কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার চারটি উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। যদিও রোববার রাত থেকে সোমবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নামতে শুরু করেছে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ১ ফুট নিচে নামায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে পূর্বধলা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দার চিত্র। যদিও পুরোপুরি পানি নামতে বেশ ক’দিন সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে এরই মধ্যে নেমে যাওয়া পানিতে আবারো ভাটি অঞ্চলের নিচু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলা থেকে পানি নামতে শুরু করায় খুব দ্রুত বন্যা কবলিত হয় নেত্রকোনা সদর কলমাকান্দা দুর্গাপুর ও পূর্বধলার বিভিন্ন ইউনিয়ন। পানিবন্দী হয়ে পরে হাজার হাজার পরিবার। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পানি উঠেছে ঘরে। বাধ্য হয়ে গরু ছাগল গৃহপালিত পশু নিয়ে বানবাসীরা আশ্রয় নিয়েছে উঁচু উঁচু এলাকায়।
বিশেষ করে দুর্গাপুর-নেত্রকোনা- কলমাকান্দা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে তাবু করে সেখানেই আশ্রয় নেয় বন্যাকবলিত মানুষ। এই মুহূর্তে বন্যার্তদের মাঝে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। আর এই সংকট কাটিয়ে উঠতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও তা খুবই অপ্রতুল। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এগিয়ে আসছে স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও রাজনৈতিক সংগঠন।
পূর্বধলা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদারের নেতৃত্বে জারিয়া এলাকায় শতাধিক পরিবারের মাঝে দেয়া হয়েছে শুকনো খাবার প্যাকেট। এবারের চলমান বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরা। জারিয়া এলাকার কৃষক মোস্তাক মিয়া, অলিউল্লাহ ও মৎস্য চাষি আজহারুল জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। জেলার সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী কংস ও কলমাকান্দার উব্দাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি চলে আসে। এতেই নদী উপচে তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম ও ফসলে জমিতে ঢলের পানি প্রবেশ করে। মুহূর্তেই তলিয়ে যায় অসংখ্য মৎস্য খামার। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা।
পূর্বধলার বিভিন্ন এলাকায় জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ রাজনৈতিক দলের ত্রাণ তৎপরতা চললেও দুর্গাপুরের কাকৈরগড়া ইউনিয়নে এখনো পৌঁছায়নি তেমন কোনো ত্রাণ সহায়তা। কাকৈগরা ইউনিয়নের পূর্ব বিলাসপুর গ্রামের রমিজ উদ্দিন, আক্তার মিয়া, হাসেম আলী জানান, গত তিন দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে কোনোরকমে দিন যাপন করছেন তারা। কিন্তু এখনো উপজেলা প্রশাসন কিংবা বেসরকারি পর্যায় থেকে কেউ কোনো সহায়তা নিয়ে আসেননি। ফলে স্থানীয় হতদরিদ্র মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।
গো-খাদ্য সংকট ও বাসস্থানের অভাবে পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছন বিভিন্ন সড়কে। অতিসত্বর বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানিয়েছে, এরই মধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পানি এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে। অচিরেই সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪
কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার চারটি উপজেলায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। যদিও রোববার রাত থেকে সোমবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় নামতে শুরু করেছে পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় পানি ১ ফুট নিচে নামায় কিছুটা উন্নতি হয়েছে পূর্বধলা, দুর্গাপুর, কলমাকান্দার চিত্র। যদিও পুরোপুরি পানি নামতে বেশ ক’দিন সময় লাগবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে এরই মধ্যে নেমে যাওয়া পানিতে আবারো ভাটি অঞ্চলের নিচু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী ময়মনসিংহের ধোবাউরা উপজেলা থেকে পানি নামতে শুরু করায় খুব দ্রুত বন্যা কবলিত হয় নেত্রকোনা সদর কলমাকান্দা দুর্গাপুর ও পূর্বধলার বিভিন্ন ইউনিয়ন। পানিবন্দী হয়ে পরে হাজার হাজার পরিবার। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পানি উঠেছে ঘরে। বাধ্য হয়ে গরু ছাগল গৃহপালিত পশু নিয়ে বানবাসীরা আশ্রয় নিয়েছে উঁচু উঁচু এলাকায়।
বিশেষ করে দুর্গাপুর-নেত্রকোনা- কলমাকান্দা মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে তাবু করে সেখানেই আশ্রয় নেয় বন্যাকবলিত মানুষ। এই মুহূর্তে বন্যার্তদের মাঝে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। আর এই সংকট কাটিয়ে উঠতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও তা খুবই অপ্রতুল। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এগিয়ে আসছে স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও রাজনৈতিক সংগঠন।
পূর্বধলা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদারের নেতৃত্বে জারিয়া এলাকায় শতাধিক পরিবারের মাঝে দেয়া হয়েছে শুকনো খাবার প্যাকেট। এবারের চলমান বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ীরা। জারিয়া এলাকার কৃষক মোস্তাক মিয়া, অলিউল্লাহ ও মৎস্য চাষি আজহারুল জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। জেলার সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী কংস ও কলমাকান্দার উব্দাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি চলে আসে। এতেই নদী উপচে তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম ও ফসলে জমিতে ঢলের পানি প্রবেশ করে। মুহূর্তেই তলিয়ে যায় অসংখ্য মৎস্য খামার। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা।
পূর্বধলার বিভিন্ন এলাকায় জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ রাজনৈতিক দলের ত্রাণ তৎপরতা চললেও দুর্গাপুরের কাকৈরগড়া ইউনিয়নে এখনো পৌঁছায়নি তেমন কোনো ত্রাণ সহায়তা। কাকৈগরা ইউনিয়নের পূর্ব বিলাসপুর গ্রামের রমিজ উদ্দিন, আক্তার মিয়া, হাসেম আলী জানান, গত তিন দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে কোনোরকমে দিন যাপন করছেন তারা। কিন্তু এখনো উপজেলা প্রশাসন কিংবা বেসরকারি পর্যায় থেকে কেউ কোনো সহায়তা নিয়ে আসেননি। ফলে স্থানীয় হতদরিদ্র মানুষ বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন।
গো-খাদ্য সংকট ও বাসস্থানের অভাবে পশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছন বিভিন্ন সড়কে। অতিসত্বর বন্যাকবলিতদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
এদিকে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানিয়েছে, এরই মধ্যে বন্যাকবলিত এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পানি এরই মধ্যে নামতে শুরু করেছে। অচিরেই সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে।