বরগুনায় ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে যাওয়ার পর নারী ও শিশু মিলিয়ে ৯ জন নিহত হয়েছেন। । এই ঘটনায় আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার (২২ জুন) দুপুরে জেলার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার ব্রিজ ভেঙে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও রুবি বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ী উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে। অন্য নিহত ৭ জনের বাড়ী মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের বাসিন্দা। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ীর আত্মীয়স্বজন। তাদের মধ্যে একই পরিবারের রয়েছেন তিনজন। নিহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মনির হাওলাদারের মেয়ে হুমায়রা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। শনিবার কনেপক্ষের লোকজন মাইক্রোবাস ও অটোযোগে আমতলীতে বরের বাড়িতে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাস ও অটোখালে পরে যাওয়া শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে। দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। আবহাওয়া এবং মুষলধারে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়।
জীবিত উদ্ধার হওয়া ৪ জন হলেন মাহবুব খান, সোহেল খান, সুমা আক্তার ও দীশা আক্তার। তারা সবাই শরিয়তপুরের বাসিন্দা।
জীবিত উদ্ধার হওয়া মাহবুব খান বলেন, শুক্রবার আমরা ভাগ্নি হুমায়রা বেগমের বাড়ি হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামে যাই। সেখান থেকে একটি হাইএস মাইক্রোবাস যোগে শনিবার দুপুর ১টার সময় ভাগ্নি জামাইর আমতলীর বাড়ীর অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রওয়ানা করি। দুপুর দেড়টার সময় হলদিয়া বাজার সংলগ্ন একটি লোহার ব্রিজ পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসটি মাঝ বরাবর আসার পর আকস্মিক ব্রিজটির ২০ ফুট ধরে ধসে মাইক্রোবাস কচুরিপানায় ভর্তি খালে পরে যায়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আল্লায় মোগো বাচাইলেও সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে।
আরেক জীবিত মাহবুব বলেন, ৯ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ৭ জন আমাদের শিবচর মাদরীপুরের সবাই স্বজন। অন্য দুজন আমতলীর। তারাও আমাদের আত্মীয়। সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে এর চাইতে আমাদেরও মইর্যা যাওয়া ভালো ছিল।
মাইক্রোবাসে থাকা সোহেল মিয়া বলেন, আমিসহ ৩ জন সাতরে কিনারে উঠতে পেরেছি। পরে স্থানীয়, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
একই পরিবারের তিন নিহতের স্বজন আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার কিছুই রইলো না। আমার দুই কন্যা ও স্ত্রী মারা গেছে। সব হারিয়ে আমি এখন অসহায়।
স্থানীয় হলদিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, সেতু ভেঙে মাইক্রোবাসটি খালে পরে যাওয়ার পর আমরা খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার কাজে নেমে পরি। ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গলেও ৯ জনের সলিল সমাধি ঘটে। এত বড় দুর্ঘটনা এবং এতগুলো লাশ আমার জীবনেও আমি আর দেখি নাই।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার ইনচার্জ মো. হানিফ বলেন, চারঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মাইক্রোবাস উদ্ধার করতে পারিনি। উদ্ধার চেষ্টা অব্যহত আছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ব্রিজ ভেঙে নিহত ৯ জনই হাসপাতালে আনার পুর্বেই মারা গেছেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বরগুনার সংসদস্য সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বিকেলে আমতলী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতদের পরিবারের সান্তনা দেন এবং সমবেদনাজ্ঞাপন করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান, আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এম কাদের, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমির হোসেনও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য প্রভাসক ফারজানা আক্তার সুমি, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. মোস্তফা কাদের, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুল বারী আসলামসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাজ্ঞাপন করেছেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উদ্ধার কাজের তদারকি করছি।
ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
এদিকে এ ঘটনার পরপর ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার বিচার দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ব্রিজ নির্মাণ কালে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করেছে। ফলে নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই ব্রিজের মাখঝানের ভীম ভেঙে গেছে। ওই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ চলাচল করতো।
তিনি আরও বলেন, এই ভাঙা ব্রিজ মেরামতের জন্য আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বহুবার জানিয়েছি কিন্তু তিনি আমলে নেয়নি। যার ফলে আজ ৯ জনের প্রাণ গেল। ঠিকাদার দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করায় এবং উপজেলা প্রকৌশলী ব্রিজ সংস্কার না করায় তাদের শাস্তি দাবি করছি।
তবে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমি যথাযথ ভাবেই ব্রিজ নির্মাণ করেছি। ব্রিজ নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম করিনি।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার
চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চাওড়া নদীর ওপর হলদিয়া হাট এলাকায় আয়রন ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে। ওই ব্রিজের নির্মাণ কাজ পায় তৎকালিন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম মৃধা।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার যোগদানের পূর্বে এ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। এ ব্রিজ নির্মাণ যে ঠিকাদার অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা-১ আসনের সাংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ঘটনাস্থলে বিক্ষুদ্ধ মানুষকে শান্ত করেছি। ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।
শনিবার, ২২ জুন ২০২৪
