চট্টগ্রাম ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আয়োজিত বৃক্ষমেলা-সংবাদ
চট্টগ্রাম মহানগরীর পলোগ্রাউন্ডের মুখে ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বৃক্ষমেলায় বৃক্ষপ্রেমীদের ভিড় দেখা গেছে। চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ এ মেলার আয়োজন করে। ২৮ জুলাই রোববার মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬৫টি স্টলে সাজানো হয়েছে নানা প্রজাতির চারাগাছ। মেলা প্রাঙ্গণের আলোকসজ্জা রয়েছে দেখার মতো। ঘুরতে এসে কেউ কেউ কিনে নিচ্ছেন পছন্দের চারাগাছও। দেখা যায়, স্টলে স্টলে সাজানো সতেজ চারা গাছ, ঘুরে ঘুরে দেখছেন কয়েকজন বৃক্ষপ্রেমী। স্টলে দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে পছন্দের চারাগাছের দরদাম করছেন কেউ কেউ।
দেখা গেছে, টবে সাজানো আস্ত বটগাছ। চারদিকে ছড়িয়ে আছে ডালপালা, মূল শেকড়ের বাইরেও ডালপালা থেকে বেশ কিছু শেকড় মাটিতে গেড়েছে পৃথকভাবে। সবকটি ডালে ছোট ছোট সতেজ পাতা। আবার কা-ে জন্মেছে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদও। সবমিলিয়ে এই গাছের উচ্চতা ফুট দুয়েকের মতো হলেও বয়স সাড়ে তিন যুগের বেশি, এমনটাই দাবি বিক্রেতার। চাইনিজ বট নামের ৪৩ বছর বয়সী এই গাছের দাম হাঁকা হয়েছে পৌনে দুই লাখ টাকা প্রায়। জান্নাতসপ ডট সিটিজি স্টলের বাইরে দেখা মিললো এই বনসাইয়ের।
জান্নাতসপ ডট সিটিজির স্বত্বাধিকারী আততাওয়াবুল ইসলাম জানান, ৪৩ বছর আগে শখের বসে তার মামা এই গাছ সংগ্রহ করে বনসাই হিসেবে প্রক্রিয়াজাত করেন। পরবর্তীতে নিজে নার্সারি শুরু করলে মামার কাছ থেকে সংগ্রহ করেন তিনি। এই চাইনিজ বটসহ ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী আরও বেশকিছু বনসাই রয়েছে জান্নাতসপের সংগ্রহে। এসব বনসাইয়ের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বনসাই ছাড়া আরও বেশকিছু প্রজাতির গাছ রয়েছে তাদের স্টলে। তিনি আততাওয়াবুল ইসলাম, আমরা ৪৩ বছর বয়সী এই চীনা বটের দাম ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা চাচ্ছি। আমাদের স্টলে ২০টির মতো বনসাই রেখেছি, তবে নার্সারিতে আরও বেশকিছু গাছ রয়েছে।
চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধ, পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নয়ন, বনজসম্পদ বৃদ্ধি ও বনায়নের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র বিমোচন কর্মকা-ে বৃক্ষরোপণ অভিযানের গুরুত্ব বিবেচনা করেই চট্টগ্রামে বিভাগীয় এই বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়।
আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ নামে অনুষ্ঠিত এই মেলা চলবে ১৫ দিন। ১৯৯৪ সাল থেকে বন্দরনগরীতে শুরু হওয়া এই মেলা করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বন্ধ থাকলেও পরের দুই বছর সিআরবির শিরীষতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এবার নার্সারি মালিকদের আপত্তির মুখে প্রথমবারের মতো বৃক্ষমেলা বসছে ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে মেলা।
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, নার্সারির পাশাপাশি মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য খাবারের স্টলও রাখা হয়েছে একাধিক। নগরীর সাগরিকা এলাকা থেকে শাশুড়ির সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় আসেন সুমাইয়া। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ‘বাগান বিলাস’ গ্রুপে দেখে মেলায় এসেছি। এতো এতো চারাগাছ দেখে ভালো লাগছে। আমি কয়েন প্ল্যান্ট, হাজারি গোলাপসহ বেশকিছু চারাগাছ কিনেছি। বাসায়ও আমার বাগান আছে, সেখানেও বেশকিছু গাছ আছে।
গাছ না কিনলেও অনেক বৃক্ষপ্রেমী নানা ধরনের চারাগাছ দেখতে আসেন মেলায়। মেলাস্থলের পার্শবর্তী দেওয়ানহাট এলাকা থেকে একমাত্র কন্যা নূরে আয়েশা সিদ্দিকিকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন গৃহবধূ শাহীন পারভেজ। তিনি বলেন, গাছ খুব ভালো লাগে আমার, বাসাও কাছেই। ফেইসবুকে বৃক্ষপ্রেমীদের একটি গ্রুপে মেলার বিষয়ে দেখে হাঁটতে হাঁটতে মেয়েকে নিয়ে এসেছি। আজ কোনো গাছ কেনা হয়নি, প্রতিদিনই তো আসবো।
নার্সারির স্টলের বাইরেও বিভিন্ন স্টলে মাটির তৈজসপত্র ও নানা রকমের গাছের টব বিক্রির জন্য প্রদর্শন করেছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও মেলাস্থলের প্রবেশমুখে বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে বনবিভাগ। ওই প্রদর্শনীতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনের জীববৈচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও রেলপথ বনায়ন, বেড়িবাঁধ বনায়নসহ বিভিন্ন বনায়ন তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রদর্শনীতে।
চট্টগ্রাম ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে আয়োজিত বৃক্ষমেলা-সংবাদ
মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
চট্টগ্রাম মহানগরীর পলোগ্রাউন্ডের মুখে ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বৃক্ষমেলায় বৃক্ষপ্রেমীদের ভিড় দেখা গেছে। চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ এ মেলার আয়োজন করে। ২৮ জুলাই রোববার মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে দেখা গেছে, ৬৫টি স্টলে সাজানো হয়েছে নানা প্রজাতির চারাগাছ। মেলা প্রাঙ্গণের আলোকসজ্জা রয়েছে দেখার মতো। ঘুরতে এসে কেউ কেউ কিনে নিচ্ছেন পছন্দের চারাগাছও। দেখা যায়, স্টলে স্টলে সাজানো সতেজ চারা গাছ, ঘুরে ঘুরে দেখছেন কয়েকজন বৃক্ষপ্রেমী। স্টলে দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে পছন্দের চারাগাছের দরদাম করছেন কেউ কেউ।
দেখা গেছে, টবে সাজানো আস্ত বটগাছ। চারদিকে ছড়িয়ে আছে ডালপালা, মূল শেকড়ের বাইরেও ডালপালা থেকে বেশ কিছু শেকড় মাটিতে গেড়েছে পৃথকভাবে। সবকটি ডালে ছোট ছোট সতেজ পাতা। আবার কা-ে জন্মেছে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদও। সবমিলিয়ে এই গাছের উচ্চতা ফুট দুয়েকের মতো হলেও বয়স সাড়ে তিন যুগের বেশি, এমনটাই দাবি বিক্রেতার। চাইনিজ বট নামের ৪৩ বছর বয়সী এই গাছের দাম হাঁকা হয়েছে পৌনে দুই লাখ টাকা প্রায়। জান্নাতসপ ডট সিটিজি স্টলের বাইরে দেখা মিললো এই বনসাইয়ের।
জান্নাতসপ ডট সিটিজির স্বত্বাধিকারী আততাওয়াবুল ইসলাম জানান, ৪৩ বছর আগে শখের বসে তার মামা এই গাছ সংগ্রহ করে বনসাই হিসেবে প্রক্রিয়াজাত করেন। পরবর্তীতে নিজে নার্সারি শুরু করলে মামার কাছ থেকে সংগ্রহ করেন তিনি। এই চাইনিজ বটসহ ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী আরও বেশকিছু বনসাই রয়েছে জান্নাতসপের সংগ্রহে। এসব বনসাইয়ের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বনসাই ছাড়া আরও বেশকিছু প্রজাতির গাছ রয়েছে তাদের স্টলে। তিনি আততাওয়াবুল ইসলাম, আমরা ৪৩ বছর বয়সী এই চীনা বটের দাম ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা চাচ্ছি। আমাদের স্টলে ২০টির মতো বনসাই রেখেছি, তবে নার্সারিতে আরও বেশকিছু গাছ রয়েছে।
চট্টগ্রাম উত্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পরিবেশের বিরূপ প্রভাব প্রতিরোধ, পরিবেশ ও প্রতিবেশ উন্নয়ন, বনজসম্পদ বৃদ্ধি ও বনায়নের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র বিমোচন কর্মকা-ে বৃক্ষরোপণ অভিযানের গুরুত্ব বিবেচনা করেই চট্টগ্রামে বিভাগীয় এই বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়।
আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪’ নামে অনুষ্ঠিত এই মেলা চলবে ১৫ দিন। ১৯৯৪ সাল থেকে বন্দরনগরীতে শুরু হওয়া এই মেলা করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বন্ধ থাকলেও পরের দুই বছর সিআরবির শিরীষতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এবার নার্সারি মালিকদের আপত্তির মুখে প্রথমবারের মতো বৃক্ষমেলা বসছে ওয়াজিউল্লাহ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে মেলা।
সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, নার্সারির পাশাপাশি মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য খাবারের স্টলও রাখা হয়েছে একাধিক। নগরীর সাগরিকা এলাকা থেকে শাশুড়ির সঙ্গে দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় আসেন সুমাইয়া। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ‘বাগান বিলাস’ গ্রুপে দেখে মেলায় এসেছি। এতো এতো চারাগাছ দেখে ভালো লাগছে। আমি কয়েন প্ল্যান্ট, হাজারি গোলাপসহ বেশকিছু চারাগাছ কিনেছি। বাসায়ও আমার বাগান আছে, সেখানেও বেশকিছু গাছ আছে।
গাছ না কিনলেও অনেক বৃক্ষপ্রেমী নানা ধরনের চারাগাছ দেখতে আসেন মেলায়। মেলাস্থলের পার্শবর্তী দেওয়ানহাট এলাকা থেকে একমাত্র কন্যা নূরে আয়েশা সিদ্দিকিকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন গৃহবধূ শাহীন পারভেজ। তিনি বলেন, গাছ খুব ভালো লাগে আমার, বাসাও কাছেই। ফেইসবুকে বৃক্ষপ্রেমীদের একটি গ্রুপে মেলার বিষয়ে দেখে হাঁটতে হাঁটতে মেয়েকে নিয়ে এসেছি। আজ কোনো গাছ কেনা হয়নি, প্রতিদিনই তো আসবো।
নার্সারির স্টলের বাইরেও বিভিন্ন স্টলে মাটির তৈজসপত্র ও নানা রকমের গাছের টব বিক্রির জন্য প্রদর্শন করেছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও মেলাস্থলের প্রবেশমুখে বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করেছে বনবিভাগ। ওই প্রদর্শনীতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনের জীববৈচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও রেলপথ বনায়ন, বেড়িবাঁধ বনায়নসহ বিভিন্ন বনায়ন তুলে ধরা হয়েছে ওই প্রদর্শনীতে।