শরীয়তপুরের জাজিরা মাঝির ঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পুরো বাঁধটি। হুমকিতে পড়েছে অন্তত ২ হাজার বসতি ও মাঝিরঘাট বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কিন্তু বাঁধ ধসে যাওয়ার একমাস পেরিয়ে গেলেও তা মেরামতের কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার(৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে যোগ দিয়েছে ভাঙন আতঙ্কে থাকা স্থানীয় বসবাসকারী, ব্যবসায়ীদের অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাঁধটির আরও কয়েকটি অংশ এর আগে ভেঙেছে। এই ভাঙনের ফলে পুরো বাঁধই ঝুঁকির মধ্যে। অথচ বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ আমরা দেখছি না। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারেদ্বারে ঘুরেও কোন সূরাহা পাচ্ছিনা। তারা শুধু বলছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এভাবে বাঁধ ভাঙতে থাকলে এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামতের দাবি জানান বক্তারা। এছাড়াও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের দৃশ্যমান উদ্যোগ না নিলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি দিবে বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মাঝিরঘাট বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা শেখ বলেন, এই বাঁধ এভাবে ভাঙতে থাকলে পুরো বাজার বর্ষায় বিলীন হয়ে যাবে। আমরা ব্যবসায়ীরা পথে বসে যাবো। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে বাঁধটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করার দাবী জানাই।
এদিকে বাঁধের ওই ১০০ মিটার ধস ছাড়াও আরও কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। অনেকেই সরিয়ে নিয়েছেন বসতঘর ও মালামাল।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল তালুকদার বলেন, বাঁধের পাশেই আমার বসতবাড়ি। চোখের পলকে বাড়িটি ধসে যায়। মালামাল নিয়ে অন্যত্র সরে যাই। এখন প্রতিটি রাত কাটে দুশ্চিন্তায়। কিন্তু বাঁধ মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণ না হলে এই এলাকা ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় তরুণ আকরাম হোসেন বলেন,বাঁধে ভাঙনের অংশটি পদ্মা সেতুর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণার অনেক কাছাকাছি এলাকা। এখনই যদি বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত না করা হয় তাহলে বসতবাড়ি, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পদ্মা সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাঁধের ধসে যাওয়া অংশগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘেরাও কর্মসূচি দেবো।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় হঠাৎ পদ্মা সেতুর ভাটিতে দুই কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের মাঝিরঘাট সংলগ্ন এলাকায় ১০০ মিটার পদ্মা নদীতে ধসে পড়ে। আতঙ্কিত তীরবর্তী মানুষ ঘরবাড়ি আর মালামাল সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধিকরণকৃত এলাকা ও কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ২০১০- ১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতুর ভাটিতে জাজিরা প্রান্তে ২ কিলোমিটার বাঁধটি নির্মাণ করে। এতে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষায় বাঁধের বিভিন্ন অংশ ক্ষতির মুখে পড়ে। চলতি বছর ৩০ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্তি হওয়ায় বাঁধের এই অংশে মেরামত কাজ করার সুযোগ নেই বলে একটি চিঠিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান।
তিনি আরও জানান, শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর দীর্ঘদিন ধরে ভাঙনের শিকার। জাজিরার পদ্মার ডান তীর রক্ষায় একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর আগে পদ্মা সেতুর ভাটিতে নড়িয়া পর্যন্ত একটি সার্ভে করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেখানে নির্মাণ করা ওই দুই কিলোমিটার বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেতু বিভাগে জানানো হয়। কিন্তু সেতু বিভাগ সম্মতি না দেয়ায় প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুই কিলোমিটার বাঁধ। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ওই ১০০ মিটার এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু মেরামতে সেতু কর্তৃপক্ষ একটি চিঠিও দিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রণালয় অবহিত আছে। বরাদ্দ পেলে মেরামতের কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪
