alt

সারাদেশ

কৃত্রিম পায়ে হাঁটছেন পুলিশের গুলিতে পা হারানো ইনামুল

প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) : রোববার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা বাজার। মঙ্গলবার বেলা তখন প্রায় সাড়ে ১২টা। হঠাৎই এ বাজারের মাদ্রাসা রোডে চোখে পড়ল গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পা হারানো মো. ইনামুল কাওছারকে (৩২)। সঙ্গে তাঁর বড় মেয়ে। মনে হচ্ছিল সুস্থ মানুষের মতো মেয়ের হাত ধরে বাড়ির পথে হেঁটে যাচ্ছেন তিনি। কুশল বিনিময় শেষে ইনামুল কাওছার জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সৌজন্যে কৃত্রিম পায়ে হাঁটা শুরু করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে চলাফেরা করতে পারছেন। এর আগে এক মাস ঢাকায় ব্র্যাকের নির্ধারিত একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শেষে কৃত্রিম পা লাগানো হয়। হাঁটতে পারলেও এখনো অনেক কষ্ট হয় বলে জানিয়ে ইনামুল বলেন, ‘একটানা বেশিক্ষণ চলতে পারি না। তবু এটুকু সুবিধা হওয়ায় মেয়েরা খুব খুশি হয়েছে। সময় নিয়ে ওদের সঙ্গে হাঁটি। বাড়ির টুকটাক কাজ করতে পারি। মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, যাঁরা আমার এমন উপকার করেছেন তাঁদের যেন ভালো হয়।’

আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন ইনামুল কাওছার। উপজেলার মধ্যপাড়া ভরমোহিনী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পা হারানোর কথা বলতে গিয়ে ইনামুল জানান, ৪ আগস্ট সলঙ্গা বাজার এলাকায় মিছিল করছিলেন তাঁরা। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। ঠিক সেই সময় আচমকা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। একটি গুলি এসে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইনামুল। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদরের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। দেশের পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে তাঁকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সেখানে চিকিৎসার একপর্যায়ে জানা যায়, ইনামুলের পায়ের ক্ষতস্থানে পচন ধরেছে। আরও ক্ষতির আশঙ্কায় তাঁর পায়ের হাঁটুর ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা; তা–ই করা হয়। ইনামুল কাওছারকে নিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর ‘আমার ভালো ছেলেটা মিছিলে গেল, কিন্তু নিজের পা একটা হারাইয়া আইল —শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ইনামুলের বাবা মারা গেছেন। মা বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। চার বোনের বিয়ের পর মা, ছোট ভাই, স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন। উল্লাপাড়ার সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে বাবার রেখে যাওয়া জমিতে চাষাবাদ, গরু পালন আর বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্যের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইনামুল। ভালোই চলছিল তাঁর সংসার। এর মধ্যে পা হারানোয় সেই ছন্দে ব্যাঘাত ঘটেছে। ছোট ভাই নাজমুল ইসলাম স্নাতকোত্তর পাস। পারাবারিক কাজকর্মের পাশাপাশি চাকরি খুঁজছেন তিনি। ভাইয়ের একটা চাকরি হলে চলাফেরার একটা ব্যবস্থা হতো বলে জানান ইনামুল। স্থানীয় একটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান মোস্তফা জামান বলেন, টগবগে একটি মানুষ আন্দোলনে গিয়ে পা হারাল। ব্র্যাকের ব্যবস্থাপনায় কৃত্রিম পা সংযুক্ত করে কিছুটা হলেও তাঁর চলাচলের উপযোগী হয়েছে ইনামুল কাওছার। তাঁর পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

ছবি

পুলিশি হেফাজত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন কর্মীরা

নদীতে গোসলে নেমে ৩ শিক্ষার্থী নিখোঁজ

সিংগাইরে জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে মারধর করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে শিবির-ছাত্রদলের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, পুলিশ মোতায়েন

রূপগঞ্জে পরিত্যক্ত অবস্থায় ২০ ককটেল উদ্ধার

শরীয়তপুরে বোনজামাইকে হত্যার অভিযোগ মাদকাসক্ত শ্যালকের বিরুদ্ধে

সিলেটে ১৪ হাজার কেজি ভারতীয় চিনিসহ পুলিশের জালে যুবক

ট্রেনিংয়ের উদ্দ্যেশ্যে বেরিয়েছিলো যুবক:মিলল আবাসিক হোটেলে ঝুলন্ত মরদেহ

সিলেটজুড়ে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা

বনশ্রীতে সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে হত্যার অভিযোগে মা আটক

গাজীপুররে শ্রীপুরে গভীর রাতে দরজা ভঙে ঘরে ঢুকে বাড়রি মালকিকে হাত-পা বেঁধে ডাকাতরি ঘটনা ঘটছে।

শ্রীপুরে গভীর রাতে দরজা ভেঙে হাত-পা বেঁধে ডাকাতি

ছবি

খাট্রামাধবপাড়া ইউনিয়নে হয়ে গেল পিঠা উৎসব

ছবি

রাবিতে বেড়েছে সাইকেল চুরি, নিরাপত্তার শঙ্কা

ছবি

পটুয়াখালীতে ২৪২টি আয়রন ব্রিজ জরাজীর্ণ, জনদুর্ভোগ চরমে

বেলাবোতে পিঠা উৎসব

ছবি

সোনারগাঁয়ে ছুটির দিনে কারুশিল্প মেলা জমজমাট

যশোরে ব্রাদার টিটোস হোমে বাহারি শিল্পকর্মে রকমারি পিঠা উৎসব

ছবি

ঘোড়াঘাটে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ভুট্টা ও রবি ফসলের চাষ

