alt

সড়কে চালকদের হয়রানির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর : মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাদারীপুরের সড়কে জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ না দিলে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। অবশ্য ট্রাফিক পুলিশ বলছে, তাদেরকে হেয় করার জন্য এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। গাড়ির কাগজপত্র সঠিক না থাকলে, ট্রাফিক আইন না মানলেই পুলিশ মামলা দিচ্ছে। ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে, জেলার মটরসাইকেল চালকদের শুধু হয়রানি করে পুলিশ কিন্তু জেলার অধিকাংশ বাস, মিনিবাস ও ট্রাকের মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করলেও পুলিশ এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরিবহনগুলোকে কখনোই জরিমানা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন মাদারীপুর শহরে দেখা গেছে, রোববার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ডাসার-পাথুরিয়ারপাড় সড়কের আলীয়া মাদ্রাসার কাছে ইটেরপুল পুলিশ ফাঁড়ির একদল সদস্য সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে মটরসাইকেল আসতে দেখলেই বাঁশের লাঠি দিয়ে গাড়ির থামায়। গাড়ির কাগজপত্রে সামান্য ত্রুটি পেলেই গাড়ি আটকে রাখে। কিছু বকশিস পেলে ছেড়ে দেয়। একই অবস্থা দেখা গেছে, ওই দিনই সকালে ইটেরপুলে তিন রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের একদল সদস্যরা চেক পোষ্ট বসিয়ে শুধু মাত্র মটরসাইকেল চালকদের গতিরোধ করে সামান্য ভুলত্রুটি পেলেই মামলা দিচেছ। কিংবা গাড়ি আটকে রেখে বকশিসের বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে অবৈধ পার্কিং, যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা, লোকজন উল্টো পথে চলা, রুট পারমিটবিহীন ও ফিটনেসবিহীন বাস গাড়ি চলাচল করলেও এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশের কোন আগ্রহ নেই। তাদের আগ্রহ মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা ও হয়রানি করা। অথচ গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলার কারণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। ট্রাফিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলার কারণে যানজট বৃদ্ধি পেলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রাফিক পুলিশের আগ্রহ যেন মামলাতেই বেশি দেখা যাচ্ছে।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে মাদারীপুরে মটর সাইকেলের বিরুদ্ধে ২ হাজার চার শত ৭১টি মামলা হয়েছে। অবৈধ যানবাহন নসিমন, করিমন, টলী, থ্রি হুইলার মাত্র ৬৪টি আটক রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে মোটরসাইকেল আটক রয়েছে ২ হাজার ০৪২টি, মোটরসাইকেলের মামলার জরিমানা করা হয়েছে ৭৯ লাখ ৬২ হাজার ৮ শত টাকা। অন্য যানবাহনের মামলার জরিমানা হয়েছে ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ মাদারীপুরে অর্ধশাধিক ফিটনেসবিহীন বাস, মিনিবাস, ট্রাক, মিনিট্রাক গাড়ি চলাচল করলেও একটিও আটক কিংবা জরিমানা করা হয়নি।

ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, মাদারীপুরে গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অনভিজ্ঞ ও মেয়াদবিহীন লাইসেন্সের চালক সবাই যেন নেমে পড়ে সড়কে। এ সব কারণে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। যার কারণে চালকরা বলছে, এ সব হলো অতিরিক্ত মামলা।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকার মোটরসাইকেল চালক মোহম্মদ রায়হান বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক আছে। তারপরও পুলিশ আমাকে শুধু শুধু মামলার ভয় দেখিয়ে এক হাজার টাকা নিয়েছে।

সাকিব হাসান নামের আরেক এক মটরসাইকেল চালক বলেন, আমরা গ্রামের রাস্তায় মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। সেই গ্রামে এসে আমাদের মটর সাইকেল বিভিন্ন অজুহাতে আটক করে টাকা আদায় করে। সারাদিন শেষে আমরা ৫০০-৭০০ টাকা পাই। অথচ একবার পুলিশে ধরলেই আমাদের দুই তিন হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমন করলে কিভাবে আমরা সংসার চালাবো।

