alt

সারাদেশ

জমির চেয়ে ক্যানেল উঁচু : জলাবদ্ধ ১৫০০ বিঘা জমি, বন্ধ চাষাবাদ

প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে উপজেলার ২ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১৫০০ বিঘা আবাদি জমি সারাবছরই জলাবদ্ধ থাকে-সংবাদ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি সারাবছরই জলাবদ্ধ। হতো না কোনো ফসল চাষ। এতে সারাবছরই কোনো ফসল ফলাতে না পেরে হতাশায় দিন কাটাতেন ওই জমির প্রায় দুই শতাধিক কৃষক। পরে সমস্য নিরাসনে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলেন কৃষকরা। কঠোর আন্দোলনে দেখা দিয়েছিল আলোর কিরণ। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ২০২০ সালে জাইকা প্রকল্পের অর্থায়নে ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ২০৬ মিটার লম্বা ক্যানেল। এতে প্রথমে আলোর কিরণ দেখা দিলেও তা আবারো কালো আঁধারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। জমির চেয়ে ক্যানেল উঁচু করে তৈরি করায় সে ক্যানেলে নামছে না জলাবদ্ধতার পানি। ফলে ফের গলার কাঁটা হয়ে ওঠেছে ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি।

কৃষকদের দাবি, অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ক্যানেলটি জলাবদ্ধ জমির চেয়ে উঁচু করে নির্মাণ করায় কিছু পানি নামলেও সিংহভাগ পানি নামতে পারছে না। ফলে পূর্বের মতোই সারাবছর পানিতে তলিয়ে থাকছে এত এত জমি। দ্রুত এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টিকামনা করেছেন তারা।

জানা যায়, উল্লিখিত ওই জমিতে প্রতি মৌসুমে বিঘা প্রতি ধান উৎপাদন হতো ২০ থেকে ২৫ মণ। সে মোতাবেক ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ও ইরি দুই মৌসুমে বছরে প্রায় ২৭৯৯ দশমিক ৩ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হতো। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে জমিগুলো জলাবদ্ধ থাকায় দীর্ঘ কয়েকবছর থেকে লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, গড়পিংলাই, মহদীপুর, মহেশপুর, আড়াপাড়া, ঘোনাপাড়া, বারাইপাড়া, গণিপুর ও পলিপাড়াসহ দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমিতে দীর্ঘদিন থেকে জলাবদ্ধ। সমস্যা সমাধানে ২০৬ মিটার লম্বা ক্যানেল তৈরি করা হলেও বর্তমানে ওইসব জমি কোমড় বা হাঁটুসম পানিতে তলিয়ে। পুরো জমি শ্যাওলার চাঁদরে ঢেকে আছে। ফলে কোনো ফসল ফলাতে পারেন না কৃষকরা।

সত্তোরোর্ধ্ব কৃষক মতিবুল রহমান বলেন, পূর্বে এসব জমিতে চাষাবাদ হলেও, দীর্ঘ ২০ বছর থেকে জমিগুলো পানিতে তলিয়ে থাকে। বর্ষায় জমে থাকা পানি সারাবছর জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। কিছু অংশে পানি কম জলাবদ্ধ থাকলে কৃষকরা সে জমিগুলোতে চাষাবাদ শুরু করেন। কিন্তু তাও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কেউ ঝুঁকি নিয়ে আর চাষাবাদ করেন না। অনেক লড়াই-সংগ্রাম করার পরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহামুদুল আলমের নেতৃত্বে সমস্যা সমাধানে প্রথম ধাপে ১৬৩ মিটার এবং পরে আরো ৪৩ মিটার লম্ব ক্যানেল তৈরি করা হলেও তা পরিকল্পনা মাফিক নির্মাণ না করায় বিফলে গেছে। জমির চেয়ে ক্যানেলে উচ্চতা উঁচু হওয়ায় পানি নামে না সে ক্যানেলে ফলে জলাবদ্ধই থাকছে জমিগুলো।

এতে পানিতে তলিয়ে আছে আইয়ুব আলীর চার বিঘা, মোস্তাফিজার রহমানের ৩২ বিঘা, মো. বাবুর ১৮ বিঘা, জয়নাল আবেদিনের ৬ বিঘাসহ আরো অসংখ্য কৃষকের জমি। তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে বন্ধ হয়ে যায় আমাদের জমির পানি নিষ্কাশনের পথ। ফলে জলাবদ্ধ হয়ে আছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি। সমস্যা নিরাসনে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আমরা। পরে ক্যানেল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি উল্টো সরকারের অর্ধকোটি টাকা গচ্ছা গেছে। ক্যানেল তৈরি করা হলেও তা পরিকল্পনা মাফিক তৈরি করেনি। যার কারণে সে ক্যানেলে নামে না জলাবদ্ধ পানি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টিকামনা করেন তারা।

উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) সফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। যাতে কোনো উপায়ে জলাবদ্ধতা থেকে ক্যানেলে পানি নিষ্কাশন করা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, এতো জমি জলাবদ্ধ হয়ে থাকলেও আমাদের করার কিছু নেই। কারণ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট। তবে পানি নিষ্কাশন হলে আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বীজ ও সার দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, এতো টাকা ব্যয়ে যেহেতু ক্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে, সেহেতু ক্যানেল ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা সম্ভব না। তবে পানি নিষ্কাসনের বিকল্প পথ বের করা হবে। এ বিষয়ে এলজিইডি প্রকৌশলীর সাথে বসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সোহাগ চন্দ্র সাহা মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে।

সখীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গৃহবধুর মৃত্যু

ছবি

পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কক্সবাজারে ‘অনলাইন বাস টার্মিনাল চালু

ছবি

সাবেক এমপি বদির সহযোগী আটক

কক্সবাজারে বিশ্ব পর্যটন দিবসে সাড়া ফেলেছে রক্তদান কর্মসূচি

ছবি

পেয়ারা থেকে জুস আচারসহ নানা পণ্য বানিয়ে নতুন আয়ের স্বপ্ন

ছবি

ব্যবসীয় রাশেদ হত্যাকান্ড : এক মাসেও অধরা খুনিরা

ছবি

কক্সবাজারে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস

ছবি

মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৭ কোটি টাকার ক্যাবল আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক এমডিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি

রাউজানে ছাত্রদলের দুই নেতা অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ

ছবি

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল মধুপুরের ঐতিহ্যবাহী আনারস

ছবি

রাঙ্গুনিয়ায় সেনাসদস্য অবরুদ্ধ, যুবদলের ১০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

২ মামলায় খালাস পেলেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন

ছবি

কক্সবাজারে ডিসির গাড়িতে পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল শিশুর, মা চমেকে চিকিৎসাধীন

ছবি

প্রথম চালানে ভারতে গেল ১২ মেট্রিকটন ইলিশ

ছবি

১৭ কোটি টাকার ক্যাবল আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক এমডিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

ছবি

টেকনাফে মাদক কারবারি গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি

ছবি

ভারী বৃষ্টিতে দেশের ৬ বিভাগে নদনদীর পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা

ছবি

উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা

ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের

ছবি

কেএনএফ আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেওয়া ২৮ জঙ্গির জামিন বাতিল

ছবি

চকরিয়ায় লেফটেন্যান্ট তানজিম হত্যায় জড়িত ৬ জন আটক

ছবি

দুদকের তদন্তের আওতায় বিএফআইইউ এর সাবেক প্রধান ও চবির সাবেক উপাচার্য

ছবি

কক্সবাজারে অবৈধ পলিথিন কারখানা সন্ধান, জরিমানা আদায়

ছবি

আশুলিয়ায় কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন কারখানা শ্রমিকরা

ছবি

গান গেয়ে পিটিয়ে হত্যা: পথচারীদের বলতেন, ‘ সবাই একটা সেলফি তুলে চলে যান’

ছবি

গাজীপুরের খুলেছে বেশিরভাগ কারখানা

ছবি

ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে ছোট ইলিশ, বড় ইলিশের আকাল

ছবি

১৮ দফা দাবি পূরণের ঘোষণা: সাভার-আশুলিয়ায় বেশির ভাগ কারখানা চালু, বন্ধ আছে ১৯টি

ছবি

গান গেয়ে ‘হত্যা’: পুলিশ ধরলো ৩ জনকে

ছবি

জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৩২ জনের জামিন

ছবি

প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের

ঠাকুরগাঁওয়ে বজ্রপাতে গেল তিনজনের প্রাণ, আহত ৯

ছবি

সাজেক থেকে ফেরার পথে দুই পর্যটককে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ, পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

বিয়ের জন্য পালিয়ে আসা কিশোরীকে ‘ধর্ষণ’

ছবি

আশ্রয় ক্যাম্প পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা চান রোহিঙ্গা নেতারা 

tab

সারাদেশ

জমির চেয়ে ক্যানেল উঁচু : জলাবদ্ধ ১৫০০ বিঘা জমি, বন্ধ চাষাবাদ

প্রতিনিধি, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে উপজেলার ২ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১৫০০ বিঘা আবাদি জমি সারাবছরই জলাবদ্ধ থাকে-সংবাদ

শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অপরিকল্পিত পুকুর খননের ফলে উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি সারাবছরই জলাবদ্ধ। হতো না কোনো ফসল চাষ। এতে সারাবছরই কোনো ফসল ফলাতে না পেরে হতাশায় দিন কাটাতেন ওই জমির প্রায় দুই শতাধিক কৃষক। পরে সমস্য নিরাসনে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলেন কৃষকরা। কঠোর আন্দোলনে দেখা দিয়েছিল আলোর কিরণ। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে ২০২০ সালে জাইকা প্রকল্পের অর্থায়নে ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ২০৬ মিটার লম্বা ক্যানেল। এতে প্রথমে আলোর কিরণ দেখা দিলেও তা আবারো কালো আঁধারে নিমজ্জিত হয়ে যায়। জমির চেয়ে ক্যানেল উঁচু করে তৈরি করায় সে ক্যানেলে নামছে না জলাবদ্ধতার পানি। ফলে ফের গলার কাঁটা হয়ে ওঠেছে ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি।

