alt

ঈদযাত্রা : মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ৫১ শতাংশ, সাড়ে ৪২ শতাংশ নিহত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

রোজার ঈদের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। সবচেয়ে বেশি নিহতও হয়েছেন এই বাহনটির দুর্ঘটনায়। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫১.১১ শতাংশ। আর নিহতের হার ৪২.৫০ শতাংশ।

রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সংগঠনটির কার্যালয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি জানায়, ঈদযাত্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মানুষ মোটরসাইকেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গন্তব্যে যাতায়াত করেন। ব্যাপকহারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৬ জন নিহত হয়েছেন। যেখানে একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনাই ঘটেছে ৭টি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঈদে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫১.৩৬%, মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২৩.৪৯% এবং অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেলে চাপা/ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৫.১৩%।

সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ, মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এটা কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। মূলত মানসম্পন্ন গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী না হওয়ার কারণেই মানুষ মোটরসাইকেলে দূরের গন্তব্যে যাতায়াত করছেন।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কত বেড়েছে
ফাউন্ডেশনের তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ১২৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩৩ জন নিহত হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ৮ দশমিক ৭৮টি দুর্ঘটনায় ৯.৫ জন নিহত হয়েছিল। এ বছরে প্রতিদিন গড়ে ১২ দশমিক ২টি দুর্ঘটনায় ১০ দশমিক ৪ জন নিহত হয়েছেন। এই হিসাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৯৫% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৭%।

ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষ বলছে, কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে ব্যাপক মাত্রায় দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে। মোটরসাইকেলে ৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। এরা সবাই কিশোর-যুবক। বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ১৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।

৩৫৮ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬৭
গত রোববার (২১ এপ্রিল) সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ঈদযাত্রা সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিআরটিএ বলে, এবার ১৭ দিনে (৪ থেকে ২০ এপ্রিল) ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত এবং ৪৬২ জন আহত হয়েছেন।

আগেরদিন শনিবার বেসরকারি সংস্থা যাত্রী কল্যাণ সমিতি হিসেব দেয়, ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছেন। যদিও সমিতির প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্ত্রিমূলক’ বলছে সরকারি সংস্থাটি। এবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দেয়া হিসেবেও সরকারি তথ্যের বেশি বলছে, তবে সমিতির নিহতের সংখ্যা থেকে কম।

৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদন বলছে, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিনে (৪ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫০০ জনের বেশি।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যা ৪৯৩ জন। শুধু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই (পঙ্গু হাসপাতালে) ঈদের তিন দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪৫৪ জন, যার অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত। এই বাস্তবতায় ১৫ দিনে সারাদেশের হাসপাতালসমূহে আহত মানুষের সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি হবে।

দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯.২০% ও প্রাণহানি ২০.১৯%
ফাউন্ডেশন বলছে, ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। গত বছরে ঈদুল ফিতরে ২৪০টি দুর্ঘটনায় ২৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। প্রতিদিন গড়ে ১৭.১৪টি দুর্ঘটনায় ২০.৩৫ জন নিহত হয়েছিল। এই বছরে ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ২৩.৮৬টি দুর্ঘটনায় ২৪.৪৬ জন নিহত হয়েছেন।

এই হিসাবে এ বছর দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯.২০% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ২০.১৯%। সড়ক দুর্ঘটনায় ৫টি পরিবার পরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কেউ বেঁচে নেই! স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহত হয়েছে ৭৪ জন বলেও ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণে হিসেবে উঠে এসেছে।

এই সময়ে ৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৮ আহত হয়েছেন। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন বলেও ফাউন্ডিশনের তথ্য।

অধ্যাপক মাহবুব বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের ধারাবাহিকতা নেই। সবকিছু চলছে দায়সারাভাবে। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।’

