লালা রুখ সেলিম
মেঘনাদবধ ১২র্র্ র্ ী ১৬র্র্ র্ ২০১৫
কবির আহমেদ মাসুম চিশতি লিখিত ভাষা এবং আঁকার ভাষা নিয়ে যেই নতুন দৃশ্যভাষা নির্মাণের চেষ্টা করছে সেটা মেঘনাদবধ নামে এই প্রর্দশনীতে উপস্থাপন করা হলো। ভাষা, বিশেষ করে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ভাষা বিষয়ে মাসুমের আগ্রহ অনেক দিনের। মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যের সাথে তার পরিচয় ঘটে যখন সে উচ্চমাধ্যমিক পর্বের শিক্ষার্থী। মধুসূদনের ব্যতিক্রমধর্মী জীবন, জীবনের ট্র্যাজেডি, বিদ্রোহ, তাকে আলোড়িত করে। মেঘনাদবধ কাব্যে মধুসূদন মেঘনাদকে নায়ক হিসেবে যেভাবে প্রতিষ্ঠা করেন তা প্রচলিত ধারার সম্পূর্ণ বিপরীত। মেঘনাদ এক ধরনের এন্টি-হিরো, যার জন্য মাসুমের সহানুভূতি জন্মায়।
২০১৪/২০১৫ সাল থেকে মাসুম এই কাব্য নিয়ে ছবি আঁকা শুরু করে। মধুসূদনের বৈপ্লবিক কাব্য বাংলা সাহিত্যে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল; কাব্যে ভাষার বৈভব, বর্ণনায় যে চিত্রকল্পের বিশাল সমাহার ফুটে ওঠে সেটা মাসুম গভীরভাবে অনুভব করে। মধুসূদনের কাব্যে বাংলা ভাষার বিপুল শব্দের সমৃদ্ধ ভা-ার তাকে বিস্মিত করে। মাসুম মেঘনাদবধ আঁকার আগে থেকেই লিখিত ভাষা ও অঙ্কন নিয়ে নিজে চর্চা করে আসছিল। তার কিছু নমুনা এই প্রদর্শনীতে আছে। দৃশ্যশিল্পের ছাত্র অবস্থা থেকেই মাসুম এনিমেশন নিয়ে কাজ করছে। ছবির বই, কার্টুন, এনিমেশন, এগুলিতে লেখা আর ছবি দুই একসাথে ক্রিয়াশীল থেকে রূপায়িত হয়ে নতুন রূপ নির্মাণ করে। ছবি দিয়ে গল্প বলার বিষয়ে তার বরাবরই আগ্রহ। লিখিত ভাষা আর অঙ্কনের মধ্যে পার্থক্য এটাই যে, লিখিত ভাষা বা অক্ষর (যা অঙ্কনও বটে) সবাই চর্চা করে, যার অর্থ সবাই বুঝে। আর ছবি আঁকা সবাই আয়ত্ত করে না। মাসুম জীবনের অনেকটা সময় এই দুই ধরনের লেখা (অক্ষর ও অঙ্কন) এবং এর পরস্পরের মিথস্ক্রিয়া নিয়ে দৃশ্যশিল্প নির্মাণ করেছে। লেখা যেখানে আঁকা আর আঁকাও হতে পারে লেখা, সেটা পাঠের মাধ্যমে। মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যের বর্ণনার বিভা যেন মাসুমের গল্প বলার, বর্ণনা করার বিশাল এক ভা-ার খুলে দিয়েছে।
মধুসূদনের কল্পিত চিত্ররূপ মাসুমকে তার অঙ্কনের গভীর সংবেদনশীলতা প্রকাশের সুযোগ ঘটিয়ে দেয়। মাসুম মধুসূদনের লেখার সাথে জুড়ে দিল নিজের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ নানান ছবি। বৃষ্টির রূপায়নে হোক- সাইয়ের ছবি, যুদ্ধের আবহতে আধুনিক বিমান, ট্যাংক ইত্যাদি। তার দেখা করোলা লতা, দেয়ালের টিকটিকি এগুলিও চলে এলো মেঘনাদবধের জটিল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে। এখানে মধুসূদনের মহাকাব্যিক রচনা, বিস্তারিত অতিকথনের কাল্পনিক জগৎ, তাকে সুযোগ করে দিলো বিভিন্ন উপাদান যুক্ত করে তার নিজের মহাকাব্যিক রচনা নির্মাণে। যেখানে মধুসূদনের লেখা আর মাসুমের নিজের আঁকা/লেখা- দুই রূপান্তরিত হয়ে নির্মাণ করেছে একটা নতুন উপাখ্যান।
লালা রুখ সেলিম
মেঘনাদবধ ১২র্র্ র্ ী ১৬র্র্ র্ ২০১৫
শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
কবির আহমেদ মাসুম চিশতি লিখিত ভাষা এবং আঁকার ভাষা নিয়ে যেই নতুন দৃশ্যভাষা নির্মাণের চেষ্টা করছে সেটা মেঘনাদবধ নামে এই প্রর্দশনীতে উপস্থাপন করা হলো। ভাষা, বিশেষ করে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ভাষা বিষয়ে মাসুমের আগ্রহ অনেক দিনের। মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যের সাথে তার পরিচয় ঘটে যখন সে উচ্চমাধ্যমিক পর্বের শিক্ষার্থী। মধুসূদনের ব্যতিক্রমধর্মী জীবন, জীবনের ট্র্যাজেডি, বিদ্রোহ, তাকে আলোড়িত করে। মেঘনাদবধ কাব্যে মধুসূদন মেঘনাদকে নায়ক হিসেবে যেভাবে প্রতিষ্ঠা করেন তা প্রচলিত ধারার সম্পূর্ণ বিপরীত। মেঘনাদ এক ধরনের এন্টি-হিরো, যার জন্য মাসুমের সহানুভূতি জন্মায়।
২০১৪/২০১৫ সাল থেকে মাসুম এই কাব্য নিয়ে ছবি আঁকা শুরু করে। মধুসূদনের বৈপ্লবিক কাব্য বাংলা সাহিত্যে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল; কাব্যে ভাষার বৈভব, বর্ণনায় যে চিত্রকল্পের বিশাল সমাহার ফুটে ওঠে সেটা মাসুম গভীরভাবে অনুভব করে। মধুসূদনের কাব্যে বাংলা ভাষার বিপুল শব্দের সমৃদ্ধ ভা-ার তাকে বিস্মিত করে। মাসুম মেঘনাদবধ আঁকার আগে থেকেই লিখিত ভাষা ও অঙ্কন নিয়ে নিজে চর্চা করে আসছিল। তার কিছু নমুনা এই প্রদর্শনীতে আছে। দৃশ্যশিল্পের ছাত্র অবস্থা থেকেই মাসুম এনিমেশন নিয়ে কাজ করছে। ছবির বই, কার্টুন, এনিমেশন, এগুলিতে লেখা আর ছবি দুই একসাথে ক্রিয়াশীল থেকে রূপায়িত হয়ে নতুন রূপ নির্মাণ করে। ছবি দিয়ে গল্প বলার বিষয়ে তার বরাবরই আগ্রহ। লিখিত ভাষা আর অঙ্কনের মধ্যে পার্থক্য এটাই যে, লিখিত ভাষা বা অক্ষর (যা অঙ্কনও বটে) সবাই চর্চা করে, যার অর্থ সবাই বুঝে। আর ছবি আঁকা সবাই আয়ত্ত করে না। মাসুম জীবনের অনেকটা সময় এই দুই ধরনের লেখা (অক্ষর ও অঙ্কন) এবং এর পরস্পরের মিথস্ক্রিয়া নিয়ে দৃশ্যশিল্প নির্মাণ করেছে। লেখা যেখানে আঁকা আর আঁকাও হতে পারে লেখা, সেটা পাঠের মাধ্যমে। মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্যের বর্ণনার বিভা যেন মাসুমের গল্প বলার, বর্ণনা করার বিশাল এক ভা-ার খুলে দিয়েছে।
মধুসূদনের কল্পিত চিত্ররূপ মাসুমকে তার অঙ্কনের গভীর সংবেদনশীলতা প্রকাশের সুযোগ ঘটিয়ে দেয়। মাসুম মধুসূদনের লেখার সাথে জুড়ে দিল নিজের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ নানান ছবি। বৃষ্টির রূপায়নে হোক- সাইয়ের ছবি, যুদ্ধের আবহতে আধুনিক বিমান, ট্যাংক ইত্যাদি। তার দেখা করোলা লতা, দেয়ালের টিকটিকি এগুলিও চলে এলো মেঘনাদবধের জটিল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে। এখানে মধুসূদনের মহাকাব্যিক রচনা, বিস্তারিত অতিকথনের কাল্পনিক জগৎ, তাকে সুযোগ করে দিলো বিভিন্ন উপাদান যুক্ত করে তার নিজের মহাকাব্যিক রচনা নির্মাণে। যেখানে মধুসূদনের লেখা আর মাসুমের নিজের আঁকা/লেখা- দুই রূপান্তরিত হয়ে নির্মাণ করেছে একটা নতুন উপাখ্যান।