দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর বুকে নির্মিত নতুন যমুনা রেলওয়ে সেতু চালু হয়েছে। এতে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবে এ উন্নয়নযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল রেললাইন, যা দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মিত নতুন রেলসেতুকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে আশা জেগেছে। পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি, শিল্প বিনিয়োগ এবং রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ট্রেন চালানোর পাশাপাশি কক্সবাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। তবে, পশ্চিমাঞ্চলের ৬৬টি ট্রেনকে এই ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইনে ক্রসিং করতে গতি কমাতে হয়, ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা তেমন মিলছে না।
রাজশাহী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে নাটোরের আব্দুলপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত মাত্র ২০ কিলোমিটার ডাবল লাইন। কিন্তু ঈশ্বরদী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত ৭১ কিমি এবং রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ৪৩ কিমি মিলে ১১৪ কিমি রেলপথ সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, রেল সেতুতে দুটি লাইন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইনে প্রতিদিন ৩৪টি ট্রেন চলাচল করছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলে আরেকটি লাইন খুলে দেওয়া হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০ কিমি গতিতে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন পারাপার করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে মূল সেতুর কিছু অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এরপর প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিমি গতিতে সেতু পারাপার করত। এ সমস্যার সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ২৯ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
দেশের দীর্ঘতম এ রেলওয়ে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক বাজেট ছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা পরে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২৭.৬০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং ৭২.৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপানের জাইকা।বুধবার দুপুরে নতুন সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো রাজশাহী থেকে যাত্রীবাহী সিল্কসিটি ট্রেন পারাপার হয়, যার গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০ কিমি। নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ দ্রুততর ট্রেন যোগাযোগের স্বপ্ন দেখলেও ডাবল লাইন না থাকায় সেই স্বপ্ন এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানান যাত্রীরা।
সেতু প্রকল্পের পরিচালক আরও বলেন, যমুনা রেল সেতুর সর্বচ্চো সুবিধার জন্য সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরর্দী পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার ডাবল রেল লাউন নির্মানের পরিপল্পনা চলমান রয়েছে । রেল সেতু নির্মানের সংশ্লিস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার চুক্তি হয়েছে। জাপান-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়গে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে । এজন্য ইতিমধ্যেই জাপানের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের সুপাররিশ পেতে আরো দেড় থেকে ২ বছরের সময় লাগবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। একই সাথে ট্রেন ভ্রমণে মানুষের ভোগান্তি কমবে এবং আস্থা বাড়বে।
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যমুনা নদীর বুকে নির্মিত নতুন যমুনা রেলওয়ে সেতু চালু হয়েছে। এতে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবে এ উন্নয়নযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল রেললাইন, যা দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যমুনা সেতুর ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মিত নতুন রেলসেতুকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের মানুষের মধ্যে আশা জেগেছে। পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি, শিল্প বিনিয়োগ এবং রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ট্রেন চালানোর পাশাপাশি কক্সবাজার পর্যন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। তবে, পশ্চিমাঞ্চলের ৬৬টি ট্রেনকে এই ১১৪ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইনে ক্রসিং করতে গতি কমাতে হয়, ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা তেমন মিলছে না।
রাজশাহী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে নাটোরের আব্দুলপুর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত মাত্র ২০ কিলোমিটার ডাবল লাইন। কিন্তু ঈশ্বরদী থেকে যমুনা রেলসেতু পর্যন্ত ৭১ কিমি এবং রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ৪৩ কিমি মিলে ১১৪ কিমি রেলপথ সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে রেল সেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসউদুর রহমান বলেন, রেল সেতুতে দুটি লাইন রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইনে প্রতিদিন ৩৪টি ট্রেন চলাচল করছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলে আরেকটি লাইন খুলে দেওয়া হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০ কিমি গতিতে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন পারাপার করা সম্ভব হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত সেতুর মাধ্যমে ঢাকা-উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু ২০০৮ সালে মূল সেতুর কিছু অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এরপর প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিমি গতিতে সেতু পারাপার করত। এ সমস্যার সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ২৯ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।
দেশের দীর্ঘতম এ রেলওয়ে সেতু নির্মাণের প্রাথমিক বাজেট ছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা, যা পরে বাড়িয়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২৭.৬০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং ৭২.৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপানের জাইকা।বুধবার দুপুরে নতুন সেতু দিয়ে প্রথমবারের মতো রাজশাহী থেকে যাত্রীবাহী সিল্কসিটি ট্রেন পারাপার হয়, যার গতি ছিল ঘণ্টায় ৭০ কিমি। নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ দ্রুততর ট্রেন যোগাযোগের স্বপ্ন দেখলেও ডাবল লাইন না থাকায় সেই স্বপ্ন এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানান যাত্রীরা।
সেতু প্রকল্পের পরিচালক আরও বলেন, যমুনা রেল সেতুর সর্বচ্চো সুবিধার জন্য সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরর্দী পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার ডাবল রেল লাউন নির্মানের পরিপল্পনা চলমান রয়েছে । রেল সেতু নির্মানের সংশ্লিস্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাপানের জাইকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার চুক্তি হয়েছে। জাপান-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়গে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে । এজন্য ইতিমধ্যেই জাপানের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের সুপাররিশ পেতে আরো দেড় থেকে ২ বছরের সময় লাগবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। একই সাথে ট্রেন ভ্রমণে মানুষের ভোগান্তি কমবে এবং আস্থা বাড়বে।