ছবি

রংপুরের পীরগাছায় কাকলী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

ছবি

বড়াইগ্রামের গোরস্তানে মাগুরার ইটভাটার ম্যানেজারের লাশ

ছবি

আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি

ছবি

প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের

ছবি

দেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত, বেশিরভাগেরই মৃত্যু সময়মতো চিকিৎসার অভাবে

ছবি

ভিত্তিপ্রস্তরের ২ যুগ: ফুলদী নদীতে সেতু হয়নি আজও

ছবি

চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যা মামলা: আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

দুবলারচরে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য অপসারণে বনবিভাগের অভিযান শুরু

ছবি

চমেক হাসপাতাল: দিনে গড়ে রেডিওথেরাপি নেন ১৫০ রোগী

ছবি

“তোমার কলিজাদের এতিম করে কোথায় গেলা”—স্বামীর কফিন ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আইরিন

ছবি

ভিত্তিপ্রস্তরের ২ যুগ: ফুলদী নদীতে সেতু হয়নি আজও

ছবি

বেলকুচিতে শাশুড়িকে হত্যার দায়ে গৃহবধুর ফাঁসি, প্রেমিকের যাবজ্জীবন

ছবি

ডিমলায় পিকআপের চাকায় পিষ্ট হয়ে নানী-নাতনীর মৃত্যু

ছবি

দোয়ারাবাজারে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

ছবি

লালমাই উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও হয়নি ফায়ারসার্ভিস স্টেশন

ছবি

শেরপুর পৌরসভায় বাস-ট্রাক টার্মিনাল বাস্তবে নেই, তবুও ইজারা বিজ্ঞপ্তি

ছবি

জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

সাতক্ষীরায় সফটশেল কাঁকড়া চাষ বদলে দিয়েছে অর্থনীতি

ছবি

কেশবপুরে রহস্যে ঘেরা খাঞ্জেলি দীঘির মাটির ঢিবিতে ভক্তের মিলন মেলা

ছবি

টাকার অভাবে ছয় উপজাতি শিক্ষার্থীর লেখাপড়া অনিশ্চিত

ছবি

উলিপুরে বন্যার পলিতে আমন ধানে চিটা

ছবি

প্লাস্টিক-সিরামিকে দাপটে ধ্বংসের পথে মৃৎশিল্প

ছবি

. জীববৈচিত্র রক্ষার দাবিতে বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলেদের মানববন্ধন

ছবি

জামালপুরে কভার্ড ভ্যান-অটোরিকশা সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু

ছবি

রাণীনগরে কৃষি প্রণোদনার সার বীজ বিতরণ

ছবি

কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি, ড্রেজার জব্দ

ছবি

সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো ছয় কোটি টাকার সেতু

ছবি

চকরিয়ায় আউশের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে খুশির ঝিলিক

পুলিশ কর্মকর্তার ভাইয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ : আতঙ্কে ভিটেছাড়া অনেকে

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফার্মেসিগুলোর অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, ওষুধ না পেয়ে বিপাকে রোগীরা

ছবি

বোয়ালখালীতে পানি পান করছে তৃষ্ণার্ত এক গোখরো সাপ

ছবি

চাঁদপুর যৌথবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

ছবি

সিদ্ধিরগঞ্জে ৬ মাসেও ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

ছবি

বোয়ালখালীতে কাভার্ড ভ্যান থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

হালদা নদীতে অভিযান, বড়শি ও জাল উদ্ধার

ছবি

মহাদেবপুরে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে উদ্যোগ নেই : কমছে ফসলী জমি

tab

ঈদযাত্রা : মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ৫১ শতাংশ, সাড়ে ৪২ শতাংশ নিহত

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

রোজার ঈদের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে মোটরসাইকেলে। সবচেয়ে বেশি নিহতও হয়েছেন এই বাহনটির দুর্ঘটনায়। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৫১.১১ শতাংশ। আর নিহতের হার ৪২.৫০ শতাংশ।

রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সংগঠনটির কার্যালয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি জানায়, ঈদযাত্রায় ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মানুষ মোটরসাইকেলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গন্তব্যে যাতায়াত করেন। ব্যাপকহারে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, অন্তত ১৮৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫৬ জন নিহত হয়েছেন। যেখানে একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী নিহতের ঘটনাই ঘটেছে ৭টি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঈদে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫১.৩৬%, মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২৩.৪৯% এবং অন্য যানবাহন দ্বারা মোটরসাইকেলে চাপা/ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৫.১৩%।

সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ, মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এটা কোনোভাবেই গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। মূলত মানসম্পন্ন গণপরিবহন সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী না হওয়ার কারণেই মানুষ মোটরসাইকেলে দূরের গন্তব্যে যাতায়াত করছেন।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কত বেড়েছে
ফাউন্ডেশনের তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ১২৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩৩ জন নিহত হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ৮ দশমিক ৭৮টি দুর্ঘটনায় ৯.৫ জন নিহত হয়েছিল। এ বছরে প্রতিদিন গড়ে ১২ দশমিক ২টি দুর্ঘটনায় ১০ দশমিক ৪ জন নিহত হয়েছেন। এই হিসাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৯৫% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৭%।

ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষ বলছে, কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে ব্যাপক মাত্রায় দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে। মোটরসাইকেলে ৩ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে ১১টি। এরা সবাই কিশোর-যুবক। বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ১৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর।

৩৫৮ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৬৭
গত রোববার (২১ এপ্রিল) সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ঈদযাত্রা সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বিআরটিএ বলে, এবার ১৭ দিনে (৪ থেকে ২০ এপ্রিল) ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২০ জন নিহত এবং ৪৬২ জন আহত হয়েছেন।

আগেরদিন শনিবার বেসরকারি সংস্থা যাত্রী কল্যাণ সমিতি হিসেব দেয়, ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১৩৯৮ জন আহত হয়েছেন। যদিও সমিতির প্রতিবেদনকে ‘বিভ্রান্ত্রিমূলক’ বলছে সরকারি সংস্থাটি। এবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দেয়া হিসেবেও সরকারি তথ্যের বেশি বলছে, তবে সমিতির নিহতের সংখ্যা থেকে কম।

৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদন বলছে, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিনে (৪ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল) দেশে ৩৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৬৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫০০ জনের বেশি।

বুধবার সংবাদ সম্মেলনে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংখ্যা ৪৯৩ জন। শুধু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালেই (পঙ্গু হাসপাতালে) ঈদের তিন দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৪৫৪ জন, যার অধিকাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত। এই বাস্তবতায় ১৫ দিনে সারাদেশের হাসপাতালসমূহে আহত মানুষের সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি হবে।

দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯.২০% ও প্রাণহানি ২০.১৯%
ফাউন্ডেশন বলছে, ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। গত বছরে ঈদুল ফিতরে ২৪০টি দুর্ঘটনায় ২৮৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। প্রতিদিন গড়ে ১৭.১৪টি দুর্ঘটনায় ২০.৩৫ জন নিহত হয়েছিল। এই বছরে ঈদযাত্রায় প্রতিদিন গড়ে ২৩.৮৬টি দুর্ঘটনায় ২৪.৪৬ জন নিহত হয়েছেন।

এই হিসাবে এ বছর দুর্ঘটনা বেড়েছে ৩৯.২০% এবং প্রাণহানি বেড়েছে ২০.১৯%। সড়ক দুর্ঘটনায় ৫টি পরিবার পরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কেউ বেঁচে নেই! স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিহত হয়েছে ৭৪ জন বলেও ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণে হিসেবে উঠে এসেছে।

এই সময়ে ৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৮ আহত হয়েছেন। ১৪টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন বলেও ফাউন্ডিশনের তথ্য।

অধ্যাপক মাহবুব বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের জীবনে নিত্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের ধারাবাহিকতা নেই। সবকিছু চলছে দায়সারাভাবে। অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।’

back to top