নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : সরিষার আবাদি জমি পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান -সংবাদ
‘‘ষোল চাষে মুলা, তার অর্ধেক তুলা, তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষে পান।’ প্রচলিত এই খনার বচনের সঙ্গে নতুন ভাবে শুরু হয়েছে চাষ ছাড়াই সরিষার আবাদ। চলতি বছরে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন মাঠে চাষ ছাড়াই আবাদ হয়েছে বারি সরিষা-১৪। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী নন্দীগ্রামে বিনা চাষের এই সরিষার আবাদে আগ্রহ বাড়ছে নন্দীগ্রামের কৃষকদের। ধানী জমিতে ধান কাটার ৮-১০দিন আগেই রিলে পদ্ধতিতে সরিষার বীজ বপন করা হয়। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে সরিষার চাষ করছে কৃষকরা।
এছাড়াও কৃষকদের বিভিন্ন ট্রেনিং ও মাঠ দিবসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেছেন জমি পতিত না রেখে বিনা চাষে সরিষার আবাদ করার জন্য। কৃষকরা ট্রেনিং ও মাঠ দিবসে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা জমিতে বিনা চাষেই বারি-১৪ সরিষার চাষ করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কোন কোন জমিতে সরিষার পাক ধরেছে। আগাম যে সব কৃষকরা সরিষার চাষ করেছিলেন তারা জমি থেকে সরিষা সংগ্রহ করছেন। নন্দীগ্রামের মাঠে বিস্তৃর্ণ সরিষা ক্ষেত বলে দিচ্ছে বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। কৃষকদের চোখে এখন আনন্দের ঝিলিক। ৫নং ভাটগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী তিন বিঘা জমিতে বিনা চাষে বারি সরিষা-১৪ চাষ করেছি।
প্রথমে ভেবেছিলাম সরিষার ভালো ফলন হবে না, তবে এখন দেখতে পাচ্ছি এভাবে সরিষা চাষ করলে অধিক হারে ফলন হয় এবং অনেক আগেই সরিষা কর্তন করা যায় এবং বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। আশা করছি আগামীতে আরো বেশি করে বিনা চাষে সরিষা লাগাবো। বিনা চাষে সরিষার ভালো ফলন হওয়ায় আমার আশপাশের কৃষকরা আগামী বছরে এভাবে বিনা চাষে সরিষা রোপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিনা চাষে বারি-১৪ সরিষার জমি পরিদর্শন করেছেন বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান। পরিদর্শন কালে উপ-পরিচালক বলেন, রোপা আমন ধান কাটার ১০-১৫ দিন আগে সাধারণত যেসব জমিতে জো আসে না বা পানি থাকে না কিন্তু জমি কাদা কাদা ভাব থাকে সেসব জমিতে সরিষা ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। একেই মূলত রিলে পদ্ধতি বলে। তিনি আরো বলেন, এপদ্ধতিতে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি সরিষা বীজের প্রয়োজন হয়। এভাবে সঠিক সময়ে সরিষা চাষ করলে বোরো ধানও যথাসময়ে আবাদ করা যায়। রিলে পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই বছরে দুটি ফসলের পরিবর্তে তিনটি ফসল পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, চলতি বছরে নন্দীগ্রামে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
সরিষার তেলে রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। আর সরিষার খৈল জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে থাকে। সময় এবং খরচ কম হওয়ায় নন্দীগ্রাম উপজেলায় সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিনা চাষে সরিষা আবাদে সফল এবং বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবে নন্দীগ্রামের কৃষকরা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) : সরিষার আবাদি জমি পরিদর্শন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান -সংবাদ
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
‘‘ষোল চাষে মুলা, তার অর্ধেক তুলা, তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষে পান।’ প্রচলিত এই খনার বচনের সঙ্গে নতুন ভাবে শুরু হয়েছে চাষ ছাড়াই সরিষার আবাদ। চলতি বছরে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন মাঠে চাষ ছাড়াই আবাদ হয়েছে বারি সরিষা-১৪। উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী নন্দীগ্রামে বিনা চাষের এই সরিষার আবাদে আগ্রহ বাড়ছে নন্দীগ্রামের কৃষকদের। ধানী জমিতে ধান কাটার ৮-১০দিন আগেই রিলে পদ্ধতিতে সরিষার বীজ বপন করা হয়। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে সরিষার চাষ করছে কৃষকরা।
এছাড়াও কৃষকদের বিভিন্ন ট্রেনিং ও মাঠ দিবসে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেছেন জমি পতিত না রেখে বিনা চাষে সরিষার আবাদ করার জন্য। কৃষকরা ট্রেনিং ও মাঠ দিবসে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবার নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা জমিতে বিনা চাষেই বারি-১৪ সরিষার চাষ করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কোন কোন জমিতে সরিষার পাক ধরেছে। আগাম যে সব কৃষকরা সরিষার চাষ করেছিলেন তারা জমি থেকে সরিষা সংগ্রহ করছেন। নন্দীগ্রামের মাঠে বিস্তৃর্ণ সরিষা ক্ষেত বলে দিচ্ছে বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। কৃষকদের চোখে এখন আনন্দের ঝিলিক। ৫নং ভাটগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী তিন বিঘা জমিতে বিনা চাষে বারি সরিষা-১৪ চাষ করেছি।
প্রথমে ভেবেছিলাম সরিষার ভালো ফলন হবে না, তবে এখন দেখতে পাচ্ছি এভাবে সরিষা চাষ করলে অধিক হারে ফলন হয় এবং অনেক আগেই সরিষা কর্তন করা যায় এবং বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়। আশা করছি আগামীতে আরো বেশি করে বিনা চাষে সরিষা লাগাবো। বিনা চাষে সরিষার ভালো ফলন হওয়ায় আমার আশপাশের কৃষকরা আগামী বছরে এভাবে বিনা চাষে সরিষা রোপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিনা চাষে বারি-১৪ সরিষার জমি পরিদর্শন করেছেন বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মতলুবর রহমান। পরিদর্শন কালে উপ-পরিচালক বলেন, রোপা আমন ধান কাটার ১০-১৫ দিন আগে সাধারণত যেসব জমিতে জো আসে না বা পানি থাকে না কিন্তু জমি কাদা কাদা ভাব থাকে সেসব জমিতে সরিষা ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। একেই মূলত রিলে পদ্ধতি বলে। তিনি আরো বলেন, এপদ্ধতিতে এক বিঘা জমির জন্য এক কেজি সরিষা বীজের প্রয়োজন হয়। এভাবে সঠিক সময়ে সরিষা চাষ করলে বোরো ধানও যথাসময়ে আবাদ করা যায়। রিলে পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই বছরে দুটি ফসলের পরিবর্তে তিনটি ফসল পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, চলতি বছরে নন্দীগ্রামে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
সরিষার তেলে রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। আর সরিষার খৈল জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সরিষার গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া জমিতে সরিষার আবাদ করলে ওই জমিতে সরিষার পাতা পড়ে জমির খাদ্য চাহিদা অনেকাংশে মিটিয়ে থাকে। সময় এবং খরচ কম হওয়ায় নন্দীগ্রাম উপজেলায় সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিনা চাষে সরিষা আবাদে সফল এবং বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবে নন্দীগ্রামের কৃষকরা।