ছবি

দিনভর অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলার ৪ স্কুলের ৯১-এর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

সিরাজগঞ্জে নিখোঁজ ২ স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে যাত্রী পারাপার ২ ট্রলারসহ আটক ৩

ভোলায় জলদস্যুদের গুলিতে নিহত ১, আহত ২

মঠবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনায় এসআই ক্লোজড

শেরপুরে চোরাই অটোরিকশা, ব্যাটারি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪

ছবি

রাজশাহীতে মহাসড়কে আলু ফেলে প্রতিবাদ, হিমাগারের ভাড়া কমানোর দাবি

ঝালকাঠির ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি

লালপুরে ভ্যানচালকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

মুন্সীগঞ্জে বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের অভিযানে গুলি বিনিময়

ছবি

সিরাজগঞ্জে তিন’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী দই মেলা শুরু

ছবি

সান্তাহারে রেলওয়ের ১০৬ বিঘা জমি অবৈধ দখলে, গড়ে উঠেছে বস্তি ও বিভিন্ন স্থাপনা

ছবি

রায়পুরে পানি সংকটে বোরো আবাদ ব্যাহত

ছবি

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেলপথ : প্রথম দিনে আয় ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৮ টাকা

ছবি

ময়মনসিংহ মেডিকেলে ফুল দিয়ে বরণকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল-শিবিরের হাতাহাতি

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে কাজ না করেই অর্থ লোপাট

মাদারীপুরকে ‘দরিদ্র জেলা’ মানতে পারছেন না বাসিন্দারা, নতুন করে জরিপের দাবি

tab

সারাদেশ

কৃত্রিম পায়ে হাঁটছেন পুলিশের গুলিতে পা হারানো ইনামুল

প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ)

রোববার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা বাজার। মঙ্গলবার বেলা তখন প্রায় সাড়ে ১২টা। হঠাৎই এ বাজারের মাদ্রাসা রোডে চোখে পড়ল গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পা হারানো মো. ইনামুল কাওছারকে (৩২)। সঙ্গে তাঁর বড় মেয়ে। মনে হচ্ছিল সুস্থ মানুষের মতো মেয়ের হাত ধরে বাড়ির পথে হেঁটে যাচ্ছেন তিনি। কুশল বিনিময় শেষে ইনামুল কাওছার জানান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সৌজন্যে কৃত্রিম পায়ে হাঁটা শুরু করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে চলাফেরা করতে পারছেন। এর আগে এক মাস ঢাকায় ব্র্যাকের নির্ধারিত একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শেষে কৃত্রিম পা লাগানো হয়। হাঁটতে পারলেও এখনো অনেক কষ্ট হয় বলে জানিয়ে ইনামুল বলেন, ‘একটানা বেশিক্ষণ চলতে পারি না। তবু এটুকু সুবিধা হওয়ায় মেয়েরা খুব খুশি হয়েছে। সময় নিয়ে ওদের সঙ্গে হাঁটি। বাড়ির টুকটাক কাজ করতে পারি। মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, যাঁরা আমার এমন উপকার করেছেন তাঁদের যেন ভালো হয়।’

আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন ইনামুল কাওছার। উপজেলার মধ্যপাড়া ভরমোহিনী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পা হারানোর কথা বলতে গিয়ে ইনামুল জানান, ৪ আগস্ট সলঙ্গা বাজার এলাকায় মিছিল করছিলেন তাঁরা। এ সময় পুলিশের ধাওয়ায় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান। ঠিক সেই সময় আচমকা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। একটি গুলি এসে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুতে লাগে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইনামুল। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদরের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। দেশের পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে তাঁকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সেখানে চিকিৎসার একপর্যায়ে জানা যায়, ইনামুলের পায়ের ক্ষতস্থানে পচন ধরেছে। আরও ক্ষতির আশঙ্কায় তাঁর পায়ের হাঁটুর ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা; তা–ই করা হয়। ইনামুল কাওছারকে নিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর ‘আমার ভালো ছেলেটা মিছিলে গেল, কিন্তু নিজের পা একটা হারাইয়া আইল —শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে একটা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ইনামুলের বাবা মারা গেছেন। মা বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকেন। চার বোনের বিয়ের পর মা, ছোট ভাই, স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন। উল্লাপাড়ার সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে বাবার রেখে যাওয়া জমিতে চাষাবাদ, গরু পালন আর বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্যের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইনামুল। ভালোই চলছিল তাঁর সংসার। এর মধ্যে পা হারানোয় সেই ছন্দে ব্যাঘাত ঘটেছে। ছোট ভাই নাজমুল ইসলাম স্নাতকোত্তর পাস। পারাবারিক কাজকর্মের পাশাপাশি চাকরি খুঁজছেন তিনি। ভাইয়ের একটা চাকরি হলে চলাফেরার একটা ব্যবস্থা হতো বলে জানান ইনামুল। স্থানীয় একটি শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান মোস্তফা জামান বলেন, টগবগে একটি মানুষ আন্দোলনে গিয়ে পা হারাল। ব্র্যাকের ব্যবস্থাপনায় কৃত্রিম পা সংযুক্ত করে কিছুটা হলেও তাঁর চলাচলের উপযোগী হয়েছে ইনামুল কাওছার। তাঁর পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

back to top