বরগুনায় ব্রিজ ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে যাওয়ার পর নারী ও শিশু মিলিয়ে ৯ জন নিহত হয়েছেন। । এই ঘটনায় আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার (২২ জুন) দুপুরে জেলার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার ব্রিজ ভেঙে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন রুবিয়া (৪৫), রাইতি (২২), ফাতেমা (৫৫), জাকিয়া (৩৫), রুকাইয়াত ইসলাম (৪), তাহিয়া মেহজাবিন আজাদ (৭), তাসফিয়া (১৪), ঋধি (৪) ও রুবি বেগম (৩৫)। এদের মধ্যে রুকাইয়াত ইসলাম ও জাকিয়ার বাড়ী উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে। অন্য নিহত ৭ জনের বাড়ী মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলার কোকরার চর গ্রামের বাসিন্দা। এরা কনে হুমায়রার মামা বাড়ীর আত্মীয়স্বজন। তাদের মধ্যে একই পরিবারের রয়েছেন তিনজন। নিহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামের মনির হাওলাদারের মেয়ে হুমায়রা বেগমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবার। শনিবার কনেপক্ষের লোকজন মাইক্রোবাস ও অটোযোগে আমতলীতে বরের বাড়িতে যাচ্ছিল। মাইক্রোবাস ও অটোখালে পরে যাওয়া শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে। দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে আমতলী উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। আবহাওয়া এবং মুষলধারে বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়।
জীবিত উদ্ধার হওয়া ৪ জন হলেন মাহবুব খান, সোহেল খান, সুমা আক্তার ও দীশা আক্তার। তারা সবাই শরিয়তপুরের বাসিন্দা।
জীবিত উদ্ধার হওয়া মাহবুব খান বলেন, শুক্রবার আমরা ভাগ্নি হুমায়রা বেগমের বাড়ি হলদিয়া ইউনিয়নের গুরুদল গ্রামে যাই। সেখান থেকে একটি হাইএস মাইক্রোবাস যোগে শনিবার দুপুর ১টার সময় ভাগ্নি জামাইর আমতলীর বাড়ীর অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য রওয়ানা করি। দুপুর দেড়টার সময় হলদিয়া বাজার সংলগ্ন একটি লোহার ব্রিজ পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাসটি মাঝ বরাবর আসার পর আকস্মিক ব্রিজটির ২০ ফুট ধরে ধসে মাইক্রোবাস কচুরিপানায় ভর্তি খালে পরে যায়। এরপর আর কিছুই বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে। আল্লায় মোগো বাচাইলেও সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে।
আরেক জীবিত মাহবুব বলেন, ৯ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ৭ জন আমাদের শিবচর মাদরীপুরের সবাই স্বজন। অন্য দুজন আমতলীর। তারাও আমাদের আত্মীয়। সব শ্যাষ অইয়া গ্যাছে এর চাইতে আমাদেরও মইর্যা যাওয়া ভালো ছিল।
মাইক্রোবাসে থাকা সোহেল মিয়া বলেন, আমিসহ ৩ জন সাতরে কিনারে উঠতে পেরেছি। পরে স্থানীয়, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
একই পরিবারের তিন নিহতের স্বজন আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার কিছুই রইলো না। আমার দুই কন্যা ও স্ত্রী মারা গেছে। সব হারিয়ে আমি এখন অসহায়।
স্থানীয় হলদিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল বলেন, সেতু ভেঙে মাইক্রোবাসটি খালে পরে যাওয়ার পর আমরা খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধার কাজে নেমে পরি। ৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গলেও ৯ জনের সলিল সমাধি ঘটে। এত বড় দুর্ঘটনা এবং এতগুলো লাশ আমার জীবনেও আমি আর দেখি নাই।
আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার ইনচার্জ মো. হানিফ বলেন, চারঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মাইক্রোবাস উদ্ধার করতে পারিনি। উদ্ধার চেষ্টা অব্যহত আছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ব্রিজ ভেঙে নিহত ৯ জনই হাসপাতালে আনার পুর্বেই মারা গেছেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বরগুনার সংসদস্য সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বিকেলে আমতলী হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে নিহতদের পরিবারের সান্তনা দেন এবং সমবেদনাজ্ঞাপন করেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম সরোয়ার ফোরকান, আমতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এম কাদের, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান, সহকারী পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমির হোসেনও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এদিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য প্রভাসক ফারজানা আক্তার সুমি, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড. মোস্তফা কাদের, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুল বারী আসলামসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাজ্ঞাপন করেছেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উদ্ধার কাজের তদারকি করছি।
ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
এদিকে এ ঘটনার পরপর ব্রিজ নির্মাণকারী ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধার বিচার দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ব্রিজ নির্মাণ কালে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করেছে। ফলে নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই ব্রিজের মাখঝানের ভীম ভেঙে গেছে। ওই ভাঙা ব্রিজ দিয়ে অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ চলাচল করতো।
তিনি আরও বলেন, এই ভাঙা ব্রিজ মেরামতের জন্য আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বহুবার জানিয়েছি কিন্তু তিনি আমলে নেয়নি। যার ফলে আজ ৯ জনের প্রাণ গেল। ঠিকাদার দায়সারা ব্রিজ নির্মাণ করায় এবং উপজেলা প্রকৌশলী ব্রিজ সংস্কার না করায় তাদের শাস্তি দাবি করছি।
তবে ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমি যথাযথ ভাবেই ব্রিজ নির্মাণ করেছি। ব্রিজ নির্মাণ কাজে কোনো অনিয়ম করিনি।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার
চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চাওড়া নদীর ওপর হলদিয়া হাট এলাকায় আয়রন ব্রিজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করে। ওই ব্রিজের নির্মাণ কাজ পায় তৎকালিন হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম মৃধা।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার যোগদানের পূর্বে এ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। এ ব্রিজ নির্মাণ যে ঠিকাদার অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা-১ আসনের সাংসদ গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ঘটনাস্থলে বিক্ষুদ্ধ মানুষকে শান্ত করেছি। ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মের কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে।