alt

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা

প্রতিনিধি, সাপাহার (নওগাঁ) : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

দেশের আম উৎপাদনে শীর্ষে থাকা এবং আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলায় সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় ব্যাপক হারে মাটিতে ঝরে পড়ছে কৃষকের স্বপ্নের আমের গুটি। তীব্র খরা আর টানা বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো।

সারাদেশের ন্যায় এই উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পূরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচণ্ড রোদ ও গরমের কারণে আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছের গোড়ায় পানি সেচ ব্যবস্থা না থাকায় ঝরে পড়েছে গাছের আম।

উপজেলা বিভিন্ন এলাকার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, তুলনামূলকভাবে এবার আম গাছে কম এসেছে। চলতি মৌসুমে শীতের তীব্রতায় মুকুল দেরিতে আসা এবং কিছু এলাকায় অসময়ে বজ্র বৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুল ও গুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে আম চাষিরা বিশেষভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পানি সেচ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, এবার সাপাহার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শের পাশাপাশি গাছের গোড়ায় পানি সেচ দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে।

উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের আমি চাষি সালেকুর রহমান বলেন, গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক কম। তারপরও মোটামুটি আমের গুটি ভালো এসেছে কিন্তু প্রচণ্ড খরার কারণে আমের গুটিগুলো এখন ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সাপাহার সদর ইউনিয়ন ফুটকইল গ্রামের আমচাষী এহ্তামামুল হক জানান, মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। পরবর্তী সময়ে আমের গুটিও ভালোই ছিল কিন্তু বর্তমানে খরায় গুটি ঝরে পড়ছে ।

এলাকার অনেক আম বাগানীরা জানান, প্রচণ্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারছেন না। তাছাড়া সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাগানে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি জানান, তীব্র তাপদাহের কবল থেকে রক্ষা পেতে আম চাষিদের আম গাছের গোড়ায় বেশি করে পানি দিতে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রোদের তীব্রতা বাড়ার আগেই ছত্রাকনাশক ও বোরর স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।

সাপাহার বাজার আমচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু এলাকায় বাগানে সেচ ব্যবস্থা থাকায় সেচ দেয়া হচ্ছে যার ফলে আমের ফলন ভালো হয়েছে। তাপমাত্রা অনেক বেশি হওয়ায় এই মুহূর্তে গাছের গোড়ায় পানি সেচ এর বিকল্প নেই ।

আশা করছি আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা অনেক কমবে, গুটি ঝরা বন্ধ হবে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন আশা করা যায়।

ছবি

পাহাড়ে বছরে ১২০০ কোটি টাকা চাঁদা আদায়: এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন

ছবি

শার্শায় ইছামতীতে বড়শিতেই ওঠে এলো ১৬ কেজির পাঙাস

জকিগঞ্জে স্থাপনা ভাঙচুর: স্থানীয়দের প্রতিরোধে পিছু হটলো বিএসএফ

ছবি

জমি বিরোধে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় গ্রাম সংঘর্ষে ২৫ জন আহত

ছবি

উলিপুরে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে এসে দিনভর অপেক্ষা করে ফিরে গেলেন পরীক্ষার্থীরা

ছবি

শেরপুরে মাদকসেবীর তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড

ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ে দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে শীতবস্ত্র বিতরণ

ছবি

যশোরে নৈশ প্রহরীকে কুপিয়ে জখম

ছবি

সিরাজদিখানে সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশের মতবিনিময়

ছবি

দুবাই থেকে দেশে ফিরে সিলেটে গ্রেপ্তার, চট্টগ্রামের রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ৫৭ মামলা

ছবি

বাগাতিপাড়ায় নিখোঁজ তাওহিদা জীম ৩ সপ্তাহেও মেলেনি সন্ধান

ছবি

ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ভাঙল শিবগঞ্জের কালভার্ট

ছবি

শেরপুরে টানা বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন ভঙ্গ

ছবি

ঘরে তোলার আগেই নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন ধান

ছবি

লালপুরে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

ছবি

নাসিরনগরে প্রতিবন্ধী শিশু শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচি

ছবি

দুমকিতে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা সেবা

ছবি

‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে নড়াইলে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর

ছবি

ডুবলো ফসল দিশেহারা কৃষক

ছবি

মহাদেবপুরে ভুয়া ভাউচারে স্বাক্ষর না করায় সভাপতিকেই বাদ দিলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ

ছবি

মানিকগঞ্জ টিআরইউর সভাপতি খোরশেদ, সাধারণ সম্পাদক লিটন

ছবি

ডিমলায় কয়েক দিনের দমকা ঝড়ো বৃষ্টিতে আমন ধানসহ শীতকালীন শাকসব্জির ব্যাপক ক্ষতি

ছবি

ভালুকায় ফসলের ক্ষতিপূরণ দাবিতে কৃষকের মানববন্ধন

ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে লোকজ সংস্কৃতি

ছবি

বড়াল নদীতে খেওয়া জাল উৎসবে মেতেছে স্থানীয়রা

ছবি

গলাচিপার টেলিফোন একচেঞ্জ ভবনটি এখন ভূতুড়ে বাড়ি

ছবি

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে পল্লী চিকিৎসকের মৃত্যু

ছবি

ডালিয়া পাউবোর নাকের ডগায় অবৈধ পাথর উত্তোলন

ছবি

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে নদী ভাঙ্গনের নতুন আতঙ্ক

ছবি

দশমিনায় ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে আপেল কূল

ছবি

সাংসারেক ঐতিহ্যের খক মান্দি বৈচিত্র্যময় জীবনধারায় অনন্য

ছবি

চোর সন্দেহে হত্যা ১, আটক ১

ছবি

দুবলার চরে রাস উৎসবে যেতে পারবেন না পর্যটকরা, কঠোর অবস্থানে বনবিভাগ

ছবি

সন্ধ্যা নামলেই জ্বলে ওঠে সড়কবাতি আলোকিত হয়ে ওঠে চান্দপুর গ্রাম

ছবি

উত্তরে বৃষ্টির ছোবল : শীতকালীন ফসলের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কা

ছবি

নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকোই ভরসা

tab

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে বাগান, ঝরছে আম, শঙ্কায় চাষীরা

প্রতিনিধি, সাপাহার (নওগাঁ)

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

দেশের আম উৎপাদনে শীর্ষে থাকা এবং আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলায় সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় ব্যাপক হারে মাটিতে ঝরে পড়ছে কৃষকের স্বপ্নের আমের গুটি। তীব্র খরা আর টানা বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো।

সারাদেশের ন্যায় এই উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পূরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচণ্ড রোদ ও গরমের কারণে আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছের গোড়ায় পানি সেচ ব্যবস্থা না থাকায় ঝরে পড়েছে গাছের আম।

উপজেলা বিভিন্ন এলাকার বাগান ঘুরে দেখা গেছে, তুলনামূলকভাবে এবার আম গাছে কম এসেছে। চলতি মৌসুমে শীতের তীব্রতায় মুকুল দেরিতে আসা এবং কিছু এলাকায় অসময়ে বজ্র বৃষ্টি হওয়ায় আমের মুকুল ও গুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে আম চাষিরা বিশেষভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পানি সেচ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, এবার সাপাহার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শের পাশাপাশি গাছের গোড়ায় পানি সেচ দিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে।

উপজেলার গোয়ালা ইউনিয়নের আমি চাষি সালেকুর রহমান বলেন, গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক কম। তারপরও মোটামুটি আমের গুটি ভালো এসেছে কিন্তু প্রচণ্ড খরার কারণে আমের গুটিগুলো এখন ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সাপাহার সদর ইউনিয়ন ফুটকইল গ্রামের আমচাষী এহ্তামামুল হক জানান, মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। পরবর্তী সময়ে আমের গুটিও ভালোই ছিল কিন্তু বর্তমানে খরায় গুটি ঝরে পড়ছে ।

এলাকার অনেক আম বাগানীরা জানান, প্রচণ্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারছেন না। তাছাড়া সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় বাগানে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি জানান, তীব্র তাপদাহের কবল থেকে রক্ষা পেতে আম চাষিদের আম গাছের গোড়ায় বেশি করে পানি দিতে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রোদের তীব্রতা বাড়ার আগেই ছত্রাকনাশক ও বোরর স্প্রে করতে বলা হচ্ছে।

সাপাহার বাজার আমচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমানে কিছু কিছু এলাকায় বাগানে সেচ ব্যবস্থা থাকায় সেচ দেয়া হচ্ছে যার ফলে আমের ফলন ভালো হয়েছে। তাপমাত্রা অনেক বেশি হওয়ায় এই মুহূর্তে গাছের গোড়ায় পানি সেচ এর বিকল্প নেই ।

আশা করছি আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা অনেক কমবে, গুটি ঝরা বন্ধ হবে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের বাম্পার ফলন আশা করা যায়।

back to top