alt

টানা বৃষ্টি, কমবে তাপমাত্রা, বাড়বে শীত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

দিনভর বৃষ্টি, দুর্ভোগে রাজধানীবাসী। এই অবস্থায় ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে বৃষ্টিতে ভিজে টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার শান্তিনগর থেকে তোলা -সোহরাব আলম

গত বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিনভর বৃষ্টির পরও থামার লক্ষণ ছিল না, টিপটিপ করে ঝরছে তা দিনভর। ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশেই চলছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, আবার কোথাও হচ্ছে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিও হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি ঝরছে, থেকে থেকে বয়ে যাচ্ছে ঠান্ডা বাতাস। লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থান করছে।

বিশেষজ্ঞদের মত, আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে বা একটু বেলা বাড়লেই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বর্তমানে এটি গুরুত্বহীন মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

তারা আরও জানায়, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে আকাশে যে সঞ্চারণশীল মেঘের সৃষ্টি হয়েছিল তারই প্রভাবে এই বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার (আজ) বৃষ্টি কিছুটা কমে আসতে পারে। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টির কারণে নদীবন্দর গুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত আগের মতোই দেখাতে বলা হয়েছে।

তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে কমবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) সকালের মধ্যে তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কেবল রাতের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।’

তবে, আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা ‘কমতে শুরু করবে’ বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।

তিনি বলেন,‘আমরা মনে করছি, তাপমাত্রা কমতে কমতে চলতি মাসে একবার অথবা দুবার দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যেতে পারে। এটি ডিসেম্বরের শেষ ভাগে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, এই বৃষ্টির ধারা আগামীকাল (আজ) সারাদেশে বর্ষিত হবে। শনিবার থেকে বৃষ্টি কমে আসবে। সম্ভবত রোববার থেকে মেঘ কেটে মুখ দেখাবে সূর্য। ধরণি রোদের স্পর্শ পেলেও শুরু হবে শীতের প্রভাব। তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমে যাবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা তারপর আপাতত নেই। তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে কমতে জেঁকে বসবে শীত।

মাসের শেষ ভাগে ‘শৈত্যপ্রবাহ’

সাধারণত জুন-জুলাই মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এবার বাংলাদেশে এই দুই মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল তুলনামূলক কম। অক্টোবর-নভেম্বরের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবরে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫ দশমিক এক শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। নভেম্বরে চার বিভাগে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৫ দশমিক আট শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

বর্ষার অস্বাভাবিক আচরণে এবার শীত প্রায় স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘এবার শুরু থেকেই বর্ষার আচরণ আনইউজুয়াল। সেই কারণে আমরা মনে করছি, শীত যেমন পড়ার কথা তেমন পড়বে না। তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকবে।’

এবার শীত খানিকটা দেরিতেই আসছে। কেন? আবদুর রহমান জানান, কারণ এই শক্তিশালী মিগজাউম। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই আবহাওয়ায় শীতের প্রভাব কম পড়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমতে কমতে শেষ হয়ে যাবে এবং প্রবল হয়ে উঠবে শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ ভাগেই কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ তাপমাত্রা ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘ডিসেম্বরে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকবে।’

‘মিগজাউম’ নামটি মায়ানমারের দেয়া। এটি একটি বর্মি শব্দ। গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ২ ডিসেম্বর নিম্নচাপে এবং পরের দিন ৩ ডিসেম্বর গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় ধেয়ে আসে। রূপ নেয় মিগজাউম নামের ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, মিগজাউম এখন ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের দিকে সরে গেছে। আর গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। তবে তার প্রভাব যে একেবারে কাটেনি, তার প্রমাণ মিলছে এই মেঘ-বৃষ্টিতে।

বৃষ্টিতে রাজধানীতে যানজট-ভোগান্তি, রিকশা সিএনজির ভাড়া দ্বিগুণ

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীতে পড়ছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে নগরবাসীর জীবনে বাড়তি দুর্ভোগ যোগ হয়েছে। এসব কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অফিসমুখী লোকজন ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। অবরোধের কারণেও রাজধানীর কিছু পয়েন্টে যানজট দেখা গেছে। রাজধানীর বাংলামোটর, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, বিজয় সরণি ও আসাদগেট পয়েন্টে বাড়তি যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এসব রাস্তায় চলাচল করা যাত্রীদের যানজট ঠেলে বৃষ্টিতে কাঁকভেজা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে।