শরীয়তপুরের জাজিরা মাঝির ঘাট এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে পুরো বাঁধটি। হুমকিতে পড়েছে অন্তত ২ হাজার বসতি ও মাঝিরঘাট বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কিন্তু বাঁধ ধসে যাওয়ার একমাস পেরিয়ে গেলেও তা মেরামতের কোন দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার(৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে যোগ দিয়েছে ভাঙন আতঙ্কে থাকা স্থানীয় বসবাসকারী, ব্যবসায়ীদের অন্তত দুই শতাধিক মানুষ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাঁধটির আরও কয়েকটি অংশ এর আগে ভেঙেছে। এই ভাঙনের ফলে পুরো বাঁধই ঝুঁকির মধ্যে। অথচ বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ আমরা দেখছি না। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারেদ্বারে ঘুরেও কোন সূরাহা পাচ্ছিনা। তারা শুধু বলছেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে। এভাবে বাঁধ ভাঙতে থাকলে এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামতের দাবি জানান বক্তারা। এছাড়াও আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতের দৃশ্যমান উদ্যোগ না নিলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি দিবে বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মাঝিরঘাট বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা শেখ বলেন, এই বাঁধ এভাবে ভাঙতে থাকলে পুরো বাজার বর্ষায় বিলীন হয়ে যাবে। আমরা ব্যবসায়ীরা পথে বসে যাবো। আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে বাঁধটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করার দাবী জানাই।
এদিকে বাঁধের ওই ১০০ মিটার ধস ছাড়াও আরও কয়েকটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চরম আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী। অনেকেই সরিয়ে নিয়েছেন বসতঘর ও মালামাল।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল তালুকদার বলেন, বাঁধের পাশেই আমার বসতবাড়ি। চোখের পলকে বাড়িটি ধসে যায়। মালামাল নিয়ে অন্যত্র সরে যাই। এখন প্রতিটি রাত কাটে দুশ্চিন্তায়। কিন্তু বাঁধ মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বর্ষার আগে বাঁধ নির্মাণ না হলে এই এলাকা ভাঙনে বিলীন হয়ে যাবে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় তরুণ আকরাম হোসেন বলেন,বাঁধে ভাঙনের অংশটি পদ্মা সেতুর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপণার অনেক কাছাকাছি এলাকা। এখনই যদি বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত না করা হয় তাহলে বসতবাড়ি, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পদ্মা সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাঁধের ধসে যাওয়া অংশগুলো মেরামতের কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘেরাও কর্মসূচি দেবো।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় হঠাৎ পদ্মা সেতুর ভাটিতে দুই কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের মাঝিরঘাট সংলগ্ন এলাকায় ১০০ মিটার পদ্মা নদীতে ধসে পড়ে। আতঙ্কিত তীরবর্তী মানুষ ঘরবাড়ি আর মালামাল সরিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধিকরণকৃত এলাকা ও কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড রক্ষায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ২০১০- ১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতুর ভাটিতে জাজিরা প্রান্তে ২ কিলোমিটার বাঁধটি নির্মাণ করে। এতে স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষায় বাঁধের বিভিন্ন অংশ ক্ষতির মুখে পড়ে। চলতি বছর ৩০ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্তি হওয়ায় বাঁধের এই অংশে মেরামত কাজ করার সুযোগ নেই বলে একটি চিঠিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান।
তিনি আরও জানান, শরীয়তপুরের জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীর দীর্ঘদিন ধরে ভাঙনের শিকার। জাজিরার পদ্মার ডান তীর রক্ষায় একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা পাঠায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর আগে পদ্মা সেতুর ভাটিতে নড়িয়া পর্যন্ত একটি সার্ভে করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেখানে নির্মাণ করা ওই দুই কিলোমিটার বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেতু বিভাগে জানানো হয়। কিন্তু সেতু বিভাগ সম্মতি না দেয়ায় প্রকল্পটি অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুই কিলোমিটার বাঁধ। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ওই ১০০ মিটার এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটুকু মেরামতে সেতু কর্তৃপক্ষ একটি চিঠিও দিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রণালয় অবহিত আছে। বরাদ্দ পেলে মেরামতের কাজ শুরু করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।