পাবনার ফরিদপুর পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোল ঘেষে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করছে উপজেলার বেড় হাউলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম রবির নেতৃত্বে কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধ। পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবগত করলেও ব্যবস্থা না নিয়ে নিরব রয়েছে তারা। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সততাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, এই এলাকাটি কৃষিপ্রধান এলাকা। মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন ফসল আবাদ হয়। আগে বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়লেই এসব ফসল ডুবে যেত। ফলে ১৯৮৩ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কৃষকের ফসল রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরির উদ্যোগ নেয়। সে অনুযায়ী সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী থেকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা হয়ে রাজশাহীর চারঘাট পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি করা হয়। এক দিকের মাটি খনন করে অন্য দিকে তৈরি হয় বাঁধটি। এতে বাঁধের পাশ দিয়ে লম্বা খাল তৈরি হয়। পরে খালপাড়ের বাসিন্দা ও জমিদাতারা সমবায় সমিতি করে পাউবোর কাছ থেকে খালগুলো ইজারা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, বেরহাউলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে এই বাঁধের পাশে পাউবোর অধীনে প্রায় ১৩ টির ও বেশি খাল রয়েছে। প্রতিটির আয়তন দুই থেকে পাঁচ একর পর্যন্ত। আগে খালগুলোতে স্থানীয় দরিদ্র মানুষ মাছ চাষ করলেও এখন তা প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। প্রভাবশালীরাই খালগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাছ চাষ করছেন।
চলতি মৌসুমে খালগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ায় উপজেলার বের হাউলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম রবির নেতৃত্বে বের হাউলিয়া ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ও বের হাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমেজ আলীর পুত্র আব্দুর রশিদ, মৃত ময়েজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুল জলিল,কিসমত আলীর পুত্র গুলজার হোসেন। সঙ্গবদ্ধভাবে বাঁধের গোর থেকে চারটি স্থানে ৮টি এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে প্রায় ৪০ টি ড্রামটাকের মাধ্যমে প্রতি গাড়ি মাটি ১৭শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। মাটি কাটার স্থানগুলো হল বের হাউলিয়া ইউনিয়নের সীমে মোরা সাইফুলের ভাটার পাশে ২টি ইস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে বাধের ঢাল সহ কেটে ১৫টি ড্রামটাক মাটি বোঝাই করে ৬ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে।
ফরিদপুর উপজেলা বিএনপি’র আহব্বায়ক আব্দুল হাকিমের ভাটার পাশে ২ টি ইস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে ১০ টি ড্রামটাকে মাটি বোঝাই করে ৫দিন যাবত মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খলিলের ইট ভাটার পাশে ২ টি এস্কেভেটর (ভেকু)দিয়ে মাটি কেটে ৮ টি ড্রামটাকে মাটি বোঝাই করে ৪ দিন যাবত মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে, স্থানীয় লোকজন বলছেন, বাঁধটি তৈরির সময় পরিমাপ বুঝে খাল কাটা হয়েছিল। এতে এত দিন বাঁধের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে এখন বিশাল খাল তৈরি হওয়ায় বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। অতিবৃষ্টি বা বন্যা হলে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) হাসমাত জামান বলেন, মাটি কেটে ইট ভাটার বিক্রয়ের বিষয়টি শুনেছি ব্যবস্থা নেব।কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলার ৫ দিন পরেও কোন ব্যবস্থা নেননি। পরে তাকে ফোন দিলে তিনি ফোন তোলেনি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সানাউর মোরশেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে মাটি কাটছে এটা আমাদের কিছু করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা সহযোগিতা করব।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন কোনো অবস্থাতেই বাঁধের পাশ থেকে মাটি কাটা যাবে না। বিষয়টি সহকারী প্রকৌশলী রাজীব সাহেব কে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