কল্যাণপুর থেকে মৎস্য ভবন আসা তরিকুল সুমন বলেন, বৃষ্টির জন্য কিছু জায়গায় গাড়ি চলেছে ধীরগতিতে। যখন সাইন্স ল্যাবে আধা ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। একারণে সাহাবাগে ঢুকতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।

এছাড়া বৃষ্টিতে যারা রিকশায় চড়ে কিংবা ছাতা মাথায় দিয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন তাদেরও ভোগান্তির কমতি নেই। বৃষ্টিতে সিএনজি, রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে। শাহবাগ থেকে নিউমার্কেট যাবেন লুবনা ইসলাম। এই পথে ভাড়া সর্বোচ্চ ৪০ টাকা হলেও আজ নিচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। তিনি বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি আমাদের। কিছু রিকশাচালক, সিএনজিচালক পেয়ে বসে। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়।’

প্রতিদিন ধানমন্ডি থেকে কারওয়ান বাজার রিকশায় যাতায়াত করেন লোপা রহমান। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ১০০ টাকা হলেও আজ দ্বিগুণ ভাড়া ২০০ টাকা দিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে আশপাশে যাত্রী তুলছে না রিকশা চালকরা। একটু দূরের লোকজন ছাড়া যাত্রী তুলতে চাইছেন না তারা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, দূরের ভাড়া বেশি, তাই পরিবহন সংকট থাকাকালীন কাছের যাত্রী না তুলে তার দূরের যাত্রী নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে রিকশাচালক সবুজ মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘অবরোধ আর বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে সড়কে বাস অল্প। দলে দলে যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু বাস পাচ্ছে না। তাই সবাই রিকশাতেই যাচ্ছে। এ সুযোগে আমরাও দূরের যাত্রী নিচ্ছি, কারণ দূরে ভাড়া বেশি।’

সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ নিয়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক কর্মকর্তা নিউটন বলেন, বৃষ্টির জন্য দুপুরের দিকে সড়কে যানবাহনের কিছুটা চাপ ছিল। দুপুরে যানজট থাকলেও এখন তেমন গাড়ির চাপ নেই। বৃষ্টির জন্য কিছু কিছু জায়গায় গাড়ি ধীরগতি হয়েছে।

সোনারগাঁয়ে শিক্ষার্থী হত্যাকারীদের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ

জামালপুরে সার ডিলার নিয়োগে নতুন নীতিমালা বাতিলের দাবীতে মানববন্ধন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজিবির অভিযানে ১২ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

কাদিরদী বাজারে অগ্নিকান্ডে ১৭টি দোকান পুড়ে ছাই

সুনামগঞ্জে আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবসে নারী সমাবেশ ও পিঠা উৎসব

যাদের হাতে উঠলো এবারের সিজেএফবি অ্যাওয়ার্ড

পুরস্কারের প্রলোভনে নিঃস্ব সাধারণ মানুষ

চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হবে

দোহার ইলিশ শিকারের অপরাধে ২১ জেলে আটক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে গলায় ওড়না প্যাঁচানো যুবকের লাশ উদ্ধার

কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ৪৮ ঘণ্টা পর জেলের মরদেহ উদ্ধার

চাঁদপুরে দেশিয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

কেশবপুরে জমি নিয়ে বিবাদে শিশুসহ আহত ৭

জয়পুরহাটে মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত এক

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

বোয়ালখালীতে পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধন আড়াই লাখ টাকা ক্ষতি

মানিকগঞ্জের রাস্তার ধারে লক্ষ লক্ষ টাকার আঁখ বিক্রি

গারো সম্প্রদায়ের সংসারেক ঐতিহ্যের ওয়ান্না উৎসব

পবিপ্রবিতে ইউসিজি চেয়ারম্যানের মতবিনিময় ও ব্যামাগারের উদ্বোধন

ডিমলায় ভূমি অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ির বাড়তি মাশুল স্থগিত

মহম্মদপুরের অধ্যক্ষ এস এম ইউনুচ আলী পেলেন গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড

সদরপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স অনিয়ম দুর্নীতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত

ঈদগাঁও উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে ৬ বালু মহাল জব্দ

ঝালকাঠিতে ঝুঁকির মধ্যে চলছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবা

ঘোড়াঘাটে বিপন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় প্রশাসনের অভিযানে জাল জব্দ

সলঙ্গায় ডোবা থেকে কঙ্কাল উদ্ধার

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষক নিহত

গোবিন্দগঞ্জে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত গুচ্ছগ্রাম এক রাতে উধাও

ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞায় দশমিনায় জেলে পরিবারগুলোতে দুর্দিন

ত্রিশালে খুচরা সার বিক্রেতাদের মানববন্ধন

সিরাজদিখানে গাছে ঝুলছে পল্লী বিদ্যুতের মিটার

পার্বতীপুরে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন, ভোগান্তিতে ৮০ হাজার গ্রাহক

১২ বছর ধরে শিকলবন্দী ভাইবোন এখন মুক্ত

কলমাকান্দায় গাঁজা গাছসহ একব্যক্তি আটক

tab

টানা বৃষ্টি, কমবে তাপমাত্রা, বাড়বে শীত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

দিনভর বৃষ্টি, দুর্ভোগে রাজধানীবাসী। এই অবস্থায় ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে বৃষ্টিতে ভিজে টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ অপেক্ষা। বৃহস্পতিবার শান্তিনগর থেকে তোলা -সোহরাব আলম

বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

গত বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দিনভর বৃষ্টির পরও থামার লক্ষণ ছিল না, টিপটিপ করে ঝরছে তা দিনভর। ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশেই চলছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি, আবার কোথাও হচ্ছে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিও হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি ঝরছে, থেকে থেকে বয়ে যাচ্ছে ঠান্ডা বাতাস। লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও এর আশে পাশের এলাকায় অবস্থান করছে।

বিশেষজ্ঞদের মত, আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে বা একটু বেলা বাড়লেই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বর্তমানে এটি গুরুত্বহীন মনে করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পূর্ব-দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

তারা আরও জানায়, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে আকাশে যে সঞ্চারণশীল মেঘের সৃষ্টি হয়েছিল তারই প্রভাবে এই বৃষ্টি হচ্ছে। শুক্রবার (আজ) বৃষ্টি কিছুটা কমে আসতে পারে। অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টির কারণে নদীবন্দর গুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত আগের মতোই দেখাতে বলা হয়েছে।

তবে আকাশ মেঘলা থাকবে। টানা বৃষ্টির কারণে কমবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা। বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) সকালের মধ্যে তাপমাত্রা দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে। সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কেবল রাতের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।’

তবে, আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা ‘কমতে শুরু করবে’ বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।

তিনি বলেন,‘আমরা মনে করছি, তাপমাত্রা কমতে কমতে চলতি মাসে একবার অথবা দুবার দেশের কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যেতে পারে। এটি ডিসেম্বরের শেষ ভাগে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান, এই বৃষ্টির ধারা আগামীকাল (আজ) সারাদেশে বর্ষিত হবে। শনিবার থেকে বৃষ্টি কমে আসবে। সম্ভবত রোববার থেকে মেঘ কেটে মুখ দেখাবে সূর্য। ধরণি রোদের স্পর্শ পেলেও শুরু হবে শীতের প্রভাব। তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমে যাবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা তারপর আপাতত নেই। তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে কমতে জেঁকে বসবে শীত।

মাসের শেষ ভাগে ‘শৈত্যপ্রবাহ’

সাধারণত জুন-জুলাই মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়। এবার বাংলাদেশে এই দুই মাসে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল তুলনামূলক কম। অক্টোবর-নভেম্বরের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অক্টোবরে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫ দশমিক এক শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। নভেম্বরে চার বিভাগে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সার্বিকভাবে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৫ দশমিক আট শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

বর্ষার অস্বাভাবিক আচরণে এবার শীত প্রায় স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ‘এবার শুরু থেকেই বর্ষার আচরণ আনইউজুয়াল। সেই কারণে আমরা মনে করছি, শীত যেমন পড়ার কথা তেমন পড়বে না। তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকবে।’

