল
রজব বকশী
এইসব অনিচ্ছার দেয়াল ফুঁড়ে ফোটে না
অধিকারের সুগন্ধি কুসুম
সম্মতির সম্মোহনী চুমু ও আলিঙ্গনে
দুজনের মধ্যে নদী থেকে সমুদ্রের দিকে
বাজে না একলা বাঁশি
বাদকের ফুঁয়ে প্রাণবন্ত সুরের মূর্ছনা
জোরজুলুমে হৃদয় বাগান খাঁখাঁ করে
ভাঙা ব্রিজের মতো পড়ে থাকে দীর্ঘশ্বাস
স্মৃতি ও স্বপ্নের জিরো পয়েন্টে