পাবনার ফরিদপুর পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোল ঘেষে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করছে উপজেলার বেড় হাউলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম রবির নেতৃত্বে কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ীরা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁধ। পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবগত করলেও ব্যবস্থা না নিয়ে নিরব রয়েছে তারা। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সততাকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছে স্থানীয়রা।
জানা যায়, এই এলাকাটি কৃষিপ্রধান এলাকা। মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন ফসল আবাদ হয়। আগে বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়লেই এসব ফসল ডুবে যেত। ফলে ১৯৮৩ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কৃষকের ফসল রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরির উদ্যোগ নেয়। সে অনুযায়ী সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী থেকে ভাঙ্গুড়া উপজেলা হয়ে রাজশাহীর চারঘাট পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি করা হয়। এক দিকের মাটি খনন করে অন্য দিকে তৈরি হয় বাঁধটি। এতে বাঁধের পাশ দিয়ে লম্বা খাল তৈরি হয়। পরে খালপাড়ের বাসিন্দা ও জমিদাতারা সমবায় সমিতি করে পাউবোর কাছ থেকে খালগুলো ইজারা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন।
স্থানীয় লোকজনের দাবি, বেরহাউলিয়া ইউনিয়নের মধ্যে এই বাঁধের পাশে পাউবোর অধীনে প্রায় ১৩ টির ও বেশি খাল রয়েছে। প্রতিটির আয়তন দুই থেকে পাঁচ একর পর্যন্ত। আগে খালগুলোতে স্থানীয় দরিদ্র মানুষ মাছ চাষ করলেও এখন তা প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। প্রভাবশালীরাই খালগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মাছ চাষ করছেন।
চলতি মৌসুমে খালগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ায় উপজেলার বের হাউলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রবিউল করিম রবির নেতৃত্বে বের হাউলিয়া ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি ও বের হাউলিয়া গ্রামের মৃত ওমেজ আলীর পুত্র আব্দুর রশিদ, মৃত ময়েজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুল জলিল,কিসমত আলীর পুত্র গুলজার হোসেন। সঙ্গবদ্ধভাবে বাঁধের গোর থেকে চারটি স্থানে ৮টি এস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে প্রায় ৪০ টি ড্রামটাকের মাধ্যমে প্রতি গাড়ি মাটি ১৭শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। মাটি কাটার স্থানগুলো হল বের হাউলিয়া ইউনিয়নের সীমে মোরা সাইফুলের ভাটার পাশে ২টি ইস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে বাধের ঢাল সহ কেটে ১৫টি ড্রামটাক মাটি বোঝাই করে ৬ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে।
ফরিদপুর উপজেলা বিএনপি’র আহব্বায়ক আব্দুল হাকিমের ভাটার পাশে ২ টি ইস্কেভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে ১০ টি ড্রামটাকে মাটি বোঝাই করে ৫দিন যাবত মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খলিলের ইট ভাটার পাশে ২ টি এস্কেভেটর (ভেকু)দিয়ে মাটি কেটে ৮ টি ড্রামটাকে মাটি বোঝাই করে ৪ দিন যাবত মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রি করছে, স্থানীয় লোকজন বলছেন, বাঁধটি তৈরির সময় পরিমাপ বুঝে খাল কাটা হয়েছিল। এতে এত দিন বাঁধের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে এখন বিশাল খাল তৈরি হওয়ায় বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। অতিবৃষ্টি বা বন্যা হলে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) হাসমাত জামান বলেন, মাটি কেটে ইট ভাটার বিক্রয়ের বিষয়টি শুনেছি ব্যবস্থা নেব।কিন্তু তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলার ৫ দিন পরেও কোন ব্যবস্থা নেননি। পরে তাকে ফোন দিলে তিনি ফোন তোলেনি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সানাউর মোরশেদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা থেকে মাটি কাটছে এটা আমাদের কিছু করার নেই। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা সহযোগিতা করব।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন কোনো অবস্থাতেই বাঁধের পাশ থেকে মাটি কাটা যাবে না। বিষয়টি সহকারী প্রকৌশলী রাজীব সাহেব কে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।