কৃষকদের দাবি, অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ক্যানেলটি জলাবদ্ধ জমির চেয়ে উঁচু করে নির্মাণ করায় কিছু পানি নামলেও সিংহভাগ পানি নামতে পারছে না। ফলে পূর্বের মতোই সারাবছর পানিতে তলিয়ে থাকছে এত এত জমি। দ্রুত এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টিকামনা করেছেন তারা।

জানা যায়, উল্লিখিত ওই জমিতে প্রতি মৌসুমে বিঘা প্রতি ধান উৎপাদন হতো ২০ থেকে ২৫ মণ। সে মোতাবেক ১ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে আমন ও ইরি দুই মৌসুমে বছরে প্রায় ২৭৯৯ দশমিক ৩ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হতো। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে জমিগুলো জলাবদ্ধ থাকায় দীর্ঘ কয়েকবছর থেকে লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর, গড়পিংলাই, মহদীপুর, মহেশপুর, আড়াপাড়া, ঘোনাপাড়া, বারাইপাড়া, গণিপুর ও পলিপাড়াসহ দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমিতে দীর্ঘদিন থেকে জলাবদ্ধ। সমস্যা সমাধানে ২০৬ মিটার লম্বা ক্যানেল তৈরি করা হলেও বর্তমানে ওইসব জমি কোমড় বা হাঁটুসম পানিতে তলিয়ে। পুরো জমি শ্যাওলার চাঁদরে ঢেকে আছে। ফলে কোনো ফসল ফলাতে পারেন না কৃষকরা।

সত্তোরোর্ধ্ব কৃষক মতিবুল রহমান বলেন, পূর্বে এসব জমিতে চাষাবাদ হলেও, দীর্ঘ ২০ বছর থেকে জমিগুলো পানিতে তলিয়ে থাকে। বর্ষায় জমে থাকা পানি সারাবছর জলাবদ্ধ হয়ে থাকে। কিছু অংশে পানি কম জলাবদ্ধ থাকলে কৃষকরা সে জমিগুলোতে চাষাবাদ শুরু করেন। কিন্তু তাও নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কেউ ঝুঁকি নিয়ে আর চাষাবাদ করেন না। অনেক লড়াই-সংগ্রাম করার পরে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহামুদুল আলমের নেতৃত্বে সমস্যা সমাধানে প্রথম ধাপে ১৬৩ মিটার এবং পরে আরো ৪৩ মিটার লম্ব ক্যানেল তৈরি করা হলেও তা পরিকল্পনা মাফিক নির্মাণ না করায় বিফলে গেছে। জমির চেয়ে ক্যানেলে উচ্চতা উঁচু হওয়ায় পানি নামে না সে ক্যানেলে ফলে জলাবদ্ধই থাকছে জমিগুলো।

এতে পানিতে তলিয়ে আছে আইয়ুব আলীর চার বিঘা, মোস্তাফিজার রহমানের ৩২ বিঘা, মো. বাবুর ১৮ বিঘা, জয়নাল আবেদিনের ৬ বিঘাসহ আরো অসংখ্য কৃষকের জমি। তাদের সাথে কথা বললে তারা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে বন্ধ হয়ে যায় আমাদের জমির পানি নিষ্কাশনের পথ। ফলে জলাবদ্ধ হয়ে আছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ বিঘা আবাদি জমি। সমস্যা নিরাসনে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি আমরা। পরে ক্যানেল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি উল্টো সরকারের অর্ধকোটি টাকা গচ্ছা গেছে। ক্যানেল তৈরি করা হলেও তা পরিকল্পনা মাফিক তৈরি করেনি। যার কারণে সে ক্যানেলে নামে না জলাবদ্ধ পানি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টিকামনা করেন তারা।

উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) সফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। যাতে কোনো উপায়ে জলাবদ্ধতা থেকে ক্যানেলে পানি নিষ্কাশন করা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, এতো জমি জলাবদ্ধ হয়ে থাকলেও আমাদের করার কিছু নেই। কারণ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট। তবে পানি নিষ্কাশন হলে আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বীজ ও সার দিয়ে সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল বলেন, এতো টাকা ব্যয়ে যেহেতু ক্যানেল নির্মাণ করা হয়েছে, সেহেতু ক্যানেল ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা সম্ভব না। তবে পানি নিষ্কাসনের বিকল্প পথ বের করা হবে। এ বিষয়ে এলজিইডি প্রকৌশলীর সাথে বসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সোহাগ চন্দ্র সাহা মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলা হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে।

back to top