alt

পেটে গজ রেখেই সেলাই, সংকটাপূর্ণ রোগী আইসিইউতে

জেলা বার্তা পরিবেশক,নওগাঁ : সোমবার, ২০ মে ২০২৪

নওগাঁয় সুমি ( ৩০) খাতুন নামে এক প্রসূতি নারীর পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন এক চিকিৎসক। ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়া ওই নারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে পুনরায় অপারেশনের পর পেটের ভেতর থেকে বের করা হয় রক্ত পরিষ্কার করা গজ কাপড়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন। বর্তমানে সুমিকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর সদ্যজাত বাচ্চাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। গত বুধবার ( ১৫মে ) সকালে শহরের একতা ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। সুমি খাতুন জেলার আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকার উজ্জল হোসেনের স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫মে প্রসব ব্যথা শুরু হলে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় অবস্থিত একতা ক্লিনিকে নেওয়া হয় ওই প্রসূতি নারীকে। সেখানে ওই দিনই সিজার করান প্রসূতি বিদ্যা ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাক্তার তানিয়া রহমান তনি। সরেজমিনে গিয়ে ক্লিনিকের রেজিষ্টার খাতা দেখেও সত্যতা পাওয়া যায়। সিজারের জন্য জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া (জি.এ) প্রয়োগ করেন ডাক্তার তানিয়ার স্বামী নওগাঁ সদর হাসপাতালের এ্যানেসথেসিওলজীষ্ট ডাক্তার আদনান ফারুক। সিজারের পরই ওই নারী তার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং প্রচুর পরিমানে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ডাক্তার তানিয়া ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফকে দিয়ে দ্রুত রোগির পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তার পর বুধবার রাত ১০টার দিকে কৌশলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

এর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতেই আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে জানা যায় তার পেটে বাড়তি কিছু একটা জিনিস রয়েছে। আর সেটার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সম্মতিতে ফের অপারেশন করার পর পেট থেকে গজ পাওয়া যায়। ভুল অপারেশন ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে সংকটপূর্ণ অবস্থায় বর্তমানে তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন বলেন, ডাক্তার তানিয়া সিজার করার পর পেটেই গজ রেখেছিল। আবার হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসারকে দিয়ে কিভাবে পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তিনি তো এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিলনা। কৌশলে রাজশাহীতে রেফার করে। আমার স্ত্রীর অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। আমরা এর বিচার চাই। বর্তমানে আমরা রাজশাহীতে রয়েছি। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে।

একতা ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ডাক্তার তানিয়া আমাকে যেভাবে শিখিয়ে দিয়েছিল সেভাবেই আমি সেলাই করেছি। আপনি কি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কিনা বা এটা আপনার কাজ কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন স্বদউত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাক্তার তানিয়া রহমান তনিকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, চেম্বারে রোগি দেখছি ৫মিনিট পর আপনাকে কলব্যাক করছি বলে এই প্রতিবেদকের নাম্বার ব্লাকলিস্টে রাখেন। পরে অন্য আরেকটি নাম্বার থেকে ফোন করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

ডাক্তার তানিয়ার স্বামী ডাক্তার আদনান ফারুককেও একাধিকবার ফোন করা হলে তিনিও ফোনকল রিসিভ করেননি।

ক্লিনিক মালিক মাসুদুর আলম (আগা) বলেন, ঘটনার জন্য আমরা দায়ী নয়। যেসব ডাক্তার এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সাথে কথা বলুন। আপনার ক্লিনিকে সিজার করার সময় এমন ঘটনা ঘটেছে এবং ডাক্তারকে আপনি নিয়ে এসেছেন রোগির সিজার করানোর জন্য। তাহলে আপনার এখন করণীয় কি ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন রোগির জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিবা করতে পারি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে আবগত হলাম। আমরা খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখবো। আর রোগির অভিভাবক কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

ছবি

এমপিওর দাবিতে টানা চতুর্দশ দিন শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন

নীলফামারীতে খেলতে গিয়ে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

বরিশাল জেলায় শতভাগ টাইফয়েডের টিকা দেয়া হয়েছে

প্রতিবন্ধীদের মাঝে আর্থিক অনুদান বিতরণ

ছবি

মাতামুহুরী নদীতে পলি ভরায় ৬০ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধার অনিশ্চয়তা

ছবি

পিরোজপুরে জুলাই-অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগ

মহেশপুরে গাছ ফেলে পথ আটকিয়ে ডাকাতি

ছবি

টেকনাফে পলাতক দুই আসামি গ্রেপ্তার

দৌলতপুরে সবজির বীজ বিতরণ

ছবি

মুন্সীগঞ্জে মেট্রোরেল সংযোগের দাবিতে মানববন্ধন

চাটখিলে স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি

বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ!