এবার শীত খানিকটা দেরিতেই আসছে। কেন? আবদুর রহমান জানান, কারণ এই শক্তিশালী মিগজাউম। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই আবহাওয়ায় শীতের প্রভাব কম পড়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমতে কমতে শেষ হয়ে যাবে এবং প্রবল হয়ে উঠবে শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর তাদের দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ ভাগেই কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ তাপমাত্রা ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে। আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘ডিসেম্বরে দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকবে।’

‘মিগজাউম’ নামটি মায়ানমারের দেয়া। এটি একটি বর্মি শব্দ। গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ২ ডিসেম্বর নিম্নচাপে এবং পরের দিন ৩ ডিসেম্বর গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় ধেয়ে আসে। রূপ নেয় মিগজাউম নামের ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, মিগজাউম এখন ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের দিকে সরে গেছে। আর গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। তবে তার প্রভাব যে একেবারে কাটেনি, তার প্রমাণ মিলছে এই মেঘ-বৃষ্টিতে।

বৃষ্টিতে রাজধানীতে যানজট-ভোগান্তি, রিকশা সিএনজির ভাড়া দ্বিগুণ

বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীতে পড়ছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে নগরবাসীর জীবনে বাড়তি দুর্ভোগ যোগ হয়েছে। এসব কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে অফিসমুখী লোকজন ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের। অবরোধের কারণেও রাজধানীর কিছু পয়েন্টে যানজট দেখা গেছে। রাজধানীর বাংলামোটর, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব, বিজয় সরণি ও আসাদগেট পয়েন্টে বাড়তি যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। এসব রাস্তায় চলাচল করা যাত্রীদের যানজট ঠেলে বৃষ্টিতে কাঁকভেজা হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে।

কল্যাণপুর থেকে মৎস্য ভবন আসা তরিকুল সুমন বলেন, বৃষ্টির জন্য কিছু জায়গায় গাড়ি চলেছে ধীরগতিতে। যখন সাইন্স ল্যাবে আধা ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। একারণে সাহাবাগে ঢুকতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।

এছাড়া বৃষ্টিতে যারা রিকশায় চড়ে কিংবা ছাতা মাথায় দিয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন তাদেরও ভোগান্তির কমতি নেই। বৃষ্টিতে সিএনজি, রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে। শাহবাগ থেকে নিউমার্কেট যাবেন লুবনা ইসলাম। এই পথে ভাড়া সর্বোচ্চ ৪০ টাকা হলেও আজ নিচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। তিনি বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই ভোগান্তি আমাদের। কিছু রিকশাচালক, সিএনজিচালক পেয়ে বসে। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়।’

প্রতিদিন ধানমন্ডি থেকে কারওয়ান বাজার রিকশায় যাতায়াত করেন লোপা রহমান। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে ভাড়া ১০০ টাকা হলেও আজ দ্বিগুণ ভাড়া ২০০ টাকা দিয়ে এসেছেন।

অন্যদিকে আশপাশে যাত্রী তুলছে না রিকশা চালকরা। একটু দূরের লোকজন ছাড়া যাত্রী তুলতে চাইছেন না তারা। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, দূরের ভাড়া বেশি, তাই পরিবহন সংকট থাকাকালীন কাছের যাত্রী না তুলে তার দূরের যাত্রী নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে রিকশাচালক সবুজ মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘অবরোধ আর বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে সড়কে বাস অল্প। দলে দলে যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু বাস পাচ্ছে না। তাই সবাই রিকশাতেই যাচ্ছে। এ সুযোগে আমরাও দূরের যাত্রী নিচ্ছি, কারণ দূরে ভাড়া বেশি।’

সড়কে বাড়তি যানবাহনের চাপ নিয়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক কর্মকর্তা নিউটন বলেন, বৃষ্টির জন্য দুপুরের দিকে সড়কে যানবাহনের কিছুটা চাপ ছিল। দুপুরে যানজট থাকলেও এখন তেমন গাড়ির চাপ নেই। বৃষ্টির জন্য কিছু কিছু জায়গায় গাড়ি ধীরগতি হয়েছে।

back to top