শহরের ইটেরপুল এলাকায় নিয়ম মেনে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন মোটরসাইকেল চালক ও শিক্ষার্থী হাবিব আকন। পুলিশ তাকে থামিয়ে কাগজপত্র হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করে আগের কোনো মামলা আছে কি না ? জবাব দেওয়ার আগেই এক হাজার টাকার মামলা দেওয়ার কথা বলে দুই হাজার টাকার মামলা দেয়। এর পর হাবিব আকন ওই ট্রাফিকের কাছে তার অপরাধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় চললে মাঝে মাঝে এমন মামলা হয়।

মাদারীপুর উন্নায়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, যারা মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা বেশি দেয়া হয়। এমন অভিযোগ আমরা প্রায়ই শুনি। পুলিশের আরও মানবিক হওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ পুলিশের প্রতি ক্ষুব্ধ। যানজট নিরসনের চেয়ে পুলিশ বেশি ব্যস্ত থাকেন মামলা দিয়ে হয়রানি করাতে। অথচ সকাল বিকাল শহরের মধ্যে যানজট লেগেই থাকে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খতিয়ে দেখা উচিত।

মাদারীপুরে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট জুলফিকার বলেন, চালকরা অন্যায় বা অনিয়ম করলে আমরা মামলা দিয়ে থাকি। আরেক ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট যাকারিয়া বলেন, রাস্তায় অনিয়ম করলে মামলা দেওয়া হয়। কোনো গাড়িকে টার্গেট করে মামলা দেওয়া হয় না। তিনি আরো বলেন পুলিশকে হেয় করার জন্য এই প্রচারণটা চলেই আসছে। পুলিশ ইচ্ছা করে মামলা দেয় না। চালকরা অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর ট্রাফিক পুলিশের বাইরে থানা বা ফাঁড়ির পুলিশ রাস্তা ঘাটে যদি কোন অনিয়ম করে থাকে সে বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

তবে এসব অভিযোগের ব্যপারে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সড়কে ঘুষ বাণিজ্য হওয়ার কথা নয়। যদি এমনটা ঘটে তাহলে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছবি

ভবানীপুর স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক লাঞ্ছিত

ছবি

কেশবপুরে আদালতে বিপক্ষে সাক্ষী দেয়ায় পোল্ট্রি খামার ভাঙচুর

ছবি

পিবিআই’র হাজতখানা থেকে আসামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ছবি

শেরপুরে ৯১টি মন্ডপে দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি

ছবি

একসঙ্গে ৪ শিশুর জন্ম চমেক হাসপাতালে, মা-শিশু সবাই সুস্থ

ছবি

বেগুন খেতে মোজাইক ভাইরাস, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ছবি

আসন পুনর্বিন্যাস: ভাঙ্গায় অবরোধ তুলে নিলেন আন্দোলনকারীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক

ছবি

আসন ফিরে পেতে বাগেরহাটে নির্বাচন অফিস ঘেরাও, উচ্চ আদালতে রিট

ছবি

মোরেলগঞ্জে থোকায় থোকায় ঝুলছে মাল্টা, সফল উদ্যোক্তা বাশার

ছবি

আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৮ জন

ছবি

বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে সিলেট, শঙ্কা প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ফ্ল্যাট বাসা থেকে একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার

মাধবপুরে পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত ৬, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নাইক্ষ্যংছড়িতে রাবার বাগানের গাছ থেকে শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বাড়ছে নদীর পানি, সিলেটে বন্যার আভাস

সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসা শিক্ষকের শরীর টিপে না দেয়ায় ছাত্রকে আটক রেখে নির্যাতন

ফ্যানে ঝুলছিলেন যুবক, খাটে স্ত্রী-সন্তানের মরদেহ, আর্থিক দুরাবস্থায় ছিল পরিবারটি

ছবি

বিরামপুরে কুকুরে কামড়ানো সগাভীর মাংস বিক্রির চেষ্টা

ছবি

রায়পুরায় ভিডব্লিউবি উপকার ভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ

ছবি

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর নতুন ঘর পেলেন মোজাম্মেল-জহুরা দম্পতি

ছবি

আদমদীঘিতে তিন মাদক ব্যবসায়ি আটক

ছবি

রাঙাছড়া সেতু যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

বাঁশবোঝাই ট্রাকে বাসের ধাক্কা, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৩

ছবি

উদ্বোধনের দিনই বিকল বেরোবি ভাড়া বাস

ছবি

কেন্দুয়া থেকে তিন নারীকে চীনে পাচারের চেষ্টা, আটক ২

ছবি

সারিয়াকান্দিতে বিনা মূল্যে গরু বিতরণ

ছবি

পূর্বধলায় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির সমন্বয় সভা

ছবি

কেশবপুর-কলাগাছি সড়ক বেহাল, ঘটছে দুর্ঘটনা

ছবি

মধুপুরে লাল মাটিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের পেঁপে চাষে লাভবান কৃষক

ছবি

গোবিপ্রবি ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদককে দুই সেমিস্টার বহিষ্কার

ছবি

বর্ষা মৌসুমেও দেশীয় মাছের আকাল

ছবি

পদ্মার ভাঙনে চর ছাড়ছেন বাসিন্দারা মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার শঙ্কা

ছবি

নদী খননের মাটি মজুদ রাখা নিয়ে উত্তেজনা

ছবি

রংপুরে প্রাণি সম্পদ উপদেষ্টার উপস্থিতিতে প্রেজেনটেশনে শেখ মুজিব ও হাসিনার ছবি

ছবি

আড়াইহাজারে ছাত্রলীগ নেতা রবিন গ্রেপ্তার

ছবি

রায়পুরায় ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা

tab

সড়কে চালকদের হয়রানির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মাদারীপুরের সড়কে জেলা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ঘুষ না দিলে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। অবশ্য ট্রাফিক পুলিশ বলছে, তাদেরকে হেয় করার জন্য এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। গাড়ির কাগজপত্র সঠিক না থাকলে, ট্রাফিক আইন না মানলেই পুলিশ মামলা দিচ্ছে। ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে, জেলার মটরসাইকেল চালকদের শুধু হয়রানি করে পুলিশ কিন্তু জেলার অধিকাংশ বাস, মিনিবাস ও ট্রাকের মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চলাচল করলেও পুলিশ এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিদের পরিবহনগুলোকে কখনোই জরিমানা করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন মাদারীপুর শহরে দেখা গেছে, রোববার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ডাসার-পাথুরিয়ারপাড় সড়কের আলীয়া মাদ্রাসার কাছে ইটেরপুল পুলিশ ফাঁড়ির একদল সদস্য সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে মটরসাইকেল আসতে দেখলেই বাঁশের লাঠি দিয়ে গাড়ির থামায়। গাড়ির কাগজপত্রে সামান্য ত্রুটি পেলেই গাড়ি আটকে রাখে। কিছু বকশিস পেলে ছেড়ে দেয়। একই অবস্থা দেখা গেছে, ওই দিনই সকালে ইটেরপুলে তিন রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের একদল সদস্যরা চেক পোষ্ট বসিয়ে শুধু মাত্র মটরসাইকেল চালকদের গতিরোধ করে সামান্য ভুলত্রুটি পেলেই মামলা দিচেছ। কিংবা গাড়ি আটকে রেখে বকশিসের বিনিময়ে ছেড়ে দিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে অবৈধ পার্কিং, যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা, লোকজন উল্টো পথে চলা, রুট পারমিটবিহীন ও ফিটনেসবিহীন বাস গাড়ি চলাচল করলেও এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক পুলিশের কোন আগ্রহ নেই। তাদের আগ্রহ মটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা ও হয়রানি করা। অথচ গণপরিবহনের বিশৃঙ্খলার কারণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। ট্রাফিক ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলার কারণে যানজট বৃদ্ধি পেলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রাফিক পুলিশের আগ্রহ যেন মামলাতেই বেশি দেখা যাচ্ছে।

জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে মাদারীপুরে মটর সাইকেলের বিরুদ্ধে ২ হাজার চার শত ৭১টি মামলা হয়েছে। অবৈধ যানবাহন নসিমন, করিমন, টলী, থ্রি হুইলার মাত্র ৬৪টি আটক রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে মোটরসাইকেল আটক রয়েছে ২ হাজার ০৪২টি, মোটরসাইকেলের মামলার জরিমানা করা হয়েছে ৭৯ লাখ ৬২ হাজার ৮ শত টাকা। অন্য যানবাহনের মামলার জরিমানা হয়েছে ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ মাদারীপুরে অর্ধশাধিক ফিটনেসবিহীন বাস, মিনিবাস, ট্রাক, মিনিট্রাক গাড়ি চলাচল করলেও একটিও আটক কিংবা জরিমানা করা হয়নি।

ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, মাদারীপুরে গাড়ির সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, যা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অনভিজ্ঞ ও মেয়াদবিহীন লাইসেন্সের চালক সবাই যেন নেমে পড়ে সড়কে। এ সব কারণে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। যার কারণে চালকরা বলছে, এ সব হলো অতিরিক্ত মামলা।

মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকার মোটরসাইকেল চালক মোহম্মদ রায়হান বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র সব ঠিক আছে। তারপরও পুলিশ আমাকে শুধু শুধু মামলার ভয় দেখিয়ে এক হাজার টাকা নিয়েছে।

সাকিব হাসান নামের আরেক এক মটরসাইকেল চালক বলেন, আমরা গ্রামের রাস্তায় মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। সেই গ্রামে এসে আমাদের মটর সাইকেল বিভিন্ন অজুহাতে আটক করে টাকা আদায় করে। সারাদিন শেষে আমরা ৫০০-৭০০ টাকা পাই। অথচ একবার পুলিশে ধরলেই আমাদের দুই তিন হাজার টাকা নিয়ে যায়। এমন করলে কিভাবে আমরা সংসার চালাবো।

শহরের ইটেরপুল এলাকায় নিয়ম মেনে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন মোটরসাইকেল চালক ও শিক্ষার্থী হাবিব আকন। পুলিশ তাকে থামিয়ে কাগজপত্র হাতে নিয়ে জিজ্ঞেস করে আগের কোনো মামলা আছে কি না ? জবাব দেওয়ার আগেই এক হাজার টাকার মামলা দেওয়ার কথা বলে দুই হাজার টাকার মামলা দেয়। এর পর হাবিব আকন ওই ট্রাফিকের কাছে তার অপরাধ জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তায় চললে মাঝে মাঝে এমন মামলা হয়।

মাদারীপুর উন্নায়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, যারা মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা বেশি দেয়া হয়। এমন অভিযোগ আমরা প্রায়ই শুনি। পুলিশের আরও মানবিক হওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ পুলিশের প্রতি ক্ষুব্ধ। যানজট নিরসনের চেয়ে পুলিশ বেশি ব্যস্ত থাকেন মামলা দিয়ে হয়রানি করাতে। অথচ সকাল বিকাল শহরের মধ্যে যানজট লেগেই থাকে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খতিয়ে দেখা উচিত।

মাদারীপুরে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট জুলফিকার বলেন, চালকরা অন্যায় বা অনিয়ম করলে আমরা মামলা দিয়ে থাকি। আরেক ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট যাকারিয়া বলেন, রাস্তায় অনিয়ম করলে মামলা দেওয়া হয়। কোনো গাড়িকে টার্গেট করে মামলা দেওয়া হয় না। তিনি আরো বলেন পুলিশকে হেয় করার জন্য এই প্রচারণটা চলেই আসছে। পুলিশ ইচ্ছা করে মামলা দেয় না। চালকরা অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আর ট্রাফিক পুলিশের বাইরে থানা বা ফাঁড়ির পুলিশ রাস্তা ঘাটে যদি কোন অনিয়ম করে থাকে সে বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

তবে এসব অভিযোগের ব্যপারে মাদারীপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সড়কে ঘুষ বাণিজ্য হওয়ার কথা নয়। যদি এমনটা ঘটে তাহলে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

back to top