ছবি

চৌমুহনীতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, অর্থদণ্ড

ছবি

গজারিয়ায় পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিনে সয়লাব

ছবি

চট্টগ্রামে আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানের নতুন হুমকি: ব্যবসায়ীকে বিদেশি নম্বর থেকে ‘ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার’ ভয় দেখানো

ছবি

উল্লাপাড়ায় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল

ছবি

দুই বছর ধরে চলাচল বন্ধ, বিপাকে ১০ হাজার শ্রমিক ও বাসিন্দা

মহেশপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ভারতীয় মাদকদ্রব্যসহ নারী আটক

ছবি

দশমিনায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ

ছবি

কিশোরগঞ্জে আ.লীগের সাত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

ছবি

নাসিরনগরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

মা-বাবার পাশে কবরে দাফন হলো ইতালি প্রবাসী ডা. ঈসমাইলের

ছবি

বোয়ালখালীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

দেবীদ্বারে ট্রাক চাপায় শিশুর মৃত্যু

ছবি

জামালপুরে কারাগার নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ

ছবি

পীরগাছায় বিদ্যালয়ে রাতে-দিনে উড়ে জাতীয় পতাকা, কর্তৃপক্ষ নিরব

ছবি

হবিগঞ্জে আখ চাষ চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান

ছবি

দশমিনায় পলিনেট পদ্ধতিতে বেগুন চাষে সবুজের সাফল্য

ছবি

ঝিনাইদহে হাঁটা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ছবি

টিকে আছে সৈয়দপুরের ঝুট শিল্প, স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় চাপে রপ্তানি

ছবি

দশমিনা থেকে হারিয়ে গেছে তাল-পিঠার উৎসব

ছবি

বাপ দাদার ঘোলের ঐতিহ্য আঁকড়ে ৩২ বছর ধরে সংগ্রামী গোপাল

ছবি

রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী কৃষকের জমির ধান লুটের অভিযোগ

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিনিবাসে আগুন

ছবি

ডিমলায় বুড়ি তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি

ছবি

মোহনগঞ্জে আমন ধান কাটা শুরু

tab

পেটে গজ রেখেই সেলাই, সংকটাপূর্ণ রোগী আইসিইউতে

জেলা বার্তা পরিবেশক,নওগাঁ

সোমবার, ২০ মে ২০২৪

নওগাঁয় সুমি ( ৩০) খাতুন নামে এক প্রসূতি নারীর পেটে গজ রেখেই সেলাই করে দিয়েছিলেন এক চিকিৎসক। ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়া ওই নারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে পুনরায় অপারেশনের পর পেটের ভেতর থেকে বের করা হয় রক্ত পরিষ্কার করা গজ কাপড়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন। বর্তমানে সুমিকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আর সদ্যজাত বাচ্চাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। গত বুধবার ( ১৫মে ) সকালে শহরের একতা ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। সুমি খাতুন জেলার আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া এলাকার উজ্জল হোসেনের স্ত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৫মে প্রসব ব্যথা শুরু হলে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় অবস্থিত একতা ক্লিনিকে নেওয়া হয় ওই প্রসূতি নারীকে। সেখানে ওই দিনই সিজার করান প্রসূতি বিদ্যা ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডাক্তার তানিয়া রহমান তনি। সরেজমিনে গিয়ে ক্লিনিকের রেজিষ্টার খাতা দেখেও সত্যতা পাওয়া যায়। সিজারের জন্য জেনারেল অ্যানেস্থেসিয়া (জি.এ) প্রয়োগ করেন ডাক্তার তানিয়ার স্বামী নওগাঁ সদর হাসপাতালের এ্যানেসথেসিওলজীষ্ট ডাক্তার আদনান ফারুক। সিজারের পরই ওই নারী তার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন এবং প্রচুর পরিমানে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ডাক্তার তানিয়া ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফকে দিয়ে দ্রুত রোগির পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তার পর বুধবার রাত ১০টার দিকে কৌশলে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

এর পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতেই আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে জানা যায় তার পেটে বাড়তি কিছু একটা জিনিস রয়েছে। আর সেটার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সম্মতিতে ফের অপারেশন করার পর পেট থেকে গজ পাওয়া যায়। ভুল অপারেশন ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে সংকটপূর্ণ অবস্থায় বর্তমানে তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী উজ্জল হোসেন বলেন, ডাক্তার তানিয়া সিজার করার পর পেটেই গজ রেখেছিল। আবার হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসারকে দিয়ে কিভাবে পেটে সেলাই করিয়ে নেয়। তিনি তো এ বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। রক্তক্ষরণও বন্ধ হচ্ছিলনা। কৌশলে রাজশাহীতে রেফার করে। আমার স্ত্রীর অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। আমরা এর বিচার চাই। বর্তমানে আমরা রাজশাহীতে রয়েছি। আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে।

একতা ক্লিনিকের মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, ডাক্তার তানিয়া আমাকে যেভাবে শিখিয়ে দিয়েছিল সেভাবেই আমি সেলাই করেছি। আপনি কি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কিনা বা এটা আপনার কাজ কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন স্বদউত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাক্তার তানিয়া রহমান তনিকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, চেম্বারে রোগি দেখছি ৫মিনিট পর আপনাকে কলব্যাক করছি বলে এই প্রতিবেদকের নাম্বার ব্লাকলিস্টে রাখেন। পরে অন্য আরেকটি নাম্বার থেকে ফোন করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।

ডাক্তার তানিয়ার স্বামী ডাক্তার আদনান ফারুককেও একাধিকবার ফোন করা হলে তিনিও ফোনকল রিসিভ করেননি।

ক্লিনিক মালিক মাসুদুর আলম (আগা) বলেন, ঘটনার জন্য আমরা দায়ী নয়। যেসব ডাক্তার এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সাথে কথা বলুন। আপনার ক্লিনিকে সিজার করার সময় এমন ঘটনা ঘটেছে এবং ডাক্তারকে আপনি নিয়ে এসেছেন রোগির সিজার করানোর জন্য। তাহলে আপনার এখন করণীয় কি ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন রোগির জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিবা করতে পারি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে আবগত হলাম। আমরা খোঁজ নিয়ে অবশ্যই দেখবো। আর রোগির অভিভাবক কেউ যদি অভিযোগ করেন তাহলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।

back to top